বিহারের ১৯০৭ সালের মানচিত্র। বৃহত্তর বাংলার উত্তর অঞ্চল দেখানো হয়েছে। ব্রিটিশ ভারতের ১৮৭৩-৭৪ এর বিহার দুর্ভিক্ষের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চলগুলির মধ্যে মুঙ্গের জেলা অন্যতম।
১৮৭৩-৭৪ এর বিহারের দুর্ভিক্ষ যা ১৮৭৩-৭৪ এর বাংলার দুর্ভিক্ষ নামেও পরিচিত। ব্রিটিশ ভারতেরবিহার প্রদেশ, বাংলা ও তার পার্শ্ববর্তী প্রদেশগুলি বিশেষত উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ এবং ওউধ অঞ্চল খরাজনিত এই দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে। প্রায় ১,৪০,০০০ বর্গকিলোমিটার (৫৪,০০০ বর্গমাইল) অঞ্চল এবং ২১.৫ মিলিয়ন জনগণ এই দুর্ভিক্ষে আক্রান্ত হয়।[১]স্যার রিচার্ড টেম্পল দুর্ভিক্ষ চলাকালীন বাংলার নবনিযুক্ত লেফটেন্যান্ট গভর্নর ছিলেন। অনভিজ্ঞতা সত্ত্বেও দুর্ভিক্ষ আক্রান্ত অঞ্চলে ত্রাণ পৌঁছিয়ে দিতে সফল হয়েছিলেন। এই সফলতার চূডান্ত ফলাফল এই যে দুর্ভিক্ষের সময় কম মানুষের মৃত্যু ঘটেছে (ঘটেনি বললেই চলে)।[২]
রাণী ভিক্টোরিয়ার দুর্ভিক্ষ ত্রাণ সহায়তা হিসাবে £১,০০০ পাউন্ড অনুদানের কথা জানিয়ে লন্ডনের পেনি ইলাস্ট্রেটেডের চিত্রণ ও গল্প। যেহেতু বিহার তখন বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিতে ছিল বলে বিহার দুর্ভিক্ষটি ১৮৭৩-৭৪ এর বাংলার দুর্ভিক্ষ নামেও পরিচিত ছিল। দুইবছর আগে ব্রিটেনের রাণী ভিক্টোরিয়াকে ভারতের সম্রাজ্ঞী উপাধি দেওয়ার দুই বছর আগে থেকে তিনি এই পদবীটি ব্যবহার করতেন।
দুর্ভিক্ষ আসন্ন বুঝতে পেরে ব্রিটিশ সরকার যে-কোন মূল্যে সকল মানুষের জীবন বাঁচানোর সিদ্ধান্ত নেয়।[১] একটি প্রাণও যাতে না ঝরে যায় সেদিকে খেয়াল রেখে সরকার বার্মা থেকে ৪৫০,০০০ টন চাল আমদানি করতে ৪০ মিলিয়ন রূপি ব্যয় করে। ২২.৫ মিলিয়ন রূপি ব্যয়ে ৩০০ মিলিয়ন ইউনিট খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। দুর্ভিক্ষ চলাকালীন একজন ব্যক্তিকে এক দিনের জন্য এক ইউনিট ত্রাণ দেওয়া হত।
এছাড়াও এই দুর্ভিক্ষের কারণে প্রথমবারের মতো ব্রিটিশ সরকারি কর্মকর্তারা বাংলার গ্রামগুলি পরিদর্শন করে। তারা যাদের কর্মসংস্থানের প্রয়োজন তাদের তালিকা তৈরি করে।[৩] স্যার রিচার্ড টেম্পলের স্ববর্ণিত এক বিবরণে (সমসাময়িক চিঠিতে) উল্লেখ করেন যে
উদার ত্রাণ সাহায্যের ফলে শ্রমজীবীরা ভাল শারীরিক অবস্থায় ছিলেন। অবশেষে যখন বৃষ্টি শুরু হল তখন তারা তাদের নিজ নিজ শ্রমক্ষেত্রে ফিরে আসতে থাকেন। শ্রমিকদের নিজ শ্রমক্ষেত্রে আবার ফিরে আসা দেখে ত্রাণ কর্মকর্তাগণ দুর্ভিক্ষ শেষ তা বুঝে যান এবং সরকারি ত্রাণের উপর তারা নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে তা জানান।[৪]
সড়ক নির্মাণ দুর্ভিক্ষ ত্রাণ কাজের একটি বড় প্রকল্পে পরিণত হয়েছিল।[৫] দুর্ভিক্ষ শুরুর ঠিক আগে রোড সেস আইন প্রণয়ন করা হয়।[৬] রাস্তাঘাট নির্মাণ, বিশেষত কিছু সেতু ও রাস্তা ধাতবকরণ এবং সেতু নির্মাণের জন্য তহবিল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। ১৮৭৪ সালে বার্মায় শুরু হওয়া ইরাবতী উপত্যকায় রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে বাংলার বহু দুর্ভিক্ষপীড়িত অভিবাসীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল।[৭]
যতটা প্রবল অনুমান করা হয়েছিল দুর্ভিক্ষটি ততটা তীব্রভাবে আঘাত হানতে পারে নি। ত্রাণকার্য শেষে ১০০,০০০ টন খাদ্য-শস্য অব্যবহৃত অবস্থায় পড়েছিল।[৪] ধারণা করা হয়, মুদ্রাস্ফীতি সামঞ্জস্য করার পরেও ১৯৭৩-এর মহারাষ্ট্র দুর্ভিক্ষের সময়ে (স্বাধীন ভারতে) অনুরূপ ত্রাণ প্রচেষ্টার মোট বাজেটের তুলনায় এই দুর্ভিক্ষের সরকারি ব্যয় ৫০ শতাংশ বেশি ছিল।
