ব্ল্যাকবেরি | |
---|---|
অসনাক্ত প্রজাতির পাকা, মাঝামাঝি অবস্থা এবং কাঁচা ব্ল্যাকবেরি। | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | উদ্ভিদ |
বর্গ: | Rosales |
পরিবার: | Rosaceae |
গণ: | Rubus |
উপগণ: | Rubus (formerly Eubatus) |
প্রজাতি | |
এবং আরো শত শত ক্ষুদ্রপ্রজাতি আছে। |
ব্ল্যাকবেরি একধরনের ভক্ষণীয় ফল, যা রোসাসি পরিবারের "রুবাস" গণের অসংখ্য প্রজাতির মাধ্যমে উৎপাদিত হয়। তাদের মধ্যে উপগণ "রুবাস" প্রজাতির সাথে সংকর ও উপগণ "রুবাস" এবং "ইডাওবাটুস" এই দুইয়ের মধ্যে সংকর। ব্ল্যাকবেরির শ্রেণিবিন্যাস সংকরায়ন এবং এপোমিক্সিস এর কারণে ঐতিহাসিকভাবে গুলিয়ে ফেলা হয়েছে, তাই উক্ত প্রজাতি প্রায়ই একত্রে শ্রেণীবদ্ধ করা হয় এবং সেটিকে সামষ্টিক প্রজাতি বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ, সমগ্র "রুবাস" উপপ্রজাতিকে "রুবাস ফ্রুটিকোসাস" সমষ্টি বলা হয়, যদিও "রুবাস ফ্রুটিকোসাস" প্রজাতিকে "রুবাস প্লিকাটাস" এর সমার্থক মনে করা হয়।[১]
এটির সমগোত্রীয় রাসবেরি হতে ব্ল্যাকবেরির পার্থক্য হলো এতে ফলের সাথে ডাঁটা সংযুক্ত অবস্থায় থাকে। যখন ব্ল্যাকবেরি ফল সংগ্রহ করা হয়, তখনও ফলের সাথে ডাঁটা যুক্ত থাকে। কিন্তু রাসবেরির ক্ষেত্রে ডাঁটা গাছেই অবশিষ্ট থেকে যায় এবং ডাঁটার স্থানে ফলে গর্ত হয়ে থাকে।[২] "ব্রামবেল" শব্দটি কোনো অভেদ্য শব্দের অর্থ, এটি ঐতিহ্যগতভাবে ব্ল্যাকবেরি বা তার পণ্যগুলিতে বিশেষভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে,[৩] যদিও যুক্তরাষ্ট্রে এটি "রুবাস" গণের সকল সদস্যের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়। পশ্চিম যুক্তরাষ্ট্রে "ক্যানেবেরি" শব্দটি একটি শ্রেণী হিসাবে "ব্রামবেল" শব্দের পরিবর্তে ব্ল্যাকবেরি এবং রাসবেরি বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। সাধারণত উদ্ভিদবিজ্ঞানের আলোকে কালো ফল শব্দটি বেরি নয়। উদ্ভিদবিজ্ঞানে এটিকে সামষ্টিক ফল বলা হয় এবং এটি ছোট আঁটি নিয়ে গঠিত। এটি ৩৭৫ এরও অধিক প্রজাতির ব্যাপক এবং সুপরিচিত শ্রেণী, এদের কোনটা অনেক ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত ইউরোপের সর্বত্র, উত্তরপশ্চিম আফ্রিকা, পরিমিত পরিসরে পশ্চিম ও মধ্য এশিয়া এবং উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার স্থানীয় ক্ষুদ্রপ্রজাতির সাথে।[৪]
