বিলি গ্রিফিথ

বিলি গ্রিফিথ
আনুমানিক ১৯৭১ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে বিলি গ্রিফিথ
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
স্টুয়ার্ট ক্যাথি গ্রিফিথ
জন্ম(১৯১৪-০৬-১৬)১৬ জুন ১৯১৪
ওয়ান্ডসওয়ার্থ, লন্ডন, ইংল্যান্ড
মৃত্যু৭ এপ্রিল ১৯৯৩(1993-04-07) (বয়স ৭৮)
ফেল্পহাম, পশ্চিম সাসেক্স, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
ভূমিকাউইকেট-রক্ষক, প্রশাসক
সম্পর্কমাইক গ্রিফিথ (পুত্র)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৩৩২)
১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ টেস্ট৯ মার্চ ১৯৪৯ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৩৪ – ১৯৩৬কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়
১৯৩৪সারে
১৯৩৭ – ১৯৫৪সাসেক্স
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ২১৫
রানের সংখ্যা ১৫৭ ৪,৮৪৬
ব্যাটিং গড় ৩১.৪০ ১৬.৪২
১০০/৫০ ১/০ ৩/১৫
সর্বোচ্চ রান ১৪০ ১৪০
বল করেছে ১৮
উইকেট
বোলিং গড়
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৫/০ ৩২৮/৮০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৭ এপ্রিল ২০১৮

স্টুয়ার্ট ক্যাথি গ্রিফিথ, সিবিই (ইংরেজি: Billy Griffith; জন্ম: ১৬ জুন, ১৯১৪ - মৃত্যু: ৭ এপ্রিল, ১৯৯৩) লন্ডনের ওয়ান্ডসওয়ার্থ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ও ক্রিকেট প্রশাসক ছিলেন।[] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। ১৯৪৮ থেকে ১৯৪৯ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে তিনটি টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালন করতেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ১৯৩৪ থেকে ১৯৩৬ সময়কালে কেমব্রিজ, ১৯৩৪ সালে সারে, ১৯৩৫-৩৬ মৌসুম থেকে ১৯৫৩ সময়কালে এমসিসির পক্ষে এবং ১৯৪৭-৪৮ মৌসুম থেকে ১৯৪৮-৪৯ মৌসুম পর্যন্ত ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেছেন বিলি গ্রিফিথ

প্রারম্ভিক জীবন

[সম্পাদনা]

লন্ডনের ওয়ান্ডসওয়ার্থে জন্মগ্রহণকারী বিলি গ্রিফিথ ডালউইচ কলেজে অধ্যয়নের পর কেমব্রিজের পেমব্রোক কলেজে পড়াশোনা করেছেন।[] ডালউইচে চার বছর অধ্যয়নকালীন সময়ে প্রথম একাদশের সদস্য ছিলেন ও ১২০০ রানের অধিক সংগ্রহ করেন। তবে হিউ বার্টলেটের কারণে তার সাফল্য অনেকাংশেই চাঁপা পড়ে যায়। ঐ সময় তিনি উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালন করতেন। কেমব্রিজে থাকাবস্থায় দ্বিতীয় বছরেই ব্লু লাভ করেন। ১৯৩৭ সালে পল গিবের কাছে কেমব্রিজ দলের সদস্যের স্থানচ্যুতি ঘটে তার। কেমব্রিজ থেকে স্নাতকধারী হবার পর ডালউইচে ফিরে যান ও ক্রিকেট শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।

কাউন্টি ক্রিকেটে অংশগ্রহণ

[সম্পাদনা]

১৯৩৫-৩৬ থেকে ১৯৩৬-৩৭ মৌসুমে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের অধিনায়কের দায়িত্ব পালনকারী এরল হোমসের নেতৃত্বাধীন দলের সদস্য ছিলেন। এ সময়ে তিনি অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সফরে যান।

১৯৩৯ সালে সাসেক্সের প্রথম পছন্দের উইকেট-রক্ষক ছিলেন। ১৯৪৬ সালে সাসেক্সের অধিনায়ক-সচিব উভয় দায়িত্ব পালন করেন। তবে এক বছর পরই অধিনায়কের দায়িত্ব থেকে স্বেচ্ছায় চলে আসেন।

বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ

[সম্পাদনা]

১৯৩৮ সালে অফিসার ট্রেইনিং কোর থেকে কমিশন্ডপ্রাপ্ত হন। ১৯৩৯ সালে রয়্যাল আর্মি সার্ভিস কোরে স্থানান্তরিত হন বিলি গ্রিফিথ। পরবর্তীকালে হিউ বার্টলেটের সাথে গ্লিডার পাইলট রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন। দ্বিতীয়সারির কর্মকর্তা হিসেবে ৬ষ্ঠ এয়ারবোর্ন ডিভিশনের মেজর জেনারেল উইন্ডি গেলের স্থলাভিষিক্ত হন ও দায়িত্ব পালন করেন।

