ব্যক্তি মালিকানা (ইংরেজি: private property) হল বেসরকারী আইন বৈধ ব্যক্তি দ্বারা সম্পত্তি মালিকানার আইন স্বীকৃত ব্যবস্থা।[১] এই ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের মালিকানাধীন সরকারি সার্বজনিক সম্পত্তি থেকে বেসরকারী সংস্থার মালিকানাধীন যৌথ বা সমবায় সম্পত্তিকে আলাদা করা যায়।[২] বেসরকারী এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তির মধ্যে পার্থক্য রাজনৈতিক দর্শনের উপর নির্ভর করে, সমাজতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি উভয়ের মধ্যে প্রকট পার্থক্য দেখতে পায়৷ একটি দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা আইনতভাবে ব্যক্তিগত সম্পত্তিকে সংজ্ঞায়িত এবং প্রয়োগ করে৷[৩]
ব্যক্তিগত সম্পত্তি সম্পর্কে ধারণা এবং আলোচনা পারস্য সাম্রাজ্যের সময়কাল থেকে এবং পশ্চিমা সংস্কৃতিতে কমপক্ষে প্লেটোর[৪] সময়কালে আবির্ভূত হয়। ১৮ শতকের আগে, ইংরেজি ভাষাভাষীরা সাধারণত জমির মালিকানা প্রসঙ্গে "সম্পত্তি" শব্দটি ব্যবহার করত। ইংল্যান্ডে ১৭ শতকে "সম্পত্তি" একটি আইনী সংজ্ঞা পায়।[৫][৬] ১৭ শতকের বড় ইউরোপীয় বাণিজ্যিক সংস্থাগুলির আবির্ভাবের সাথে সাথে বাণিজ্য সংগঠনের মালিকানাধীন সম্পত্তিও ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসাবে চিহ্নিত হতে থাকে৷[৭]
ইংল্যান্ডে কৃষি জমি ঘেরা দিয়ে রাখার বিষয়টি ১৭ ও ১৮ শতকে একটি বিতর্কিত বিষয় ছিল এবং এই বিষয়ে আলোকপাত করতে নানাপ্রকার দর্শন ও রাজনৈতিক চিন্তাধারার উদ্ভব হয়েছিল, যেমন - টমাস হবস (১৫৮৮-১৬৭৯), জেমস হ্যারিংটন (১৬১১-১৬৭৭) এবং জন লক ( ১৬৩২ - ১৭০৪ )।[৮]
নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্রের সমর্থকদের বিরোধিতা করে জন লক সম্পত্তিকে একটি "প্রাকৃতিক অধিকার" হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন যা ঈশ্বর একচেটিয়াভাবে রাজতন্ত্রকে দেননি - এ হল সম্পত্তির শ্রম তত্ত্ব। এতে বলা হয়েছে যে, সম্পত্তি হল প্রকৃতির উপর শ্রমের ফলে উন্নতিসাধনের প্রাকৃতিক ফলাফল; এবং এইভাবে শ্রম ব্যয়ের কারণে শ্রমিক তার উৎপাদনের অধিকারী হওয়া উচিৎ।[৯]
বাণিজ্যবাদের উত্থানের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে, লক যুক্তি দিয়েছিলেন যে, সরকারের আবির্ভাবের আগে ব্যক্তিগত সম্পত্তি স্বাধীনভাবে আবির্ভূত হয়েছিল। লক "সার্বজনিক সম্পত্তি" মানে সকলের জমি এবং নিজস্বভোগ্য জমির মধ্যে পার্থক্য করেছেন। জমির মালিকানায় সম্পত্তির পক্ষে তার প্রধান যুক্তি ছিল এই যে এটি সাধারণের জমিতে জমি ব্যবস্থাপনা এবং চাষাবাদের উন্নতি ঘটায়।
১৮ শতকে, শিল্প বিপ্লবের সময়, নৈতিক দার্শনিক এবং অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথ (১৭২৩-১৭৯০), "সম্পত্তির অধিকার" এর ক্ষেত্রে অর্জিত অধিকার এবং প্রাকৃতিক অধিকারের মধ্যে পার্থক্য স্থাপন করেছিলেন - এটি হল লকের মতের বিপরীত। স্মিথ প্রাকৃতিক অধিকারকে "স্বাধীনতা এবং জীবনের" মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন। স্মিথ কর্মচারী এবং নিয়োগকর্তার মধ্যে সম্পর্কের দিকেও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন এবং চিহ্নিত করেছিলেন যে সম্পত্তি এবং বেসামরিক সরকার একে অপরের উপর নির্ভরশীল, এই অর্থে যে "সম্পত্তির অবস্থা সর্বদা সরকারের ধরনের সাথে পরিবর্তিত হতে হবে"। স্মিথ যুক্তি দিয়েছিলেন যে বেসামরিক সরকার সম্পত্তি ছাড়া থাকতে পারে না, কারণ সরকারের প্রধান কাজ হল সম্পত্তির মালিকানা চিহ্নিত এবং রক্ষা করা।[৯]
