এই নিবন্ধটিতে সাম্প্রতিক দুর্যোগ সম্পর্কিত তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। ঘটনার অগ্রগতির সাথে সাথে এই ঘটনাটি সম্পর্কিত তথ্যগুলি খুব দ্রুত পরিবর্তিত হতে পারে। যদিও এই নিবন্ধটি বেশ দ্রুত হালনাগাদ করা হবে, কিন্তু এটি এই বিষয়টি নিশ্চিত করে না যে এখানে দুর্যোগ সম্পর্কিত সর্বশেষ সকল তথ্য পাওয়া যাবে।
কোভিড-১৯ অতিমারিটির প্রথম ঘটনা ভারতে ৩০ জানুয়ারি ২০২০ সালে হয়েছিল যেটি চীন থেকে শুরু হয়েছে। অনুসারে মোট সংক্রামিত ব্যক্তির সংখ্যা জন যার মধ্যে জনের মৃত্যু হয়েছে এবং জন সুস্থ হয়ে গেছে। ভারতে অন্যদেশের তুলনায় কম হারে মানুষদের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হচ্ছে তাই বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন যে সংক্রমণের সংখ্যাটি যথেষ্ট পরিমাণে অবমূল্যায়ন হতে পারে। [৭] ভারতে কোভিড-১৯ এর মৃত্যুর হার অনুসারে এক্সপ্রেশন ত্রুটি: অযাচিত < অপারেটর।%।[৪] ভারতে কোভিড-১৯ পরীক্ষা অনুসারে প্রতি দশ লক্ষে এক্সপ্রেশন ত্রুটি: অযাচিত < অপারেটর। জন।[৪]
প্রাদুর্ভাবটি দিল্লি,[৮]হরিয়ানা,[৯]কর্ণাটক,[১০]মহারাষ্ট্র[১১]গুজরাত,[১২] এবং উত্তরপ্রদেশ[১৩] ইত্যাদি এক ডজনেরও বেশি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে মহামারি হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে মহামারি রোগ আইন, ১৮৯৭ এর বিধানসমূহ আহবান করা হয়েছে। বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগক্ষেত্রে এই ভাইরাস সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়ার ঘটনা অন্যান্য দেশের সাথে সংযুক্ত থাকায় ভারতও, সমস্ত পর্যটন ভিসা স্থগিত রেখেছে।[১৪] ২৩ টি রাজ্য ও সাতটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত ৫৪৮টি জেলা যেগুলো সম্পূর্ণরূপে লকডাউন বা অবরুদ্ধকরণের অধীনে আছে।[১৫]
২০২০ সালের ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্দেশে ভারত ১৪ ঘণ্টা স্বেচ্ছাসেবামূলক জনতা কার্ফু পালন করেছে। যেখানে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ঘটেছে সেই ৭৫টি জেলায় পাশাপাশি সমস্ত বড় শহরগুলিতেও সরকার অবরুদ্ধকরণ বা লকডাউন করে তা অনুসরণ করেছে । [১৬][১৭] পরে, ২৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রী ১৩০ কোটি জনসংখ্যা সমৃদ্ধ সারা ভারতে ২১ দিনের জন্য লকডাউনের নির্দেশ দিয়েছেন।[১৮]
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মাইকেল রায়ান বলেছিলেন যে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় ভারতের "অভাবনীয় ক্ষমতা" ছিল এবং বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল দেশ হিসাবে বিশ্বে ভারতের মোকাবিলা করার ক্ষমতার উপর বিশাল প্রভাব ফেলবে।[১৯]
অন্যান্য মন্তব্যকারীরা লকডাউন দ্বারা অর্থনৈতিক বিধ্বস্ততা সম্পর্কে উদ্বিগ্ন। এই অর্থনৈতিক বিধ্বস্ততার ফলে অস্থায়ী শ্রমিক, ক্ষুদ্র প্রকল্প, কৃষক এবং স্ব-কর্মসংস্থানকারীদের উপর বিরাট প্রভাব পড়েছে, যারা পরিবহনের এবং বাজারের যোগানের অভাবে জীবিকা নির্বাহ করতে পারছে না।[২০]
