ভারত কর্তৃক গোয়া দখল

ভারতীয় বাহিনী কর্তৃক গোয়া দখল

বর্তমান ভারতের মানচিত্রে গোয়া,দমনদিউ এর অবস্থান
তারিখ১৭–১৯ ডিসেম্বর, ১৯৬১
(২ দিন)
অবস্থান
ফলাফল ভারতের বিজয়
অধিকৃত
এলাকার
পরিবর্তন
পর্তুগিজ গোয়া,দমনদিউ এর ভারতভুক্তি
বিবাদমান পক্ষ
 ভারত পর্তুগিজ সাম্রাজ্য
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী
শক্তি
45,000 infantry
1 light aircraft carrier
2 cruisers
1 destroyer
8 frigates
4 minesweepers
20 Canberra medium bombers
6 Vampire fighters
6 Toofani fighter-bombers
6 Hunter multi-role aircraft
4 Mystère fighter-bombers
3,500 military personnel
1 frigate
3 inshore patrol boats
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি
22 killed[]

গোয়ার দখল বা সংযোজন বলতে তৎকালীন পর্তুগিজ ভারতীয় অঞ্চল গোয়া, দমন ও দিউকে ভারতীয় সেনাবাহিনী কর্তৃক ভারত প্রজাতন্ত্রে সংযুক্ত করানোকে বোঝানো হয়। ১৯৬১ সালের ডিসেম্বরে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী একটি সশস্ত্র অভিযানের মাধ্যমে উক্ত অঞ্চলগুলি দখল করে ভারতীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত করে।

ভারতে এই কাজকে "গোয়ার মুক্তি " হিসাবে উল্লেখ করা হয় এবং পর্তুগালে এটিকে "গোয়া আগ্রাসন" বলা হয়। জওহরলাল নেহেরু আশা করেছিলেন যে, গোয়ার জনগণের আন্দোলন ও বিশ্ব জনমতের চাপ পর্তুগিজ কর্তৃপক্ষকে গোয়ার স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে বাধ্য করবে, কিন্তু পর্তুগিজরা যেহেতু এসবের কোনো পরওয়া করেনি তাই তিনি জোরপূর্বক গোয়া অধিগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন।[] যদিও দাদরা ও নগর হাভেলিকে ইতিমধ্যে স্থানীয়রা স্বাধীন ঘোষণা করে বসেছিল।

১৯৪৭ সালে যুক্তরাজ্য থেকে ভারতের স্বাধীনতা এবং পরবর্তীকালে ভারত ও পাকিস্তান বিভক্তির পরও ভারতের কয়েকটি অঞ্চল পর্তুগিজ উপনিবেশ হিসেবে ছিল। পর্তুগিজরা ভারতীয় উপদ্বীপের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত গোয়া, দামাওন, সিলভাসা, দিউ এবং অঞ্জেদিভাকে তখনো নিজেদের দখলে রেখেছিল। ভারত স্বাধীন হওয়ার পর ভারত সরকার এসব অঞ্চল দাবী করলে পর্তুগাল তা ছেড়ে দিতে অস্বীকার করে। তাই ভারত সামরিক শক্তির মাধ্যমে পর্তুগিজ অঞ্চলগুলো দখলের পরিকল্পনা করে। সে লক্ষ্যে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী ১৯৬১ সালে অপারেশন বিজয় নামে একটি সশস্ত্র অভিযান পরিচালনা করে। এটি ৩৬ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে বিমান, সমুদ্র এবং স্থল হামলার সমন্বয়ে পরিচালিত হয়েছিল এবং এর মাধ্যমে সেই অঞ্চলে পর্তুগালের ৪৫১ বছরের শাসনের অবসান ঘটে।

