ব্যাংক অব ইংল্যান্ড যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে পরিচিত। আধুনিক কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ভিত্তি একে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে। সুইডেনের স্ভেরিজেস রিক্সব্যাংকের পর এটি বিশ্বের দ্বিতীয় প্রাচীন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বিশ্বের ৮ম প্রাচীন ব্যাংক। ১৭ জুলাই, ১৬৯৪ তারিখে রাজকীয় সনদের মাধ্যমে ব্যক্তিগত আর্থিক প্রতিষ্ঠানরূপে সিটি অব লন্ডনে £১.২ মিলিয়ন পাউন্ড-স্টার্লিং মূলধন নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৪৬ সালে জাতীয়করণ করা হয়।[১][২] ১৯৯৮ সালে প্রথমবারের মতো সরকারের কাছ থেকে স্বায়ত্তশাসন লাভ করে।[৩] তারপরও এটি সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। ইংরেজ সরকারের ব্যাংকরূপে গড়ে উঠা ব্যাংক অব ইংল্যান্ড অদ্যাবধি যুক্তরাজ্য সরকারের ব্যাংকার এটি।
১ জুলাই, ২০১৩ তারিখ থেকে মার্ক কার্নে ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব পালন করছেন। ৩০ জুন, ২০১৩ তারিখে প্রথম নন-ব্রিটন হিসেবে তিনি পাঁচ বছর মেয়াদে গভর্নর স্যার মারভিন কিংয়ের স্থলাভিষিক্ত হন।[৪]
ব্রিটিশ স্থাপত্যবিদ স্যার জন সোয়ান ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের ভবনের নক্সা অঙ্কন করেন যা ইংল্যান্ডের পর্যটন আকর্ষণের প্রধান কেন্দ্রবিন্দুরূপে বিবেচিত হয়ে আসছে। এর ডাকনাম হচ্ছে ওল্ড লেডি অব থ্রেডনিডল স্ট্রিট (থ্রেডনিডল স্ট্রিটের প্রাচীন ভদ্রমহিলা) বা ওল্ড লেডি।[৫] প্রচলিত উপ-কথা হিসেবে সারাহ হোয়াইটহেডের আত্মা ব্যাংকের বাগানে ভূতরূপে অবস্থান করছে বলে জানা যায়।.[৫]
১৭৩৪ সাল থেকে সিটি অব লন্ডনের থ্রেডনিডল স্ট্রিটে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সদর দফতর অবস্থিত। মুদ্রানীতি প্রণয়নসহ এটি সরকারের যাবতীয় ঋণ পরিশোধ, নোট তৈরি ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর উপর নিয়ন্ত্রণ করছে।[৬][৭][৮][৯]
ব্যাংকের মুদ্রানীতি কমিটি অর্থ সরবরাহ ও সুদের হার নিয়ন্ত্রণ করে। কোষাগার থেকে কমিটিকে আদেশ দানের ক্ষমতা দেয়া হয়, কিন্তু তা সংসদ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে অনুমোদিত হতে হয়।[১০]
ব্যাংক যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য অনেক দেশের স্বর্ণ তাদের নিরাপত্তা হেফাজতে রাখে। টাওয়ার ৪২ নামীয় সিটি অব লন্ডনের দ্বিতীয় উচ্চতম ভবনে এ ভল্টটি অবস্থিত ও প্রবেশের জন্য তিন ফুট লম্বা চাবির প্রয়োজন।[১১] এ ব্যাংকটি স্বর্ণ সংরক্ষণের জন্য বিশ্বের ১৫তম বৃহত্তম নিরাপত্তা হেফাজতখানা ও প্রায় ৪৬,০০০ টন স্বর্ণ মজুদ আছে।[১২] বিপুল পরিমাণে রক্ষিত স্বর্ণের হিসাব ২০১২ সাল অনুযায়ী যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় £১৫৬,০০০,০০০,০০০ পাউন্ড-স্টার্লিং।[১৩]