ব্রজেন্দ্রনাথ শীল Brajendra Nath Seal | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | ৩ সেপ্টেম্বর, ১৮৬৪ |
মৃত্যু | ৩ ডিসেম্বর, ১৯৩৮ |
জাতীয়তা | ![]() |
পেশা | দার্শনিক ও আচার্য |
ব্রজেন্দ্রনাথ শীল (৩ সেপ্টেম্বর, ১৮৬৪ — ৩ ডিসেম্বর, ১৯৩৮) একজন বাঙালি দার্শনিক ও বহুবিদ্যাবিশারদ পণ্ডিত ছিলেন।
ব্রজেন্দ্রনাথ শীল হুগলী জেলার হরিপালে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মহেন্দ্রনাথ শীল ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী। অল্পবয়সে ব্রজেন্দ্রনাথ পিতৃমাতৃহারা হয়ে মামার বাড়িতে মানুষ হন। তিনি স্কটিশ চার্চ কলেজ, কলকাতা হতে বিএ পাশ করে সেখানেই অধ্যাপনার কাজ নেন। অঙ্ক ও দর্শন দুটিতেই তার ব্যুৎপত্তি ছিল। কলেজে তার সহপাঠী ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। ১৮৮৪ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম এ তে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করেন তিনি।[১] ১৮৮১ সালে আসামের সরকারি ইঞ্জিনিয়ার জয়গোপাল রক্ষিতের কন্যা ইন্দুমতীকে বিবাহ করেন। ছয় বছর পরে স্ত্রী বিয়োগ হয় তার। তাঁদের চার পুত্র (বিনয়েন্দ্রনাথ, অমরেন্দ্রনাথ, অনিলেন্দ্রনাথ,কনিষ্ঠ পুত্র অকালেই প্রয়াত) ও এক কন্যা (সরযূবালা সেন) [২]
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পি এইচ ডি করার পরে বিভিন্ন জায়গায় অধ্যাপনা করেছেন তিনি। কোচবিহারের ভিক্টোরিয়া কলেজের প্রথম ভারতীয় অধ্যক্ষ হন। অধুনা এই কলেজটির নাম আচার্য ব্রজেন্দ্রনাথ শীল কলেজ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনশাস্ত্রের প্রধান অধ্যাপক ছিলেন ৯ বছর। বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজের আধুনিকীকরনের রূপকার তিনি।[৩][৪] পরে ১৯২১ থেকে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত তিনি মহীশূর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৮৯৯ সালের ১৫ অক্টোবর রোমে অনুষ্ঠিত Congress International Des Orientalists এর আন্তর্জাতিক অধিবেশনে যোগদান করে প্রবন্ধ পাঠ করেন। এ প্রবন্ধে তিনি ‘ইতিহাসের দর্শন’ ও ‘ঐতিহাসিক তুলনামূলক পদ্ধতি’ সম্পর্কে জ্ঞানগর্ভ বক্তব্য প্রদান করেন। ১৯১১ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব জাতি কংগ্রেসে জাতিতত্ত্ব বিষয়ক বক্তব্য রাখেন তিনি। ১৯২১ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আমন্ত্রণে বিশ্বভারতী উদ্বোধন অনুষ্ঠানের সভাপতি হন। তুলনামূলক সাহিত্য, ধর্মদর্শন বিচার ও দর্শন আলোচনায় গণিতের সূত্র প্রয়োগে তিনি ছিলেন পথিকৃৎ।[২][৫]
ব্রজেন্দ্রনাথ দশটি ভাষায় পারদর্শী ছিলেন। অজস্র বই রচনা করেছে ধর্ম, দর্শনতত্ব, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, সভ্যতা, নৃতত্ত্ব, সমাজতত্ত্ব, বিজ্ঞান নিয়ে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য-[৫]
অসামান্য মেধা ও পান্ডিত্যের অধিকারী ব্রজেন্দ্রনাথ আদর্শ চরিত্রের জন্য আচার্য্য উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন। তাকে চলমান বিশ্ববিদ্যালয় বলে অভিহিত করা হতো। ডিএসসি ও নাইট উপাধি পান তিনি। মহীশুর রাজ্যের রাজরত্নপ্রবীন উপাধি পান তিনি। ইংরেজ পণ্ডিতরা গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটলের সঙ্গে, ভারতের নাগার্জুনের সঙ্গে আচার্য ব্রজেন্দ্রনাথ শীলের তুলনা করেছেন। তার মৃত্যুতে কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত বলেন, ‘সক্রেটিসের পরিবারের শেষ প্রদীপ নিভে গেল!’[৩]
|তারিখ=
(সাহায্য)