যুদ্ধ দুই দিন স্থায়ী হয় এবং এতে ২২ জন ভারতীয় এবং ৩০ পর্তুগিজ নিহত হয়। এটি বিশ্বব্যাপী প্রশংসা এবং নিন্দার মিশ্রণ তৈরি করেছিল। ভারত এই পদক্ষেপটিকে ভারতীয় ভূখণ্ডের মুক্তি হিসাবে বর্ণনা করেছিল। অপরদিকে পর্তুগাল এটিকে তার নিজের মাটি এবং নাগরিকদের বিরুদ্ধে আগ্রাসন হিসেবে দেখেছিল। পর্তুগিজ শাসন অবসানের পর গোয়াকে লেফটেন্যান্ট গভর্নর কুনহিরামন পালাত ক্যান্ডেথের নেতৃত্বে সামরিক প্রশাসনের অধীনে রাখা হয়। [] ১৯৬২ সালের ৮ জুন সামরিক শাসন বেসামরিক সরকার দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। []

পটভূমি

[সম্পাদনা]

১৯৪৭ সালের আগস্টে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর পর্তুগাল বর্তমান ভারতের গোয়া, দমন এবং দিউ এবং দাদরা ও নগর হাভেলি জেলাগুলিকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখে। এদের সম্মিলিতভাবে পর্তুগিজ ভারত বলা হয়। গোয়া, দমন এবং দিউ প্রায় ৪০০০ কি.মি. এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এদের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৬৩৭,৫৯১জন। [] গোয়ান প্রবাসীদের অনুমান করা হয়েছিল প্রায় ১৭৫,০০০ জন (এদের প্রায় ১০০,০০০ জন ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে বসবাস করত।[] ধর্মীয় হিসাবে ৬১% হিন্দু, ৩৬.৭% খ্রিস্টান এবং ২.২% মুসলিম ছিল।[] অর্থনীতি প্রাথমিকভাবে কৃষির উপর নির্ভরশীল ছিল, যদিও ১৯৪০ এবং ১৯৫০ এর দশকে কিছু খনিজ সম্পদের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল।[]

পর্তুগিজ শাসনের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রতিরোধ

[সম্পাদনা]

বিংশ শতাব্দীতে গোয়ায় একজন ফরাসি-শিক্ষিত গোয়ান প্রকৌশলী ত্রিস্তো দে ব্রাগানসা কুনহা পর্তুগিজ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তিনি ১৯২৮ সালে পর্তুগিজ ভারতে গোয়া কংগ্রেস কমিটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কুনহা 'চারশত বছরের বিদেশী শাসন' নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেন। রাজেন্দ্র প্রসাদ, জওহরলাল নেহেরু এবং সুভাষ চন্দ্র বসুসহ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের কাছ থেকে তিনি গোয়া কংগ্রেস কমিটি সংহতির বার্তা পেয়েছিলেন। ১৯৩৮ সালের ১২ অক্টোবর কুনহা গোয়া কংগ্রেস কমিটির অন্যান্য সদস্যদের সাথে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি সুভাষ চন্দ্র বসুর সাথে দেখা করেন এবং তার পরামর্শে বোম্বের ২১/দালাল স্ট্রীটে গোয়া কংগ্রেস কমিটির একটি শাখা অফিস খোলেন। গোয়া কংগ্রেসকেও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের অধিভুক্ত করা হয় এবং কুনহাকে এর প্রথম সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। [১০]

১৯৪৬ সালের জুন মাসে ভারতীয় সমাজতান্ত্রিক নেতা রাম মনোহর লোহিয়া তার বন্ধু জুলিয়াও মেনেজেসের সাথে একটি সফরে গোয়ায় প্রবেশ করেন। তার সাথে কুনহাসহ অন্যান্য নেতারাও ছিলেন।[১০] রাম মনোহর লোহিয়া সরকারের বিরোধিতা করার জন্য অহিংস গান্ধীবাদী কৌশল ব্যবহারের পরামর্শ দেন।[১১]