ব্ল্যাকবেরি বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ, যেটি সাধারণত বহুবর্ষজীবী মূল পদ্ধতি হতে দ্বিবার্ষিক কাণ্ড ধারণ করে।[৫] প্রথম বছরে এটিতে নতুন কাণ্ড হয়, প্রিমোক্যান, এটির ৩–৬ মিটার (কিছু ক্ষেত্রে ৯ মিটার পর্যন্ত) পূর্ণ দৈর্ঘ্য থেকে সবলভাবে বৃদ্ধি পায়। এটি ভূমি বরাবর ঝুঁকে পড়ে এবং পাঁচটি অথবা সাতটি পত্রস্তবকের সাথে বড় পাতার আকৃতি ধারণ করে; কিন্তু এটিতে কোনো ফুল ফুটে না। এটির দ্বিতীয় বছরে "ক্যান" ফ্লোরিক্যান এ পরিণত হয় এবং কাণ্ড বেশি বৃদ্ধি পায় না, কিন্তু পার্শ্বিক কুঁড়ি ভেঙ্গে পার্শ্বিক ফুল ফুটে (যাতে তিনটি বা পাঁচটি পত্রস্তবকের সাথে ছোট পাতা থাকে)।[৫] প্রথম এবং দ্বিতীয় বছরের অঙ্কুরে সাধারণত বহুসংখ্যক খাটো-বাঁক থাকে। এছাড়াও খুবই ধারালো "প্রিকলেস"কে প্রায়ই ভুলক্রমে কাঁটা বলা হয়। এসব প্রিকলেস অবলীলায় জিন্স ছিঁড়ে ফেলতে পারে এবং প্রিকলেসের কারণে গাছের চারপাশে বিচরণ করা খুব কষ্টসাধ্য হয়। বর্তমানে প্রিকল-বিহীন চাষাবাদ বিকশিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের আরক্যানসা বিশ্ববিদ্যালয় প্রিমোক্যান ফ্রুটিং ব্ল্যাকবেরিকে বিকশিত করেছে, যা প্রথম বছরেই বৃদ্ধি পায় এবং এতে ফুল ফুটে। এটি প্রিমোক্যান-ফ্রুটিং হিসাবে লাল রাসবেরির মত অনেক বেশি বৃদ্ধি পায়। অবনমিত কাণ্ডসহ পরিণত গাছগুলি ঘন ঝোপালো আকৃতি ধারণ করে এবং যখন সেগুলো মাটিতে পৌঁছায় তখন অনেক প্রজাতির (শিকড়ের) গ্রন্থির ডগা হতে শিকড়ের শাখা বের হয়। এগুলো পাহাড়ের পাশে সতেজ এবং দ্রুত বর্ধনশীল হয়। ব্ল্যাকবেরি ঝোপ নরম মাটি সহ্য করে এবং সেগুলো পতিত জমি, পরিখা এবং খালি অংশে সহজে বিস্তার লাভ করে।[৪][৬] ফুলের পার্শ্বিক ডগায় ছোট পুষ্পস্তবকে বসন্তের শেষে এবং গ্রীষ্মের শুরুতে ফুল ফুটে।[৫] প্রতিটি ফুল প্রায় ২–৩ সেন্টিমিটার ব্যাস বিশিষ্ট এবং এতে পাঁচটি সাদা অথবা ফ্যাকাশে গোলাপি পাপড়ি থাকে।[৫] আঁটি শুধুমাত্র ডিম্বাশয়ের চারপাশে বিকশিত হয়, যা পুষ্পরেণুর দানা হতে পুং জননকোষ দ্বারা নিষিক্ত হয়। অপর্যাপ্ত পরাগায়নের কারণে অধিকাংশ সম্ভাব্য ডিম্বাশয় অবিকশিত থেকে যায়।[৭] এমনকি এই শর্তাবলীতে সামান্য পরিবর্তন হয়। যেমন- বৃষ্টির দিনে অথবা খুব গরমের দিনে মৌমাছির জন্য সকালের পর কাজ করা কঠিন হয়, তাই ফুলে মৌমাছির আনাগোনা হ্রাস পেতে পারে, আর এভাবে ফলের গুণমান হ্রাস পায়। অপূর্ণাঙ্গ আঁটির বিকাশে গাছের শিকড়ের পরিমাণ কমে যাওয়ার উপসর্গ বা রাসবেরি বুশি ডোয়ার্ফ ভাইরাসের মত ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিতে পারে।
সংরক্ষিত হ্যারাল্ডস্কার নারীর মাধ্যমে ব্ল্যাকবেরি ভক্ষণের প্রথমদিকের ঘটনা জানা যায়, যেটি প্রায় ২৫০০ বছর আগের ড্যানিশ মহিলার প্রাকৃতিকভাবে সংরক্ষিত বগ বডি।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ফরেনসিক প্রতিবেদনে তার পাকস্থলীতে অন্যান্য খাদ্যের সাথে ব্ল্যাকবেরির উপাদান পাওয়া যায়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] বলকারক ঔষধ তৈরিতে ব্ল্যাকবেরির ব্যবহার লন্ডন ফার্মাকোপিয়াতে ১৬৯৬ সালে নথিভুক্ত ছিল।[৮] খাদ্য হিসেবে অন্যান্য ফলের পাশাপাশি পাই, জেলি এবং জ্যাম তৈরি করতে ব্ল্যাকবেরি ব্যবহারের দীর্ঘ ইতিহাস আছে।