১৯ শতকে, অর্থনীতিবিদ এবং দার্শনিক কার্ল মার্ক্স (১৮১৮-১৮৮৩) সম্পত্তি নির্মাণের বিকাশ ও ইতিহাস এবং একটি নির্দিষ্ট সময়কালে প্রযুক্তিগত উৎপাদনী শক্তির সাথে তাদের সম্পর্কের বিষয়ে একটি প্রভাবশালী বিশ্লেষণ প্রদান করেন। ব্যক্তিগত সম্পত্তি সম্পর্কে মার্কসের ধারণা পরবর্তীকালের বহু অর্থনৈতিক তত্ত্বগুলিকে প্রভাবিত করে এবং সাম্যবাদী, সমাজতান্ত্রিক এবং নৈরাজ্যবাদী রাজনৈতিক আন্দোলনগুলিকে প্রেরণা দেয়। এই ধারণাটি পুঁজিবাদের সাথে ব্যক্তিগত সম্পত্তি - বিশেষ করে উৎপাদনের স্বার্থে ব্যবহৃত ব্যক্তিগত সম্পত্তির মধ্যে সংযোগের বিষয়টি তুলে ধরে।
ব্যক্তিগত সম্পত্তি হল একটি আইনি ধারণা যা একটি দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা দ্বারা বর্ণনা এবং প্রয়োগ করা হয়।[৩] আইনের যে ক্ষেত্রটি এই বিষয়ে কাজ করে তাকে সম্পত্তি আইন বলে। ব্যক্তিগত সম্পত্তির ব্যাপারে সম্পত্তি আইনের প্রয়োগ জনসাধারণের ব্যয়ের বিষয়।
সম্পত্তির প্রতিরক্ষা হল বিবাদীদের দ্বারা ব্যবহৃত ন্যায্যতা প্রমাণের একটি সাধারণ পদ্ধতি ৷ তাদের যুক্তি এই যে তারা তাদের সম্পত্তি রক্ষা করার জন্য যে ক্ষতি এবং আঘাত করেছে তার জন্য তাদের দায়ী করা উচিত নয়। বল প্রয়োগ গ্রহণযোগ্য হতে পারে বলে আদালত সাধারণত রায় দিয়ে থাকে।
অনেক রাজনৈতিক ব্যবস্থায়, সরকার অনুরোধ করে যে মালিকরা মালিকানার বিশেষাধিকারের জন্য অর্থ প্রদান করুক। একটি সম্পত্তি কর হল একটি সম্পত্তির মূল্যের উপর একটি মূল্য কর, যা সাধারণত স্থাবর সম্পদের উপর আরোপিত হয়। যে এলাকায় সম্পত্তিটি অবস্থিত তার প্রশাসক মন্ডলী দ্বারা কর ধার্য করা হয়। এটি বার্ষিক হিসাবে বা একটি বাণিজ্যিক আবাসন হস্তান্তরের সময় আরোপ করা হতে পারে, যেমন বাণিজ্যিক আবাসন স্থানান্তর কর। একটি সম্পত্তি-কর ব্যবস্থার অধীনে, সরকার প্রতিটি সম্পত্তির আর্থিক মূল্যের মূল্যায়ন করে এবং সেই মূল্যের অনুপাতে কর ধার্য করা হয়। সম্পত্তি করের চারটি বিস্তৃত প্রকার হল জমি, ভূমির উন্নতি (স্থাবর মানবসৃষ্ট বস্তু, যেমন ভবন), ব্যক্তিগত সম্পত্তি (অস্থাবর মানবসৃষ্ট বস্তু) এবং অধরা সম্পত্তি।
যে সামাজিক এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ব্যক্তিগত সম্পত্তি অবস্থিত হয় তা নির্ধারণ করবে কোনো মালিক সম্পত্তির উপর কতটা অধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। ব্যক্তিগত সম্পত্তির অধিকারে সীমাবদ্ধতা থাকে। উদাহরণস্বরূপ, স্থানীয় সরকার ব্যক্তিগত জমিতে কী ধরনের বাড়ি তৈরী করা যেতে পারে (ভবন নির্মাণ নীতিমালা) বা একটি ঐতিহাসিক ভবন ভেঙে ফেলা যেতে পারে কিনা তা সম্পর্কে নিয়ম জারি করতে পারে। চুরির ঘটনা অনেক সমাজেই ঘটে থাকে, এবং বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রশাসন সম্পত্তি অপরাধে ভিন্ন মাত্রায় শাস্তি দিয়ে থাকে।
