ব্রাহ্মী Brāhmī | |
---|---|
লিপির ধরন | |
সময়কাল | অন্তত খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতক[১] থেকে খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতক পর্যন্ত |
লেখার দিক | বাম-থেকে-ডান |
ভাষাসমূহ | সংস্কৃত, পালি, প্রাকৃত, শক, তোখারীয়, তামিল, এলু |
সম্পর্কিত লিপি | |
উদ্ভবের পদ্ধতি | |
বংশধর পদ্ধতি | |
ভগিনী পদ্ধতি | খরোষ্ঠী |
আইএসও ১৫৯২৪ | |
আইএসও ১৫৯২৪ | Brah, 300 , ব্রাহ্মী |
ইউনিকোড | |
ইউনিকোড উপনাম | ব্রাহমি |
U+11000–U+1107F | |
ব্রাহ্মী লিপি একটি পুরনো লিখন পদ্ধতির নাম। এটি খ্রিস্টপূর্ব শেষ শতকগুলোতে এবং খ্রিস্টের জন্মের পর প্রথম শতকগুলোতে ভারত উপমহাদেশ ও মধ্য এশিয়ায় ব্যবহৃত হতো। এর সমসাময়িক লিপি হচ্ছে খরোষ্ঠী যা আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ব্যবহৃত হতো। এটি শব্দীয় বর্ণমালা লিপি, যেখানে স্বরবর্ণ এবং ব্যঞ্জনবর্ণ আলাদা হয়ে থাকে।
ব্রাহ্মী লিপি বেশি পরিচিতি লাভ করেছে সম্রাট অশোকের পাথরখচিত বাণী থেকে। এটি উত্তর-মধ্য ভারতে স্থাপিত হয় ২৫০-২৩২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে। লিপিটি ১৮৩৭ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মকর্তা, প্রত্নতাত্ত্বিক ও ভাষাবিদ জেমস প্রিন্সেপ আবিষ্কার করেন। লিপিটির উৎসস্থল নিয়ে এখনো অনেক বিতর্ক আছে। পশ্চিমা ভাষা একাডেমির মতে ব্রাহ্মী লিপি সেমিটিক লিপি থেকে উৎপন্ন হয়েছে। নাহলে অন্তত প্রভাবিত হয়েছে।
কিন্তু বর্তমানে ভারতে একটি মতামত প্রচলিত আছে যেখানে বলা হয় ব্রাহ্মী লিপি পুরনো সিন্ধু সভ্যতার কোনো লিপি যেটি এখনো অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে।
ব্রাহ্মী একসময় ইংরেজিতে "পিন-ম্যান" নামে পরিচিত ছিল। ৫ম শতকের গুপ্তলিপিকে মাঝেমাঝে "পরবর্তী ব্রাহ্মী" বলা হয়।
ব্রাহ্মীলিপি থেকে অসংখ্য লিপি উৎপন্ন হয়েছিল। বর্তমানে অনেকগুলো আধুনিক লিপি ভারতসহ পূর্বএশিয়ায় সগৌরবে চলছে। তাই ব্রাহ্মী বিশ্বের সর্বাধিক প্রভাবক লিপি হিসেবে সমাদৃত। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে ১৯৮টি লিপি ব্রাহ্মী থেকে উৎপন্ন হয়েছে।
লিপিটির নিজস্ব সংখ্যা ব্যবস্থা আছে। ব্যবস্থাটি ইন্দো-আরবী সংখ্যা পদ্ধতির মৌলিক যোগান দিয়েছে যা এখন সারা বিশ্বে ব্যবহৃত হচ্ছে।
যেখানে সমসাময়িক খরোষ্ঠি লিপিকে আরামাইক লিপি থেকে উদ্ভূত মতামতটি স্বীকৃতি পেয়েছে সেখানে ব্রাহ্মী লিপি খুব কমই সুস্পষ্টতা পেয়েছে।