[৮] এছাড়াও পশ্চিমা সংস্কৃতিতে চিরাচরিত ঔষধ হিসেবে ব্ল্যাকবেরি গাছ ব্যবহারের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন][সন্দেহপূর্ণ ] প্রাচীন গ্রীকসহ অন্যান্য ইউরোপীয় মানুষেরা এবং স্থানীয় আমেরিকানরা বিভিন্ন চিকিৎসায় গাছের বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করতেন। মুখের রোগ, যেমন- মাড়ির রক্তপাত এবং মুখের দূষিত ঘা নিরাময়ের জন্য পাতা চিবানো হয় অথবা অঙ্কুর দিয়ে তৈরি চা ব্যবহৃত হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] পাতা এবং শিকড় দিয়ে চা বানানো হয়। এছাড়াও বাকল খুসখুসে কাশি উপশমের জন্য ব্যবহৃত হয়।[৮] শিকড় পরিপাকতন্ত্রের, যেমন- আমাশয় এবং উদরাময় রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ফলে – উচ্চ ভিটামিন সি উপাদান আছে – যা স্কার্ভি রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ১৭৭১ সালের একটি নথিতে পাকস্থলীর ক্ষতের চিকিৎসার জন্য ব্ল্যাকবেরির পাতা, কাণ্ড এবং বাকল ব্যবহারের সুপারিশ করা হয়েছে [৮] কাপড় এবং চুলে রং করতে ব্ল্যাকবেরির ফল, পাতা এবং কাণ্ড ব্যবহার করা হয়। এমনকি স্থানীয় আমেরিকানরা কাণ্ড ব্যবহার করে রশি তৈরির পদ্ধতি জানতেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] এছাড়াও ব্ল্যাকবেরির ঝোপ ভবন, শস্য এবং গবাদিপশুর চারপাশে বেড়া হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বুনো গাছগুলোতে ধারালো এবং পুরু কাঁটা থাকে, যা শত্রু এবং বড় প্রাণীর বিরুদ্ধে কিছুটা সুরক্ষা প্রদান করে।[৮]
কতিপয় চাষাবাদের আধুনিক উন্নয়ন বেশিরভাগই যুক্তরাষ্ট্রে ঘটেছে। ১৮৮০ সালে, আমেরিকান বিচারক এবং হর্টিকালচারালিস্ট জেমস হার্ভি লোগান কর্তৃক ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা ক্রুজে লোগানবেরি জাতের চাষাবাদ বিকশিত হয়েছিল। ১৯২১ সালে প্রথম কাঁটাহীন জাতের মধ্যে একটির বিকাশ ঘটেছিল, কিন্তু বেশিরভাগ বেরিই স্বাদ/গন্ধ হারিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের মাধ্যমে ১৯৯০ এর দশক থেকে ২১ শতকের প্রথম ভাগে প্রচলিত কাঁটাহীন জাতের চাষাবাদ বিকশিত হয়েছে। এছাড়াও তারা কার্যকর যান্ত্রিক-ফসল সংগ্রহ, উচ্চতর উৎপাদন, বৃহত্তর এবং দৃঢ় ফল এবং স্বাদের/গন্ধের উন্নতি ঘটাতে সমর্থ হয়েছে, এদের মধ্যে "ট্রিপল ক্রাউন"[৮][৯] "ব্ল্যাক ডায়মন্ড", "ব্ল্যাক পার্ল" এবং "নাইটফল" ম্যারিওনবেরি অন্তর্ভুক্ত।[১০]
ব্ল্যাকবেরির পাতা কিছু ক্যাটারপিলারের খাদ্য; এছাড়া কিছু স্তন্যপায়ীর, বিশেষভাবে হরিণের এই পাতা খুবই পছন্দের খাদ্য। "অ্যালএবোনিয়া জিওফ্রেলা" প্রজাতির কনসিলার মথের ক্যাটারপিলারকে শুকনো ব্ল্যাকবেরির অঙ্কুরের ভিতর খাদ্যগ্রহণ করা অবস্থায় পাওয়া যায়। পরিপক্ব ব্ল্যাকবেরি খাওয়া হয় এবং সেগুলোর বীজ স্তন্যপায়ীদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেমন- লাল শিয়াল, আমেরিকান কালো ভালুক এবং ইউরেশিয়ান বেজার, পাশাপাশি ছোট পাখিদের মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে।[১১]
