ব্রিজেশ প্যাটেল

ব্রিজেশ প্যাটেল
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
ব্রিজেশ পরশুরাম প্যাটেল
জন্ম (1952-11-24) ২৪ নভেম্বর ১৯৫২ (বয়স ৭২)
বরোদরা, গুজরাত, ভারত
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ ব্রেক
ভূমিকাব্যাটসম্যান, প্রশাসক, কোচ
সম্পর্ককেআর প্যাটেল (কাকা), বিআর প্যাটেল (কাকা), এমআর প্যাটেল (কাকা), উদিত প্যাটেল (পুত্র), তারিনা প্যাটেল (কন্যা)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৩১)
৬ জুন ১৯৭৪ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট১৬ ডিসেম্বর ১৯৭৭ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ )
১৩ জুলাই ১৯৭৪ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ ওডিআই১৬ জুন ১৯৭৯ বনাম শ্রীলঙ্কা
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই
ম্যাচ সংখ্যা ২১ ১০
রানের সংখ্যা ৯৭২ ২৪৩
ব্যাটিং গড় ২৯.৪৫ ৩০.৩৭
১০০/৫০ ১/৫ -/১
সর্বোচ্চ রান ১১৫* ৮২
বল করেছে - -
উইকেট - -
বোলিং গড় - -
ইনিংসে ৫ উইকেট - -
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং - -
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১৭/- ১/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৪ জুলাই ২০২০

ব্রিজেশ পরশুরাম প্যাটেল (উচ্চারণ; গুজরাটি: બ્રિજેશ પટેલ; জন্ম: ২৪ নভেম্বর, ১৯৫২) গুজরাতের বরোদরা এলাকায় জন্মগ্রহণকারী কোচ, প্রশাসক ও সাবেক ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭০-এর দশকে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে কর্ণাটক, মহীশূর এবং নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ওয়েলিংটন দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন ব্রিজেশ প্যাটেল

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

বেঙ্গালুরুর বিশপ কটন বয়েজ স্কুলে অধ্যয়ন করতেন। এ সময়েই তার ক্রীড়া প্রতিভা সর্বসমক্ষে প্রকাশিত হয়। দেশের কিশোর দলের প্রতিনিধিত্ব করেন ও অস্ট্রেলিয়া গমনের সুযোগ পান। ১৯৬৯-৭০ মৌসুম থেকে ১৯৮৭-৮৮ মৌসুম পর্যন্ত ব্রিজেশ প্যাটেলের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল।

দর্শনীয় ডানহাতি মাঝারিসারির ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন ব্রিজেশ প্যাটেল। ঘরোয়া পর্যায়ের ক্রিকেটে বেশ রান তুলেছেন। এছাড়াও, সত্তুরের দশকে ভারতীয় ক্রিকেটে অসাধারণ আউটফিল্ডার হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছেন। নিজস্ব স্বর্ণালী সময়ে ‘গ্ল্যামার বয়’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। এছাড়াও, বোলিংয়েও বেশ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। তবে, পেস কিংবা সুইং বল মোকাবেলায় তার সীমাবদ্ধতা ছিল।

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনই কর্ণাটক দলে অতিবাহিত করেন। দলের অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে অনেকগুলো জয়ে ভূমিকা রাখেন। তিনি ও সতীর্থ আন্তর্জাতিক খেলোয়াড় গুণ্ডাপ্পা বিশ্বনাথের সাথে অবিস্মরণীয় জুটি গড়েন। ৫৭.০০ গড়ে ৭১২৬ রান ও ২৬টি শতরান করেন। জাতীয় প্রতিযোগিতা ও দিলীপ ট্রফিতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একুশটি টেস্টে ও দশটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন ব্রিজেশ প্যাটেল। ৬ জুন, ১৯৭৪ তারিখে ম্যানচেস্টারে স্বাগতিক ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭৭ তারিখে পার্থে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯৭৪ ও ১৯৭৯ সালে ইংল্যান্ড এবং ১৯৭৭-৭৮ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। তবে, ১৯৭৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেই নিজের সেরা খেলা উপহারে সচেষ্ট ছিলেন। চার ইনিংস মিলিয়ে ২০৭.০০ গড়ে ২০৭ রান তুলেছিলেন তিনি। তন্মধ্যে, নিজস্ব একমাত্র শতরানের ইনিংস ছিল। পোর্ট অব স্পেন টেস্টে ১১৫ রানে অপরাজিত থাকেন। পঞ্চম উইকেটে সুনীল গাভাস্কারের সাথে ২০৪ রানের জুটি গড়েন। আরও তিনটি উল্লেখযোগ্য ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।