ব্যক্তিগত সম্পত্তির কিছু রূপ স্বতন্ত্রভাবে শনাক্তযোগ্য, এবং একে একটি দলিল বা মালিকানার শংসাপত্রে বর্ণনা করা যেতে পারে।
একটি সম্পত্তির অধিকার এক "মালিক" থেকে অন্যের কাছে স্থানান্তরিত হতে পারে। একটি হস্তান্তর কর হল একজন ব্যক্তির (বা সত্তার) থেকে অন্য ব্যক্তির কাছে সম্পত্তির অধিকার হস্তান্তরের উপর ধার্য একপ্রকার কর। একজন মালিক অনুরোধ করতে পারেন যে, মৃত্যুর পরে, ব্যক্তিগত সম্পত্তি উত্তরাধিকারের মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের হস্তান্তর করা হোক।
কিছু ক্ষেত্রে মালিকানা জনস্বার্থে হারাতে হতে পারে। ব্যক্তিগত আবাসন বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে বা জনসাধারণের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যেতে পারে, উদাহরণস্বরপ কোনো রাস্তা নির্মাণের জন্য।
একটি দেশ বা সমাজের আইনি কাঠামো ব্যক্তিগত সম্পত্তির কিছু ব্যবহারিক দিকগুলিকে সংজ্ঞায়িত করে। এমন প্রত্যাশা করার কোনো কারণ নেই যে এই নিয়মগুলি অর্থনীতি বা সমাজ ব্যবস্থার সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং যুক্তিযুক্ত কাঠামো প্রতিফলিত করবে।
যদিও সমসাময়িক নবশাস্ত্রীয় অর্থনীতি - যা বর্তমান অর্থনীতির সবচেয়ে প্রভাবশালী শাখা - চিরাচরিত অর্থনীতির ভিত্তিতে আদি দার্শনিকদের কিছু অনুমানকে প্রত্যাখ্যান করে ৷ বলা হয় যে নবশাস্ত্রীয় অর্থনীতি প্রাকৃতিক নৈতিকতা তত্ত্ব ও প্রাকৃতিক অধিকারের ধারণা দ্বারা প্রভাবিত হয় ও এর ফলে বেসরকারী বাজার এক্সচেঞ্জ এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তির অধিকারকে "প্রাকৃতিক অধিকার" হিসাবে গণ্য করে।[১০]
অর্থনৈতিক উদারপন্থীরা (যারা বেসরকারী উদ্যোগ -চালিত বাজার অর্থনীতিকে সমর্থন করে) একটি সমৃদ্ধ সমাজ গঠনের জন্য ব্যক্তিগত সম্পত্তিকে অপরিহার্য বলে মনে করে। তারা বিশ্বাস করে যে জমির ব্যক্তিগত মালিকানা জমির উৎপাদনশীল ব্যবহার এবং জমির মালিক দ্বারা জমির মূল্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করে। যদি মালিকদের সম্পত্তি কর দিতে হয়, তাহলে এটি মালিকদের কর দেওয়ার জন্য জমি থেকে কোনো প্রকার আয় বজায় রাখতে বাধ্য করে। ব্যক্তিগত সম্পত্তি জমির সাথে একটি আর্থিক মূল্যও সংযুক্ত করে, যা ব্যবসায় বা জামানত হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। ব্যক্তিগত সম্পত্তি এইভাবে অর্থনীতিতে মূলধনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।[১১]
সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতিবিদরা ব্যক্তিগত সম্পত্তির সমালোচনা করেন কারণ সমাজতন্ত্রের লক্ষ্য উৎপাদন ক্ষেত্রে সামাজিক মালিকানা বা সাধারণের সম্পত্তি দ্বারা ব্যক্তিগত সম্পত্তিকে প্রতিস্থাপন করা। সমাজবাদীরা সাধারণত বলে থাকেন যে ব্যক্তিগত সম্পত্তি অর্থনীতিতে উৎপাদন শক্তির ক্ষমতাকে সীমিত করে কারণ যখন উৎপাদনশীল কার্যকলাপ একটি যৌথ কার্যকলাপে পরিণত হয়, সেখানে পুঁজিপতির ভূমিকা অপ্রয়োজনীয় হয়ে যায় (একজন নিষ্ক্রিয় মালিক হিসাবে)। সমাজতন্ত্রীরা সাধারণত মালিক ও শ্রমিকের মধ্যে শ্রেণীগত পার্থক্য দূর করতে এবং পুঁজিবাদ পরবর্তী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বিকাশের একটি উপায় হিসেবে সামাজিক মালিকানার পক্ষপাতী।[১২]
