ব্লু মাউনটেইন্স জাতীয় উদ্যান | |
---|---|
আইইউসিএন ক্যাটাগরি ২ (জাতীঁয় সংরক্ষণকেন্দ্র)
| |
এই পার্কের প্রধান আকর্ষণ হল “থ্রি সিস্টারস”, পাশাপাশি অবস্থিত তিনটি পাথরের পর্বত। | |
Nearest town/city: | টেমপ্লেট:NSWcity |
Area: | ২৬৮৯.৮৭ |
Established: | ১৯৫৯ |
Visitation: | ৫৬৩০০০ (in ২০০৯) |
Managing authorities: | National Parks and Wildlife Service (New South Wales) |
ব্লু মাউনটেইন্স জাতীয় উদ্যান অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস এর একটি জাতীয় উদ্যান যা অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী সিডনী থেকে ৮১ কিমি পশ্চিমে বিস্তৃত ভগ্ন এলাকা “ব্লু মাউনটেইন্স” এ অবস্থিত। এই উদ্যানটির মোট আয়তন ২,৬৮,৯৮৭ ha (৬,৬৪,৬৮১ একর).[১] এই উদ্যানটির সীমানার অভ্যন্তরে বিভিন্ন রাস্তা, শহর এলাকা ও বাসস্থান অবস্থিত তাই, পার্কটির সীমানাঘেরা দেওয়ালটি অনেক স্থানে ভঙ্গুর। এই এলাকার নাম 'mountains' হলেও এই এলাকাটি সুউচ্চ মালভূমি বিদ্যমান যার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন বড় নদী প্রবহমান। এই পার্কের সর্বোচ্চ চূড়া হল “Mount Werong” (১২১৫ m)এবং সর্বনিম্ন চূড়াটি নেপিন নদীতে (২০ m) যা পার্কটি মধ্যে প্রবহমান।
১৯৩২ সালে পরিবেশ সংরক্ষণ কর্মী মিলস ডানফি “Greater Blue Mountains National Park” গঠনের প্রস্তাবনার মাধ্যমে এই জাতীয় উদ্যানের সৃষ্টি হয়। এই “Greater Blue Mountains National Park” এলাকার মধ্যে ব্লু মাউনটেইন্স জাতীয় পার্কে এখন যেসব স্থাপনা বিদ্যমান সেসব স্থাপনা, ওল্লেমী জাতীয় উদ্যান, কানানগ্রা-বয়েড জাতীয় উদ্যান, নাত্তাই জাতীয় উদ্যানের পাশাপাশি অন্যান্য ক্ষুদ্র জাতীয় উদ্যানসমূহ অন্তর্ভুক্ত। ১৯৫৯ সালে এই এলাকাটি “ব্লু মাউন্টেইন্স ন্যাশনাল পার্ক” নামে ঘোষণা করা হয়।[২] ২০০০ সালে এই পার্কটি গ্রেটার ব্লু মাউনটেইন্সের এলাকার অংশ হিসেবে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
ব্লু মাউনটেইন্স জাতীয় উদ্যান অস্ট্রেলিয়ার পূর্বাংশের একটি বিশাল ভগ্নী এলাকায় অবস্থিত। এই উদ্যানের মালভূমি মাউন্ট ভিক্টোরিয়া এলাকায় ১,১০০ মিঃ উচ্চতা থেকে পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে আস্তে আস্তে ঢালু হয়ে মিশেছে ২০০ মিঃ এর চেয়ে কম উচ্চতায় গ্লেনব্রুক এলাকায়। এই পার্কটিতে চারটি বৃহৎ নদী প্রবহমান, এসব নদীর বেশিরভাগ এই পার্কের মধ্যে দিয়ে এঁকেবেঁকে চলেছে। এ নদীগুলো হল, উত্তরে ওলাংম্বে নদী (Wollangambe River), মধ্যাঞ্চলে গ্রুস নদী (Grose River) এবং দক্ষিণে কক্স নদী (Coxs River) ও ওল্লোডিল্লী নদী (Wollondilly River)। শেষের দুইটি নদী প্রবাহিত হয়েছে বুরাগরাং লেকের (Lake Burragorang) মধ্যে দিয়ে, ওয়ারাগাম্বা বাঁধ এলাকায় পার্কের ঠিক বাইরে অবস্থিত। এই লেকটি সিডনী শহরের পানির প্রধান উৎস। নেপিন নদীর একটি ছোট অংশ পার্কের মধ্যে প্রবহমান। এই পার্কের সব বড় নদীই পশ্চিমদিক থেকে পূর্বদিকে প্রবাহিত।
গঠনগত দিক থেকে ব্লু মাউনটেইন্স বৃহত্তর সিডনী নদী অববাহিকার একটা অংশ। ৩০০ মিলিয়ন বছর পূর্বে বিভিন্ন স্তরে পলিসমৃদ্ধ পাথরের স্তর দ্বারা সিডনী অববাহিকা গঠিত হয়। ব্লু মাউনটেইন্স এবং বৃহৎ ভগ্নী অঞ্চলটি গঠিত হয় প্রায় ৫০ মিলিয়ন বছর পূর্বে যখন এই এলাকাটি সুউচ্চ ছিল।[৩] আরো পরবর্তী সময়ে বিশাল এলাকা জুড়ে আগ্নেয়গিরি হয়, যা এই এলাকাকে ধ্বংস করে। ফলে সুউচ্চ ভূমি ও এতে বসবাসরত প্রাণী ও উদ্ভিদ জীবীত থাকে।
এই পার্কে অনেক প্রজাতীর স্তন্যপায়ী বৃহৎ প্রাণী দেখা যায়। এই পার্কের সর্ববৃহৎ আদি মাংশাসী প্রাণী হল কৌল। সর্ববৃহৎ পাখি হল এমু।
ব্লু মাউনটেইন্স পার্ক অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন স্থানগুলোর মধ্যে একটি। বেশিরভাগ পর্যটক ব্লু মাউনিটেইন্সে আসে ওয়েন্টওর্থ ও ব্লাখেথ ঝরণার মধ্যবর্তী স্থান দেখার জন্য, এই পার্কে দর্শনীয় স্থানগুলো আসলে পার্কের নিম্নাংশে অবস্থিত নয়। পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন বিনোদনের মধ্যে চূড়ার উপর থেকে ঝরণা দেখার জন্য স্বল্প পায়ে হাটার রাস্তা, প্রত্যন্ত এলাকায় গমনের জন্য রাতব্যপি ও দীর্ঘ পায়ে হাটার রাস্তা, পর্বত আরোহণ এবং পর্বত বাইকিং এর ব্যবস্থা বিদ্যমান। কিছু সংখ্যক অ্যাডভেঞ্চার ভ্রমণ প্রতিষ্ঠান পর্যটকদের নিরাপদে এই রোমাঞ্চনীয় অভিজ্ঞতা অর্জনে সাহায্য করে।[৩] এই পার্কে বিশ্বের সবচেয়ে খাড়া রেলওয়ে অবস্থিত, যার নাম কাটুম্বা সিনিক রেলওয়ে। এই পার্কের প্রধান আকর্ষণ হল “থ্রি সিস্টারস”, পাশাপাশি অবস্থিত তিনটি পাথরের পর্বত। ১৯৯৯ সালে, এই পার্কে সর্বোচ্চ ১.০৪৫ মিলিয়ন পরযটকের আগমণ ঘটে।[৪] কিন্তু ২০০৯ সালে পর্যটকের সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৫,৬৩,০০০ এ।[৪]