ব্যাংকিং |
---|
আর্থিক সেবা বিষয়ক সিরিজের অংশ |
ব্যাংক বিবরণী (ইংরেজি: Bank Statement) (অন্যনাম হিসাব বিবরণী) হল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে সঙ্ঘটিত আর্থিক লেনদেনসমুহের অফিসিয়াল সংক্ষিপ্ত বিবরণী। এই বিবরণী ব্যাংক কর্তৃক প্রস্তুতকৃত। সাধারণত একটি ব্যাংক বিবরণীতে ব্যাংক হিসাব নম্বর, হিসাবধারীর নাম ও ঠিকানা, হিসাবের ধরন, তারিখ অনুযায়ী লেনদেনের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্য উল্লেখ থাকে।[১]
ব্যাংক বিবরণী দেখে গ্রাহকগণ সাধারণত তাদের নগদ প্রবাহ পর্যবেক্ষণ, সম্ভাব্য প্রতারণামূলক লেনদেন পরীক্ষা এবং প্রয়োজন হলে ব্যাংক সমন্বয় বিবরণী তৈরি করে থাকে। ঐতিহাসিকভাবে, ব্যাংকসমূহ কাগজে মুদ্রিত ব্যাংক বিবরণী গ্রাহকদের চাহিদামাফিক বা প্রচলিত আইন অনুযায়ী সরবারহ করে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে অনেক ব্যাংক কাগজবিহীন ব্যাংকিং-এর অংশ হিসেবে বৈদ্যুতিন বিবরণী (ই-স্টেটমেন্ট) সুবিধা চালু করেছে। গ্রাহক চাইলে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা ব্যবহার করে ই-স্টেটমেন্ট নিতে পারে অথবা গ্রাহকের অনুরোধে ব্যাংক গ্রাহকের ইমেইলে বিবরণী পাঠিয়ে দেয়। আয়কর বিবরণী প্রস্তুত, লোণ আবেদনে সংযুক্তি এবং অডিটসহ অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংক বিবরণী খুব গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত।[২]
ঐতিহাসিকভাবে, ব্যাংকসমূহ মাসিক, ত্রৈমাসিক, ষান্মাসিক এবং বাৎসরিক ভিত্তিতে গ্রাহকদের কাগজে মুদ্রিত ব্যাংক বিবরণী সরবরাহ করে থাকে। তবে গ্রাহকদের চাহিদামাফিক এবং নির্দিষ্ট দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী কাগজে মুদ্রিত ব্যাংক বিবরণী সরবারহ করা হয়। ১৯৬০-এর দশকে ব্যাংক ব্যবস্থায় কম্পিউটার চালু হওয়ার পরে থেকে ধীরেধীরে ব্যাংকসমূহ কম্পিউটার দ্বারা তৈরিকৃত বিবরণী সরবরাহ করা শুরু করে।[৩] সাধারণত, কাগুজে বিবরণীর বিপরীতে ব্যাংক একটা নির্দিষ্ট চার্জ কেটে নেয় যেটি ব্যাংকের আয়ের অংশ। কাগুজে বিবরণীতে ব্যাংকের অনুমোদিত কর্মকর্তার স্বাক্ষর থাকে।
১৯৯০-এর দশকের শেষের দিক থেকে, ব্যাংকসমূহ গ্রাহকদের বৈদ্যুতিন বিবরণী দেয়া শুরু করে। বর্তমানে, অধিকাংশ ব্যাংক কাগজবিহীন ব্যাংকিং-এর অংশ হিসেবে বৈদ্যুতিন বিবরণী (ই-স্টেটমেন্ট) সুবিধা চালু করেছে এবং গ্রাহকদের কাগুজে বিবরণীর পরিবর্তে বৈদ্যুতিন বিবরণী নিতে উৎসাহিত করছে। যেসব ব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা দিচ্ছে তাদের গ্রাহকরা চাইলে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা ব্যবহার করে বৈদ্যুতিন বিবরণী বা ই-স্টেটমেন্ট নিতে পারে অথবা গ্রাহক চাইলে ব্যাংক চাহিদামাফিক বা নির্দিষ্ট সময় অন্তর গ্রাহকের ইমেইলে বিবরণী পাঠিয়ে দেয়। এই বিবরণী ব্যাংকের অনুমোদিত কর্মকর্তার স্বাক্ষর থাকে না।[৪]