বিলবণীকরণ বলতে সমুদ্রের লবণাক্ত পানিতে (ক্ষেত্রবিশেষে স্থলভাগবেষ্টিত হ্রদের হালকা লবণাক্ত পানি, অত্যধিক মাত্রা খনিজায়িত ভূগর্ভস্থ পানি এবং পৌর বর্জ্যপানিতে) দ্রবীভূত খনিজ লবণ দূর করাকে বোঝায়।[১] এই প্রক্রিয়ার ফলে অন্যথায় অব্যবহারযোগ্য পানি মানুষের দ্বারা পান করার উপযুক্ত হয়। এছাড়া বিলবণীকৃত পানি সেচ, শিল্প ও অন্য বিভিন্ন উদ্দেশ্যে কাজে লাগানো যায়। বিদ্যমান বিলবণীকরণ প্রযুক্তিগুলি পরিচালনা করতে অনেক তাপশক্তির প্রয়োজন হয়, এবং জীবাশ্ম জ্বালানি পুড়িয়ে সাধারণত এই শক্তি সরবরাহ করা হয়, এ কারণে এই প্রক্রিয়াটি ব্যয়বহুল। এছাড়া যান্ত্রিক পদ্ধতিতেও (বিপরীত অভিস্রবণ) বিলবণীকরণ সম্পাদন করা হতে পারে। তুলনামূলকভাবে ভূপৃষ্ঠদেশীয় জল, ভূগর্বস্থ জল, পানির পুনঃচক্রায়ন এবং পানির সংরক্ষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সুপেয় পানি আহরণ অনেক সাশ্রয়ী। অধিকন্তু, বিলবণীকরণ কারখানাগুলি থেকে নিঃসৃত গ্রিনহাউস গ্যাস এবং বর্জ্য লবণাক্ত পানি (ব্রাইন)[২] পরিবেশের উপর গুরুত্বপূর্ণ নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। একারণে সাধারণত শুধুমাত্র যেসব স্থানে বিশুদ্ধ পানি অর্থনৈতিকভাবে সুলভ নয় এবং যেখানে উপর্যুক্ত বিকল্পগুলি অবর্তমান, সেসব স্থানেই বিলবণীকরণ প্রক্রিয়াটি ব্যবহৃত হয়।[৩][৪]
পানি ছাড়াও অন্যান্য লক্ষ্যবস্তু থেকেও লবণ ও খনিজ নিষ্কাশন করা হতে পারে। যেমন কৃষিতে মাটির বিলবণীকরণ করা হতে পারে।[৫]
বহু সমুদ্রগামী জাহাজ ও ডুবোজাহাজে পানির বিলবণীকরণের ব্যবস্থা থাকে। আধুনিককালে এসে মানব ব্যবহারের জন্য সাশ্রয়ী উপায়ে কীভাবে লবণাক্ত পানি থেকে সুপেয় পানি বা পানীয় জল তৈরি করা যায়, সে ব্যাপারে গবেষণা হচ্ছে।