যেহেতু ত্রাণ প্রচেষ্টার জন্য নির্ধারিত বাজেট অত্যধিক বেশি ছিল তাই ব্রিটিশ কর্মকর্তারা স্যার রিচার্ড টেম্পলের সমালোচনা করেছিলেন। সমালোচনায় কর্ণপাত করে তিনি সরকারি দুর্ভিক্ষ ত্রাণ নীতিমালায় সংশোধন আনেন।[২] ফলে পরবর্তীকালে বোম্বাই এবং দক্ষিণ ভারতে ১৮৭৬-৭৮ এর মহা দুর্ভিক্ষে ত্রাণের নতুন নীতিমালা অনুযায়ী বাজেট অতি সীমিত রাখা হয়েছিল যার ফলে দুর্ভিক্ষে প্রচুর মানুষ মারা গিয়েছিল।
Hall-Matthews, David (1996), "Historical Roots of Famine Relief Paradigms: Ideas on Dependency and Free Trade in India in the 1870s", বিপর্যয়, 20 (3): 216-230, ডোই : 10,1111 / j.1467-7717.1996 .tb01035.x
"Chapter X: Famine", ভারতের ইম্পেরিয়াল গেজেটিয়ার, তৃতীয়: দি ইন্ডিয়ান এম্পায়ার, ইকোনমিক, হাইস মেজেস্টির সেক্রেটারি অব স্টেট অব ইন্ডিয়া অব কাউন্সিলের অধীনে প্রকাশিত, অক্সফোর্ডের ক্লারেনডন প্রেস, ১৯০৭, পিপি। 475-502
Nisbet, John (1901), বার্মা আন্ডার ব্রিটিশ বিধি - এবং এর আগে, দ্বিতীয়, ওয়েস্টমিনিস্টার: আর্কিবাল্ড কনস্টেবল এবং কোং লি।
Yang, Anand A. (1998), বাজার ভারত: মার্কেটস, সোসাইটি, এবং বিহারের ঔপনিবেশিক রাজ্য, বার্কলে: ক্যালিফোর্নিয়া প্রেসের বিশ্ববিদ্যালয়
Bhatia, B. M. (1991), Famines in India: A Study in Some Aspects of the Economic History of India With Special Reference to Food Problem, 1860–1990, Stosius Inc/Advent Books Division, p. 383, ISBN 81-220-0211-0
Dutt, Romesh Chunder (1900), Open Letters to Lord Curzon on Famines and Land Assessments in India, London: Kegan Paul, Trench, Trubner & Co. Ltd (reprinted 2005 by Adamant Media Corporation), ISBN 1-4021-5115-2
Dyson, Tim (1991), "On the Demography of South Asian Famines: Part I", Population Studies, 45 (1): 5–25, doi:10.1080/0032472031000145056, JSTOR 2174991
Dyson, Tim (1991), "On the Demography of South Asian Famines: Part II", Population Studies, 45 (2): 279–297, doi:10.1080/0032472031000145446, JSTOR 2174784
Famine Commission (1880), Report of the Indian Famine Commission, Part I, Calcutta
Ghose, Ajit Kumar (1982), "Food Supply and Starvation: A Study of Famines with Reference to the Indian Subcontinent", Oxford Economic Papers, New Series, 34 (2): 368–389
Report of the Commissioners Appointed to Enquire into the Famine in Bengal and Orissa in 1866, I, II, Calcutta: Government of India, 1867
Hall-Matthews, David (2008), "Inaccurate Conceptions: Disputed Measures of Nutritional Needs and Famine Deaths in Colonial India", Modern Asian Studies, 42 (1): 1–24, doi:10.1017/S0026749X07002892
Hill, Christopher V. (1991), "Philosophy and Reality in Riparian South Asia: British Famine Policy and Migration in Colonial North India", Modern Asian Studies, 25 (2): 263–279, doi:10.1017/s0026749x00010672
Klein, Ira (1973), "Death in India, 1871-1921", The Journal of Asian Studies, 32 (4): 639–659, doi:10.2307/2052814
McAlpin, Michelle B. (1983), "Famines, Epidemics, and Population Growth: The Case of India", Journal of Interdisciplinary History, 14 (2): 351–366, doi:10.2307/203709
Temple, Sir Richard (1882), Men and events of my time in India, London: John Murray.