ইউরোপের সর্বত্র অধিকাংশ বুনো ব্ল্যাকবেরি জন্মে। সেগুলো অনেক দেশে বাস্তুসংস্থানের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং পরিপক্ব ব্ল্যাকবেরি সংগ্রহের দিনটি জনপ্রিয় আনন্দোৎসবে পরিণত হয়। এছাড়াও গাছে আগাছার বিষয়টি বিবেচিত হয়, আগাছাগুলো শাখা হতে নিচের শিকড়ে পৌঁছে ভূমি স্পর্শ করে এবং শিকড় হতে উপরের চোষকে পৌঁছে। বিশ্বের কিছু অংশে, যেমন- অস্ট্রেলিয়া, চিলি, নিউজিল্যান্ড এবং উত্তর আমেরিকার উত্তরপশ্চিম প্রশান্তে, কিছু প্রজাতির ব্ল্যাকবেরি, বিশেষভাবে "রুবাস আর্মেনিয়াসাস" (হিমালয়ান ব্ল্যাকবেরি) এবং "রুবাস ল্যাসিনিয়াটাস" (চিরসবুজ ব্ল্যাকবেরি) আক্রমণকারী প্রজাতি এবং গুরুতর আগাছা ন্যাচারালাইজড এবং বিবেচিত হয়।[৪] পাকার আগে ব্ল্যাকবেরির ফল লাল হয়। তাই প্রসিদ্ধ পুরনো প্রবাদে বলা হয় "ব্ল্যাকবেরি লাল হয় যখন সেগুলো সবুজ থাকে"।[১২] যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অংশে, বুনো ব্ল্যাকবেরিকে মাঝেমাঝে "ব্ল্যাক-ক্যাপ্স" বলা হয়, এছাড়াও উক্ত শব্দটি সচরাচর "রুবাস অকসিডেন্টালিস" প্রজাতির কালো রাসবেরির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। লৌহ যুগের হ্যারাল্ডস্কার নারী হতে প্রমাণ আছে যে, তিনি ২,৫০০ বছরের কিছু আগে ব্ল্যাকবেরি খেয়েছিলেন। তাই যুক্তিসঙ্গতভাবে উপসংহারে বলা যায় যে, হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ ব্ল্যাকবেরি খেয়ে আসছে।
প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স)-এ পুষ্টিমান | |
---|---|
৯.৬১ g | |
চিনি | ৪.৮৮ g |
খাদ্য আঁশ | ৫.৩ g |
০.৪৯ g | |
১.৩৯ g | |
ভিটামিন | পরিমাণ দৈপ%† |
ভিটামিন এ | ২১৪ IU |
থায়ামিন (বি১) | ২% ০.০২০ মিগ্রা |
রিবোফ্লাভিন (বি২) | ২% ০.০২৬ মিগ্রা |
নায়াসিন (বি৩) | ৪% ০.৬৪৬ মিগ্রা |
ভিটামিন বি৬ | ২% ০.০৩০ মিগ্রা |
ফোলেট (বি৯) | ৬% ২৫ μg |
ভিটামিন সি | ২৫% ২১.০ মিগ্রা |
ভিটামিন ই | ৮% ১.১৭ মিগ্রা |
ভিটামিন কে | ১৯% ১৯.৮ μg |
খনিজ | পরিমাণ দৈপ%† |
ক্যালসিয়াম | ৩% ২৯ মিগ্রা |
লৌহ | ৫% ০.৬২ মিগ্রা |
ম্যাগনেসিয়াম | ৬% ২০ মিগ্রা |
ফসফরাস | ৩% ২২ মিগ্রা |
পটাশিয়াম | ৩% ১৬২ মিগ্রা |
সোডিয়াম | ০% ১ মিগ্রা |
জিংক | ৬% ০.৫৩ মিগ্রা |
| |
†প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য মার্কিন সুপারিশ ব্যবহার করে শতাংশ অনুমান করা হয়েছে। উৎস: ইউএসডিএ ফুডডাটা সেন্ট্রাল |