আলব্রেচ্ট ওয়েবার ও জর্জ বুলারের "অন দ্য অরিজিন অব দ্য ইন্ডিয়ান ব্রাহ্মা আলফাবেট"(১৮৯৫) গ্রন্থে কিছু বিদ্বান কর্তৃক সেমেটিক থেকে ব্রাহ্মী লিপির বিবর্তন প্রস্তাবিত হয়েছে।
বেশি জনপ্রিয় মতামত অনুসারে ব্রাহ্মীর সাথে সেমেটিকের সম্পর্ক আছে এটা অনেক বিদ্বান মেনে নিয়েছেন। ব্রাহ্মীর সাথে আরামাইক লিপির কিছু সাদৃশ্য লক্ষ করা যায়।
উদাহরণ স্বরূপ, ব্রাহ্মী ও আরামাইক g ও t এর মধ্যে অনেক সাদৃশ্য আছে।
দুই লিপিতেই প্রথম বর্ণ একই। ব্রাহ্মীতে অ, আরামাইকে আলেফ। এর আকার κ এর মত। প্রাক-ইসলামিক মুদ্রায় ।আলেফকে κ এর মত করে লিখতে দেখা গেছে।[২]
নিচের ছকে ব্রাহ্মী ও উত্তর সেমেটিকের সাদৃশ্যতা দেখানো হয়েছে যেভাবে বুলার প্রস্তাব করেছিলেন।
ফোনেসিয়ান | কার্সিভ ইম্পেরিয়াল আরামাইক | এপ্রোক্স ফোনেসিয়ান সাউন্ড | সরাসরি ব্রাহ্মী(IAST মান) | দ্বিতীয় ব্যুৎপত্তিগত ব্রাহ্মী |
---|---|---|---|---|
ʾ [ʔ], M.L. | (অ) | |||
b [b] | (ব) | (ভ) | ||
g [ɡ] | (গ) | Bhattiprolu gh | ||
d [d] | (ধ) | (da), (ḍa), (ধ) | ||
h [h], M.L. | (হ) | |||
w [w], M.L. | (va) | (উ), (ও) | ||
z [z] | (জ) | (jha) | ||
ḥ [ħ] | (ঘ) | |||
ṭ [tˤ] | (থ) | (ত), (থ) | ||
y [j], M.L. | (ya) | |||
k [k] | (ক) | |||
l [l] | (ল) | Bhattiprolu ḷ | ||
m [m] | (ম) | anusvara | ||
n [n] | (ন) | (ṇa) | ||
s [s] | (ṣa) | (sa) | ||
ʿ [ʕ], M.L. | (এ) | (i), (ai) | ||
p [p] | (প) | (ফ) | ||
ṣ [sˤ] | (চ) | (ছ) | ||
q [q] | (খ (some other authors propose ) | |||
r [r] | (র) | |||
š [ʃ] | (śa) | |||
t [t] | (ত) |
এফ রেমন্ড অলচিন সহ কিছু গবেষকদের মতে ব্রাহ্মী লিপি সিন্ধু সভ্যতার লিপি। এই লিপির সাথে আরামাইক তথা সেমেটিকের কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ ব্রাহ্মী লিপির সজ্জা ও উচ্চারণ সেমেটিক লিপির সাথে মিলে না। ব্রাহ্মী অ ও সেমেটিক আলেফের উচ্চারণে বিস্তর তফাৎ আছে। লিপির আকারেও যথেষ্ট তফাৎ বিদ্যমান।
২০১০সনের অক্টোবরে ব্রাহ্মীকে ইউনিকোড ৬.০ তে স্থান দেয়া হয়।
ব্রাহ্মীর জন্য ইউনিকোড ব্লক হচ্ছে, U+11000–U+1107F. ২০১৪ এর আগস্টে দুটি অবাণিজ্যিক ফন্ট বের হয়। একটি গুগলের নটো সান্স ব্রাহ্মী অপরটি আদিনতা যা তামিল ব্রাহ্মীকে সমর্থন করে শুধু। উইন্ডোজ ১০ এর সেগোই ইউআই হিস্টোরিকও ব্রাহ্মী গ্লিফ সমর্থন করে।[৩] [৪][৫]