বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় | |
---|---|
জন্ম | মণিহারি, পূর্ণিয়া জেলা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, অবিভক্ত ভারতবর্ষ | ১৯ জুলাই ১৮৯৯
মৃত্যু | ৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯ কলকাতা, ভারত | (বয়স ৭৯)
ছদ্মনাম | বনফুল |
পেশা | কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার, কবি |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
ধরন | ছোটগল্প, কবিতা |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | জগত্তারিণী স্বর্ণপদক (১৯৬৭) রবীন্দ্র পুরস্কার (১৯৬২) পদ্মভূষণ (১৯৭৫) |
বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় (১৯ জুলাই ১৮৯৯ – ৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯) একজন বাঙালি কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার ও কবি। তিনি বনফুল ছদ্মনামেই অধিক পরিচিত। অবিভক্ত ভারতবর্ষের বিহার রাজ্যের মণিহারীতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।[১] তাঁদের আদি নিবাস অধুনা পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার শিয়াখালা গ্রাম। তাঁদের পরিবার "কাঁটাবুনে মুখুজ্জ্যে" নামে পরিচিত ছিল৷[২] তিনি মূলত পেশায় চিকিৎসক ছিলেন৷
বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়ের পিতার নাম সত্যচরণ মুখোপাধ্যায় ও মাতা মৃণালিনী দেবী। তার পিতা একজন চিকিৎসক ছিলেন এবং মাতা গৃহ বধু ছিলেন। তাঁদের আদি নিবাস শিয়াখালা হলেও বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় অধুনা বিহারের পূর্ণিয়া জেলার মণিহারী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[৩] তার অনুজ অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় খ্যাতনামা চিত্রপরিচালক।
প্রথমে মণিহারী স্কুলে এবং পরে সাহেবগঞ্জ জেলার সাহেবগঞ্জ উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে তিনি লেখাপড়া করেন। শেষোক্ত স্কুল থেকে ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রবেশিকা (এন্ট্রান্স) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি আই.এস.সি, পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন হাজারীবাগ সেন্ট কলম্বাস কলেজ থেকে। কলকাতা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন তবে পাটনা মেডিক্যাল কলেজে থেকে এম.বি, ডিগ্রী লাভ করেন। প্যাথলজিস্ট হিসাবে ৪০ বৎসর কাজ করেছেন। ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে স্থায়ীভাবে কলকাতায় বসবাস করতে শুরু করেন। ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দের ৯ ফেব্রুয়ারি তারিখে কলকাতা শহরে তার মৃত্যু হয়।[১]
বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় কৈশোর থেকেই লেখালেখি শুরু করেন। শিক্ষকদের কাছ থেকে নিজের নাম লুকোতে তিনি 'বনফুল' ছদ্মনামের আশ্রয় নেন। ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দে সাহেবগঞ্জ স্কুলে পড়ার সময় মালঞ্চ পত্রিকায় একটি কবিতা প্রকাশের মধ্য দিয়ে তার সাহিত্যিক জীবনের সূত্রপাত ঘটে। শনিবারের চিঠি তে ব্যাঙ্গ কবিতা ও প্যারডি কবিতা লিখে সাহিত্য জগৎতে নিজের আসন স্থায়ী করেন। এছাড়াও নিয়মিত প্রবাসী, ভারতী এবং সমসাময়িক অন্যান্য পত্রিকায় ছোটগল্প প্রকাশ করেন।[১]
লেখক হিসেবে কবি বনফুল এক হাজারেরও বেশি কবিতা, ৫৮৬টি ছোট গল্প, ৬০টি উপন্যাস, ৫টি নাটক, জীবনী ছাড়াও অসংখ্য প্রবন্ধ রচনা করেছেন। তার রচনাবলীসমগ্র ২২ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে।[১]
বনফুল ছিলেন জীবনী-নাটকের পথিকৃৎ।
তার সাহিত্যকর্মের জন্য তিনি পদ্মভূষণ (১৯৭৫) উপাধি লাভ করেন। এছাড়াও তিনি শরৎস্মৃতি পুরস্কার (১৯৫১), রবীন্দ্র পুরস্কার (১৯৬২), বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের জগত্তারিণী পদক (১৯৬৭)পান। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডিলিট উপাধি প্রদান করে ১৯৭৩ সালে।[৪]
কলকাতায়, ৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯ তিনি মৃত্যুবরণ করেন।