সমাজতান্ত্রিক সমালোচনার জবাবে, অস্ট্রিয়ান স্কুল অর্থনীতিবিদ লুডউইগ ভন মিসেস বলেছিলেন যে ব্যক্তিগত সম্পত্তির অধিকার স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা না থাকলে "যুক্তিযুক্ত" অর্থনৈতিক গণনা এবং পণ্য ও পরিষেবার সঠিক মূল্য নির্ধারণ ও অর্থনৈতিক হিসাবগুলি দক্ষভাবে করা যায় না। মিসেস যুক্তি দিয়েছিলেন যে একটি সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা (যাতে সংজ্ঞা অনুসারে উৎপাদনের মাধ্যম হিসাবে ব্যক্তিগত সম্পত্তি থাকবে না) উৎপাদনের উপকরণগুলির উপযুক্ত মূল্য নির্ধারণ করতে অক্ষম হবে। তার মতে, এই সমস্যা যুক্তিযুক্ত সমাজতান্ত্রিক গণনাকে অসম্ভব করে তুলবে।[১৩]
পুঁজিবাদে মালিকানাকে একটি সম্পদের উপর "একগুচ্ছ অধিকার" হিসাবে দেখা যেতে পারে যা এর মালিককে সম্পত্তির উপর শক্তিশালী কর্তৃত্বের অধিকারী করে। এই ধরনের অধিকারের সমন্বয় সম্পত্তির মালিককে সম্পদের নিয়ন্ত্রণ ও এর ব্যবহার সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে,এটি দ্বারা উৎপাদিত মূল্য দাবি করতে, এটি ব্যবহার করা থেকে অন্যদের বিরত রাখতে এবং এটির মালিকানা (সম্পত্তির উপর একগুচ্ছ অধিকার) অন্য ধারকের কাছে হস্তান্তর করার অধিকার দেয়৷[১৪][১৫]
মার্কসীয় অর্থনীতি এবং সমাজতান্ত্রিক রাজনীতিতে "বেসরকারী সম্পত্তি" এবং "ব্যক্তিগত সম্পত্তির" মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। প্রথমটি উৎপাদন এবং মজুরি শ্রমের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা একটি অর্থনৈতিক উদ্যোগের উপর ব্যক্তিগত মালিকানা ও উৎপাদনের মাধ্যম হিসাবে বর্ণনা করা হয় ৷ পরেরটি ভোগ্য পণ্য বা একজন ব্যক্তির দ্বারা উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী বোঝাতে ব্যবহার করা হয়।[১৬][১৭] ১৮ শতকের আগে, ব্যক্তিগত সম্পত্তি বলতে সাধারণত জমির মালিকানাকে বোঝানো হত।
উৎপাদনের উপায় হিসাবে ব্যক্তিগত সম্পত্তি হল পুঁজিবাদের কেন্দ্রীয় উপাদান যা সমাজবাদীদের দ্বারা সমালোচিত হয়। মার্কসবাদী সাহিত্যে, ব্যক্তিগত সম্পত্তি বলতে এমন একটি সামাজিক সম্পর্ককে বোঝায় যেখানে সম্পত্তির মালিক কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী দ্বারা সেই সম্পত্তি মারফত উৎপন্ন সামগ্রীগুলির দখল নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে পুঁজিবাদ ব্যক্তিগত সম্পত্তির উপর নির্ভর করে।[১৮] পুঁজিবাদে বঞ্চনা এবং শোষণের সমালোচনার অংশ হিসাবে ব্যক্তিগত মালিকানার সমাজতান্ত্রিক সমালোচনা পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে ব্যক্তিগত সম্পত্তির রূপগুলির মার্কসীয় বিশ্লেষণ দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়। যদিও মার্কসবাদী বিশ্লেষণের কিছু বিষয়ের বৈধতা নিয়ে সমাজতন্ত্রীদের মধ্যে যথেষ্ট মতানৈক্য রয়েছে, তবে সমাজবাদীদের অধিকাংশই শোষণ ও বঞ্চনার বিষয়ে মার্কসের মতামতের সাথে সহমত।[১৯]