উল্লেখযোগ্য পরিমাণে খাদ্য আঁশ, ভিটামিন-সি এবং ভিটামিন-কে এর জন্য চাষাবাদকৃত ব্ল্যাকবেরিসমূহ বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।[১৩] ভক্ষণযোগ্য ১০০ গ্রাম ব্ল্যাকবেরি হতে ৪৩ ক্যালোরি এবং ৫ গ্রাম অথবা দৈনিক প্রস্তাবিত চাহিদার ২৫% খাদ্য আঁশ পাওয়া যায়।[১৩] ১০০ গ্রামে দৈনিক চাহিদার ভিটামিন-সি এবং ভিটামিন-কে এর পরিমাণ যথাক্রমে ২৫% এবং ১৯%, এছাড়াও এতে সল্প পরিমাণে অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান আছে। ব্ল্যাকবেরিতে দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয় উভয় আঁশই আছে।[১৪] এছাড়াও ম্যাঙ্গানিজ এবং ফলিক অ্যাসিড থাকার কারণে ব্ল্যাকবেরি বেশ গুরুত্বপূর্ণ।[১৫]
ব্ল্যাকবেরি অসংখ্য বড় বড় বীজ ধারণ করে, এটি ভোক্তাগণ সর্বদা পছন্দ করেন না। বীজ তেল ধারণের সাথে ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ চর্বির পাশাপাশি আমিষ, খাদ্য আঁশ, ক্যারোটিনয়েড, এলাজিট্যানিন্স এবং এলাজিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ।[১৬]
নরম ফল ডেজার্ট, জ্যাম, বীজবিহীন জেলি ইত্যাদিতে ব্যবহারের জন্য বেশ জনপ্রিয়।
এটির পাতা কষ সমৃদ্ধ এবং এতে জীবাণুনাশক বৈশিষ্ট্য আছে। এগুলো প্রাচীন গ্রীকের সময় থেকেই ঔষধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সেগুলো থেকে কষাটে চা তৈরি করা হয়, যেটি গলা ব্যাথা, মুখের ক্ষত, উদরাময় এবং থ্রাশ উপশমে ব্যবহৃত হয়।[১৫]
ব্ল্যাকবেরি অসংখ্য ফাইটোক্যামিকেল ধারণ করে, এদের মধ্যে পলিফেনল, ফ্লাভোনয়েড, অ্যান্থোসায়ানিন, স্যালিসিলিক অ্যাসিড, এলাজিক অ্যাসিড এবং আঁশ অন্তর্ভুক্ত।[১৩][১৭] অ্যান্থোসায়ানিন্স এর জন্য ব্ল্যাকবেরি গাঢ় রংয়ে সমৃদ্ধ হয়। এক প্রতিবেদনে দেখা যায় যুক্তরাষ্ট্রে ভক্ষিত পলিফেনল-সমৃদ্ধ ১০০০ এরও বেশি খাদ্যের মধ্যে ব্ল্যাকবেরি শীর্ষ অবস্থানে আছে,[১৮] কিন্তু ব্ল্যাকবেরির মত গাঢ় রংয়ের খাদ্য খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতার এই ধারণাটি বৈজ্ঞানিকভাবে যাচাই করা হয় নি এবং এটি খাদ্য নির্দেশিকায় স্বাস্থ্য অধিকারের জন্য গৃহীত নয়।[১৯]
বিশ্বব্যাপী মেক্সিকো ব্ল্যাকবেরির প্রধান উৎপাদনকারী। সাম্প্রতিককালে উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপের বাজারে অ-মৌসুমে টাটকা অবস্থায় রপ্তানির জন্য সম্পূর্ণ ফসল উৎপাদিত হচ্ছে।[২০] ২০১৮ সাল পর্যন্ত মেক্সিকোর বাজার প্রায় সম্পূর্ণরূপে 'টুপি' জাতের উপর ভিত্তিশীল ছিল (প্রায়শ 'তুপি' বানানে লেখা হয়, কিন্তু ব্রাজিলে এমব্রাপা কর্মসূচি হতে 'টুপি' বানান লেখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে), কিন্ত মেক্সিকোর কিছু বর্ধনশীল অঞ্চলে 'টুপি' জাতের পতন ঘটেছে।[২১] যুক্তরাষ্ট্রে অরিগন প্রধান বাণিজ্যিক ব্ল্যাকবেরি উৎপাদক, তারা ২০১৭ সালে ৬,৩০০ একর (২৫ কিমি২) জমিতে ৪,২৬,০০,০০০ পাউন্ড (১,৯৩,০০,০০০ কেজি) ব্ল্যাকবেরি উৎপাদন করেছে।[২২][২৩] ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ চাষাবাদের জন্য বহুসংখ্যক জাত নির্বাচিত হয়েছে।[১০][২৪] যেহেতু সহজে সংকরায়নের কারণে অনেক প্রজাতি পাওয়া যায়, তাই সেগুলোর একাধিক প্রজাতির পূর্বপুরুষের সাথে বহুসংখ্যক জাত আছে।[১০]
