ভদ্রকালী | |
---|---|
কল্যাণ, যুদ্ধ, শত্রু বিনাশ | |
দেবী পার্বতীর একাদশ শক্তি গোষ্ঠীর সদস্য | |
অন্তর্ভুক্তি | মহাশক্তি, পার্বতী |
আবাস | কৈলাস, মণিদ্বীপ |
অস্ত্র | খড়গ, ত্রিশূল, পাশ, অঙ্কুশ, জপমাল্য, কমণ্ডলু, শঙ্খ, চক্র, চর্ম, পরশু, দণ্ড, বজ্র, ঘণ্টা, বাণ, ধনুক, শক্তি। |
বাহন | সিংহ |
গ্রন্থসমূহ | কালিকা পুরাণ, দেবী ভাগবত পুরাণ |
অঞ্চল | হিন্দু |
সঙ্গী | মহাকাল,বীরভদ্রা |
হিন্দুধর্মে ভদ্রকালী (সংস্কৃত: भद्रकाली) মহাশক্তির একটি বিশেষ রূপ। মার্কণ্ডেয় পুরাণ অনুসারে, মহিষাসুরমর্দিনী চণ্ডী ও ভদ্রকালী অভিন্না।[১][২] মহাভারতে ভদ্রকালী দুর্গার অপর নাম।[৩] কালিকাপুরাণ ও দেবীপুরাণ অনুসারেও, ভদ্রকালী দুর্গারই রূপান্তর। আবার সরস্বতীকেও ভদ্রকালী নামে অভিহিত করা হয়ে থাকে।[১]
ড.হংসনারায়ণ ভট্টাচার্যের মতে,
“ | ভদ্রকালী নামে শক্তিদেবতার যে রূপ কল্পিত হয়েছে, তার মধ্যেও তিন প্রকার ভেদ সুস্পষ্ট। ভদ্রকালী কখনও মহিষাসুরমর্দিনী দুর্গা, কখনও দক্ষযজ্ঞবিনাশিনী ও ভয়ংকরী চামুণ্ডারূপিণী।”[১] | ” |
কালিকাপুরাণ অনুযায়ী, ভদ্রকালীর মূর্তি উক্ত পুরাণে বর্ণিত দুর্গামূর্তির অনুরূপ।[১] এই মূর্তি ষোড়শভুজা, অতসীপুষ্পবর্ণা, মস্তকে জটাজুট ও চন্দ্রকলা শোভিতা, কণ্ঠদেশে নাগহার ও স্বর্ণহার পরিহিতা, দক্ষিণ হস্তসমূহে শূল, চক্র, খড়্গ, শঙ্খ, বাণ, শক্তি, বজ্র, দণ্ড এবং বাম হস্তসমূহে খেটক, ঢাল, ধনু, পাশ, অঙ্কুশ, ঘণ্টা, পরশু ও মুষল ধারিণী। সিংহপৃষ্ঠে দণ্ডায়মান অবস্থায় বামপদে মহিষাসুরকে আক্রমণ করে তিনি তাকে শূলের দ্বারা বিদ্ধ করেছেন।[৪]
তন্ত্রসারে ভদ্রকালীর যে ধ্যানমন্ত্র উল্লিখিত হয়েছে, তদনুসারে ভদ্রকালী অত্যন্ত ভয়ংকরী: “মহামেঘতুল্যবর্ণা, কৃষ্ণবস্ত্রপরিহিতা, লোলজিহ্বা, ভয়ংকর দন্তপংক্তিবিশিষ্টা, কোটরগতচক্ষুবিশিষ্টা, হাস্যমুখী, গলায় সাপের হার, কপালে অর্ধচন্দ্র, গগনস্পর্শিজটাধারিণী, স্বয়ং শবলেহনে রতা, সর্পশয্যায় উপবিষ্টা, পঞ্চাশটি মুণ্ডবিশিষ্ট নরমুণ্ডমালাপরিহিতা, বিশাল উদরযুক্তা, মাথার উপরে সহস্রফণাযুক্ত অনন্তনাগ শোভিতা, চতুর্দিকে সাপের ফণায় বেষ্টিতা, গুহ্যকালিকা, সর্পরাজ তক্ষক যাঁর বামহস্তের ও নাগরাজ অনন্ত দক্ষিণ হস্তের কঙ্কণ, কটিদেশে তাঁর সর্পমেখলা, পায়ে রত্ননূপুর, বামে বালক শিব, দ্বিভুজা নাগযজ্ঞোপবীতধারিণী, কর্ণদ্বয়ে নষ্ট; টংক, নরকপাল, ডমরু ও ত্রিশূলধারিণী; জটামণ্ডিতা ও ভীষণ শুভ্রদন্তবিশিষ্টা।[১][৫] প্রপঞ্চসার তন্ত্রে ভদ্রকালী ত্রিনয়না; ঘনমেঘবর্ণা; পরশু, নরকপাল, ডমরু ও ত্রিশূলধারিণী; জটামণ্ডিতা ও ভীষণ শুভ্রদন্তবিশিষ্টা।[১][৬]