শিব নাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২৪ মার্চ থেকে ১৪ এপ্রিলের মধ্যে লকডাউন না হলে ভারতবর্ষে ৩১,০০০ রোগের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারত।[২১]
৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার করা প্রতিবেদনে, ২০২০ সালের ১২ জানুয়ারীতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নিশ্চিত করেছিল যে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরের মানুষের জন্য নভেল করোনাভাইরাস শ্বাসকষ্টের একটি কারণ ছিল। মানুষের একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছিল। ।[২২][২৩] কোভিড-১৯ এর কারণে আক্রান্তের মৃত্যুহার২০০৩-এর সার্স এর চেয়ে অনেক কম ছিল।[২৪][২৫] তবে সংক্রমণে মোট মৃত্যুর সংখ্যা যথেষ্ট পরিমাণে বেড়েছে এটা উল্লেখযোগ্য।[২৪][২৬]
ভারতে বৈশ্বিক মহামারির ছড়িয়ে পড়া (৩০ জানুয়ারি ২০২০ থেকে)
ভারত কেরালায় প্রথম তিনটি ঘটনার কথা জানিয়েছিল, এরা সবাই চীনের উহানে শিক্ষার্থী ছিল। [২৭]
মার্চ মাসে সংক্রমণটি আরও বেড়ে যায়, সারা দেশে বেশ কয়েকটি ঘটনার রিপোর্ট হয় যার বেশিরভাগই সংক্রমিত দেশগুলিতে ভ্রমণ করেছেন এমন ব্যক্তিদের সাথে যুক্ত ছিল। ১০ মার্চ, মোট ঘটনা ৫০ পৌঁছেছে। [২৮] ১২ মার্চ, সৌদি আরব থেকে ফিরে আসা একজন ৭৬ বছর বয়সী ব্যক্তি দেশের প্রথম ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।[২৯]
নিশ্চিত হওয়া ঘটনাগুলি ১৫ মার্চে ১০০,[৩০] ২৪ মার্চে ৫০০ [৩১]] এবং ২৮ মার্চ ১০০০ অতিক্রম করেছে।[৩২]
২ এপ্রিল ২০০০ অতিক্রম করেছে।[৩৩] ১ এপ্রিল মৃতের সংখ্যা ৫০ পেরিয়েছে।[৩৪]
৭ মার্চ, একজন শিখ ধর্মপ্রচারক যিনি ইতালি এবং জার্মানি ভ্রমণ করে ফিরে এসেছিলেন, তিনি ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে, আনন্দপুর সাহেবের একটি শিখ উৎসবে যোগ দিয়ে ভয়ানকভাবে সংক্রমণ( "সুপার স্প্রেডার") ছড়িয়েছিলেন।[৩৫] তার কাছাকাছি আসা সাতাশজনের কোভিড -১৯ সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছিল।[৩৬] পাঞ্জাবের ২০ টি গ্রামে ৪০,০০০ এরও বেশি লোককে মহামারি ছড়ান আটকাতে পৃথক করে দেওয়া হয়েছিল।
তাবলীগ জামাত ধর্মীয় মণ্ডলীর একটি অনুষ্ঠান যা দিল্লিতে ১-১৫ মার্চ হয়েছিল,[৩৭] অনুষ্ঠান চলাকালীন ১৩ মার্চ, দিল্লী সরকারের তরফে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল: ২০০ এরও বেশি লোকের জমায়েত নিষিদ্ধ;[৩৭] এছাড়াও ১৩ মার্চ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল যে কোভিড-১৯ "একটি স্বাস্থ্য জরুরী অবস্থা ছিল না"।[৩৮][৩৯] ৩১ মার্চ, সারা দেশে অসংখ্য সংক্রমণের ঘটনা এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী মানুষদের সাথে সংযুক্ত খুজে পাবার পরে, এই অনুষ্ঠানটি একটি ভাইরাস সংক্রমণের নতুন হটস্পট হিসাবে চিহ্নিত হয়। দিল্লির নিজামউদ্দিন মারকাজ মসজিদে যে অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সেখানে দিল্লী পুলিশ দেখে যে ৮ মার্চ থেকে মসজিদে অবস্থান করে থাকা ১৮৩০ জন লোকের মধ্যে ৪০ টি অন্য দেশ থেকে আসা ৯৬০ জন বিদেশি ছিল।