ভানেসা রেডগ্রেভ | |
---|---|
Vanessa Redgrave | |
![]() ২০১৭ সালে ভানেসা রেডগ্রেভ | |
জন্ম | ব্ল্যাকহিথ, লন্ডন, ইংল্যান্ড | ৩০ জানুয়ারি ১৯৩৭
পেশা |
|
কর্মজীবন | ১৯৫৮-বর্তমান |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | চলচ্চিত্রের তালিকা |
দাম্পত্য সঙ্গী |
|
সঙ্গী | টিমথি ডল্টন (১৯৭১–১৯৮৬) |
সন্তান | |
পিতা-মাতা | |
পরিবার | রেডগ্রেভ পরিবার |
পুরস্কার | পূর্ণ তালিকা |
ভানেসা রেডগ্রেভ সিবিই (ইংরেজি: Vanessa Redgrave; জন্ম: ৩০শে জানুয়ারি ১৯৩৭) হলেন একজন ইংরেজ অভিনেত্রী ও রাজনৈতিক কর্মী। তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে একটি একাডেমি পুরস্কার, টেলিভিশন অভিনয়ের জন্য দুটি এমি পুরস্কার এবং মঞ্চে অভিনয়ের জন্য একটি টনি পুরস্কার লাভ করেন। ফলে তিনি অভিনয়ের ত্রিমুকুট বিজয়ী অভিনয়শিল্পীদের একজন। এছাড়া তিনি দুটি গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার, একটি বাফটা পুরস্কার ও একটি স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার লাভ করেছেন। ২০০৩ সালে তার নাম আমেরিকান থিয়েটার হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত হয়[১] এবং ২০১০ সালে তাকে বাফটা ফেলোশিপ প্রদান করা হয়।[২]
ভানেসা অভিনয়শিল্পী পরিবার রেডগ্রেভ পরিবারের একজন। তিনি স্যার মাইকেল রেডগ্রেভ ও লেডি রেডগ্রেভের (অভিনেত্রী রেচেল কেম্পসন) কন্যা এবং লিন রেডগ্রেভ ও করিন রেডগ্রেভের বোন। পরিচালক টনি রিচার্ডসনের প্রাক্তন স্ত্রী এবং নাতাশা রিচার্ডসন ও জোয়েলি রিচার্ডসনের মাতা, ব্রিটিশ অভিনেত্রী জেমা রেডগ্রেভের ফুফু এবং অভিনেতা লিয়াম নিসনের শ্বাশুড়ি।
রেডগ্রেভ ১৯৩৭ সালের ৩০শে জানুয়ারি লন্ডনের ব্ল্যাকহিথে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা স্যার মাইকেল রেডগ্রেভ এবং মাতা রেচেল কেম্পসন দুজনেই অভিনয়শিল্পী।[৩] ওল্ড ভিসে হ্যামলেট নাটকের মঞ্চায়নকালে লরন্স অলিভিয়ে দর্শকদের সামনে তার জন্মের ঘোষণা দেন। তিনি জানান লায়ের্টেসের (মাইকেলের অভিনীত চরিত্র) কন্যা জন্মগ্রহণ করেছে। তার দুই বোন লিন রেডগ্রেভ ও করিন রেডগ্রেভও স্বনামধন্য অভিনয়শিল্পী।
রেডগ্রেভ তার আত্মজীবনীতে লিখেন তার সবচেয়ে পুরনো স্মৃতি হল ইস্ট এন্ড ও কভেন্ট্রি ব্লিটজ।[৪] ইস্ট এন্ড ব্লিটজের পর রেডগ্রেভ তার পরিবারের সাথে হিয়ারফোর্ডশায়ারে চলে যান এবং ১৯৪৩ সালে পুনরায় লন্ডনে ফিরে আসেন।[৫] তিনি ওস্টারের অ্যালিস ওটলি স্কুল এবং লন্ডনের কুইন্স গেট স্কুলে পড়াশোনা করেন।
ভানেসা রেডগ্রেভ ১৯৫৪ সালে সেন্ট্রাল স্কুল অব স্পিচ অ্যান্ড ড্রামায় ভর্তি হন। তিনি ওয়েস্ট এন্ড মঞ্চে প্রথমে ১৯৫৮ সালে তার ভাই করিনের বিপরীতে অভিনয় করেন। ১৯৫৯ সালে তিনি শেকসপিয়ার মেমোরিয়াল থিয়েটারে পিটার হলের নির্দেশনায় আ মিডসামার নাইট'স ড্রিম নাটকে চার্লস লটনের বিপরীতে হেলেনা চরিত্রে; এবং করিওলানাস নাটকে লরন্স অলিভিয়ে, অ্যালবার্ট ফিনি ও ইডিথ এভান্সের সাথে অভিনয় করেন।[৬]
