ভারতীয় চিত্রকলা

Indian painting
শীর্ষে বাম দিক থেকে ঘড়ির কাঁটার দিকে: অজন্তা ফ্রেস্কো (৪৫০), রাধা বনী ঠানী (আনু. ১৮শ শতাব্দী), হিন্দু প্রতীকীবাদ (১৭১০), শকুন্তলা (১৮৭০).

ভারতীয় শিল্পকলায় ভারতীয় চিত্রকলার একটি দীর্ঘ ঐতিহ্য ও ইতিহাস রয়েছে।[] প্রাচীনতম ভারতীয় চিত্রগুলি ছিল প্রাগৈতিহাসিক সময়ের শিলা চিত্র, যেমন পেট্রোগ্লিফগুলি ভীমবেটকা প্রস্তরক্ষেত্রের মতো জায়গায় পাওয়া যায়। ভীমবেটকা প্রস্তরক্ষেত্রের মধ্যে পাওয়া প্রস্তর যুগের কিছু শিলা চিত্র আনুমানিক ১০,০০০ বছরের পুরনো। ভারতীয় উপমহাদেশের জলবায়ু পরিস্থিতির কারণে, খুব কম প্রাথমিক উদাহরণ আজ টিকে আছে।

ভারতের প্রাচীন হিন্দু ও বৌদ্ধ সাহিত্যে অনেকগুলি প্রাসাদ ও অন্যান্য অট্টালিকাগুলির উল্লেখ রয়েছে, যা চিত্রকলায় সজ্জিত (চিত্র),[] তবে অজন্তা গুহাসমূহের চিত্রগুলি টিকে থাকা কয়েকটিগুলির মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। পাণ্ডুলিপিতে ছোট আকারের চিত্রকলা সম্ভবত এই সময়কালেও প্রচলন ছিল, যদিও প্রাচীনতম টিকে থাকা ছোট আকারের যে চিত্রকলাগুলি উদ্ধার করা স্মভহব সম্ভব হয়েছে তা সকগুলিই মধ্যযুগের। মুঘল যুগে প্রাচীন ভারতীয় ঐতিহ্যের সঙ্গে পারসীক অনুচিত্রকলার সংমিশ্রণ হিসাবে একটি নতুন শৈলীর আবির্ভাব ঘটে, এবং এই শৈলীটি ১৭শ শতাব্দী থেকে সমস্ত ধর্মের ভারতীয় রাজসভায় ছড়িয়ে পড়ে, যার প্রতিটি স্থানীয় শৈলীতে বিকাশ লাভ করে। ব্রিটিশ রাজের অধীনে ব্রিটিশ গ্রাহকদের জন্য কোম্পানির চিত্রকলাগুলি তৈরি করা হয়েছিল, যা ১৯শ শতাব্দী থেকে পশ্চিমা ধারার পাশাপাশি শিল্প ঘরানাগুলিও চালু করেছিল। এটি আধুনিক ভারতীয় চিত্রকলার দিকে পরিচালিত করে, যা ক্রমশ তার ভারতীয় শিকড়ে ফিরে আসছে।

ভারতীয় চিত্রকলাগুলিকে বিস্তৃতভাবে ম্যুরাল, অনুচিত্রকলা ও কাপড়ে আঁকা ছবি হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে। ম্যুরাল হল অজন্তা গুহা ও কৈলাশনাথ মন্দিরের মতো শক্ত কাঠামোর দেয়ালে তৈরি বড় আকারের কাজ। কাগজ ও কাপড়ের মতো পচনশীল উপাদানে বই বা অ্যালবামের জন্য অনুচিত্রকলাগুলি খুব ছোট পরিসরে সম্পাদন করা হয়। ম্যুরালগুলির চিহ্ন, ফ্রেস্কো-সদৃশ কৌশলগুলি, অন্তত ২,০০০ বছর আগের, ভারতীয় শিলা-উৎকীর্ণ স্থাপত্যের সঙ্গে বেশ কয়েকটি স্থানে টিকে আছে, তবে অজন্তা গুহায় ১ম ৫ম শতাব্দীর অবশেষগুলি সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য।

কাপড়ের উপর আঁকা ছবিগুলি—প্রায়শই লোকশিল্প হিসাবে—প্রায়শই আরও জনপ্রিয় প্রেক্ষাপটে তৈরি করা হত, উদাহরণস্বরূপ রাজস্থানের ভোপা ও চিত্রকঠির মতো মহাকাব্যের ভ্রাম্যমাণ আবৃত্তিকারদের দ্বারা ব্যবহৃত এবং তীর্থস্থানের স্মৃতিচিহ্ন হিসাবে ক্রয়কৃত। খুব কম টিকে থাকা চিত্রকলাগুলি প্রায় ২০০ বছরের অধিক প্রাচীন, কিন্তু এটা স্পষ্ট যে ঐতিহ্যগুলি অনেক বেশি পুরাতন। কিছু আঞ্চলিক ঐতিহ্য এখনও চিত্রকলাগুলি তৈরি করছে।[]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Blurton, 193
  2. Wall painting
  3. Harle, 355–361; Wall painting