সমাজতন্ত্রীরা ব্যক্তিগত সম্পত্তি মারফত আয়ের মালিক কর্তৃক আত্মসাৎকে সমালোচনা করেন কারন এই ধরনের আয় তারা পায় কোনো উৎপাদনশীল কার্যকলাপ বা পরিশ্রম না দিয়েই। এটি শ্রমিক শ্রেণীর দ্বারা উৎপন্ন হয়, তাই এটি শোষণের প্রতিফলন। সম্পত্তির মালিক (পুঁজিবাদী) শ্রেণী স্টক বা বেসরকারী ইক্যুইটির আকারে মালিকানার দাবির ভিত্তিতে শ্রমজীবী সম্প্রদায় দ্বারা উৎপাদিত সম্পত্তির থেকে পরোক্ষ আয়ের উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকে। পুঁজিবাদী সমাজ কাঠামোর কারণে এই শোষণমূলক ব্যবস্থা চিরস্থায়ী হয়। পুঁজিবাদকে দাসপ্রথা এবং সামন্ততন্ত্রের মতো ঐতিহাসিক শ্রেণী ব্যবস্থার অনুরূপ একটি শ্রেণী ব্যবস্থা হিসেবে গণ্য করা হয়।[২০]
বাজার সমাজতান্ত্রিক প্রবক্তারা অ-মার্কসবাদী নৈতিক ভিত্তিতেও ব্যক্তিগত মালিকানার সমালোচনা করে থাকেন। যেমন অর্থনীতিবিদ জেমস ইয়ঙ্কারের মতে পরোক্ষ সম্পত্তি আয় করতে এক্ষেত্রে মালিকের কোন মানসিক বা শারীরিক পরিশ্রমের প্রয়োজন হয় না এবং বেসরকারী মালিকদের একটি ছোট গোষ্ঠীর দ্বারা এই অর্থ গৃহীত হয়৷ তাই এটি সমসাময়িক পুঁজিবাদে বিশাল বৈষম্যের উৎস হিসাবে কাজ করে। সামাজিক মালিকানা বাজার অর্থনীতিতে সামাজিক বৈষম্যর প্রধান কারণ এবং এর সাথে বিরাজমান সামাজিক সমস্যাগুলির সমাধান করবে।[২১] ওয়েইল এবং পোসনার বক্তব্য ছিল যে ব্যক্তিগত সম্পত্তি একাধিপত্যের অপর নাম এবং এটি বরাদ্দের উৎপাদনশীল ক্ষমতাকে বাধা দেয়। তাদের মতে করের ব্যবহার এবং পরিবর্তিত ভিক্রে নিলামের মাধ্যমে আংশিক সার্বজনীক সম্পত্তির মালিকানা হল অর্থনীতিকে সংগঠিত করার আরও কার্যকর এবং ন্যায়সঙ্গত উপায়।[২২]
ব্যক্তিগত সম্পত্তির অধিকারকে জমি দখলের হাতিয়ার হিসাবেও সমালোচনা করা হয়েছে।[২৩] অধ্যয়ন বিষয়ক ভাষ্যকার ব্রেনা ভান্ডারের মতে, সম্পত্তি আইনে প্রয়োগ করা ভাষা, উপনিবেশে বসবাসকারী জনগণকে তাদের নিজস্ব জমির মালিকানা ও উপযুক্ত ব্যবহার করতে অক্ষম বলে ইঙ্গিত করে।[২৩] এটি প্রস্তাব করা হয় যে ব্যক্তিগত অধিকার সম্পত্তির অধিকারের সাথে প্রতিস্থাপনযোগ্য, তাই যে সম্প্রদায়গুলি সাম্প্রদায়িকভাবে জমির মালিকানা পদ্ধতিতে বিশ্বাসী তাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তির আদর্শ দ্বারা সমানভাবে বৈধ মনে করা হয় না৷[২৪]
সমালোচনামূলক জাতি তাত্ত্বিক চেরিল হ্যারিস বলেছেন যে জাতি এবং সম্পত্তি অধিকার সময়ের সাথে সাথে সংমিশ্রিত হয়েছে এবং শুধুমাত্র সেই দিকগুলি যেগুলি শ্বেতাঙ্গ উপনিবেশে অনন্য সেগুলি আইনগতভাবে স্বীকৃত হয়েছে।[২৫] সাধারণ মালিকানার উপর ভিত্তি করে, ভূমির নিজস্ব ব্যবহার এবং পাশ্চাত্য ধারণায় ভূমি আইনে ব্যক্তিগত সম্পত্তির মালিকানা এই দুটি ধারণা একে অপরের থেকে আলাদা।[২৬]
There are three broad forms of property ownership – private, public, and collective (cooperative).
Private property cannot exist without a political system that defines its existence, its use, and the conditions of its exchange. That is, private property is defined and exists only because of politics.
The defence of private property has been a feature of philosophical, theological and legal discourse from antiquity to the present day. [...] I begin with Plato's thoughts on property in the Republic [...].
