বিজ্ঞানী

বৈজ্ঞানিক
গবেষণাগারে কর্মরত অবস্থায় বিজ্ঞানীগণ
পেশা
নামবৈজ্ঞানিক
পেশার ধরন
পেশা
প্রায়োগিক ক্ষেত্র
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ব্যবহার
বিবরণ
যোগ্যতাবিজ্ঞান

বিজ্ঞানী (বাংলা উচ্চারণ: [বিজ্ঞানী] (শুনুন)) একজন ব্যক্তি, যিনি পদ্ধতিগতভাবে নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে সম্পৃক্ত থেকে জ্ঞানরাজ্যে বিচরণ করেন। তিনি পৃথিবী সম্পর্কে বোঝার চেষ্টা করেন কিংবা অন্য যে কোন ধরনের বিষয়বস্তুর সাথে সংশ্লিষ্ট থেকে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখেন। যিনি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বনপূর্বক স্বীয় কাজে অগ্রসর হন, তিনি বিজ্ঞানী বা বৈজ্ঞানিক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকেন।[] ব্যক্তি হিসেবে তিনি বিজ্ঞানের এক বা একাধিক শাখায় অভিজ্ঞ হতে পারেন।[] একজন বিজ্ঞানী নির্দিষ্ট কোন কিছু পর্যবেক্ষণ করেন, প্রশ্ন করেন এবং ব্যাপক-বিস্তৃত পটভূমিতে গবেষণা কর্মের মাধ্যমে প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেন। বিজ্ঞানীরা বিশেষ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে যথাযথ জ্ঞান আহরণপূর্বক প্রকৃতি এবং সমাজের নানা মৌলিক বিধি ও গবেষণালব্ধ সাধারণ সত্য আবিষ্কারের চেষ্টা করেন।

কর্মক্ষেত্র

[সম্পাদনা]

সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থা, বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জন্য বিজ্ঞানীরা কাজ করে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের পড়াশোনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা শিক্ষাপ্রদান করে থাকেন। এছাড়াও, নতুনদের মাঝে বৈজ্ঞানিক চেতনাবোধ জাগ্রত ও নতুন বৈজ্ঞানিকরূপে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তাদের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান বিতরণে প্রয়াসী হন।

প্রকারভেদ

[সম্পাদনা]

বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা-প্রশাখায় বিজ্ঞানীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন ও সফলতা লাভ করে দেশবাসী তথা বিশ্ববাসীকে আধুনিক জীবনযাত্রায় উদ্বুদ্ধ করছেন। একজন পদার্থবিজ্ঞানী, রসায়নবিজ্ঞানী, জীববিজ্ঞানী, ভূতত্ত্ববিদ যথাক্রমে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান এবং শিলা নিয়ে গবেষণা কর্ম পরিচালনা করে থাকেন।

বিজ্ঞান হচ্ছে জীবিত এবং মৃত উভয় ধরনের বিষয়বস্তু নিয়ে শিক্ষালাভের ক্ষেত্রস্থল যা আমাদের চারপাশের পরিবেশে বিরাজমান। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তার বিষয়বস্তু বের করার উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট উপকরণসমূহ ব্যবহার করেন। যেমন : বস্তুটি ধাতব পদার্থ কিংবা অ-ধাতব পদার্থ কি-না তা প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সাহায্যে বের করে থাকেন।

বিজ্ঞানে নারী

[সম্পাদনা]
পদার্থবিদ্যা ও রসায়নশাস্ত্রে অসামান্য অংশগ্রহণে মেরি ক্যুরি বৈশ্বিকভাবে পরিচিতি পেয়েছেন।

ঐতিহাসিকভাবেই নারীকে গৃহপ্রকোষ্ঠে আবদ্ধ রাখা হয়েছে। পরিবার থেকেই তাদেরকে বিজ্ঞান চর্চায় অংশগ্রহণ কিংবা উদ্বুদ্ধ করা হয়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯২৩ সালে সমান অধিকার আইন আকারে গৃহীত হবার পর নারীদেরকে উল্লেখযোগ্য হারে বিজ্ঞান বিষয়ে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়। কিন্ত বিজ্ঞানে অংশগ্রহণের হার প্রকৌশল বিদ্যার তুলনায় নিম্নমুখী। বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে ডক্টরেট গ্রহণের সংখ্যা ১৯৭০ সালে ৭% থেকে ১৯৮৫ সালে ৩৪%-এ দাড়ায়। তন্মধ্যে প্রকৌশলে স্নাতক ডিগ্রীর সংখ্যা যেখানে ছিল ১৯৭৫ সালে ছিল মাত্র ৩৮৫ জন, সেখানে ১৯৮৫ সালে ১১০০০ ছাড়িয়ে যায়। শিক্ষাক্ষেত্রে আইনের মাধ্যমে নারীকে বিশেষায়িত করলেও এখনো এ পেশায় বেশ অসমতা বিরাজ করছে।

বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ১৯৮৯ সালে বিজ্ঞানী হিসেবে পুরুষের অংশগ্রহণ ছিল ৬৫% এবং মাত্র ৪০% নারী উচ্চ পদে আসীন ছিলেন। যেখানে পূর্ণাঙ্গকালীন একজন বিজ্ঞানীর বার্ষিক আয় $৪৮,০০০; সেখানে নারীর আয় ছিল $৪২,০০০।[]

খ্যাতিমান বিজ্ঞানী

[সম্পাদনা]
পরবর্তী জীবনে লুই পাস্তুরের প্রতিচিত্র

আলবার্ট আইনস্টাইনকে বিংশ শতকের সবচেয়ে জনপ্রিয় বিজ্ঞানী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। আইজাক নিউটনকে আধুনিক বলবিদ্যার পথিকৃৎ বলা হয়। স্টিফেন হকিং, বিশ্বতত্ত্বকোয়ান্টাম বলবিদ্যায় অসামান্য অবদান রেখেছেন। এছাড়াও, লুই পাস্তুর, র‍্যনে দেকার্ত, থমাস ইয়াং, হারম্যান ভন হেলমোল্টজ,, গটফ্রিড লিবনিজ, জোসেফ ফোরিয়ার, জন ভন নিউম্যান, এলান টুরিং, আন্দ্রে শাখারভ, আলেক্সান্দার খিনচিন, আন্দ্রেই মার্কভ, নর্বাট ওয়াইনাস, গ্যালিলিও গ্যালিলি, অলিভার ওয়েন্ডেল হোমস, উইলিয়াম হার্ভে, সান্টিয়াগো র‌্যামন ওয়াই ক্যাজাল, ভিলহেল্ম কনরাড র‌ন্টগেন, আলফ্রেড নোবেল,আরনেস্ট রাদারফোর্ড ,নিলস বোর প্রমুখ ব্যক্তিত্ব স্ব-স্ব ক্ষেত্রে মূল্যবান অবদান রেখে বিজ্ঞানী হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছেন।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Isaac Newton (1687, 1713, 1726). "[4] Rules for the study of natural philosophy", Philosophiae Naturalis Principia Mathematica, Third edition. The General Scholium containing the 4 rules follows Book 3, The System of the World. Reprinted on pages 794-796 of I. Bernard Cohen and Anne Whitman's 1999 translation, University of California Press আইএসবিএন ০-৫২০-০৮৮১৭-৪, 974 pages.
  2. Oxford English Dictionary, 2nd ed. 1989
  3. Eisenhart and Finkel, Ch 1 inThe Gender and Science Reader ed. Muriel Lederman and Ingrid Bartsch. New York, Routledge, 2001. (16-17)

আরও পড়ুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]