অহিংস প্রতিবাদের পাশাপাশি আজাদ গোমান্তক দল (দ্য ফ্রি গোয়া পার্টি) এবং ইউনাইটেড ফ্রন্ট অফ গোয়ান্সের মতো সশস্ত্র দলগুলিও গোয়ায় পর্তুগিজ শাসনকে দুর্বল করার লক্ষ্যে সহিংস আক্রমণ পরিচালনা শুরু করে।[১২] ভারত সরকার আজাদ গোমন্তক দলের মতো সশস্ত্র গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠায় সমর্থন দিয়েছিল। তাদের সম্পূর্ণ আর্থিক, লজিস্টিক এবং অস্ত্র সহায়তা দিয়েছিল। সশস্ত্র দলগুলি ভারতীয় ভূখণ্ডে অবস্থিত ঘাঁটি থেকে এবং ভারতীয় পুলিশ বাহিনীর আড়ালে কাজ করেছিল। ভারত সরকার এই সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্ত করে জনগণের মাঝে একটি সাধারণ বিদ্রোহের পরিবেশ তৈরি করার লক্ষ্যে গোয়ার অর্থনৈতিক লক্ষ্যবস্তু, টেলিগ্রাফ,টেলিফোন লাইন, রাস্তা, জল এবং রেল পরিবহন ধ্বংস করার চেষ্টা করেছিল।[১৩] ২০০১ সালে গোয়ার সেনাবাহিনীতে নিযুক্ত একজন পর্তুগিজ সেনা অফিসার ক্যাপ্টেন কার্লোস আজারেডো পর্তুগিজ পত্রিকা এক্সপ্রেসোতে বলেছিলেন,"যা গোয়ায় আমাদের সশস্ত্র বাহিনী সবচেয়ে উন্নত গেরিলা যুদ্ধের মুখোমুখি হয়েছিল। আমি জানি আমি কী সম্পর্কে কথা বলছি। কারণ আমি অ্যাঙ্গোলা এবং গিনিতেও যুদ্ধ করেছি। কেবল ১৯৬১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৮০ জন পুলিশ সদস্য মারা যায়। আজাদ গোমন্তক দলের মুক্তিযোদ্ধাদের বড় অংশ গোয়ান ছিল না। জেনারেল মন্টগোমেরির অধীনে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে তাদের অনেকেই জার্মানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল।"[১৪]

গোয়া বিরোধ মেটাতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা

[সম্পাদনা]
গোয়া, পশ্চিম ভারত

১৯৫০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ভারত সরকার পর্তুগিজ সরকারকে ভারতে পর্তুগিজ উপনিবেশগুলির ভবিষ্যত সম্পর্কে আলোচনা শুরু করতে বলে। [১৫] পর্তুগাল জোর দিয়েছিল যে, ভারতীয় উপমহাদেশে তার অঞ্চলটি কোনো উপনিবেশ নয় ; বরং এটি একটি মহানগর এবং পর্তুগালের অংশ। তাই এটির স্থানান্তর আলোচনাযোগ্য নয় এবং এই ভূখণ্ডে ভারতের কোন অধিকার নেই। কারণ গোয়ায় পর্তুগিজ শাসন আসার সময় ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের কোনো অস্তিত্ব ছিল না।[১৬] পর্তুগিজ সরকার এই বিষয়ে পরবর্তী সন্তোষজনক জবাব দিতে অস্বীকার করলে ১৯৫৩ সালের ১১ জুন ভারত সরকার লিসবন থেকে তার কূটনৈতিক মিশন প্রত্যাহার করে। [১৭]

1954 সালের মধ্যে, ভারত প্রজাতন্ত্র গোয়া থেকে ভারতে ভ্রমণের উপর ভিসা বিধিনিষেধ চালু করে যা গোয়া এবং দমন, দিউ, দাদরা এবং নগর হাভেলির মতো অন্যান্য এক্সক্লেভের মধ্যে পরিবহনকে অচল করে দেয়। [১৫] একই বছরে, ভারত গোয়াকে ভারতের সাথে সংযুক্ত করার লক্ষ্যে পর্তুগালের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে, এই নিষেধাজ্ঞা 1961 সাল পর্যন্ত থাকবে। [১৮] ইতিমধ্যে, ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন অফ ডকার্স, 1954 সালে, পর্তুগিজ ভারতে শিপিং বয়কট করে। [১৯] 22 জুলাই এবং 2 আগস্ট 1954-এর মধ্যে, সশস্ত্র কর্মীরা দাদরা ও নগর হাভেলিতে অবস্থানরত পর্তুগিজ বাহিনীকে আক্রমণ করে এবং আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করে। [২০]