[৪০] ৩১ মার্চ অনুসারে, প্রায় ২০০ মানুষ এই রোগের লক্ষণ দেখিয়েছেন, যার মধ্যে এখন পর্যন্ত ৫৩ জন দিল্লিতে ইতিবাচক হিসাবে নিশ্চিত হয়েছেন।[৪১] সারা দেশে ১২৮ টিরও বেশি ঘটনাকে এই অনুষ্ঠানের সাথে যুক্ত বলে জানা গেছে।[৪২] তামিলনাড়ু একদিনে ১৯০ টিরও বেশি ঘটনার প্রতিবেদন করেছে, যারা সবাই এই অনুষ্ঠানে এসেছিল।[৪৩] ৪ এপ্রিল পর্যন্ত, এই ঘটনার সাথে ভারতের ১৭ টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে ১০২৩টি নিশ্চিত ঘটনা যুক্ত ছিল।[৪৪]
২০২০ সালের ৬ এপ্রিল, মুম্বাইয়ের ওকহার্ড হাসপাতাল এ, ২৬ জন নার্স ও ৩ জন চিকিৎসক ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। হাসপাতালটি অস্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে একটি সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ এলাকা হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। হাসপাতাল প্রশাসনের গাফিলতি এই সংক্রমণের জন্য দায়ী করা হয়েছে।[৪৫][৪৬]
২০২০ সালের ১৯ মার্চ করোনোভাইরাস সম্পর্কে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর টেলিভিশন ভাষণ২০২০ সালের ২৪ মার্চ COVID-19 সম্পর্কে মোদীর ভাষণ
১৯ মার্চ, ৩০ মিনিটের সরাসরি সম্প্রচারের সময়, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীনরেন্দ্র মোদী সকল নাগরিককে ২২ মার্চ সকাল ৭টায থেকে রাত ৯ টা অবধি 'জনতা কার্ফু' (জনগণের কারফিউ) পালন করতে বলেছিলেন। এই কার্ফু চলাকালে তিনি প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলিতে জড়িত ব্যতীত সকলকে বাড়িতে থাকতে বলেছিলেন। তিনি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বোঝা কমাতে লোকদের রুটিন চেকআপ এবং অপরিহার্য্য নয় এমন শল্য চিকিতসা এড়াতে বলেছেন। তিনি একটি কোভিড-১৯ অর্থনৈতিক প্রতিক্রিয়া টাস্ক ফোর্স গঠনের ঘোষণা করেছিলেন। প্রাদুর্ভাবকালে অতি প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সেক্টর কর্তৃক যে কাজ চলছে তা স্বীকৃতি জানাতে তিনি বিকেল ৫ টায় লোকদের নিজস্ব দরজা, জানালা বা বারান্দার সামনে জড়ো হয়ে পাঁচ মিনিটের জন্য তাদের প্রশংসা করার আহ্বান জানান। রাজ্য এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে জনগণকে এটির কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য সাইরেন বাজাতে বলা হয়েছিল।[৪৭] ২৪ মার্চ, মোদী ওই দিনের মধ্যরাত থেকে ২১ দিনের জন্য দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করেছিলেন।[৪৮] তিনি স্বাস্থ্যসেবা খাতের জন্য একটি ₹ ১৫,০০০ কোটি (US$২.১ বিলিয়ন) সহায়তাও ঘোষণা করেছিলেন। এই অর্থ কোভিড-১৯ পরীক্ষার সুবিধা, পিপিই, আইসিইউ, ভেন্টিলেটর এবং চিকিৎসা কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হবে।[৪৯]
১৩ মার্চ, মোদি প্রস্তাব দিয়েছিল যে সার্ক দেশগুলি সম্মিলিতভাবে মহামারি প্রতিরোধে লড়াই করবে। প্রস্তাবটি নেপাল, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানের নেতারা স্বাগত জানিয়েছে।[৫০] ১৫ মার্চ, সার্ক নেতাদের একটি ভিডিও কনফারেন্সের পরে, তিনি সার্ক দেশগুলির জন্য কোভিড-১৯ জরুরি তহবিল হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ ₹ ৭৪ কোটি (১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) বরাদ্দ করেছিলেন।
