রোটি বুয়া বা বুয়াইয়া রুটি একটি মিষ্টি রুটি যার আকার অনেকটা কুমিরের মতন দেখতে হয়।[১] এই রুটি বেতাউই জনজাতি -এর একটি ঐতিহ্য। ঐতিহ্যবাহী বেতাউই বিয়ের অনুষ্ঠানের এক গুরুত্বপুর্ন সাংস্কৃতিক চিহ্ন হিসাবে এই বুয়াইয়া রুটি পরিবেশিত হয়।[১][২] নবদম্পতির বৈবাহিক জীবনের পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস ও বিশ্বস্ততার প্রতীক হিসাবে এই রুটি পরিবেশন করা হয়।
বাটাভিয়া (জাকার্তা) অঞ্চলে পর্তুগিজ এবং ডাচরা উপনিবেশ গঠনের পর সেই অঞ্চলে রুটি এবং প্যাস্ট্রি তৈরির প্রচলন হয়েছিল। ইউরোপীয়দের আগমনের আগে স্থানীয় অঞ্চলে কুমিরের আকৃতির একধরনের খাবার প্রস্তুত করা হত যার প্রধান উপাদান ছিল ইয়াম বা কাসাভা।[৩] ঔপনিবেশিক যুগে ডাচ রন্ধনপ্রণালী দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বুয়াইয়া রুটির আধুনিক সংস্করণটি প্রস্তুত হয়েছিল।[৪]
বেতাউই জনজাতির লোকেরা বিশ্বাস করে যে কুমির শুধুমাত্র একজন দাম্পত্য সঙ্গীর সাথেই সারাজীবন বসবাস করে, তাই কুমির হল তাদের কাছে বিশ্বস্ততার প্রতীক। এই রুটি নব বিবাহিত দম্পতিদের বিশ্বস্ততার প্রতীক রূপে গন্য হয়।[১][২] বিবাহের সময় কনের পক্ষের লোকেরা এই রুটি প্রস্তুত করে এবং উপস্থিত অতিথিগন এই রুটির মান যাচাই করে। রুটির প্রকৃতিকে হবু বরের চরিত্রের সাথে তুলনা করা হয়।[৫] ঐতিহ্যগতভাবে তারা কুমিরকে অত্যন্ত ধৈর্যশীল বলে মনে করে। [৫] বিশ্বস্ততার পাশাপাশি এই রুটি অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠারও প্রতীকস্বরূপ।[৬] যাইহোক, আধুনিক সংস্কৃতিতে কুমিরের এই প্রতীক পরিবর্তিত হয়েছে। একটি কুমির খারাপ বা নেতিবাচক জিনিস বোঝাতেও ব্যবহার করা হয়, যেমন বুয়া জুদি (একজন জুয়াড়ি), বুয়া মিনম (একজন মদ্যপ) এবং বুয়া দারাত (একজন অবিশ্বস্ত ব্যক্তি)।[১][৫] এই কারনেই বুয়াইয়া রুটির কুমিরের আকারে সাম্প্রতিক কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
ভিন্নমতে বলা হয় যে এই রুটি পুরুষের পুরুষত্বের চিহ্নস্বরূপ।[৭]