'ম্যারিওন' ("ম্যারিওনবেরি" নামে বাজারজাতকৃত) গুরুত্বপূর্ণ জাত, যেটি 'চেহ্যালাম' এবং 'ওলালি' বেরির মধ্যে সংকরায়নের মাধ্যমে উৎপাদিত চারা হতে নির্বাচিত হয়েছিল।[২৫] লোগানবেরি এবং ইয়াংবেরির মধ্যে সংকরায়নের মাধ্যমে 'ওলিলি'তে পরিণত করা হয়েছে। ব্ল্যাকবেরির অসংখ্য পরীক্ষামূলক জাতের মধ্যে 'ম্যারিওন', 'চেহ্যালাম' এবং 'ওলালি' কয়েকটি জাত মাত্র। এসব জাত বিকশিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের অধীনে পরিচালিত কৃষি গবেষণা কার্যক্রমের ব্ল্যাকবেরির জাত উন্নয়নের কর্মসূচির মাধ্যমে, যেটি ওরিগনের কোরভ্যালিসে ওরিগন স্ট্যাট ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।[১০] এই কর্মসূচি হতে সবচেয়ে সাম্প্রতিক জাত অবমুক্ত করা হয়েছে, এদের মধ্যে প্রিকল-মুক্ত 'ব্ল্যাক ডায়মন্ড', 'ব্ল্যাক পার্ল' এবং 'নাইটফল' জাতের পাশাপাশি খুব তাড়াতাড়ি পরিপক্বশীল 'অবসিডিয়ান' এবং 'মেটোলিয়াস' জাত অন্যতম। বর্তমানে 'ব্ল্যাক ডায়মন্ড' প্রধান জাত, যা উত্তরপশ্চিম প্রশান্তে চাষ হচ্ছে। এই কর্মসূচির আরো কিছু জাতের মধ্যে 'নিউবেরি', 'ওয়ালডো', 'সিস্কিইউ', 'ব্ল্যাক বিউট', 'কোট্যাটা', 'প্যাসিফিক' এবং ক্যাসকেড উল্লেখযোগ্য।[১০]
ট্রেলিং ব্ল্যাকবেরির চারা সবল এবং ক্রাউন গঠনের জন্য মাচার প্রয়োজন হয়। এছাড়া খাড়ার চেয়ে অর্ধ-খাড়া ব্ল্যাকবেরি অল্প ঠান্ডায় শক্ত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরপশ্চিম প্রশান্তের সংযোজনে এগুলো যুক্তরাজ্য, নিউজিল্যান্ড, চিলি,ভূমধ্য দেশসমূহের মত একই জলবায়ুতে ভালো থাকে।
যুক্তরাজ্যের নরউইচের জন ইনেস সেন্টারে এবং পরবর্তীকালে মেরিল্যান্ডের বেল্টসভিলে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের অধীনে পরিচালিত কৃষি গবেষণা কার্যক্রমের মাধ্যমে অর্ধ-খাড়া, প্রিকল-মুক্ত ব্ল্যাকবেরি প্রথম বিকশিত হয়েছিল। এসব জাতের মধ্যে 'ব্ল্যাক স্যাটিন', 'চেস্টার থোর্নলেস', 'ডার্কসেন থোর্নলেস', 'হাল থোর্নলেস', 'লক ম্যারী', 'লক নেস', 'লক টে', 'মার্টন থোর্নলেস', 'স্মুথস্টেম' এবং 'ট্রিপল ক্রাউন' অন্তর্ভুক্ত।[২৬] 'ক্যাকেন্সকা বেস্টোনা' জাত (এছাড়াও 'ক্যাকেক থোর্নলেস' বলা হয়) সার্বিয়াতে বিকশিত হয়েছে এবং সেখানে কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হয়।