২০২০ সালের ১১ মার্চ, ভারতের মন্ত্রিপরিষদ সচিব, রাজীব গৌবা ঘোষণা করেছিলেন যে সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে মহামারি রোগ আইন, ১৮৯৭ এর ধারা ২ বিধানের আহবান করা উচিত।[৫১][৫২]
১৪ মার্চ, কেন্দ্রীয় সরকার মহামারিটিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০০৫ এর অধীনে "নোটিফায়েড বিপর্যয়" হিসাবে ঘোষণা করে, রাজ্যগুলিকে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য রাজ্য দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া তহবিলের অর্থের একটি বড় অংশ ব্যয় করতে সক্ষম করে।[৫৩][৫৪]
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক দ্বারা প্রকাশিত সচেতনতার পোস্টার
সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রথম জানুয়ারিতে প্রয়োগ করা হয়েছিল। ভারত সরকার নাগরিকদের, বিশেষত উহানের জন্য একটি ভ্রমণ পরামর্শিকা জারি করেছিল, যেখানে প্রায় ৫০০ ভারতীয় মেডিকেল শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে।[৫৫] এটি চীন থেকে আগত যাত্রীদের তাপীয় স্ক্রিনিংয়ের জন্য সাতটি বড় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে নির্দেশ দিয়েছিল।[৫৬][৫৭]
মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত সরকার দেশে মহামারিটির আরও খারাপের মোকাবিলার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল যার মধ্যে সাতটি মন্ত্রণালয় একসাথে কাজ করে সারাদেশে অতিরিক্ত সঙ্গরোধ করে রাখা ও চিকিৎসা সুবিধা স্থাপনের জন্য কাজ করছে। রাজ্য এবং স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, রেল, শ্রম, সংখ্যালঘু বিষয়ক, বিমানচালনা ও পর্যটন সহ কুড়িটি মন্ত্রণালয়কে এই নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।.[৫৮] আতঙ্কের মতো পরিস্থিতি এড়ানোর পরিকল্পনাও করা হয়েছে। প্রতিরক্ষামূলক এবং চিকিৎসা সামগ্রীর প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার জন্য বস্ত্র মন্ত্রককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওষুধ বিভাগের প্রয়োজনীয় ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ক্রেতা সুরক্ষা, খাদ্য ও খাদ্য সরবরাহ দফতর মন্ত্রককে প্রয়োজনীয় সামগ্রীর প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।[৫৯]
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) কেরালার তিরুবনন্তপুরমে তার তিনটি সুবিধাতে মহামারিটির বিরুদ্ধে সতর্কতা অবলম্বন করেছে। সুবিধাগুলি হল বায়ো-মেট্রিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানিং স্থগিত করেছে, ঘূর্ণায়মান প্রবেশদ্বার বন্ধ এবং অভ্যন্তরীণ সভা সীমাবদ্ধ এবং চিকিৎসা তত্ত্বাবধান বাড়ানোর সময় যতটা কম সম্ভব ভ্রমণ কর্রেছে। তবে এগুলিতে মিশনের সময়সূচী প্রভাবিত হয়নি।[৬০]
