ভগদত্ত | |
---|---|
পরিবার | নরকাসুর (পিতা) |
সন্তান | বজ্রদত্ত এবং পুষ্পদত্ত (পুত্রদ্বয়) |
ভগদত্ত ছিলেন পৌরাণিক কামরূপ রাজ্যের অধিপতি। তিনি ছিলেন একজন মহারাজ ও একজন মহাবীর। মহাভারতের হস্তিনাপুর রাজ্যের সাথে তার আত্মীয়তা ছিল। তিনি ছিলেন কৌরব যুবরাজ দুর্যোধনের এবং পাঞ্চাল যুবরাজ ধৃষ্টদ্যুম্নের শ্বশুর।[১][২] তার সময়কালে, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল কামরূপ রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। সিলেট বিভাগের লাউড় পরগণাধীন লাউড় নামক পাহাড়ে তার উপরাজধানি থাকার উল্লেখ্য শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তসহ বিভিন্ন ইতিহাস গ্রন্থে পাওয়া যায়।[৩]
মহাভারত সময়কালে যখন দেব-বর্মণ বংশের ত্রান্তিক রাজা নরকাসুর কামরূপ রাজ্যের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন, ঐ সময় প্রাচীন গুজরাতে শ্রীকৃষ্ণ দ্বারকা নামে রাজ্য প্রতিষ্ঠিত করেন। তৎকালে কামরূপ রাজা নরকাসুরের মানবতা বিরোধী বিভিন্ন কার্যকলাপে শ্রীকৃষ্ণ অতিষ্ঠ হয়ে নরকাসুরকে হত্যা করেন এবং কামরূপের যুবরাজ ভগদত্তকে সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত করেন[১]। রাজা ভগদত্তের শাসনামলে সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলাধীন লাউড় পর্বতে তার একটি শাখা রাজধানী ছিল। যার ভগ্নাবশেষ আজও অত্র অঞ্চলে বিদ্যমান। রাজা ভগদত্ত ব্রাহ্মণ ভক্ত ছিলেন। তিনি প্রজারঞ্জক ও ন্যায়পরায়ণ রাজা হিসেবে আখ্যাত। তার শাসনামলে কামরূপ রাজ্যের লাউড়াংশের অনেক উন্নয়নের কথা শোনা যায়। দৈবশক্তির রথ ছিলো তার রাজ্য ভ্রমণের প্রধান বাহন। তিনি দিনারপুর থেকে লাউড়, সেখান থেকে গৌড় পর্যন্ত খেয়া নায়েও চলা-ফেরা করতেন। কারণ তার সময়ে প্রাচীন শ্রীহট্টের এই অঞ্চলগুলোর নিম্নাংশ বেশীরভাগ সাগর গর্ভে নিমজ্জিত ছিল। মহাভারত সময়ে কুরুক্ষেত্রে ১২ দিন যুদ্ধ করার পর অর্জুন কর্তৃক নিহত হন।[৩]
গুজরাত অঞ্চলে যখন শ্রীকৃষ্ণ দ্বারকা নামে রাজ্য প্রতিষ্ঠিত করেন। ঠিক ঐ সময় কামরূপের রাজা নরকাসুর ধর্মদ্রোহী হয়ে ভৌতিক শক্তি বলে নারী হরণ সহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মানবতা বিরোধী কার্যকলাপ চালিয়ে মানব সমাজে অশান্তি ছড়িয়ে দেয়।
মহাভারতের যুদ্ধে মহারাজ ভগদত্ত হস্তিনাপুরের সঙ্গে সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতার কারণে অধার্মিক দুর্যোধনের পক্ষ থেকে অস্ত্র ধারণ করতে বাধ্য হন। যুদ্ধে দ্বাদশ দিনে গাণ্ডীবধারী অর্জুনের হাতে তার মৃত্যু হয়।