ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | উইলিয়াম জেমস হুইটি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | সিডনি, অস্ট্রেলিয়া | ১৫ আগস্ট ১৮৮৬|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ৩০ জানুয়ারি ১৯৭৪ ট্যানট্যানুলা, অস্ট্রেলিয়া | (বয়স ৮৭)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | বামহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | বোলার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৯৫) | ২৭ মে ১৯০৯ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ১৯ আগস্ট ১৯১২ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯০৭-১৯০৮ | নিউ সাউথ ওয়েলস | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯০৮-১৯২৬ | দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ক্রিকইনফো, ২৫ আগস্ট ২০১৭ |
উইলিয়াম জেমস বিল হুইটি (ইংরেজি: Bill Whitty; জন্ম: ১৫ আগস্ট, ১৮৮৬ - মৃত্যু: ৩০ জানুয়ারি, ১৯৭৪) সিডনিতে জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯০৯ থেকে ১৯১২ সময়কালে ১৪ টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেন বিল হুইটি। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলস ও দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলেন তিনি।
সিডনিতে জন্মগ্রহণকারী হুইটি জুনিয়র ক্রিকেটে অংশগ্রহণকালীন বিখ্যাত টেস্ট ব্যাটসম্যান ভিক্টর ট্রাম্পারের নজর কাড়েন। তিনি তাকে প্রশিক্ষণ গ্রহণের আমন্ত্রণ জানান ও নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্য দলের পক্ষে বোলিং করার সুযোগ দেন। ১৯০৭ সালে ২১ বছর বয়সে নিউ সাউথ ওয়েলসের পক্ষে তার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ঐ খেলায় তিনি ৩ উইকেট পান।[১] নিজ রাজ্য দলের পক্ষে এটিই তার একমাত্র প্রথম-শ্রেণীর খেলা ছিল। ১৯০৮ সালে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলার জন্য ক্লেম হিল তাকে অ্যাডিলেডে নিয়ে যান। ১৯০৮-০৯ মৌসুমে হুইটি পাঁচটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন। তন্মধ্যে, অস্ট্রেলিয়া বহিঃএকাদশের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিপক্ষে একটি খেলায় অংশ নিয়ে ৩ উইকেট দখল করেন।[২] পুরো মৌসুমে ৪৯.০০ গড়ে ১১ উইকেট পেয়েছিলেন হুইটি।[৩] ফলশ্রুতিতে ১৯০৯ সালে ইংল্যান্ড সফরের জন্য অস্ট্রেলিয়া দলের অন্যতম সদস্যরূপে মনোনীত হন তিনি।
২৭ মে, ১৯০৯ তারিখে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টেস্টে হুইটি’র অভিষেক ঘটে। খেলায় তিনি ০/৪৩ ও ০/১৮ পান। তবে, ইংল্যান্ড একাধিপত্য বিস্তার করে ১০ উইকেটের জয় তুলে নেয়।[৪] দ্বিতীয় টেস্টে তাকে দলের বাইরে রাখা হয়। পরবর্তী দুই টেস্টে জয় তুলে নিয়ে অ্যাশেজ অক্ষুণ্ন রাখে অস্ট্রেলিয়া দল। টেস্ট দলে থাকার জন্য তাকে সংগ্রাম করতে হলেও ঐ সফরে হুইটি ৭৭ উইকেট পেয়েছিলেন ২০.৪২ গড়ে। অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে এসে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ১৯০৯-১০ মৌসুমে খেলেন। শেফিল্ড শিল্ডে দলের ইতিহাসের দ্বিতীয় শিরোপা জয়ে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন তিনি। মৌসুমের শেষ খেলায় সাবেক দল নিউ সাউথ ওয়েলসের বিপক্ষে ৫/৪৩ লাভ করলে প্রথম ইনিংসে ৯২ রানে গুটিয়ে যায় দলটি।[৫]
ছয় ফুট উচ্চতার অধিকারী হুইটি নতুন বলকে যথেষ্ট সুইং করতে সক্ষম ছিলেন। এছাড়াও, পুরনো বল হাতে নিয়ে দ্রুতগতিসম্পন্ন বামহাতি অর্থোডক্স স্পিন বোলিং করতে পারতেন। ফাস্ট বোলার টিবি কটারের আদর্শ সহযোদ্ধা ছিলেন তিনি। ১৯১০-১১ মৌসুমে নিজ দেশে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এ জুটি বোলিং উদ্বোধনে নেমেছিলেন। এ সিরিজটিকে হুইটি সেরা টেস্ট সফলরূপে আখ্যায়িত করেন।[৬] ৫-টেস্টের সবগুলোয় অংশ নিয়ে মাত্র ১৭.০৮ গড়ে ৩৭ উইকেট নেন। প্রথম টেস্টে ৮ উইকেটের পর মেলবোর্নের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট পান। দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের জন্য ১৭০ রানের লক্ষ্যমাত্রায় নামে। হুইটি তার অন্যতম অসাধারণ বোলিং আক্রমণ পরিচালনা করেন।[৭] ১৬ ওভারে ৬/১৭ নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৮০ রানে অল-আউট করে দেন।[৮] তার চমৎকার ক্রীড়াশৈলী এ সিরিজে অব্যাহত থাকে। তৃতীয় টেস্টে আরও ৮ উইকেট নেন। সফরকারী দলের প্রস্তুতিমূলক খেলায় দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার সদস্যরূপে ৫/৭৯ পান।[৯] চতুর্থ টেস্টে হুইটি তার ব্যক্তিগত সেরা টেস্ট সংগ্রহ অপরাজিত ৩৯* রান তুলেন। ১০ম উইকেট জুটিতে ভার্নন র্যান্সফোর্ডের সাথে মূল্যবান ৮২ রান তুলেন যা উভয় দেশের মধ্যে রেকর্ড ছিল। পরবর্তীতে ২০০৫-০৬ মৌসুমে মাইক হাসি ও গ্লেন ম্যাকগ্রা ভেঙ্গে ফেলেন।[১০][১১]