১৭ মার্চ, ভারত সরকার সমস্ত ভারতীয় রাজ্যগুলিকে ৩১ মার্চ অবধি প্রতিরোধমূলক কৌশল হিসাবে সামাজিক দূরত্বের ব্যবস্থা গ্রহণের বাস্তবায়নের জন্য আহ্বান জানিয়ে একটি আবেদন জারি করেছে।[৬১] কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীকে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির জন্য একটি সরকারী নির্দেশ জারি করা হয়েছিল; সমস্ত অপ্রয়োজনীয় ছুটি বাতিল করা হয়েছে।[৬২][৬৩] একটি কোভিড-১৯ অর্থনৈতিক প্রতিক্রিয়া টাস্ক ফোর্সও গঠন করা হয়েছে।[৬৪][৬৫]
২৭ মার্চ, তামিলনাড়ু সরকার করোনার ভাইরাসের বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তাত্ক্ষণিকভাবে ১৫০৮টি ল্যাব টেকনিশিয়ান, ৫০০ ডাক্তার এবং ১০০০ নার্সকে নিয়োগ আদেশ জারি করেছে। এর সাথে রাজ্যে ২০০ টি নতুন অ্যাম্বুলেন্স বাড়ানোর আদেশও দেওয়া হয়েছে।[৬৬]
আসাম সরকার গুয়াহাটির সরুসাজাই স্টেডিয়াম এবং নেহেরু স্টেডিয়ামে বিচ্ছিন্নতা সুবিধা তৈরি করা শুরু করে।[৬৭][৬৮]
২০২০ সালের ৩ মার্চ, ভারত সরকার ইতালি, ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানের নাগরিকদের জন্য ভিসা প্রদান এবং ইতোমধ্যে জারি করা নতুন ভিসা স্থগিত করেছে।[৭০] ২০২০ সালের ৪ মার্চ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডাঃ হর্ষ বর্ধন ভারতে আগত সমস্ত আন্তর্জাতিক যাত্রীদের বাধ্যতামূলক স্ক্রিনিংয়ের ঘোষণা করে। তিনি আরও বলেছিলেন, এ পর্যন্ত বিমানবন্দরগুলিতে ৫৮৯,০০০ লোককে স্ক্রিন করা হয়েছে, এক মিলিয়নেরও বেশি নেপালের সীমান্তে স্ক্রিন করা হয়েছে এবং প্রায় ২৭০০০ জন বর্তমানে সম্প্রদায়ের নজরদারিতে রয়েছেন। [৭১][৭২] বিদেশ থেকে ভারতে আসা সমস্ত যাত্রীদের জন্য সরকার এখন সার্বজনীন স্ক্রিনিংও শুরু করে। এর আগে কেবল চীন, হংকং, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম এবং মালয়েশিয়া থেকে আগত যাত্রীদের চেক করা হয়েছিল।
২০২০ সালের ১১ মার্চ, ভারত সরকার কূটনীতিক, কর্মকর্তা, জাতিসংঘ/আন্তর্জাতিক সংস্থা, কর্মসংস্থান এবং প্রকল্প ভিসা ব্যতীত ১৩ মার্চ রাত ১২টা থেকে থেকে ১৩ এপ্রিল ২০২০ সাল পর্যন্ত ভারতের সকল ভিসা স্থগিত করেছিল। ভারতও ভিসা মুক্ত ভ্রমণ সুবিধা স্থগিত করেছে। ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ওসিআই কার্ডধারীদের এবং ১৫ ফেব্রুয়ারির পর কোভিড -১৯ টি আক্রান্ত দেশগুলি থেকে আগত সমস্ত ভারতীয় নাগরিককে ১৪ দিনের জন্য পৃথক করা দরকার।[১৪]
১৮ মার্চ থেকে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য এবং তুরস্কের ভ্রমণকারীদের প্রবেশ ৩১ মার্চ অবধি নিষিদ্ধ ছিল।[৭৩] এর পরে আফগানিস্তান, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়ার মতো অন্যান্য দেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।[৭৪]