১৯৫৫ সালের ১৫ আগস্ট ৩০০০-৫০০০ নিরস্ত্র ভারতীয় কর্মী[২১] ছয়টি স্থান দিয়ে গোয়ায় অনুপ্রবেশের চেষ্টা করলে পর্তুগিজ পুলিশ অফিসারদের দ্বারা সহিংসভাবে বিতাড়িত হয়। তখন ২১[২২] থেকে ৩০ জন [২৩] লোকের মৃত্যু হয়। [২৪] এই ঘটনা গোয়ায় পর্তুগিজদের উপস্থিতির বিরুদ্ধে ভারতে বড়সড় ্ জনমত গড়ে তোলে। [২৫] ১৯৫৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর ভারত গোয়াতে তার দূতাবাস বন্ধ করে দেয়। [২৬]

১৯৫৬ সালে ফ্রান্সে অবস্থানরত পর্তুগিজ রাষ্ট্রদূত মার্সেলো ম্যাথিয়াস তৎকালীন পর্তুগিজ প্রধানমন্ত্রী আন্তোনিও ডি অলিভেইরা সালাজারকে গোয়ার ভবিষ্যত নির্ধারণের জন্য সেখানে একটি গণভোটের আয়োজনের পক্ষে যুক্তি দেন। যদিও এই প্রস্তাব প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ১৯৫৭ সালে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী জেনারেল হাম্বারতো ডেলগাডো [১৫] গণভোটের দাবির পুনরাবৃত্তি করেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী সালাজার গোয়ায় পর্তুগালের উপস্থিতির বিরুদ্ধে সশস্ত্র পদক্ষেপে ভারতের ইঙ্গিত হুমকিতে শঙ্কিত হয়ে প্রথমে যুক্তরাজ্যকে মধ্যস্থতা করতে বলেন। তারপর ব্রাজিলের মাধ্যমে প্রতিবাদ করেন এবং অবশেষে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে হস্তক্ষেপ করতে বলেন। [২৭] ভারতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত জন কেনেথ গালব্রেথ ভারত সরকারকে একাধিকবার সশস্ত্র সংঘাতের পরিবর্তে মধ্যস্থতা ও ঐক্যমতের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যার সমাধান করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন।[২৮] [২৯]

১৯৬১ সালের ২৪ নভেম্বর ভারতীয় বন্দর কোচি এবং পর্তুগিজ-অধিকৃত দ্বীপ আনজিদিভের মধ্য দিয়ে যাওয়া একটি যাত্রীবাহী নৌকায় পর্তুগিজ স্থলসেনারা গুলি চালায়। যার ফলে একজন যাত্রী নিহত হয় এবং প্রধান প্রকৌশলী আহত হয়। পর্তুগিজরা মনে করেছিল যে, নৌকাটি একটি সামরিক দলকে দ্বীপে প্রবেশ করার উদ্দেশ্যে বহন করেছিল। [৩০] ঘটনাগুলি গোয়ায় সামরিক পদক্ষেপের জন্য ভারতে ব্যাপক জনসমর্থন জোগাড় করে।

অবশেষে ১০ ডিসেম্বর সশস্ত্র অ্যাকশনের নয় দিন আগে নেহেরু প্রেসকে বলেছিলেন: "পর্তুগিজ শাসনের অধীনে গোয়া অব্যাহত রাখা একটি অসম্ভব চিন্তা"। [২৭] তখন আমেরিকা ভারতকে সতর্ক করেছিল যে, গোয়ায় ভারতের সশস্ত্র কর্মকাণ্ড জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আনা হলে তা মার্কিন প্রতিনিধি দলের কাছ থেকে কোনো সমর্থন আশা করতে পারে না। [৩১]

