ব্যাঘ্র প্রকল্প

ব্যাঘ্র প্রকল্প ১৯৭২ সালে বেঙ্গল টাইগার সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ভারতে গৃহীত একটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ প্রকল্প। ১৯৭৩ সালের ১ এপ্রিল থেকে এই প্রকল্প কার্যকর করা হয় এবং পরবর্তীকালে সর্বাপেক্ষা সফল বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ উদ্যোগে পরিণত হয়। সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন জৈবভৌগোলিক ক্ষেত্রে স্থাপিত বিভিন্ন ব্যাঘ্র সংরক্ষণাগারে (টাইগার রিজার্ভ) বাঘ সংরক্ষণ করাই ছিল এই প্রকল্পের লক্ষ্য। দেশে প্রাকৃতিক পরিমণ্ডলে সংরক্ষিত বাঘের সংখ্যাবৃদ্ধিতে এই প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে।

২০১১ সালের হিসেব অনুযায়ী, দেশের ৩১,৭৬১ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে ৪৩ টি ব্যাঘ্র প্রকল্প বন্যপ্রাণী সংরক্ষণাগার রয়েছে। ১৯৭০-এর দশকে যেখানে বাঘের সংখ্যা ছিল ১,২০০টি সেখানে ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফলে ১৯৯০-এর দশকে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩,৫০০টিতে। অবশ্য ২০০৮ সালের ব্যাঘ্রগণনা থেকে জানা যায়, এই সংখ্যা বর্তমানে কমে দাঁড়িয়েছে ১,৪১১টিতে। তখনই সরকার প্রকল্পটিকে আরও ১৫৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থসাহায্য দানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় টাইগার প্রোটেকশন ফোর্স গঠন ও মানব-ব্যাঘ্র সংঘাত এড়ানোর উদ্দেশ্যে ২০০,০০০ জন গ্রামবাসীর পুনর্বাসন দেওয়ার জন্য অর্থসাহায্যেরও।[] ২০০৫ সালে সারিস্কা ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে বাঘ সম্পূর্ণ নির্মূল হয়ে যাওয়ার পর যখন ২০০৮ সালের জুলাই মাসে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্থানান্তরণ স্কিমে দুটি বাঘ আবার এখানে নিয়ে আসা হয়, তখনই এই প্রচেষ্টা কার্যকর করার সূচনা ঘটে।[]

ভারতে টাইগার রিজার্ভ

[সম্পাদনা]
রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল টাইগার রিজার্ভ
অন্ধ্র প্রদেশ নাগার্জুনসাগর শ্রীশৈলম (১৯৮২-৮৩)
অরুণাচল প্রদেশ নামদাফা (১৯৮২-৮৩)
অরুণাচল প্রদেশ পাককে (১৯৯৯-২০০০)
অরুণাচল প্রদেশ কামলাং (২০১৬)
আসাম মানস (১৯৭৩-৭৪)
আসাম নেমরি (১৯৯৯-২০০০)
আসাম কাজিরাঙা (২০০৮-০৯)
আসাম ওরাং (২০১৬)
বিহার বাল্মীকি (১৯৮৯-৯০)
ছত্তীসগঢ় উদান্তি-সীতানাদি (২০০৮-০৯)
ছত্তীসগঢ় আচানকমার (২০০৮-০৯)
ছত্তীসগঢ় ইন্দ্রবতী (১৯৮২-৮৩)
ছত্তীসগঢ় গুরু ঘাসিদাস এনপি এবং তামোর পিংলা ডব্লিউএলএস (অক্টোবর ২০২১)
ঝাড়খণ্ড পালামৌ (১৯৭৩-৭৪)
কর্ণাটক বান্দিপুর (১৯৭৩-৭৪)
কর্ণাটক ভদ্র (১৯৯৮-৯৯)
কর্ণাটক ডান্ডেলি-আনশি (কালী) (২০০৮-০৯)
কর্ণাটক নাগরাহোল (২০০৮-০৯)
কর্ণাটক বিলিগিরি রঙ্গনাথ মন্দির (২০১১)
কেরল পেরিয়ার (১৯৭৮-৭৯)
কেরল পারম্বিকুলাম (২০০৮-০৯)
মধ্য প্রদেশ কানহা (১৯৭৩-৭৪)
মধ্য প্রদেশ পেঞ্চ (১৯৯২-৯৩)
মধ্য প্রদেশ বাঁধভগড় (১৯৯৩-৯৪)
মধ্য প্রদেশ পান্না (১৯৯৪-৯৫)
মধ্য প্রদেশ সাতপুরা (১৯৯৯-২০০০)
মধ্য প্রদেশ সঞ্জয়-ডুবরি (২০০৮-০৯)
মহারাষ্ট্র মেলঘাট (১৯৭৩-৭৪)
মহারাষ্ট্র তাদোবা-আন্ধারি (১৯৯৩-৯৪)
মহারাষ্ট্র পেঞ্চ (১৯৯৮-৯৯)
মহারাষ্ট্র সাহিয়াদ্রি (২০০৯-১০)
মহারাষ্ট্র নাওয়েগাঁও-নাগজিরা (২০১৩-১৪)
মহারাষ্ট্র বোর (২০১৪)
মিজোরাম ড্যাম্পা (১৯৯৪-৯৫)
উড়িষ্যা সিমিলিপাল (১৯৭৩-৭৪)
উড়িষ্যা সাতকোসিয়া (২০০৮-০৯)
রাজস্থান রণথম্বোর (১৯৭৩-৭৪)
রাজস্থান সরিস্কা (১৯৭৮-৭৯)
রাজস্থান মুকান্দ্রা হিলস (২০১৩-১৪)
রাজস্থান রামগড় বিশধারী (জুন ২০২১)
তামিলনাড়ু কালাকাদ-মুন্ডানথুরাই (১৯৮৮-৮৯)
তামিলনাড়ু মুদুমালাই (২০০৮-০৯)
তামিলনাড়ু সত্যমঙ্গলম (২০১৩-১৪)
তামিলনাড়ু আনামালাই (২০০৮-০৯)
তামিলনাড়ু শ্রীভিলিপুথুর-মেগামালাই (ফেব্রুয়ারি ২০২১)
তেলঙ্গানা কাওয়াল (২০১২-১৩)
তেলঙ্গানা অমরাবাদ (২০১৪)
উত্তর প্রদেশ দুধওয়া (১৯৮৭-৮৮)
উত্তর প্রদেশ পিলিভিত (২০১৪)
উত্তরাখন্ড করবেট (১৯৭৩-৭৪)
উত্তরাখন্ড রাজাজি (২০১৫)
পশ্চিমবঙ্গ সুন্দরবন (১৯৭৩-৭৪)
পশ্চিমবঙ্গ বক্সা (১৯৮২-৮৩)

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Tigers flown by helicopter to Sariska reserve to lift numbers in western India - Times Online"। ২৯ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুন ২০০৯ 
  2. Tiger adapts to Sariska, makes first kill-Flora & Fauna-Earth-The Times of India

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]