বো | |
---|---|
আকা-বো | |
দেশোদ্ভব | ভারত |
অঞ্চল | আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ; উত্তর আন্দামান দ্বীপের পূর্ব-মধ্য উপকূল, উত্তর রীফ দ্বীপ। |
জাতি | বো জাতি |
বিলুপ্ত | জানুয়ারি, ২০১০ (বোয়া সিনিয়রের মৃত্যুর পর)[১][২]
|
বৃহত্তর আন্দামানি
| |
ভাষা কোডসমূহ | |
আইএসও ৬৩৯-৩ | akm |
বো ভাষা, বা আকা-বো, একটি বিলুপ্ত বৃহত্তর আন্দামানি ভাষা। এটির ব্যবহার উত্তর আন্দামানের পশ্চিম মধ্য উপকূলে[৩] এবং আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের উত্তর রীফ দ্বীপে দেখতে পাওয়া যায়।
ভাষার নামের শুরুতে আকা- জিহ্বা সম্পর্কিত শব্দের একটি সাধারণ বৃহত্তর আন্দামানি উপসর্গ, যার মধ্যে ভাষাও অন্তর্ভুক্ত।[৪]
১৮৫৮ সালের অনুমান অনুযায়ী বো উপজাতির মোট ২০০ জন ব্যক্তি ছিল।[৫] তবে ১৯০১ সালের জনগণনার কাজের সময় এই জাতি ব্রিটিশদের দ্বারা আবিষ্কৃত হয়। অন্যান্য আন্দামানি জাতিদের মতোই বো জাতি ঔপনিবেশিক ও উত্তর-ঔপনিবেশিক সময়ে রোগ, মদ, ঔপনিবেশিক যুদ্ধ এবং অঞ্চল হ্রাসের ফলে ধ্বংস হয়ে যায়। ১৯০১ জনগণনায় কেবল ৪৮ জনের নথিভুক্তিকরণ করা হয়।[৬] জনগণনাকারীদের বলা হয়েছিল যে পার্শ্ববর্তী কারি এবং কোরা উপজাতিদের কাছ থেকে একটি মহামারীর সঙ্ক্রমণ হয় এবং স্বজাতিদের যাদের মধ্যে সেই মহামারীর লক্ষণ দেখা গিয়েছিল বো'রা তাদের মেরে ফেলেছিল। ১৯১১ সালে তাদের সংখ্যা ছিল ৬২ অবধি পৌঁঁছেছিল, তবে ১৯২১ সালে সেটা কমে ১৬ এবং ১৯১৩ সালে মাত্র ৬-এ নেমেছিল।
১৯৪৯ সালে অন্যান্য সকল জীবিত বৃহত্তর আন্দামানি জাতির সাথে বো'দের ব্লাফ দ্বীপের একটি সংরক্ষণাগারে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। ১৯৬৯ সালে তাদের আবার স্ট্রেইট দ্বীপের সংরক্ষণাগারে স্থানান্তরিত করা হয়।[৭] ১৯৮০ সাল নাগাদ বেঁচে থাকা ২৩ জন বৃহত্তর আন্দামানিদের মধ্যে কেবল তিনজনই নিজেদের বো উপজাতির অন্তর্গত বলে দাবি করেছিলেন। ১৯৯৪ সালের মধ্যে তাদের সংখ্যা বেড়ে ৪০-এর মধ্যে ১৫-তে দাড়িয়েছিল।[৬]
তবে, স্থান পরিবর্তনগুলির পরে উপজাতীয় পরিচয়গুলি মূলত প্রতীকী হয়ে ওঠে। ২০০৬ সালের মধ্যে উপজাতিটির সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত পরিচয়টি অন্তর্বিবাহ এবং অন্যান্য কারণে অদৃশ্য হয়ে যায়। বো ভাষার সর্বশেষ বক্তা, বোয়া সিনিয়র নামে এক মহিলা, ২০১০ সালের জানুয়ারির শেষদিকে ৮৫ বছর বয়সে মারা যান।[১][২]
বোয়া সিনিয়র শেষ ব্যক্তি ছিলেন যিনি বো ভাষা স্মরণ করতে পারতেন।[৮] তিনি ২০১০ সালের ২রা জানুয়ারি প্রায় ৮৫ বছর বয়সে মারা যান।[৯]
বোয়া সিনিয়রের মা, যিনি বোয়া সিনিয়রের মৃত্যুর প্রায় চল্লিশ বছর আগে মারা গিয়েছিলেন, দীর্ঘ সময়ের জন্য বো ভাষার একমাত্র জীবন্ত বক্তা ছিলেন। তার বো ভাষার গান এবং বিবরণগুলি বৃহত্তর আন্দামানি বক্তা সম্প্রদায়ের অন্যান্য সদস্যদের বুঝতে অসুবিধা হতো।[১০] তিনি হিন্দির আন্দামানি উপভাষার পাশাপাশি আন্দামানের দশটি আদিবাসী ভাষার মিশ্রণ বৃহত্তর আন্দামানিও বলতেন।
বোয়া সিনিয়র ২০০৫ সাল থেকে দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাতত্ত্বের অধ্যাপক অনভিতা আব্বির সাথে কাজ করেছিলেন। আব্বি বোয়া সিনিয়রের ভাষা এবং গান অধ্যয়ন করেছিলেন এবং রেকর্ড করেছিলেন।[১০]