আরক্যান্সা বিশ্ববিদ্যালয় খাড়া জাতের ব্ল্যাকবেরি বিকশিত করেছে। এসব জাত অর্ধ-খাড়া জাতের চেয়ে কম সবল এবং এগুলি প্রারম্ভিক শিকড় হতে নতুন ক্যান্স উৎপাদন করে (একারণে রাসবেরির মত সেগুলোর বিস্তার মাটির নিচে ঘটে)। এই কর্মসূচি হতে 'নাভাহো', 'ওয়াশিটা', 'চেরোকী', 'অ্যাপাচি', 'অ্যারাপাহো' এবং 'কায়িওয়া' জাত প্রিকলি এবং প্রিকল-মুক্ত জাতের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।[২৭][২৮] এছাড়াও সেখানে 'প্রাইম-জ্যান' এবং 'প্রাইম-জিম' এর মত প্রিমোক্যান ফ্রুটিং ব্ল্যাকবেরির উন্নয়ন করা হচ্ছে।[২৭]
রাসবেরির ক্ষেত্রে সেগুলোকে প্রিমোক্যান ফ্রুটিং, ফল ফ্রুটিং অথবা এভারবিয়ারিং বলা হয়। আরক্যান্সা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ২০০৪ সালে 'প্রাইম-জিম' এবং 'প্রাইম-জ্যান' অবমুক্ত করা হয়েছিল এবং সেটিই প্রিমোক্যান ফ্রুটিং ব্ল্যাকবেরির প্রথম জাত।[২৯] উপরে বর্ণিত অন্যান্য খাড়া জাতের মত সেগুলো প্রচুর বৃদ্ধি পায়। ক্যান্স বসন্তে বের হয়ে গ্রীষ্মের মাঝামাঝিতে ফুল হয় এবং গ্রীষ্মের শেষের দিকে ফল হয় অথবা ঝরে পড়ে। ঝরে পড়া ফসলে সর্বোচ্চ গুণাগুণ থাকে, যখন এটি ক্যালিফোর্নিয়া অথবা উত্তরপশ্চিম প্রশান্তের মত হালকা ঠান্ডা জলবায়ুতে পাকে।[৩০] ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে 'ইলিনি হার্ডি', অর্ধ-খাড়া প্রিকলি জাত প্রবর্তিত হয়েছে। আর জোন ৫ এ এটির ক্যান শক্ত হয়, যেহেতু ক্যান্স প্রায়ই শীতকালে টিকে থাকতে ব্যর্থ হয়, তাই সেখানে প্রথাগতভাবে ব্ল্যাকবেরি উৎপাদন করা বেশ কষ্টসাধ্য।
২১ শতকের প্রথম দিকে মেক্সিকোতে ব্ল্যাকবেরির উৎপাদন ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হয়েছে।[২০][২৩] ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে তাজা ব্ল্যাকবেরি রপ্তানির জন্য বাজারে মেক্সিকোর ৯৭% অংশ ছিল এবং আমেরিকা হিমায়িত ব্ল্যাকবেরি আমদানি করার কারণে চিলির ৬১% বাজার অংশ ছিল।[২৩] একবার 'ব্রাজোস' জাতের উপর ভিত্তি করা হয়েছিল, যা পুরনো খাড়া জাতের ব্ল্যাকবেরি, যেটি ১৯৫৯ সালে টেক্সাসে বিকশিত হয়েছিল। ১৯৯০ সালে অবমুক্তকৃত ব্রাজিলের 'টুপি' জাতের মাধ্যমে বর্তমানে মেক্সিকোর শিল্প-প্রতিষ্ঠান আধিপত্য বিস্তার করছে। 'টুপি' খাড়া ব্ল্যাকবেরির 'কোমাঞ্চ' এবং উরুগুয়ের বুনো ব্ল্যাকবেরির পূর্বসূরি।[৩১] যেহেতু উরুগুয়েতে কোনো নিকটতম ব্ল্যাকবেরির জাত নেই, তাই ধারণা করা হয় যে, ব্যাপকভাবে জন্মানো 'বয়সেনবেরি'ই এটির পূর্বপুরুষ। মেক্সিকো অঞ্চলের এই ব্ল্যাকবেরি উৎপাদন করার জন্য ফুলের কুঁড়ির বিকাশ ঘটাতে কোনো শীতকালীন ঠান্ডা নেই, তাই গাছে মুকুল আনার জন্য রাসায়নিক এবং বৃদ্ধিকারী উপাদান ব্যবহৃত হয়।
