ব্যবস্থাদি বিজ্ঞান (ইংরেজি: Systems science) জ্ঞানের একটি আন্তঃশাস্ত্রিক ক্ষেত্র যেখানে প্রকৃতি, সমাজ, প্রকৌশল, সংজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানের মধ্যে অবস্থিত সরল ও জটিল ব্যবস্থাসমূহের প্রকৃতি অধ্যয়ন করা হয়। ব্যবস্থাদি বিজ্ঞানীদের মতে বিশ্বকে ব্যবস্থাসমূহের একটি ব্যবস্থা হিসেবে অনুধাবন করা সম্ভব।[১] এই ক্ষেত্রটির লক্ষ্য এমন একটি আন্তঃশাস্ত্রিক ভিত্তি নির্মাণ করা যেটিকে বিভিন্ন ধরনের জ্ঞানের শাখায় প্রয়োগ করা সম্ভব, যেমন মনোবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, চিকিৎসাবিজ্ঞান, যোগাযোগ, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা, প্রযুক্তি, কম্পিউটার বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও সামাজিক বিজ্ঞানসমূহ।[২]
ব্যবস্থাদি বিজ্ঞানের পরিধির মধ্যে বিভিন্ন রৌপ বা বিধিবদ্ধ বিজ্ঞান যেমন জটিল ব্যবস্থাসমূহের গবেষণা, ব্যবস্থা পরিচালনা বিজ্ঞান (সাইবারনেটিক্স), পরিবর্তনশীল ব্যবস্থাদি তত্ত্ব, তথ্য তত্ত্ব, ভাষাবিজ্ঞান ও ব্যবস্থাদি তত্ত্ব অন্তর্ভুক্ত। প্রাকৃতিক ও সামাজিক বিজ্ঞান ও প্রকৌশলের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর প্রয়োগ রয়েছে, যেমন নিয়ন্ত্রণ তত্ত্ব, ব্যবস্থাদি নকশাকরণ, অভিযান-কর্মকাণ্ড গবেষণা, সামাজিক ব্যবস্থাদি তত্ত্ব, ব্যবস্থাদি জীববিজ্ঞান, ব্যবস্থার পরিবর্তনশীলতা, কর্মপরিবেশ বিদ্যা, ব্যবস্থাদি বাস্তুবিজ্ঞান, কম্পিউটার বিজ্ঞান, ব্যবস্থাদি প্রকৌশল ও ব্যবস্থাদি মনোবিজ্ঞান।[৩] ব্যবস্থাদি বিজ্ঞানে যে বিষয়গুলির উপরে জোর দেওয়া হয়, সেগুলির মধ্যে সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি, ব্যবস্থা ও এর পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সাথে এর আন্তঃক্রিয়া এবং পরিবর্তনশীল আচরণের জটিল (প্রায়শ সূক্ষ্ম) পথগ্রহণ যেগুলি কখনও স্থিতিশীল (ফলে বলবর্ধক), আবার কখনওবা বিভিন্ন "সীমাস্থ শর্তাবলি" অত্যধিক অস্থিতিশীল (ফলে ধ্বংসাত্মক) হয়ে উঠতে পারে।
পৃথিবী-মাপের জীবমণ্ডল বা ভূমণ্ডলের পরিবর্তনশীলতা ধরনের সমস্যার গবেষণায় তাৎপর্যপূর্ণ অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করা ব্যবস্থাদি বিজ্ঞানের একটি উদ্দেশ্যে।