বিশ্বসেরা কীর্তি বা বিশ্বরেকর্ড হচ্ছে নির্দিষ্ট কোনও ব্যক্তিগত কিংবা দলগত বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, দল কিংবা দেশ কর্তৃক সবচেয়ে সেরা দক্ষতা, কুশলতা নির্দিষ্ট মানদণ্ড তথা শারীরিক সক্ষমতা ও বিচার-বুদ্ধির ভিত্তিতে প্রদর্শনের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিতি বহন করা। বিশ্বরেকর্ড গড়ার ফলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের রেকর্ড বহিতে ব্যক্তি বা দলের নাম, স্থান, সময় ও তারিখ, সংশ্লিষ্ট বিষয়ের পারিসংখ্যানিক তথ্যাদি লিখিত বা গণমাধ্যমে তুলে ধরা হয়। এতে ব্যক্তি বা দলের সাফল্যজনক ভাবমূর্তি অনেকখানি অগ্রসর হয়। দেশের সীমারেখা ও গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববাসীর কাছে বিশ্বরেকর্ডের বার্তা পৌঁছে যা দেশের জন্যে সুবিশাল গৌরব ও সম্মাননা বয়ে নিয়ে আসে। প্রযুক্তিতে উৎকর্ষ, উপাধি ধারণ-গ্রহণ, সবচেয়ে বড়-ছোট-মোটা-লম্বা ইত্যাদি বহুবিধ বিষয়াদির খুঁটিনাটি গিনেজ বিশ্বরেকর্ডে তালিকাভূক্ত করা হয়। তবে, বিশ্বরেকর্ডের সবচেয়ে বেশি প্রয়োগ ঘটে খেলাধুলা বিষয়ে।
যুক্তরাষ্ট্রে ওয়ার্ল্ড রেকর্ড বা বিশ্বরেকর্ড শব্দটি একটি অতি সাধারণ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। তবে বিশ্বসেরা শব্দটিরও প্রচলন রয়েছে যা অ্যাথলেটিক্স ক্রীড়া বিষয় হিসেবে ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড এবং রাস্তার দৌঁড় প্রতিযোগিতায় ব্যবহৃত হয়। তবে কিছু কিছু বিষয়াদি যেমন - ১৫০ মিটার দৌঁড় কিংবা ব্যক্তিগত ক্রীড়া হিসেবে ডেকাথলনের সেরা ফলাফল প্রয়োজনীয় শর্তাদি পূরণ না করায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বরেকর্ডরূপে গণ্য করা হয় না।
রেকর্ড গড়া হয় পুরনো রেকর্ড ভঙ্গের জন্যে। মালয়েশিয়া এমন একটি দেশ যেখানে বিশ্বরেকর্ড গড়া ও ভাঙ্গা একধরনের জাতীয় ছেলেখেলা হিসেবে পরিচিত হয়ে আছে।[১] ভারতে বহুবিধ বিশ্বরেকর্ড গড়েছে এবং তা ভাঙ্গাও অত্যন্ত জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। দেশটিতে স্থানীয়ভাবে গিনেস বুক অফ রেকর্ডসকে অনুসরণ করে কোমল পানীয়ের নামানুসারে লিমকা বুক অব রেকর্ডস পুস্তক নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হয়ে থাকে।
কিছু কিছু ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় সৃষ্ট বিশ্বরেকর্ডগুলো সংশ্লিষ্ট ক্রীড়ার নিয়ন্ত্রক সংস্থা কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত হতে হয়। তন্মধ্যে - অ্যাথলেটিক্সের সৃষ্ট বিশ্বরেকর্ডগুলো আন্তর্জাতিক অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড, রাস্তায় দৌঁড় এবং রাস্তায় হাঁটা প্রভৃতি ক্রীড়া বিষয়গুলোয় সেরা দক্ষতা প্রদর্শনের মাধ্যমে বিশ্বরেকর্ড সৃষ্টি হয়।
পুরুষদের ১০০ মিটার ও ২০০ মিটার দৌঁড়ে জ্যামাইকার অধিবাসী উসাইন বোল্ট বর্তমান বিশ্বরেকর্ডের অধিকারী। তিনি ২০০৯ সালে জার্মানির বার্লিনে অনুষ্ঠিত অ্যাথলেটিক্সের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপে এ রেকর্ড দু'টো গড়েন যথাক্রমে ৯.৫৮ এবং ১৯.১৯ সেকেন্ড সময় নিয়ে।[২] আর নারীদের মধ্যে এ মর্যাদার অধিকারী হচ্ছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরেন্স গ্রিফিথ-জয়নার। ১৯৮৮ সালে তিনি উভয় বিষয়ে রেকর্ড দু'টো গড়েন ১০.৪৯ এবং ২১.৩৪ সেকেন্ডে। তন্মধ্যে মহিলাদের ২০০ মিটার দৌঁড়ের বিশ্বরেকর্ডটি গড়েন সিউল অলিম্পিকে।