যেহেতু ব্ল্যাকবেরি এবং রাসবেরি একই প্রজাতির অন্তর্গত[৩২] তাই তারা একই ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়, এর মধ্যে অ্যানথ্রাকনোজ অন্তর্ভুক্ত, যার কারণে বেরি সঠিকভাবে পাকে না। এছাড়াও স্যাপ প্রবাহ ধীরগতির হতে পারে।[৩৩][৩৪] তাদের উভয়ের ক্ষেত্রে একই প্রতিষেধক প্রয়োগ করা হয়, এর মধ্যে বোর্দ মিশ্রণ অন্তর্ভুক্ত,[৩৫] যেটি চুন, পানি এবং কপার সালফেট এর সমন্বয়ে তৈরি করা হয়।[৩৬] ব্ল্যাকবেরি গাছের মধ্যে সারিগুলো অবশ্যই ঘাস, আগাছা এবং ব্ল্যাকবেরি চোষক মুক্ত রাখতে হবে, কেননা এসব হতে কীটপতঙ্গ বা রোগের বিস্তার ঘটতে পারে।[৩৭] যখন ব্ল্যাকবেরির গাছ ঝোপালো হয় তখন ফলবান গাছ নির্বাচন করতে হয়, কেননা সেগুলোতে বুনো ব্ল্যাকবেরির গাছ ছড়িয়ে পড়তে পারে[৩৭] এবং বাগানকারীকে শুধুমাত্র প্রত্যায়িত রোগ-মুক্ত চারাগাছ ক্রয়ের সুপারিশ করা হয়।[৩৮] দাগওয়ালা পাখা বিশিষ্ট ড্রোসোফিলা, "ড্রোসোফিলা সুজুকি" ব্ল্যাকবেরির গুরতর কীটপতঙ্গ।[৩৯] এটি টক ফলে উড়তে অপছন্দ করে এবং এটি মূলত পচনশীল বা গাঁজনকৃত ফলে আকৃষ্ট হয়। "ড্রোসোফিলা সুজুকি" ফলের নরম ত্বকের নিচে ডিম পাড়ার মাধ্যমে তাজা এবং পাকা ফলকে আক্রমণ করে। শুককীট ফলের মধ্যে ফোটে এবং বৃদ্ধি পায়, একারণে ফলের বাণিজ্যিক মূল্য কমে যায়।[৩৯] আরেকটি কীট অ্যামফোরোফোরা রুবি, যেটি ব্ল্যাকবেরি অ্যাফিড নামে পরিচিত, যা শুধু ব্ল্যাকবেরিই খায় না বরং রাসবেরিও বেশ ভালোই খায়।[৪০][৪১][৪২] এছাড়াও বাইটোরাস টোমেনটোসেস (রাসবেরি বীটল), ল্যামপ্রোনিয়া কোর্টিসেলা (রাসবেরি মথ) এবং অ্যানথোনোমাস রুবি (স্ট্রবেরি ব্লোসম উয়ীভিল) ব্ল্যাকবেরিকে আক্রমণের জন্য পরিচিত।[৪৩]
প্রিমোক্যান ফ্রুটিং এলজি৭ এর এফ লোকাসের মধ্যে নকশা করা হয়েছিল, পক্ষান্তরে কাঁটা এলজি৪ এ নকশা করা হয়েছিল।[৪৪] মিশ্র-প্রজাতির আবরণের জিনতত্ত্ব এবং জিনতত্ত্ব প্রকৌশলবিদ্যার উদ্দেশ্যের জন্য এটির জিনতত্ত্ব ভালোভাবে উপলব্ধি করা আবশ্যক।
যুক্তরাজ্যের লোকাচারে বলা হয় যে, পুরনো মিখাইলমাস দিবসের (১১ অক্টোবর) পরে ব্ল্যাকবেরি সংগ্রহ করা উচিত নয়। কেননা তখন শয়তান পদদলন এবং থুতু নিক্ষেপের মাধ্যমে সেগুলোকে খাবার অযোগ্য করে দেয়।[৪৫] এই লোককাহিনীটির কিছু বাস্তবতা আছে। কেননা ফলগুলো শরৎকালে ভেজা থাকে এবং শীতল আবহাওয়া প্রায়শই ফলকে সংক্রমিত হতে সুযোগ করে দেয়। এছাড়া বোট্রিওটিনিয়ার মত বিভিন্ন মোল্ড ফলকে অপ্রীতিকর চেহারা দেয় এবং উক্ত মোল্ডের কারণে ফলটি বিষাক্ত হতে পারে।[৪৬] কিছু ঐতিহ্য অনুযায়ী, ব্ল্যাকবেরির গাঢ় বেগুনি রং যিশু খ্রিস্টের রক্তের প্রতিনিধিত্ব করে এবং তার কাঁটার মুকুটটি ব্র্যামবেলের তৈরি ছিল[৪৭][৪৮] যদিও অন্যান্য কাঁটাওয়ালা গাছ, যেমন- ক্র্যাটাগেস (হাওথোর্ন) এবং ইউফোরবিয়া মিলিয়ি (কাঁটার মুকুট ওয়ালা গাছ) মুকুটের উপাদান হিসাবে প্রস্তাবিত হয়েছে।[৪৯][৫০]
|আইএসবিএন=
এর মান পরীক্ষা করুন: invalid character (সাহায্য)।