একটি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরবর্তী আদেশের জন্য ১৬ মার্চ থেকে অস্থায়ীভাবে শ্রী করতারপুর সাহেবের ভ্রমণ ও নিবন্ধন স্থগিত করেছিল।[৭৫] সিকিম রাজ্যের অভ্যন্তরীণ পর্যটকদের ১৭ মার্চ থেকে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিল এবং যারা ইতোমধ্যে রাজ্যে রয়েছেন তাদের চলে যেতে বলেছিল।[৭৬]হিমাচল প্রদেশ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ১৯ মার্চ বিদেশী ও দেশীয় পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিল।[৭৭] অন্যান্য রাজ্যগুলি যেমন উত্তরাখণ্ড একই পদ্ধতি অনুসরণ করেছে, যেখানে পরবর্তী আদেশ পর্যন্ত পর্যটকদের আগমন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।[৭৮] ২১ মার্চ পর্যন্ত পাঞ্জাব গণপরিবহন ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছিল।[৭৯]
৯ মার্চ, ভাইরাসটির বিস্তার রোধে মিজোরাম সরকার বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সাথে আন্তর্জাতিক সীমানা সিল করে দিয়েছে।[৮০] মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন. বীরেন সিং সীমান্ত শহর মোরেহ ও ভারত-মায়ানমার সীমান্তের অন্যান্য ক্রসিংপয়েন্টগুলিতে নং -১ নম্বর গেট, ২ নম্বর গেটটি বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। [৮০]
১৩ মার্চ, ভারত সরকার, ইন্দো-বাংলাদেশ, ইন্দো-নেপাল, ইন্দো-ভুটান এবং ইন্দো-মায়ানমার সীমান্ত চেক পোস্টগুলিতে এবং বাইরে সমস্ত আন্তর্জাতিক যাত্রী পরিবহন স্থগিত করেছিল।[৮১]
১৫ মার্চ, সরকার ভারত-পাকিস্তান স্থল চেকপোস্টে ১৬ মার্চ রাত ১২টা থেকে ট্রাফিক স্থগিত ঘোষণা করেছিল।[৮২]
৫ মার্চ, দিল্লি এনসিআর-তে নতুন করে সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধির পরে সতর্কতা হিসাবে দিল্লি সরকার ঘোষণা করেছিল যে দিল্লি জুড়ে সমস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।[৮৩]
৭ মার্চ, "উচ্চ ভাইরাল লোড" নিয়ে সন্দেহজনক দুটি সংক্রমণের ঘটনার পরে জম্মুতে, জম্মু জেলা ও সাম্বা জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ ছিল।[৮৪]
৯ মার্চ, কেরালার পাঠানমথিটা জেলার কালেক্টর এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য তিন দিনের দীর্ঘ ছুটি ঘোষণা করেছিলেন।[৮৫] কর্ণাটকে ব্যাঙ্গালোরের সমস্ত কিন্ডারগার্টেন এবং প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য অনির্দিষ্টকালের ছুটি ঘোষণা করেছিল।[৮৬] শহরে একটি নিশ্চিত ঘটনার রিপোর্ট হওয়ার পরে প্রাথমিক স্তরের পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হয়েছিল।[৮৭]
১০ মার্চ, কেরল ১১ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে সমস্ত স্কুল ও কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছিল।[৮৮]
১২ মার্চ, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ঘোষণা করেছিলেন যে নতুন দিল্লির সমস্ত স্কুল, কলেজ এবং সিনেমা হলগুলি মার্চের শেষ অবধি বন্ধ থাকবে এবং সমস্ত সার্বজনীন স্থানগুলি একটি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে জীবাণুমুক্ত করা হয়েছিল।[৮৯]
