কার্টুন বা ব্যঙ্গচিত্র (ইংরেজি: Cartoon) একধরনের দ্বি-মাত্রিক চিত্রকলা যা কাগজে অঙ্কন করার মাধ্যমে প্রদর্শন করা হয়।[১] বিভিন্ন ও বিচিত্রমূখী পন্থায় ব্যঙ্গচিত্র শব্দটি ব্যবহৃত হতে পারে। সংবাদপত্র অথবা সাময়িকীতে স্বল্পবাক্যে অথবা বাক্যবিহীন অবস্থায় ব্যঙ্গচিত্র দর্শক-পাঠকদের কাছে উপস্থাপন করা হয়ে থাকে। অঙ্কিত চিত্রের পাশাপাশি শব্দ প্রয়োগের মাধ্যমে তামাশা, উপহাস কিংবা সরস উক্তি প্রদর্শন করা হয়। এছাড়াও, অনেকগুলো কার্টুনকে একত্রিত করার মাধ্যমে অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়।
যিনি ব্যঙ্গচিত্র অঙ্কন করেন, তিনি কার্টুনিস্ট নামে পরিচিত।[২] বিখ্যাত ইতালীয় চিত্রশিল্পী রাফায়েল, লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি বিখ্যাত কার্টুনিস্ট হিসেবে বৈশ্বিকভাবে পরিচিত ব্যক্তিত্ব। বাংলাদেশে দৈনিক প্রথম আলো’র শিশির, ইত্তেফাকের রণবী শীর্ষস্থানে রয়েছেন। আন্তর্জাতিক কার্টুন পত্রিকা টুনস ম্যাগ দৈনিক রাজনৈতিক এবং রম্য কার্টুন প্রকাশ করে থাকে। প্রতি বছর আন্তর্জাতিক কার্টুন প্রতিযোগিতা এবং প্রদর্শনীর আয়োজন করে থাকে।
মধ্য যুগে অর্থাৎ ১৪শ থেকে ১৭শ শতকের রেনেসাঁয় ইতালিতে দেয়াল সুসজ্জিতকরণে চিত্রকরদের দলবদ্ধ হয়ে কাজ করার সময়ে আলাদা কাগজে স্কেচের মাধ্যেম নির্দেশনা দেয়া হতো। এ স্কেচগুলো কার্টোনি নামে পরিচিত ছিল, যা থেকে কার্টুন শব্দের উৎপত্তি হয়েছে। ১৮৪০-এর দশক থেকে এ শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ইংরেজি সাময়িকী পাঞ্চ প্রথমবারের মতো ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করে, যাতে লন্ডনের দালান-কোঠার মজাদার চিত্র তুলে ধরে। এরপর থেকেই কার্টুনে চিত্রকর্মকে মজাদার ও দৃষ্টিতে আবদ্ধ করার জন্য উপস্থাপনা শুরু হয়। ঊনবিংশ শতকে এসে সাময়িকী ও সংবাদপত্রে ব্যবহার হতে শুরু করে। বিংশ শতকের শুরুতে গল্পচ্ছলে ও অ্যানিমেশন চলচ্চিত্রে ব্যঙ্গচিত্রের ব্যবহারের পরিধি বিস্তৃত হয়।[৩]
অনেক সংবাদপত্র ও সাময়িকীতে সম্পাদকীয় পর্যায়ে ব্যঙ্গচিত্র অঙ্কন করা হয়। ব্যক্তির বৈশিষ্ট্যাবলী বিশেষতঃ রাজনীতিবিদদের ভাবমূর্তিকে বিচিত্রভঙ্গীমায় ব্যঙ্গাত্মক ও অতিরঞ্জিত করে তুলে ধরা হয়। ব্যঙ্গচিত্রের সাথে শব্দ বা বাক্য থাকতে পারে। কখনোবা শুধুই চিত্র হিসেবে প্রকাশিত হয়।