বৃহস্পতি দেব ত্রিগুণা | |
---|---|
![]() ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় ডাক টিকিটে বৃহস্পতি দেব ত্রিগুণা | |
জন্ম | বড়া পিণ্ড, রাম বাজার জলন্ধর পাঞ্জাব ব্রিটিশ ভারত | ১ জানুয়ারি ১৯২০
মৃত্যু | ১ জানুয়ারি ২০১৩ নিজামুদ্দিন নতুন দিল্লি ভারত | (বয়স ৯৩)
সন্তান | নরেন্দ্র ত্রিগুণা (পুত্র) দেবেন্দ্র ত্রিগুণা (পুত্র) |
পুরস্কার | ![]() ![]() |
বৃহস্পতি দেব ত্রিগুণা (১ জানুয়ারি ১৯২০ - ১ জানুয়ারি ২০১৩) [১] ছিলেন একজন বৈদ্য তথা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক যিনি মূলত আয়ুর্বেদিক পদ্ধতিতে 'পালস্ ডায়গনিস' তথা নাড়ি পরীক্ষা করে চিকিৎসার বিধান দিতেন। ভারতে আধুনিক যুগের আয়ুষের একজন প্রধান নিরাময়কারী হিসাবে পরিচিত হন।
তিনি চিকিৎসাবিদ্যায় অবদানের জন্য ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকারের তৃতীয় সর্বোচ্চ পুরস্কার পদ্মভূষণ এবং ২০০৩ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মবিভূষণে ভূষিত হন।[২]
বৃহস্পতি দেব ত্রিগুণা ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের ১ জানুয়রি ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাবের এক বৈদিক পণ্ডিত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। প্রথমে তিনি তার পরিবারেই সংস্কৃত ও জ্যোতিষের ঐতিহ্যগত শিক্ষা লাভ করেন। পরে লুধিয়ানার গুরুকুলের রাজবৈদ্য পণ্ডিত গোকুল চাঁদজীর কাছে আয়ুর্বেদ অধ্যয়ন করেন। সেখানে ঔষধি উদ্ভিদ শনাক্তকরণ, ঐতিহ্যগত ওষুধ তৈরি, নাড়ি দ্বারা রোগ নির্ণয়ের পদ্ধতি এবং অন্যান্য শারীরিক পরীক্ষা শেখেন। [১]
বেশ কয়েক বছর আয়ুষ অধ্যয়ন এবং চিকিৎসায় যুক্ত থেকে দক্ষতা অর্জন করেন। তারপর তিনি তার পিতার ক্লিনিকে আয়ুর্বেদিক অনুশীলন শুরু করেন।বৃহস্পতি দেব ত্রিগুণা সর্বভারতীয় আয়ুর্বেদিক কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন [৩] এবং সেন্ট্রাল কাউন্সিল ফর রিসার্চ অন আয়ুর্বেদের ডিরেক্টর এবং ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ আয়ুর্বেদের চেয়ারম্যান সহ একাধিক সরকারি পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতির ব্যক্তিগত চিকিৎসক ছিলেন। [৪] তিনি আয়ুর্বেদিক ওষুধের মান নির্দিষ্টকরণ এবং ভারতের আয়ুর্বেদিক কলেজের অনুমোদন সম্পর্কিত বিষয়ে কাজ করেন।
বৃহস্পতি দেব ত্রিগুণা মহর্ষি মহেশ যোগীসহ অন্যান্য আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞদের আয়ুষ চিকিৎসায় অনুপ্রাণিত করেন এবং মহর্ষি মহেশ যোগীর সহযোগিতায়, তিনি বিশ্বব্যাপী বহু আয়ুর্বেদিক এবং পঞ্চকর্মা ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাদের প্রতিষ্ঠিত 'মহর্ষি আয়ুর্বেদ'-এ 'মহর্ষি অমৃত কলশ' প্রথম প্রস্তুতি। [১][৫] দিল্লির হযরত নিজামুদ্দিন রেলওয়ে স্টেশনের নিকটে সরাই কালে খানে ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার পরে তিনি ইউরোপ সহ বিশ্বের বহুস্থানে ভ্রমণ করেন এবং আয়ুর্বেদ ক্লিনিক খোলেন। [৬] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের সময় ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, লস অ্যাঞ্জেলস, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং জনস হপকিন্স স্কুল অব মেডিসিন এর মতো মেডিকেল স্কুলে আয়ুর্বেদ নিয়ে আলোচনা করেন। [৭]
১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকার তাকে তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মভূষণ এবং ২০০৩ খ্রিস্টাব্দে সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মান পদ্মবিভূষণে ভূষিত করে। এছাড়াও তিনি মহর্ষি পুরস্কার, ধন্বন্তরী পুরস্কার, আয়ুর্বেদরত্ন ইত্যাদি দ্বারা ভূষিত হন। [১]
বৈদ্য বৃহস্পতি দেব ত্রিগুণা ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের ১ জানুয়ারী বিকালে নতুন দিল্লির নিজামুদ্দিন নিকটস্থ সরাই কালে খানের বাসভবনে ৯৩ বৎসর বয়সে প্রয়াত হন।[৮] তাঁর পুত্র নরেন্দ্র ত্রিগুণা এবং দেবেন্দ্র ত্রিগুণা সরাই কালে খানে বৈদ্য বৃহস্পতি দেব ত্রিগুণা ক্লিনিকে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা করেন। [৯]