বুনো কীটকল | |
---|---|
Leaf | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ/রাজ্য: | প্লান্টি (Plante) |
গোষ্ঠী: | ট্র্যাকিওফাইট (Tracheophytes) |
ক্লেড: | সপুষ্পক উদ্ভিদ (অ্যাঞ্জিওস্পার্মস) |
ক্লেড: | ইউডিকটস |
বর্গ: | ক্যারিওফাইলেলস (Caryophyllales) |
পরিবার: | Droseraceae Sol. ex J.Ellis 1768 |
গণ: | Dionaea J.Ellis |
প্রজাতি: | D. muscipula |
দ্বিপদী নাম | |
Dionaea muscipula J.Ellis | |
Distribution | |
প্রতিশব্দ[২] | |
|
ভেনাস ফ্লাইট্র্যাপ বা বুনো কীটকল (বৈজ্ঞানিক নাম: Dionaea muscipula) একধরনের পতঙ্গভুক উদ্ভিদ।
এ উদ্ভিদটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর ক্যারোলিনার জলাভূমিতে পাওয়া যায়।
সম্পূর্ণ একটি উদ্ভিদের দৈর্ঘ্য প্রায় ১ ফুট (৩০ সে.মি.)। বসন্তকালে এর লম্বা মাথার ওপর চমৎকার সাদা ফুল ফোটে। কিন্তু উদ্ভিদটির সবচেয়ে দর্শনীয় জিনিসটি হচ্ছে এর পাতা। ফাইট্র্যাপের সরু সবুজ পাতাগুলো উদ্ভিদটির গোড়ার চারপাশে জন্মে। প্রত্যেকটি পত্রফলক ঝিনুকের খোলসে মত দুইখন্ডে বিভক্ত হয়ে যায়। প্রত্যেকটি খন্ডের মাঝখানে একটি মধ্যশিরা থাকে। খন্ড দুটি দৈর্ঘ্যে প্রায় ১ ইঞ্চি (২.৫ সে.মি.)। খন্ড দুটির ভেতরের তল সাধারণত লাল রঙের হয়ে থাকে। প্রত্যেকটি খন্ডের চারপাশের বাইরের প্রান্তে অসংখ্য শক্ত, সূচালো শুঙ্গ থাকে। এগুলোকে বলা হয় সিলিয়া। প্রত্যেকটি খন্ডের ভেতরের দিকে তিনটি ট্রিগার হেয়ার থাকে।
সিলিয়ার ভেতরের ট্রিগার হেয়ারগুলোই উদ্ভিদের ফাঁদ। এগুলো দেখতে পাতার মত। পাতার খন্ড দুটি খোলা অবস্থায় ফাঁদটি শিকার করার জন্য তৈরি থাকে। উদাহরণস্বরূপঃ একটি মাকড়সা পাতার লাল রঙ আর পাতার কিনারায় থাকা মধুর মত মিষ্টি জিনিসটির প্রতি আকৃষ্ট হয়। মাকড়সাটি পাতার কিনারায় আসামাত্রই ট্রিগার হেয়ারগুলোতে টান পড়ে। তবে ফাঁদটি বন্ধ হওয়ার জন্য দুটি সঙ্কেতের প্রয়োজন। একটি ট্রিগার হেয়ার দু'বার স্পর্শ করলে ফাঁদটি সক্রিয় হয়ে ওঠে। উদ্ভিদটি বুঝতে পারে যে, কোনো ঘাস বা পাতার টুকরো নয় বরং কোন জ্যান্ত প্রাণী ফাঁদে আটকা পড়েছে। দু'বার সংকেত পেলেই পাতার খন্ড দুটি খুব দ্রুত মাকড়সাটির চারপাশে এসে বন্ধ হয়ে যায়। সিলিয়াগুলো একসাথে বন্ধ হয়ে পালানোর পথও বন্ধ করে দেয়। এ পর্যায়ে খুব ছোট্ট একটি মাকড়সা কিংবা পোকামাকড় সিলিয়ার ভেতর দিয়ে ঢুকে যেতে পারে। উদ্ভিদটি এ ধরনের পোকামাকড়কে ভেতরে ঢুকতে বাধা দেয়। ফাঁদের দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর পরই পাতার ভেতর থেকে এক ধরনের তরল পদার্থ বেরিয়ে আসে। তরলের মধ্যে মাকড়সাটি ডুবে যায়। এ তরল পদার্থের মধ্যে থাকে পরিপাকে সাহায্যকারী উৎসেচক। এগুলো মাকড়সার দেহটিকে এমন অবস্থাতে পরিণত করে ফেলে যা থেকে উদ্ভিদটি সহজেই পুষ্টি উপাদান সংগ্রহ করতে পারে। উৎসেচক যত বেশি পারিমাণে আসে মাকড়সার মৃতদেহের নরম অংশগুলোও ততই ধীরে ধীরে গলতে থাকে। ৮/১০ দিন পর মাকড়সাটির দেহের অংশগুলো নাইট্রোজেনসমৃদ্ধ তরল পদার্থে পরিণত হয় যা উদ্ভিদ দ্বারা শোষিত হয়ে যায়। মৃতদেহের যেসব শক্ত অংশগুলো উদ্ভিদটি হজম করতে পারেনি সেগুলো ফাঁদটি খুলে বের করে দেয়। ফাঁদ আবার আগের মত পেতে রাখা হয়। নষ্ট হয়ে যাবার আগে একটি ফাঁদ অন্তত তিনবার শিকার ধরে ফাইট্র্যাপ গাছকে সহায়তা করে।