১৯৬০ সালে রেডগ্রেভ রবার্ট বোল্টের দ্য টাইগার অ্যান্ড দ্য হর্স নাটকে প্রথমবারের মত কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন। এতে তার পিতা মাইকেল তার সহশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন। ১৯৬১ সালে তিনি রয়্যাল শেকসপিয়ার কোম্পানির অ্যাজ ইউ লাইক ইট নাটকে রোজালিন্ড চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৬২ সালে তিনি রয়্যাল শেকসপিয়ার কোম্পানিতে উইলিয়াম গাস্কিলের নির্দেশনায় সাইম্বেলিন নাটকে ইমোজেন চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৬৬ সালে ডোনাল্ড অ্যালবারির নির্দেশনায় দ্য প্রাইম অব মিস জিন ব্রডি নাটকে জিন ব্রডি নামক চরিত্রটিতে প্রথমবার অভিনয় করেন। জে প্রেসন অ্যালেন এই নাটকটি ম্যুরিয়েল স্পার্কের উপন্যাস থেকে মঞ্চে উপযোগী করেন।
রেডগ্রভের অভিনীত প্রথম পর্দায় তার নামের কৃতিত্ব পাওয়া চলচ্চিত্র ছিল বিহাইন্ড দ্য মাস্ক (১৯৫৮)। ব্রায়ান ডেসমন্ড পরিচালিত এই চলচ্চিত্রে তিনি তার পিতার সাথে অভিনয় করেন। রেডগ্রেভের প্রথম কেন্দ্রীয় ভূমিকায় অভিনীত চলচ্চিত্র হল মরগান - আ সুইটেবল কেস ফর ট্রিটমেন্ট (১৯৬৬)। ক্যারেল রাইৎস পরিচালিত চলচ্চিত্রটিতে তিনি ডেভিড ওয়ার্নারের বিপরীতে অভিনয় করেন।[৭] এই কাজের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে কান চলচ্চিত্র উৎসব পুরস্কার অর্জন করেন;[৮] এবং সঙ্গীতধর্মী বা হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের মনোনয়ন[৯] ও শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কার[১০] ও বাফটা পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[১১] একই বছর তিনি ব্লোআপ (১৯৬৬) চলচ্চিত্রে লন্ডন অধিবাসী সুইঙ্গার চরিত্রে অভিনয় করেন। ডেভিড হেমিংসের বিপরীতে অভিনীত এই চলচ্চিত্রটি ইতালীয় পরিচালক মিকেলাঞ্জেলো আন্তোনিওনির প্রথম ইংরেজি ভাষার চলচ্চিত্র।[১২] ১৯৬৮ সালে তিনি তিনি পুনরায় ক্যারেল রাইৎসের পরিচালনায় নৃত্যশিল্পী ইসাডোরা ডানকানের জীবনীনির্ভর ইসাডোরা চলচ্চিত্রে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন। এই কাজের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ন্যাশনাল সোসাইটি অব ফিল্ম ক্রিটিকস পুরস্কার ও শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে তার দ্বিতীয় কান চলচ্চিত্র উৎসব পুরস্কার অর্জন করেন[১৩] এবং নাট্যধর্মী চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের মনোনয়ন[১৪] ও শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[১৫]
এই সময়ে তিনি কয়েকটি চলচ্চিত্রে ঐতিহাসিক ও পৌরাণিক চরিত্রে অভিনয় করেন। তিনি কেমলট (১৯৬৭) চলচ্চিত্রে রিচার্ড হ্যারিস ও ফ্র্যাঙ্কো নিরোর বিপরীতে গুয়াইনিভিয়ার, ও! হোয়াট আ লাভলি ওয়ার (১৯৬৯) চলচ্চিত্রে সিলভিয়া পাঙ্কহার্স্ট, দ্য ট্রোজান উইমেন (১৯৭১) চলচ্চিত্রে অ্যান্ড্রোমেকি চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৭১ সালে তিনি কেন রাসেল পরিচালিত একদা বিতর্কিত দ্য ডেভলস চলচ্চিত্রে মাদার সুপিরিয়র জ্যান দে আইনেস চরিত্রে অভিনয় করেন। একই বছর তিনি ম্যারি, কুইন অব স্কটস চলচ্চিত্রে নাম ভূমিকায় অভিনয় করে নাট্যধর্মী চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার[১৬] ও শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে তার তৃতীয় একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[১৭]
Vanessa Redgrave, 1937, Greenwich, London, England; Mother's maiden name Kempson