Oliver Letwin, a British conservative theorist, observed that the private sector had to be invented. This occurred with the great European trading companies, such as the British and Dutch East India companies, founded in the 17th century. Notions of property before the Renaissance assumed that different actors had different relations to the same property.
[D]ebates [on enclosure] […] laid down many of the basic terms for political debate about private property, and especially property in land.
The derivation of natural moral theory has provided the foundation for the use of economic theory to support specific ideological viewpoints. The main strength of the legitimating role of economic theory is that it allows one set of ideological viewpoints to posture as if their conclusions were unbiased scientific conclusions, while those opposing them were merely expressing their value laden opinions. At its apex, this tendency has justified laissez-faire economic policies as if they were based on natural laws. Always behind the legitimization activities of economists is the belief that markets are ‘natural’ institutions and market outcomes are natural outcomes, and the institutions necessary for markets, such as private property rights, are ‘natural rights’.
Though socialists have disagreed with Marx about how to conceptualize the notion of class, about the dynamics of class societies, and indeed about a whole host of other matters, most socialists seem to be broadly sympathetic to his views about what is wrong with the capitalist (free enterprise) economic system and, by implication, capitalist society ... Marx’s critique attributes basically two systemic evils to capitalism’s economic system: alienation and exploitation.
Property income is, by definition, received by virtue of owning property ... Since such income is not an equivalent return for any productive activity, it amounts to an entitlement to a portion of the aggregate output of others’ productive activity. The workforce produces output, but surrenders part of it to people who have nothing directly to do with production. Arguably, this occurs by virtue of a social system to which those in the workforce have never given their full consent, i.e. that of private property. Alternatively, it occurs by virtue of a structure of power to which the workforce is subject: property income is the fruit of exploitation. The fact that it is essential to capitalism makes the latter a class system akin to such other historical cases as slavery and feudalism.