নরম্যান্ডিতে ঝড়ের কবলে পরে অবতরণ করতে বাধ্য হন। আর্নহেমের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন ও ডিস্টিংগুইশড ফ্লাইং ক্রস পদকপ্রাপ্ত হন। যুদ্ধের পরও তিনি টেরিটরিয়াল আর্মিতে থেকে যান ও লেফটেনেন্ট কর্নেল পদবী ধারণ করেন।

টেস্ট ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

চমৎকার উইকেট রক্ষণের কারণে ১৯৪৭-৪৮ মৌসুমে এমসিসি দলের সদস্যরূপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের জন্য মনোনীত হন তিনি। অভিষেক টেস্টে তিনজন ব্যাটসম্যানের অসুস্থতার কারণে ব্যাটিং উদ্বোধনে নামেন। ছয় ঘণ্টাব্যাপী ইনিংসটি ১৪০ রানে শেষ হয়। এরফলে একমাত্র ইংরেজ খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তীকালে টেস্ট অভিষেকে সেঞ্চুরি করার সবিশেষ কৃতিত্ব প্রদর্শন করেছেন।

১৯৪৮-৪৯ মৌসুমে এফ.জি. মানের নেতৃত্বাধীন দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। সিরিজের শেষ দুই টেস্টে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৪৬ থেকে ১৯৫৯ সময়কালে গডফ্রে ইভান্সের পর দলের একমাত্র উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালন করতেন।

১৯৭৪ সালে ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে আরুনডেল ক্যাসল ক্রিকেট ক্লাব ফ্রেন্ডসের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। খেলা থেকে চলে আসার পর দ্য সানডে টাইমসে ক্রিকেট সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করেন। দুই বছর এ দায়িত্ব পালনের পর ১৯৫২ সালে লর্ডসভিত্তিক এমসিসিতে রনি এয়ার্ডের সাথে দুইজন সহকারী সচিবের অন্যতম হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৬২ সালে এমসিসিতে সচিব হিসেবে এয়ার্ডের স্থলাভিষিক্ত হন।

এ পর্যায়ে শৌখিন খেলোয়াড়ের মর্যাদা বিলুপ্ত করেন, একদিনের ক্রিকেটের প্রচলন ঘটান, টেস্ট ও কাউন্টি ক্রিকেট বোর্ড, ক্রিকেট কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করেন ও ব্যাসিল ডি’অলিভেইরা কেলেঙ্কারি অবলোকন করেন।

১৯৬২-৬৩ মৌসুমে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করেন। ফলে অস্ট্রেলিয়া সফরে এমসিসি দলের ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব থেকেও নিজেকে দূরে রাখেন। কেবলমাত্র নরফোকের ডিউকের জন্য একমাস মুক্ত ছিলেন।

এম. জে. কে. স্মিথের সহজাত দৃষ্টিভঙ্গীর কারণে ১৯৬৫-৬৬ মৌসুমের এমসিসি দলের সফরে গ্রিফিথ তাকে সর্বক্ষমতা প্রয়োগের বিষয়টি মঞ্জুর করেন। সৌভাগ্যবশতঃ কূটনৈতিক কারণে তিনি এর সদ্ব্যবহার করেননি। কিন্তু, ঐ সফরে আক্রমণধর্মী খেলা উপহার দেয়ার জন্য নির্দেশপ্রাপ্ত হন। তন্মধ্যে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলা চলাকালীন স্মিথ দলের ইনিংস ঘোষণার বিষয়ে জানতে চাইলে ‘এখনি’ করার কথা জানান। খেলার শেষ মিনিটে এমসিসি নয় রানের জয় তুলে নেয়। হতবিহ্বল স্মিথ শেষবারের মতো লোহিত বর্ণের অধিকারী ব্যবস্থাপকের পরামর্শ গ্রহণ ও পর্যবেক্ষণ করলেন।[]

ব্যক্তিগত জীবন

[সম্পাদনা]

তার সন্তান মাইক গ্রিফিথ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেছেন ও সাসেক্সের অধিনায়কত্ব করেছেন। জীবনের শেষদিকে দীর্ঘদিন যাবৎ অসুস্থ ছিলেন। অতঃপর ৭৮ বছর বয়সে ১৯৯৩ সালে পশ্চিম সাসেক্সের ফেল্পহাম এলাকায় বিলি গ্রিফিথের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 73আইএসবিএন 1-869833-21-X 
  2. GRIFFITH, Stewart Cathie[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], Who Was Who, A & C Black, 1920–2016 (online edition, Oxford University Press, 2014)
  3. p132, E.W. Swanton, Swanton in Australia with MCC 1946–1975, Fontana, 1977

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]
ক্রীড়া অবস্থান
পূর্বসূরী
এ. জে. হোমস
সাসেক্স কাউন্টি ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯৪৬
উত্তরসূরী
হিউ বার্টলেট