বাণাসুর | |
---|---|
![]() কৃষ্ণের সঙ্গে বাণাসুরের যুদ্ধ | |
সন্তান | ঊষা |
বাণ (বা বাণাসুর) হিন্দু কিংবদন্তি মতে একজন সহস্র বাহুধর অসুর রাজা এবং বলির পুত্র।[১][২] শোণিতপুর (বর্তমানের তেজপুর)কে রাজধানী করে বাণাসুর মধ্য আসামে রাজত্ব করেছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে বাণাসুর একজন কিরাট রাজা ছিলেন। অন্যদিকে হিমাচলের লোককথা মতে তিনি শোণিতপুরের (বর্তমানের হিমাচল প্রদেশের শারাহন) রাজা ছিলেন।[৩]
প্রতাপী অসুর রাজা বাণাসুর একটি বৃহৎ রাজ্য শাসন করতেন। বিষ্ণুর কথা মতে বিশ্বকর্মার প্রদান করা রাসলিঙ্গকে তিনি পূজা করেছিলেন। শিব তাণ্ডব নৃত্য করাকালীন ভক্ত বাণ তাঁর সহস্র বাহু দিয়ে মৃদঙ্গ বাজিয়েছিলেন। বাণের ভক্তিতে সন্তুষ্ট হয়ে শিব তাঁকে বর দেন এবং বাণকে রক্ষা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। সময়র সাথে সাথে বাণ নিষ্ঠুর এবং দাম্ভিক হয়ে ওঠে। বহু ডেকা কন্যার পাণি গ্রহণ করার জন্য তিনি কন্যা ঊষাকে অগ্নিগড়ের দুর্গে বন্দী করে রাখেন। একদিন ঊষা স্বপ্নে একজন পুরুষের দেখা পেয়ে প্রেমে পড়েন। ঊষার সখী ছিলেন বাণ রাজার মন্ত্রী কুম্ভাণ্ডর কন্যা চিত্রলেখা। প্রতিভাবান চিত্রকর চিত্রলেখা বহু ছবি আঁকি দেখানোয় স্বপ্নের পুরুষটি শ্রীকৃষ্ণের নাতি অনিরুদ্ধ বলে শনাক্ত করে। মায়াজালের দ্বারা চিত্রলেখা অনিরুদ্ধকে অপহরণ করে ঊষার কাছে নিয়ে আসে।[৪] এই কথা জানতে পেরে বাণ অনিরুদ্ধকে বন্দী করে রাখে। কৃষ্ণ অনিরুদ্ধকে মুক্ত করতে আসায় বাণাসুরের রক্ষক শিবের সঙ্গে তাঁর প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধকে হরি-হর যুদ্ধ বলে। যুদ্ধে রক্তের ধারা বয়ে যাবার জন্য স্থানটি পরবর্তীকালে তেজপুর বা শোণিতপুর বলে পরিচিত হয়। ব্রহ্মার হস্তক্ষেপে কৃষ্ণ এবং শিব যুদ্ধ বন্ধ করতে সম্মত হয়।[৫][৬][৭][৮] এরপর কৃষ্ণ বাণাসুরের দুটি হাতের বাইরের সকলগুলি কেটে ফেলেন। বাণাসুর কৃষ্ণের কাছে ক্ষমা চান এবং ঊষাকে অনিরুদ্ধের সঙ্গে বিয়ে দেন।
বাণাসুরের বংশ নিম্নরূপ:[৯]
বাণাসুরের পত্নী ছিলেন কন্দলাসুরী।
ভারতীয় মহাকাব্য মহাভারত এবং ভাগবত পুরাণ-এ বাণাসুরের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। শক্তি দেবী বিয়ের জন্য তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার কাহিনী তামিল সঙ্গম সাহিত্যকর্ম মণিমেকলৈ এবং পুরাণানুরু; ভট্টবতারের বাণাসুর কথায় বর্ণিত হয়েছে।[১০] ওড়িয়া ভাষায় শিশু শংকর দাসের ১৫ শ শতকে রচনা করা মহাকাব্যিক কবিতা ঊষাভিলাষএ বাণের কাহিনী বলা হয়েছে।
রূপকুমার জ্যোতিপ্রসাদ আগরবালা ১৪ বছর বয়সে "শোণিত কুঁয়রী" নাটক রচনা করেছিলেন।
১৯৬১ সালে রাজারাজেশ্বরী ফিল্ম্সের বেনারে কাডারু নাগাভূষণম "ঊষা পরিণয়ম" নামে একটি তেলুগু চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন। প্রখ্যাত তেলুগু অভিনেতা এস ভি রঙ্গা রাও বাণাসুরের চরিত্র রূপায়ণ করেছিলেন।[১১]
লাইফ ওকে টেলিভিশন সিরিজ "দেবো কা দেব...মহাদেব"এ বাণাসুরের চরিত্র পঞ্জাবী অভিনেতা বিক্রমজিত বির্ক রূপায়ণ করেছিলেন।
Far Cry 4 নামের ভিডিও গেমে বাণাসুরের চরিত্র আছে।
|1=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)