দাদরা ও নগর হাভেলির সংযোজন

[সম্পাদনা]

ভারত ও পর্তুগালের মধ্যে শত্রুতা গোয়া দখল করার সাত বছর আগে শুরু হয়েছিল, যখন দাদরা এবং নগর হাভেলি ভারতের সমর্থনে একটি ভারতপন্থী বাহিনী আক্রমণ করে তা দখল করেছিল। [৩২]

দাদরা এবং নগর হাভেলি ছিল দমন জেলার দুটি পর্তুগিজ ল্যান্ডলকড উপনিবেশ এবং সম্পূর্ণরূপে ভারতীয় ভূখণ্ড দ্বারা বেষ্টিত। তখন দাদরা ও নগর হাভেলিতে শুধুমাত্র কয়েকজন পুলিশ ছাড়া কোনো পর্তুগিজ সামরিক ইউনিট ছিল না।

১৯৫২ সালেই ভারত সরকার দাদরা ও নগর হাভেলির বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করে। তার মধ্য ব্যক্তি ও পণ্য পরিবহনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। [৩৩] ভারতের এই কৌশলের ফলে গোয়াতে গভীর অর্থনৈতিক মন্দার সৃষ্টি হয়। সেখানলার বাসিন্দারা কষ্টে পতিত হয়। পরবর্তীতে স্থল ভ্রমণ বন্ধ রেখে সালাজার পর্তুগিজ ছিটমহলগুলির সাথে যোগাযোগের জন্য একটি নতুন বিমান সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ১৯৫৪ সালের জুলাই মাসে, গোয়ান্স ইউনাইটেড ফ্রন্ট, ন্যাশনাল মুভমেন্ট লিবারেশন অর্গানাইজেশন, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ এবং আজাদ গোমান্তক দলের মত ভারতপন্থী বাহিনীগুলো ভারতীয় পুলিশ বাহিনীর সমর্থনে দাদরা ও নগর হাভেলির বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করে। ২৮ জুলাই আরএসএস বাহিনী নারোলি থানা দখল করে। [৩২]

