বোগি | |
---|---|
আনুষ্ঠানিক নাম | বোগি |
ধরন | মরশুমি, সনাতনী |
তাৎপর্য | দক্ষিণায়নান্ত এবং উত্তরায়ণ শুরুর উৎসব |
উদযাপন | বহ্ন্যুৎসব |
শুরু | ১৩ই জানুয়ারি |
তারিখ | ১৩ই জানুয়ারি |
সম্পর্কিত | পৌষ সংক্রান্তি বিহু (তামিলে বোগালী / মাঘ / বোগি) লোহরি |
বোগি হল চার দিনের মকর সংক্রান্তি উৎসবের প্রথম দিন। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এটি সাধারণত ১৩ই জানুয়ারি উদযাপিত হয়। কয়েকটি রাজ্যে এই উৎসব পেড্ডা পান্ডুগা নামেও পরিচিত।[১] এটি তামিলনাড়ু, অন্ধ্র প্রদেশ, তেলঙ্গানা, কর্ণাটক এবং মহারাষ্ট্রে ব্যাপকভাবে পালিত একটি উৎসব।
বৃষ্টি এবং মেঘের দেবতা ভগবান ইন্দ্রকে উৎসর্গীকৃত দিনটি হল বোগি। কৃষকরা ধন ও সমৃদ্ধি লাভ করার উদ্দেশ্যে ভাল ফলনের জন্য ইন্দ্রের আশীর্বাদ প্রার্থনা করে উপাসনা করে। তাই এই দিনটি ইন্দ্রন নামেও পরিচিত।[২]
বোগির দিন, মানুষেরা বাড়ির পুরানো এবং পরিত্যক্ত জিনিসগুলি বাতিল করে দেয় এবং পরিবর্তন বা রূপান্তর নিয়ে আসবে এমন নতুন জিনিস সংগ্রহ করে। ঊষাকালে, লোকেরা কাঠের গুঁড়ি, অন্যান্য কঠিন জ্বালানী পদার্থ এবং বাড়ির অব্যবহৃত কাঠের আসবাব জ্বালিয়ে অগ্ন্যুৎসব পালন করে। এইভাবে এই দিনটি বছরের হিসাবনিকাশের শেষদিন এবং পরের দিনটি নতুন কৃষি মরশুমের প্রথম দিন হিসাবে সূচিত হয়।[৩]
মহিলারা নতুন পোশাক পরে এবং পবিত্র আগুনের চারপাশে প্রদক্ষিণ করে মন্ত্র উচ্চারণ করে। তারা তাদের ঘর পরিষ্কার করে এবং বাড়ির সামনে রঙ এবং ফুলের রঙ্গোলি প্রস্তুত করে। লোকেরা গাঁদা ফুলের মালা এবং আম্রপল্লব দিয়ে তাদের ঘর সাজায়।
অন্ধ্র প্রদেশে বোগি উদ্যাপনের কিছু প্রচলিত রীতি রয়েছে, যার মধ্যে আছে বহ্ন্যুৎসব। বাড়ির অব্যবহৃত আসবাব এবং পুরনো কাপড় দিয়ে আগুন জ্বালানো হয় এবং এটি চলে ভোর বেলা পর্যন্ত। বোগির দিন এবং তারপরের তিন দিন, ঘর বাড়ি উৎসবের চেহারা পায়। বাড়ির সামনের উঠোনগুলি আলপনা দিয়ে সাজানো হয়। সুগন্ধ এবং রঙের জন্য এর মধ্যভাগে রাখা হয় হলুদ ফুল। বাড়ির সামনে আখ গাছ এবং হলুদ গাছের শিকড়সহ সবুজ গাছ বাঁধা হয়, যা মরসুমের মিষ্টতা এবং শুভ সময়ের নির্দেশ করে। এই দিনটি উদ্যাপন করার জন্য, মানুষজন একে অপরকে শুভ বোগি সংক্রান্তি কামনা জানায়, কোলমের নকশা আঁকে, সুস্বাদু খাবার বিনিময় করে এবং আগামি মহান কৃষি বছরের জন্য ভগবান ইন্দ্রের আশীর্বাদকে স্বাগত জানায়।
প্রাথমিকভাবে, একটি ঐতিহ্যবাহী অগ্নি প্রজ্বলন করে বোগি উদ্যাপন করা হয়, এই অগ্নি বোগিমান্টালু নামে পরিচিত। পোঙ্গলের পূর্ব রাত্রে এই আগুন জ্বালানো হয়। তারা এই বহ্ন্যুৎসবে অন্যান্য জিনিসের সাথে কৃষি বর্জ্যও পুড়িয়ে দেয়। মহিলারা নতুন পোশাক পরে সূর্যদেব এবং ধরিত্রী মাতাকে চন্দন কাঠের গুঁড়ো এবং কুমকুম দিয়ে নৈবেদ্য উৎসর্গ করে। ফেলে দেওয়া জিনিসগুলি পুড়িয়ে ফেলা হল পুরানো সব কিছু ভুলে নতুনকে স্বাগত জানানোর প্রতীক।
এদিকে, প্রতিবছর, রাজ্য সরকার নিয়মিতভাবে বোগি উৎসবের আগে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালায়, যাতে প্রদূষণ-মুক্ত উদ্যাপন নিশ্চিত করা যায়।[৩]
সাধারণ মানুষ অগ্নিতে অনেক ক্ষতিকারক উপাদান নিক্ষেপ করে, যেগুলি স্বাস্থ্যকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করে। তারা অগ্নিতে টায়ার ও প্লাস্টিকের মত উপকরণ নিক্ষেপ করে, যেগুলি ঘন বিষাক্ত ধোঁয়া ছড়ায়। এগুলি প্রবীণ এবং শিশুদের স্বাস্থ্যের অত্যন্ত ক্ষতি করে।[৪]