১৯৭৪-৭৫ মৌসুমে বোম্বে টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অপরাজিত ৭৩ রান করেন। তবে, ঐ টেস্টে তার দল পরাজয়বরণ করে। দুই বছর পর একই মাঠে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৮৩ রান করেন। এরপর, ১৯৭৬-৭৭ মৌসুমে একই মাঠে সফরকারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্ষীপ্রগতিতে ৮২ রান সংগ্রহ করেন। পরের মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। তেমন সুবিধে করতে পারেননি তিনি ও দল থেকে বাদ পড়েন। তাসত্ত্বেও, ১৯৭৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ক্রিকেট বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসরে অংশ নেয়ার সুযোগ পান। ভারতীয় ক্রিকেটারদের প্রথমদিকের অন্যতম ক্রিকেটার হিসেবে খেলার ক্ষুদ্রতম সংস্করণের সাথে একাত্মতা পোষণ করেছিলেন নিজেকে।

মূল্যায়ন

[সম্পাদনা]

১৯৭৪ থেকে ১৯৭৭ সময়কালে ২১ টেস্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি। ২৯.৪৫ গড়ে মোটামুটি মানের ব্যাটিং করেছেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ ব্রেক বোলিং করতে পারতেন। তবে, জাতীয় দলে থাকাকালীন তাকে কখনো বোলিং করার জন্যে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। টেস্টে তিনি ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১১৫ রান তুলতে পেরেছেন। ফিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রেও তিনি দূর্দান্ত ভূমিকা রেখেছেন। সচরাচর কভার ও পয়েন্ট এলাকায় দণ্ডায়মান থাকতেন। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে কোন শূন্য রানের সন্ধান পাননি তিনি।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে তিনি তেমন সফলতা পাননি। তবে, প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৩৭টি শতরান সহযোগে এগারো হাজারের অধিক রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। সন্দেহজনক পেস বোলিং ভঙ্গীমার কারণে তার আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ী জীবনের অকাল সমাপ্তি ঘটে। অবসর গ্রহণকালীন রঞ্জী ট্রফিতে সর্বাধিক রান ও শতরানের রেকর্ডের অধিকারী ছিলেন।

প্রশাসনে অংশগ্রহণ

[সম্পাদনা]

খেলোয়াড়ী জীবন শেষে ক্রিকেট প্রশাসনের দিকে ঝুঁকে পড়েন ব্রিজেশ প্যাটেল। ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের (বিসিসিআই) সভাপতি প্রয়াত জগমোহন ডালমিয়া’র একনিষ্ঠ সমর্থক ছিলেন। জাতীয় ক্রিকেট একাডেমির পরিচালক হিসেবে নিযুক্তি লাভ করেন। পরবর্তীতে, ২০০৫ সালে সাবেক টেস্ট ক্রিকেটার শিবলাল যাদবকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়।

১৯৯৯ সাল থেকে কর্ণাটক রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার (কেএসসিএ) সম্মানীয় সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন ও কর্ণাটকভিত্তিক ক্রিকেটকে পরিচালনা করছেন। এছাড়াও, ভারতীয় ক্রিকেট দলে সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। তবে, হৃদযন্ত্রের সমস্যার কারণে তাকে পদত্যাগ করতে হয়।

ব্যক্তিগত পর্যায়ে বেঙ্গালুরুভিত্তিক ক্রিকেট কোচিং একাডেমি পরিচালনা করছেন। বি.পি.সি.এ নামীয় প্রতিষ্ঠানে তিন শতাধিক ছাত্র রয়েছে।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]
পূর্বসূরী
চান্দু বোর্দে
জাতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলীর সভাপতি
অক্টোবর, ২০০২ - সেপ্টেম্বর, ২০০৩
উত্তরসূরী
সৈয়দ কিরমানী