ভারতী বিষ্ণুবর্ধন

ভারতী বিষ্ণুবর্ধন
জন্ম
ভারতী দেবী রাও

(1948-08-15) ১৫ আগস্ট ১৯৪৮ (বয়স ৭৬)
পেশাঅভিনেত্রী
কর্মজীবন১৯৬৬–বর্তমান
দাম্পত্য সঙ্গীবিষ্ণুবর্ধন (১৯৭৫–২০০৯; তার মৃত্যু)
সন্তানকীর্তি, চন্দনা
পিতা-মাতারামচন্দ্র রাও (বাবা)
ভদ্রবর্তী (মা)
পুরস্কারপদ্মশ্রী (২০১৭)

ভারতী বিষ্ণুবর্ধন (জন্ম: ১৫ই আগস্ট ১৯৮৮;[] শুধু ভারতী নামে অধিক পরিচিত) হলেন একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী। তিনি মূলত কর্ণাটকের চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন ধারাবাহিকে তাঁর কাজের জন্য পরিচিত। ১৯৬৬ সালে, বেঙ্গালুরুতে, লাভ ইন ব্যাঙ্গালোর নামে কন্নড় চলচ্চিত্রের প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করার মাধ্যমে তিনি একজন অভিনেত্রী হিসাবে তাঁর চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেছিলেন। ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তাঁর চলচ্চিত্র জীবনে, ভারতী দেড়শো চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। কন্নড় ভাষায় ১০০টি চলচ্চিত্র ছাড়াও তিনি হিন্দি, তামিল, তেলুগু এবং মালয়ালম ভাষার বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তাঁর অভিনয় জীবনে, তিনি পৌরাণিক ও ঐতিহাসিক চরিত্রের পাশাপাশি একজন শিক্ষার্থী, এক রোমান্টিক মেয়ে কিংবা গ্রামীণ মেয়ে, প্রায় সকল চরিত্র নিপুণভাবে উপস্থাপন করেছেন।[] তাঁর এই সকলে চরিত্রে অভিনয় তাঁকে খ্যাতি অর্জন করতে দারুণভাবে সহায়তা করেছে। শ্রী কৃষ্ণদেবরায় (১৯৭০) ছবির মূল চরিত্রে তাঁর অভিনয় তাঁকে "সেরা অভিনেত্রী" বিভাগে কর্ণাটক রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করতে সাহায্য করেছে। ২০১৭ সালে, ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী দ্বারা সম্মানিত করেছে।[] ভারতী কন্নড় চলচ্চিত্র জগতে একজন করুণাময়ী মার্জিত অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিত।

ব্যক্তিগত জীবন

[সম্পাদনা]

ভারতী বিষ্ণুবর্ধন ১৯৪৮ সালের ১৫ই আগস্ট তারিখে ভারতের মাইসোর রাজ্যে (বর্তমানে কর্ণাটক) এক মারাঠিভাষী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছেন। জন্মের সময় তাঁর নাম ছিল "ভারতী দেবী রাও"।[] তাঁর বাবা রামচন্দ্র রাও ছিলেন একজন দর্জি এবং মা ছিলেন একজন গৃহিণী। ভারতী মল্লেশ্বরম লেডিজ অ্যাসোসিয়েশন (এমএল.এ) উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন এবং তারপরে বেঙ্গালুরুতে অবস্থিত মহারাণীর মহিলা বিজ্ঞান কলেজে যোগ দেন। তিনি খেলাধুলা এবং নাচ উভয় ক্ষেত্রেই সক্রিয় থাকাকালীন সময়ে একজন বাস্কেটবল খেলোয়াড় বা অ্যাথলিট হতে চেয়েছিলেন। এমনকি কলেজের দিনগুলোতে তিনি কর্ণাটক রাজ্য স্তরের থ্রো-বল দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৬৪ সালে, তাঁর নাচ কন্নড় অভিনেতা কল্যাণ কুমারের নজর কেড়েছিল, যিনি তখনই তাঁকে লাভ ইন বেঙ্গালুরুতে অভিনয়ের জন্য নির্ধারণ করেন।

ভারতী অভিনেতা বিষ্ণুবর্ধনের সাথে ১৯৭৫ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারি তারিখে বেঙ্গালুরুতে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁরা কীর্তি এবং চন্দনা নামে দুটি কন্যাকে দত্তক নিয়েছেন। ড. বিষ্ণুবর্ধন ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসে মারা যান।[]

অভিনয় জীবন

[সম্পাদনা]

তাঁর প্রথম কন্নড় চলচ্চিত্র ছিল ডুড্ডে ডোডাপ্পা। অতঃপর তিনি লাভ ইন বেঙ্গালুরু নামক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। সন্ধ্যা রাগ চলচ্চিত্রে একজন গায়কের সংবেদনশীল চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন। তিনি চলচ্চিত্র জগতে রাজকুমারের সাথে একটি সফল রোম্যান্টিক জুটি গড়তে শুরু করেছিলেন। এই কালজয়ী জুটি ১৯৭২ সাল পর্যন্ত একের পর এক জনপ্রিয় চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছিল; সেগুলির মধ্যে শ্রী কৃষ্ণদেবরায়, বঙ্গরাধা মনুষ্য এবং মেয়র মুথুয়ান্না অতি জনপ্রিয় হয়েছিল। ভাগ্য জ্যোতি, দেবারা গুড়ি, নাগারা হোল এবং বাঙ্গারদা জিনকের মতো ব্লকবাস্টার চলচ্চিত্রে অভিনয় করার পরে তিনি বিষ্ণুবর্ধনের (যিনি তখন তাঁর স্বামী ছিলেন) সঙ্গে একটি জনপ্রিয় জুটি তৈরি করেছিলেন।

ভারতীকে হিন্দি চলচ্চিত্রের পরিচয় করিয়েছিলেন পরিচালক এ. ভীমসিংহ; ১৯৬৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মেহেরবান এবং ১৯৬৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সাধু অর শয়তান নামক দুটি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি হিন্দি চলচ্চিত্রে প্রবেশ করেন। তিনি রাকেশ রোশনের বিপরীতে ঘর ঘর কি কাহানি, মনোজ কুমারের পুরব অর পশ্চিম, বিনোদ খান্নার সাথে হাম তুম অর ওহ এবং মেহমুদের কুঁয়ারা বাপসহ বেশ কয়েকটি হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন।

তামিল ভাষায় তিনি ১৯৬৬ সালে নাদোদিচন্দ্রধ্যায়াম নামক চলচ্চিত্রে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেছেন এবং দেবা চায়াল, আবালুকেন্দ্রু ওরু মানাম এবং থাঙ্গা সুরঙ্গমের মতো চলচ্চিত্রে মুথুরমন, জেমিনি গণেশন, শিবাজি গণেশন এবং এম. জি রামচন্দ্রনের মতো অভিনয়শিল্পীদের সাথে অভিনয় করেছেন।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Bharathi Vishnuvardhan: Shining on the silver screen for five decades"The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ২৬ অক্টোবর ২০১৫ 
  2. "Padma Awards 2017" (PDF)। Ministry of Home Affairs, Government of India। ২৫ জানুয়ারি ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. "Vishnuvardhan Death"। সংগ্রহের তারিখ ৯ সেপ্টেম্বর ২০১২ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]