বিল কপসন

বিল কপসন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
উইলিয়াম হেনরি কপসন
জন্ম(১৯০৮-০৪-২৭)২৭ এপ্রিল ১৯০৮
স্টোনব্রুম, ডার্বিশায়ার, ইংল্যান্ড
মৃত্যু১৪ সেপ্টেম্বর ১৯৭১(1971-09-14) (বয়স ৬৩)
ক্লে ক্রস, ডার্বিশায়ার, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক২৪ জুন ১৯৩৯ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ টেস্ট১৬ আগস্ট ১৯৪৭ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৩২১৯৫০ডার্বিশায়ার
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ২৭৯
রানের সংখ্যা ১৭১১
ব্যাটিং গড় ৬.০০ ৬.৮১
১০০/৫০ -/- -/-
সর্বোচ্চ রান ৪৩
বল করেছে ৭৬২ ৫০৪১৫
উইকেট ১৫ ১০৯৪
বোলিং গড় ১৯.৮০ ১৮.৯৬
ইনিংসে ৫ উইকেট ৬৬
ম্যাচে ১০ উইকেট -
সেরা বোলিং ৫/৮৫ ৮/১১
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/- ১০৩/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২২ ডিসেম্বর ২০১৭

উইলিয়াম হেনরি কপসন (ইংরেজি: Bill Copson; জন্ম: ২৭ এপ্রিল, ১৯০৮ - মৃত্যু: ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১) ডার্বিশায়ারের স্টোনব্রুম এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন।[] ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৭ সময়কালে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৩২ থেকে ১৯৫০ সময়কালে ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ডার্বিশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলারের দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন বিল কপসন

ক্রিকেট সংবাদদাতা কলিন বেটম্যানের মতে, দীর্ঘ চুলের অধিকারী পেস বোলার হিসেবে কপসন খেলায় প্রাণের সূচনা নিয়ে অগ্রসর হতেন। তিনি দূর্ঘটনাবশতঃ ক্রিকেটে জড়িয়ে পড়েন।

প্রারম্ভিক জীবন

[সম্পাদনা]

ডার্বিশায়ারের স্টোনব্রুম এলাকায় জন্মগ্রহণকারী উইলিয়াম হেনরি কপসন খনি শ্রমিক ছিলেন। সতীর্থ বোলার টমি মিচেলের সাথে তিনিও ১৯২৬ সালের সাধারণ ধর্মঘটের কারণে ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেন। ধর্মঘটের পূর্ব-পর্যন্ত ক্রিকেট খেলায় কোনরূপ আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়নি। তবে, সহকর্মী শ্রমিকদের সহযোগিতার কারণে স্থানীয় বিনোদন মাঠে ক্রিকেট খেলায় যোগ দিতে উদ্বুদ্ধ করে।

বোলার হিসেবে গ্রহণযোগ্য মাত্রায় পেস বোলিং করতেন ও ব্যতিক্রমধর্মী সোজাভাবে বলকে ডেলিভারি করতেন। এরফলে ব্যাটসম্যানকে প্রত্যেক বলকেই মোকাবেলা করতে বাধ্য করা হতো। পরের মৌসুমে মর্টন কলিয়ারি দলের পক্ষে খেলার সুযোগ ঘটে তার। এরপর ডার্বিশায়ার লীগে ক্লে ক্রস ক্লাবে যোগ দেন। বেশ সফলতা পাওয়ায় ১৯৩২ সালে ডার্বিশায়ার কর্তৃপক্ষ দলের সদস্য হিসেবে মনোনীত করে।[]

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

প্রথম-শ্রেণীর খেলায় ডার্বিশায়ারের পক্ষে খেলেছেন। এ সময়ে তিনি সহস্রাধিক উইকেটের সন্ধান পেয়েছেন। তন্মধ্যে, ১৯৩৬ সালের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেছেন। সারে দলের বিপক্ষে অভিষেক ঘটা ঐ খেলায় সারের ব্যাটসম্যান অ্যান্ডি স্যান্ডহামকে নিজের প্রথম বলেই বিস্ময়করভাবে আউট করেন। তবে মৌসুমের বাদ-বাকী সময় তার ক্রীড়াশৈলী মাঝারিমানের ছিল।

১৯৩৩ সালে কপসনকে ডার্বিশায়ার দলের নিয়মিত সদস্যের মর্যাদা লাভ করেন। স্বল্প দূরত্ব থেকে দৌঁড়ে বোলিং করলেও ফাস্ট বোলারদের ন্যায় ক্রীড়াশৈলী উপস্থাপন করতেন। গ্রীষ্মের অনুপযোগী পিচেও তিনি সফলতা পেয়েছেন। পরবর্তী দুই মৌসুমে কপসন আঘাতে জর্জরিত ছিলেন। ফলে তার শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে দুঃশ্চিন্তার ঘনঘটা দেখা দেয়। সুস্থ হয়ে আসার পর তার খেলায় প্রভূতঃ উন্নতি সাধিত হয়। ১৯৩৫ সালে বোলিং গড়ে ডার্বিশায়ারের বোলারদের শীর্ষে ছিলেন। যে-কোন সময়ের পূর্বে কিংবা পরবর্তী সময়ে সর্বাপেক্ষা বেশি জয়ের দেখা পায় ডার্বিশায়ার দল।

