এই নিবন্ধে তথ্যসূত্রের একটি তালিকা রয়েছে, কিন্তু উক্ত তালিকায় পর্যাপ্ত সংগতিপূর্ণ উদ্ধৃতির অভাব বিদ্যমান। (February 2014) |
জার্মানীর বসন্ত আক্রমণ, ১৯১৮ | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
মূল যুদ্ধ: প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এর পশ্চিমস্থ রণক্ষেত্র | |||||||
| |||||||
বিবাদমান পক্ষ | |||||||
জার্মান সাম্রাজ্য |
ফ্রান্স | ||||||
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী | |||||||
এরিখ লুডেনডফ |
ফাব্দিনান্দ ফশ ডগলাস হেইগ ফিলিপ পিতাঁ জন জে পারজিং আলবেরিকো আলব্রিস্সি ফের্নান্দো তামাইনিনি জি আব্রেও ই সিলভা | ||||||
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি | |||||||
৬৮৮,৩৪১[১] |
৪৩৩,০০০[২] ৪১৮,৩৭৮[৩] ৭,০০০[৪] ৫,০০০[৫] |
১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দের 'বসন্ত আক্রমণ' বা 'কাইজারশ্লাখট্' (কাইজার এর যুদ্ধ), এছাড়াও 'লুডেনডর্ফ আক্রমণ' নামে পরিচিত অাক্রমণটি ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানীর পশ্চিমে অবস্থিত উত্তর-পশ্চিম ইউরোপ অভিমুখে বা ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট বরাবর জার্মান বাহিনীর একটি ধারাবাহিক আক্রমণ, যা ২১ শে মার্চ ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে শুরু হয় এবং যাকে উভয়পক্ষ ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দ অবধি যুদ্ধক্ষেত্র হতে শত্রু সীমার অভ্যন্তরে সবচেয়ে দীর্ঘতম অগ্রগতি হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। জার্মানরা অনুধাবন করতে পেরেছিল যে বিজয়ের জন্য তাদের অবশিষ্ট একমাত্র সুযোগ হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অপ্রতিরোধ্য পরিমাণ সেনা এবং যুদ্ধ সামগ্রী সম্পূর্ণরূপে মোতায়েনের পূর্বে মিত্রশক্তিকে পরাজিত করা। তাছাড়া রাশিয়ার আত্মসমর্পণ (ব্রেস্ট-লিটভ্স্ক চুক্তি) দ্বারা মুক্ত প্রায় ৫০ টি জার্মান ডিভিশন বাহিনীতে যুক্ত হওয়ায় জার্মানদের সেনা সংখ্যায় অস্থায়ী শ্রেষ্ঠত্ব ছিল।
মোট চারটি জার্মান আক্রমণ চালানো হয়, যাদের কোডনেম ছিল যথাক্রমে মাইকেল (জার্মান মিখাইয়েল), যরজেট (জার্মান যরযেট), নাইজানাও (জার্মান গ্নাইজানও) এবং ব্লুকার-ইয়র্ক (জার্মান ব্লুইখার-ইয়র্ক)। মাইকেল ছিল মূল আক্রমণ, যার উদ্দেশ্য ছিল মিত্র বাহিনী ব্যূহ ভেদ করা, ব্রিটিশ বাহিনীর পার্শ্ব ভাগ অতিক্রম করে যাওয়া, যা সোম নদীর সম্মুখভাগ রক্ষা করছিল এবং ব্রিটিশ বাহিনীকে পরাজিত করা। একবার এ লক্ষ্য অর্জন করা গেলে, আশা করা যাচ্ছিল যে ফরাসিরা যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে যেতে পারে। অন্য আক্রমণগুলি মাইকেলের অধীন ছিল এবং সোমে মূল আক্রমণ হতে মিত্র বাহিনীর মনোযোগ সরিয়ে নেবার জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
আক্রমণের পূর্ব পর্যন্ত কোন পরিষ্কার উদ্দেশ্য স্থির করা ছিল না এবং অভিযান শুরু করার পরেও আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু রণক্ষেত্রের পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রতি মুহূর্তে পরিবর্তিত হতে থাকে। মিত্রবাহিনী তাদের মূল বাহিনীকে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সংঘবদ্ধ করেছিল আর কৌশলগতভাবে কম গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলো যা বছরের পর বছর যুদ্ধে বিধ্বস্ত, সেগুলোকে হালকাভাবে সুরক্ষা প্রদান করেছিল।
জার্মানরা তাদের যুদ্ধের রসদ এবং জনবল তাদের রণক্ষেত্রে অগ্রগতির দ্রুততা অনুযায়ী সরবরাহ করতে পারছিল না। তাদের দ্রুতগতিসম্পন্ন স্টোর্মট্রুপার, যারা আক্রমণের সম্মুখভাগে ছিল, তারা লম্বা সময় টিকে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় রসদ এবং গোলাবারুদ সাথে নিতে পারছিল না এবং সকল জার্মান আক্রমণ নিঃশেষিত হয়ে যায় যুদ্ধের রসদ সরবরাহে ঘাটতির অংশ হিসেবে।
১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল নাগাদ জার্মান বাহিনী কর্তৃক মিত্র ব্যূহ ভেদ করার আশঙ্কা নির্মূল হয়ে যায়। জার্মান বাহিনী ভারী পরিমাণ হতাহতের সম্মুখীন হয় এবং এমন সব জায়গা দখলে সক্ষম হয় যার গুরুত্ব নিয়ে সন্দেহ করা যায় এবং যা জার্মান ক্ষয়িষ্ণু বাহিনীর পক্ষে ধরে রাখাও অসম্ভব ছিল। ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দের আগস্ট নাগাদ মিত্র বাহিনী আমেরিকার ১০-২০ লক্ষ নতুন সৈন্য পুষ্ট হয়ে এবং নতুন আর্টিলারি কৌশল ও সমরনীতি ব্যবহার করে পাল্টা আক্রমণ চালায়। এই ১০০ দিনের আক্রমণ জার্মানদেরকে তাদের বসন্ত আক্রমণে অধিকৃত জায়গাগুলো থেকে হটিয়ে দেয় বা পিছু হটতে বাধ্য করে এবং হিন্ডেনবার্গ লাইন এর বিলুপ্তি ঘটায় এবং নভেম্বর নাগাদ জার্মান সাম্রাজ্যের আত্মসমর্পণ নিশ্চিত করে।
বইসমূহ