১৯১১-১২ মৌসুমে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে প্রথম দুই টেস্ট খেলার জন্য তাকে পুনরায় মনোনীত করা হয়। কিন্তু তিনি ৬১.৬৭ গড়ে মাত্র ৩ উইকেট পান। ফলশ্রুতিতে পাঁচ-টেস্টের সিরিজের বাদ-বাকী খেলা থেকে তাকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়। দূর্বল ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করা স্বত্ত্বেও ও সাংগঠনিক জটিলতায় অস্ট্রেলিয়া তাদের সেরা খেলোয়াড়দের রেখেই ইংল্যান্ড সফরে যায়। ১৯১২ সালের ত্রি-দেশীয় প্রতিযোগিতায় তিনি অংশ নেন। দলটিকে প্রায়শঃই বিদেশে প্রেরিত অন্যতম নিকৃষ্টতম অস্ট্রেলিয়া দলরূপে গণ্য করা হয়ে থাকে।[১২] ১৫ খেলোয়াড়ের ১০জনই ইতোপূর্বে ইংল্যান্ড ভ্রমণে যায়নি। ৬ টেস্টে তিনি ২৫ উইকেট পান হুইটি। তন্মধ্যে, ওভালে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭ উইকেট[১৩] ও ওল্ড ট্রাফোর্ডে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫/৫৫ লাভ করেন।[১৪] ঐ সফরে তিনি ১৮.০৮ গড়ে ১০৯ উইকেট পান যা কেবলমাত্র চার্লস ম্যাককার্টনি’র পরেই অবস্থান করেছিল।
টেস্ট জীবন চলাকালে হুইটি নিউজিল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও বারমুদা সফর করেন। ১৯১২ সালে ইংল্যান্ড সফর শেষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গমন করেন। অপ্রত্যাশিতভাবে ফিলাডেলফিয়ান দলের কাছে পরাজিত হয় অস্ট্রেলিয়া দল। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে ২০ রানের অধিক রান সংগ্রহকারী দুইজন ব্যাটসম্যানের একজন ছিলেন তিনি। চূড়ান্ত ওভারের চতুর্থ বলে তিনি বোল্ড হন। তখন অস্ট্রেলিয়ার জয়ের জন্য মাত্র ৩ রানের প্রয়োজন ছিল।[১৫]
১৯১২-১৩ মৌসুমে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া শেফিল্ড শিল্ডের তৃতীয় শিরোপা পায়। মেলবোর্নে ৫/৬৫ ও সিডনিতে একটি রান আউটসহ ৫/৯২ পান তিনি।[১৬][১৭] ১৯১৪-১৫ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের জন্য মনোনীত হন। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে সফরটি পরিত্যক্ত ঘোষিত হয়। এরফলে কার্যত হুইটির টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে।
বিশ্বযুদ্ধ শেষে হুইটি ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা চালিয়ে যেতে থাকেন। ৩৮ বছর বয়সে এসেও হুইটি নিয়মিতভাবে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৫-উইকেট লাভ করতে থাকেন। ১৯২৫-২৬ মৌসুমের শেফিল্ড শিল্ডে সর্বশেষবারের মতো প্রথম-শ্রেণীর খেলায় নিউ সাউথ ওয়েলসের বিপক্ষে অংশ নিয়ে প্রতিপক্ষের আশাভঙ্গের কারণ হয়ে দাঁড়ান। তার স্বপ্নের তারকা ট্রাম্পারের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে স্মরণীয় সাফল্য পান। ট্রাম্পারের বিপক্ষে দশ ইনিংসের সাতটিতে আউট করেন, অন্য তিনটিতে ট্রাম্পার অপরাজিত ছিলেন।
নিচেরসারির ক্রিকেটে ১৯০৮ থেকে ১৯১৫ সাল পর্যন্ত পূর্ব টোরেন্সের পক্ষে খেলেন। প্রতি মৌসুমেই তিনি ৫০-এর অধিক উইকেট পেতেন। ১৯১১ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে চার মৌসুমে জেলার বোলিং গড়ে শীর্ষে আরোহণ করেন। ১৯২০ থেকে ১৯২৭ সাল পর্যন্ত গ্লেনেলগের পক্ষে ও ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত মাউন্ট গাম্বিয়ারের পক্ষে খেলেন। গল্ফার হিসেবেও দক্ষতা প্রদর্শন করেন।
১৯৩৮ সাল থেকে নিজ এলাকা দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার ট্যানট্যানুলার বসবাস করতে থাকেন। ৩০ জানুয়ারি, ১৯৭৪ তারিখে ৮৭ বছর বয়সে তার দেহাবসান ঘটে। এ সময় তিনি প্রাক-বিশ্বযুদ্ধকালীন বয়োঃজ্যেষ্ঠ টেস্ট ক্রিকেটার ছিলেন।