কোন বহুভুজ বা বহুতলকের অথবা উচ্চতরমাত্রার পলিটোপের যে বিশেষ রেখাংশের প্রান্তবিন্দু[১] দুটি (অন্যান্য রেখাংশের সাথে) সংযুক্ত অবস্থায় থাকে তাকে জ্যামিতিতে বাহু বা ভুজ বলা হয়। অর্থাৎ একটি জ্যামিতিক কাঠামোর কোন রেখাংশের প্রান্তবিন্দু দুটি যদি শীর্ষবিন্দু[২] হয় (অন্যভাবে বলা যায়) একটি কাঠামোর কোন রেখাংশের যদি দুটি শীর্ষবিন্দু থাকে তবে এই রেখাংশটি ঐ কাঠামোর একটি বাহু হবে।[৩] বহুভুজের ক্ষেত্রে বাহু হল বহুভুজটির সীমা নির্ধারক রেখাংশ অথবা বহুভুজটির সীমার উপর অবস্থিত রেখাংশ।[৪] আর বহুতলকের ক্ষেত্রে বা আরো সাধারণভাবে বলা যায় পলিটোপের ক্ষেত্রে বাহু হলো সেই রেখাংশ যেখানে দুটি তল মিলিত হয়।[৫] দুটি শীর্ষবিন্দু থাকলেও যে রেখাংশ কাঠামোটির মধ্য দিয়ে গমন করে অথবা বাইরে গমন করে তাকে বাহু বলা যাবে না। সেটাকে বরং কর্ণ বলা হয়।
বহুভুজ ও বহুতলকের বাহুর ক্ষেত্রে রেখাংশের মতো একটি সুস্থিত জ্যামিতিক চিত্র রয়েছে। অপরদিকে গ্রাফ তত্ত্বের বাহু (বা রেখা অথবা ধার) হলো গ্রাফের দুটি শীর্ষবিন্দুর সংযোগকারী একটি বিমূর্ত বস্তু যা বহুভুজ ও বহুতলকের বাহুর থেকে আলাদা। সে যাই হোক, যে কোন বহুতলককে তার কঙ্কাল বা বাহু-কঙ্কালের মাধ্যমে উপস্থাপন করা যেতে পারে (বহুতলকের কঙ্কাল হলো এমনই এক লেখচিত্র যার শীর্ষবিন্দুগুলো জ্যামিতিক শীর্ষবিন্দু এবং যার বাহু বা রেখাগুলো জ্যামিতিক বাহুর অনুরূপ)।[৬] বিপরীতভাবে বলা যায়, কোন লেখচিত্র ত্রি-মাত্রিক বহুতলকের কঙ্কাল হলে এই লেখচিত্রটিকে স্টানিটসের উপপাদ্যের মাধ্যমে এমনভাবে চিহ্নিত করা যেতে পারে যেন এটা ঠিক তিনটি শীর্ষবিন্দু দ্বারা যুক্ত সমতলিক লেখচিত্র।[৭]
উত্তল বহুতলকের যেকোন পৃষ্ঠতলের নিম্নোক্ত অয়লারীয় ধর্ম বিদ্যমান:
যেখানে V হলো শীর্ষবিন্দুর সংখ্যা, E হলো বাহুর সংখ্যা এবং F হলো তলের সংখ্যা। সমীকরণটি বহুতলকের অয়লার সূত্র নামে পরিচিত। এই সূত্রানসারে কোন বহুতলকের বাহুর সংখ্যা বহুতলকটির শীর্ষবিন্দু ও তলের সংখ্যার সমষ্টি অপেক্ষা ২ কম। যেমন: তিনটি ত্রিভুজাকার তল দ্বারা গঠিত পিরামিডের ৪ টি শীর্ষবিন্দু, ৬ টি বাহু এবং ৪ টি তল বিদ্যমান। আবার একটি ঘনকের ৮ টি শীর্ষবিন্দু, ১২ টি বাহু এবং ৬ টি তল বিদ্যমান।
একটি বহুভুজের প্রতিটি শীর্ষবিন্দুতে ন্যূনতম দুটি বাহু এসে মিলিত হয়। অপরদিকে একটি বহুতলকের প্রতিটি শীর্ষবিন্দুতে ন্যূনতম তিনটি বাহু এসে মিলিত হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] মিচেল বালিনস্কির উপপাদ্য অনুসারে, d-মাত্রিক উত্তল পলিটোপের প্রতিটি শীর্ষবিন্দুতে ন্যূনতম d সংখ্যক বাহু মিলিত হবে।[৮] একইভাবে, যেকোন বহুতলকের প্রতিটি বাহুতে ঠিক (এবং কেবলমাত্র) দুটি দ্বিমাত্রিক তল মিলিত হবে।[৯] অপরদিকে উচ্চতর মাত্রার পলিটোপের প্রতিটি বাহুতে তিন বা ততোধিক দ্বিমাত্রিক তল মিলিত হবে।
আলোচ্য বিষয়টিকে ইংরেজি পাঠ্যপুস্তকে Edge এবং বহুভুজের ক্ষেত্রে সচরাচর side বলা হয়। বাংলাভাষী বইগুলোগুলোতে বহুভুজ ও বহুতলকের প্রেক্ষাপট ছাড়াও কোণ গঠনকারী রশ্মিদুটোকেও বাহু নামে অভিহিত করা হয়ে থাকে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
উচ্চতর মাত্রার উত্তল পলিটোপের তাত্ত্বিক আলোচনার ক্ষেত্রে, d-মাত্রিক কোন পলিটোপের ফ্যাসেট বা side হলো পলিটোপটির একটি (d − 1)-মাত্রিক আকৃতি, রিজ (Ridge) হলো এর একটি (d − 2)-মাত্রিক আকৃতি এবং পীক (Peak) হলো এর একটি (d − 3)-মাত্রিক আকৃতি। একইভাবে বহুভুজের বাহুগুলো হলো বহুভুজটির ফ্যাসেট, তিন মাত্রার উত্তল বহুতলকের বাহুগুলো হলো বহুতলকটির রিজ এবং চার মাত্রার পলিটোপের বাহুগুলো হলো পলিটোপটির পীক।[১০]