আক্রমণের জবাবে পর্তুগিজ কর্তৃপক্ষ দাদরা ও নগর হাভেলিতে শক্তিবৃদ্ধি করতে ভারতীয় ভূখণ্ড অতিক্রম করার অনুমতি চায়, কিন্তু ভারত তাদের কোনো অনুমতি দেয়নি। [৩৪] ভারতীয় কর্তৃপক্ষ দ্বারা বেষ্টিত হয়ে নগর হাভেলিতে পর্তুগিজ প্রশাসক এবং পুলিশ বাহিনী ১৯৫৪ সালের ১১ আগস্ট ভারতীয় পুলিশ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Azaredo, Carlos; Gabriel Figueiredo (translation) (৮ ডিসেম্বর ২০০১)। "Passage to India – 18th December 1961"Goancauses.com। ২৪ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  2. Praval, Major K.C. (২০০৯)। Indian Army after Independence। New Delhi: Lancer। পৃষ্ঠা 214। আইএসবিএন 978-1-935501-10-7 
  3. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; areamilitar.net নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  4. Castanheira, José Pedro (8 December 2001). "Passagem para a Índia" [Passage to India]. Revista. Expresso (in Portuguese) (Paço d'Arcos). Archived from the original on 8 December 2001. Retrieved 20 December 2015.
  5. Davar, Praveen (জানুয়ারি ২০১৮)। "The liberation of Goa"The Hindu 
  6. "Obituary of Lt-Gen K. P. Candeth"Independent.co.uk। ১০ জুলাই ২০০৩। ৭ মে ২০২২ তারিখে মূলঅর্থের বিনিময়ে সদস্যতা প্রয়োজন থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৮ 
  7. "Infrastructure | Goa Legislative Assembly"। ১১ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৮ 
  8. Numbers from 1955, thus excluding Dadra and Nagar-Haveli.
  9. H. Kay (1970) Salazar and Modern Portugal, New York: Hawthorn.
  10. Prof.
  11. Goa's Freedom Movement ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে By: Lambert Mascarenhas
  12. "A Liberation From Lies By Prabhakar Sinari"। Countercurrents.org। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০০৯ 
  13. Francisco Monteiro, Chronology of Freedom Struggle Activities Unleashed by the Indian Union Against the Territories of Goa, Damão and Diu "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। Archived from the original on ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০২২ 
  14. Castanheira, José Pedro (৮ ডিসেম্বর ২০০১)। "Passagem para a Índia"। Revista। Expresso (পর্তুগিজ ভাষায়)। Paço d'Arcos। ৯ ডিসেম্বর ২০০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ডিসেম্বর ২০১৫ 
  15. "Operação Vijay 18 a 19/12/1961" (পর্তুগিজ ভাষায়)। ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  16. Goa was first recognised as equal to the metropolis in the Royal Charter of 1518, and affirmed in subsequent legislation.
  17. "Goa's Freedom Movement"। ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৩-১৪ 
  18. Hufbauer, Gary Clyde; Schott, Jeffrey J. (২০০৭)। Economic Sanctions Reconsidered (ইংরেজি ভাষায়)। Peterson Institute for International Economics। পৃষ্ঠা 21। আইএসবিএন 9780881325362 
  19. Sankar Ghose (1993) Jawaharlal Nehru: A biography.
  20. P.W. Prabhakar (2003) Wars, proxy-wars and terrorism: post independent India New Delhi: Mittal, p.39
  21. Sankar Ghose (1993) Jawaharlal Nehru: A biography.
  22. "Indian Volunteers Invade Goa; 21 Die; Unarmed Indians March into Goa", New York Times, 15 August 1955
  23. Christophe Jaffrelot, The Hindu Nationalist Movement in India, Published by Columbia University Press, 1998
  24. । ২৯ আগস্ট ১৯৫৫ https://web.archive.org/web/20081215050523/http://www.time.com/time/magazine/article/0,9171,823878,00.html। ১৫ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০১৫  |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
  25. Lambert Mascarenhas। "Ancient Goan History – GOACOM – Goa – India – Information and Services in Goa. Goa News, Goa Konkani News, Goa Sunaparant News, Goan Konakani News, Goa Video News, Goa Yellow Pages"। ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০১৫ 
  26. "Francisco Monteiro – India supported banditry in Goa"। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০১৫ 
  27. Rotter (2000)
  28. US Department of State, Central Files, 753D.00/12 – 1161 Document 68
  29. US Department of State, Central Files, 753D.00/12 – 1261 Document 69
  30. Couto, Francisco Cabral (২০০৬)। O fim do Estado Português da Índia 1961: um testemunho da invasãoTribuna da História। পৃষ্ঠা 22–102। আইএসবিএন 978-972-8799-53-3 
  31. US Department of State, Central Files, 753D.00/12 – 1461 Document 72
  32. Lele, Purushottam Shiripad (১৯৮৭)। Dadra and Nagar Haveli: Past and present (English ভাষায়) (1st সংস্করণ)। Dadra and Nagar Haveli, Dadra and Nagar Haveli and Daman and Diu, India: Usha P. Lele। এলসিসিএন 87903848ওসিএলসি 18496466 
  33. Prabhakar, Peter Wilson (২০০৩)। "3. Liberation of Goa, Daman and Diu"Wars, Proxy-wars and Terrorism: Post Independent India (1st সংস্করণ)। New Delhi, India: Mittle Publications। পৃষ্ঠা 39। আইএসবিএন 9788170998907Google Books-এর মাধ্যমে। 
  34. Singh, Satyindra (১ ডিসেম্বর ১৯৯২)। Blueprint To Bluewater: The Indian Navy 1951 – 65 (পিডিএফ) (English ভাষায়) (1st সংস্করণ)। New Delhi, India: Lancer International। আইএসবিএন 9788170621485। ৬ জুলাই ২০০৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।