বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস একটি সচেতনতামূলক দিন যেটি বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর ১০ই সেপ্টেম্বর আত্মহত্যা প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্বের অনেক দেশে ২০০৩ সাল থেকে পালন করা হয়।[১] এই দিবসটি পালন করতে আন্তর্জাতিক আত্মহত্যা প্রতিরোধ সংস্থার সাথে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বৈশ্বিক মানসিক স্বাস্থ্য ফেডারেশন একসাথে কাজ করে।[২] ২০১১ সালে অনুমনিক ৪০টি দেশ এই দিবসটি উদ্যাপন করে। ২০১৪ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার করা মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্বের নিম্ন আয়ের কোন দেশেই আত্মহত্যা প্রতিরোধে কোন কৌশল বা কর্মপন্থা ঠিক করা নেই যেখানে নিম্ন মধ্য আয়ের দেশসমূহের ১০% এবং উচ্চ আয়ের সব দেশেই এই প্রতিরোধ ব্যবস্থা রয়েছে।[৩] অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করা হয়।[৪]
২০০৩ সালে সর্বপ্রথম পালিত হওয়া দিবসে, ১৯৯৯ সালের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এ বিষয়ে নেওয়া কিছু পদক্ষেপেরও আলোকপাত করা হয় যেখানে প্রধান কৌশল নির্ধারণ করা হয়:
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাম্প্রতিক তথ্য অনুসারে এটি প্রতিরোধে প্রধান বাধা হলো সামাজিক সচেতনতার অভাব ও আত্মহত্যার সচেতনতায় উন্মুক্ত আলোচনার অভাব এবং এ বিষয়ে সঠিক তথ্যের অভাব: "আত্মহত্যার সংবেদনশীলতা এবং কিছু দেশে আত্মঘাতী আচরণের অবৈধতার জন্য অনেক সময়ই আত্মহত্যার বিষয়টি সাধারণ মৃত্যু হিসেবেও বিষয়শ্রেণীভূক্ত করা হয়ে থাকে"[৫][৬]
কারণ : পারিবারিক নির্যাতন, কলহ, শারীরিক-মানসিক নির্যাতন, পরীক্ষা-প্রেমে ব্যর্থতা, দারিদ্র্য, বেকারত্ব, প্রাত্যহিক জীবনের অস্থিরতা, নৈতিক অবক্ষয় ও মাদক ইত্যাদি কারণে মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
পরিসংখ্যান : ২০১৪ সালে প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন মোতাবেক প্রতি বছর বিশ্বে ৮ লাখেরও বেশি মানুষ আত্মহত্যা করে। প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন মানুষ আত্মহত্যা করে। এছাড়া এর প্রায় ১৫ থেকে ২০ গুণ মানুষ আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, আত্মহত্যা প্রবণতার ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান দশম। বাংলাদেশে প্রতি বছর কমপক্ষে ১৩ হাজার থেকে ৬৪ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করে। দেশে আত্মহত্যায় মৃত্যুহার প্রতি লাখ মানুষে কমপক্ষে ৭ দশমিক ৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৬ জন। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৩৬৪ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে। ওই আট মাসে আত্মহত্যা করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৯৪ শতাংশ স্কুলগামী শিক্ষার্থী।[৪]
আত্মহত্যায় অনেকগুলো আন্তঃসম্পর্কিত এবং অন্তর্নিহিত বিষয় কাজ করে যা ব্যথা এবং হতাশার অনুভূতি সৃষ্টি করে আত্মহত্যার প্রবণতা তৈরি করতে পারে। নিজেকে হত্যার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান যেমন, অস্ত্র, ঔষধ এবং বিষও অনেক সময় এর প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।
— প্রচারাভিযান বিজ্ঞপ্তি