স্কেগনেসে শারীরিক সুস্থতার জন্য চলে যান। ফিরে আসার পর ১৯৩৬ সালে দারুণভাবে ফিরে আসেন। বাজে পিচে শক্তিশালী সারে দলের ব্যাটিংয়ের উপর খড়গ হস্ত চালিয়ে ১২/৫২ লাভ করেন যা তার সেরা বোলিং পরিসংখ্যান হিসেবে রয়ে যায়। কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে ১৩-এর কম গড়ে ১৪০ উইকেট পান। ফলশ্রুতিতে মৌসুম শেষে অ্যাশেজ সফরের জন্য মনোনীত হন। সকল খেলায় শীর্ষস্থানে থাকলেও বেশ শক্ত অস্ট্রেলীয় পিচে অসীম সময়ের খেলার জন্য তার বোলিং উপযুক্ত হিসেবে বিবেচিত হয়নি। ফলে কোন টেস্টে অংশগ্রহণ করেননি তিনি।

১৯৩৭ সালে আরও বড় ধরনের আঘাতের কবলে পড়েন তিনি। তবে, ৮/১১ নিয়ে কাউন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে সেরা বোলিং করেন। তন্মধ্যে, ধারাবাহিকভাবে ছয় বলে পাঁচটি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট পান। ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে ঐ পিচে অন্য কোন বোলার তাকে কোন সহযোগিতা করতে পারেননি। ব্যাটিং উপযোগী পিচে সাসেক্সের বিপক্ষে ৮/৬৪ পান। পরের বছর আবারো ১০৩ উইকেট পান। তাস্বত্ত্বেও কেন ফার্নেসবিল বোসকে টেস্ট দলে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত রাখতে পারেননি।

টেস্ট ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

১৯৩৬-৩৭ মৌসুমে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।[][] এ সময়ে তিনি এমসিসি দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড গমন করেন।

অবশেষে ১৯৩৯ সালে টেস্ট খেলার সুযোগ হয় তার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে লর্ডসে তার অভিষেক হয়। ২৪ জুন, ১৯৩৯ তারিখে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হওয়া কপসন নিরাশ করেননি। নিখুঁত পিচে নয় উইকেট পান। তন্মধ্যে প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট পেয়েছিলেন।[] ঐ বছর তিনি ১৪৬ উইকেট পান। তবে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে নিয়মিত টেস্ট বোলার হতে পারেননি।

১৯৪৬ সালের মধ্যে পেসে সক্ষমতা হারান। অন্যদের তুলনায় সোজা বোলিং করলেও যুদ্ধের পূর্বেকার বছরগুলোর ন্যায় কার্যকর ছিল না। ১৯৪৭ সালে আরও একটি টেস্টে অংশ নেন; তবে কোন সফলতা পাননি। ১৯৪৯ সালে ৪১ বছর বয়সে অবসর গ্রহণ করেন।

কপসন ডানহাতি ফাস্ট মিডিয়াম বোলার হিসেবে খেলতেন। ১৮.৯৬ গড়ে ১,০৯৪টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট পেয়েছেন। ব্যক্তিগত সেরা বোলিংশৈলী ছিল ৮/১১। টেস্ট ১৫ উইকেট লাভ করেন। ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে ২৭৯টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় ৩৫৯ ইনিংসে অংশ নিয়েছেন। ৬.৮১ গড়ে রান তুলেন। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান ছিল ৪৩।[]

ব্যক্তিগত জীবন

[সম্পাদনা]

১৯৫৮ থেকে ১৯৬৭ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করেন কপসন। তবে, ক্রমাগত স্বাস্থ্যহানীর কারণে এ দায়িত্ব থেকে দূরে সরে আসতে হয় তাকে। ৬৩ বছর বয়সে ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ তারিখে ডার্বিশায়ারের ক্লে ক্রস এলাকায় তার দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 43আইএসবিএন 1-869833-21-X 
  2. Wisden Obituaries - William Copson
  3. ACS (১৯৮২)। A Guide to First-Class Cricket Matches Played in the British Isles। Nottingham: ACS। 
  4. "Marylebone Cricket Club Players"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৭ 
  5. "1st Test: England v West Indies at Lord's, Jun 24-27, 1939"espncricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১২-১৩ 
  6. Bill Copson at Cricket Archive

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]