১২ মার্চ, কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বি এস যুদুরাপ্পা ঘোষণা করেছিলেন যে রাজ্য জুড়ে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মল, সিনেমা হল এবং পাব এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ থাকবে। তিনি পার্টি এবং বিবাহের মতো জনসাধারণের অনুষ্ঠান আদেশ জারি করে নিষিদ্ধ করেছিলেন।[৯০] ওড়িশা সরকার প্রাদুর্ভাবটিকে একটি "বিপর্যয়" হিসাবে ঘোষণা করে, মার্চ মাসের শেষ অবধি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সিনেমা হল বন্ধ করার পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় সরকারি সমাবেশে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা করেছিল।[৯১] মহারাষ্ট্র সরকার মুম্বই, নবী মুম্বই, নাগপুর, পুনে এবং পিম্পরি চিন্চওয়াদেতে প্রাদুর্ভাবটিকে মহামারি হিসাবে ঘোষণা করেছিল। এটি ঘোষণা করে যে এই শহরগুলির সমস্ত মল, সিনেমা হল, সুইমিং পুল এবং জিমগুলি ৩১ মার্চ অবধি বন্ধ থাকবে।[৯২]
১৩ মার্চ, পাঞ্জাব ও ছত্তিশগড় সরকার ৩১ মার্চ অবধি সমস্ত স্কুল-কলেজগুলিতে ছুটি ঘোষণা করে।[৯৩][৯৪] মণিপুর সরকার ঘোষণা করেছিল যে রাজ্যের সমস্ত স্কুল, যেখানে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না সেগুলি ৩১ মার্চ অবধি বন্ধ থাকবে।[৯৫]]
১৪ মার্চ, হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জয় রাম ঠাকুর ঘোষণা করেন যে করোনাভাইরাসের প্রকোপের পরিপ্রেক্ষিতে একটি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং থিয়েটারগুলি ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।[৯৬] এছাড়াও, পশ্চিমবঙ্গ সরকার ঘোষণা করেছিল যে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৩১ মার্চ অবধি বন্ধ থাকবে, তবে বোর্ডের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।[৯৭] মহারাষ্ট্র সরকার শপিংমল, সুইমিং পুল, সিনেমা থিয়েটার, জিম বন্ধ করে দিয়ে রাজ্যের নগর অঞ্চলগুলির সমস্ত স্কুল এবং কলেজগুলিকে ২০২০ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলে।[৯৮][৯৯]রাজস্থান সরকার ৩০ মার্চ অবধি সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, জিম এবং সিনেমা হল বন্ধ রাখার ঘোষণা করে, তবে চলমান স্কুল ও কলেজ পরীক্ষা চলবে।[১০০]
১৫ মার্চ, আইআইটি, বোম্বাই ২৯ মার্চ অবধি সমস্ত একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত করেছে।[১০১]] গোয়ায় মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত ঘোষণা করেছিলেন যে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। যদিও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার দশম ও দ্বাদশ গোয়া বোর্ডের পরীক্ষা সময়সূচি অনুসারে অনুষ্ঠিত হবে।.[১০২] বৃহনমুম্বাই পৌর কর্পোরেশন পরবর্তী নির্দেশ না হওয়া পর্যন্ত জিজামাতা উদ্যানকে বন্ধ করে দিয়েছে।[১০৩] গুজরাত সরকার ঘোষণা করেছিল যে সমস্ত স্কুল, কলেজ, সিনেমা হলগুলি ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে, তবে বোর্ডের পরীক্ষা নেওয়া হবে।[১০৪]] বিহার পাবলিক সার্ভিস কমিশন (বিপিএসসি) সমস্ত নিয়োগ পরীক্ষা ৩১ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করেছে। [১০৫] বৈষ্ণব দেবী শ্রাইন বোর্ড একটি নোটিশ জারি করে, অনাবাসী ভারতীয় এবং বিদেশীদের ভারতে আসার পরে ২৮ দিন মন্দির দর্শন নিষিদ্ধ করে।[১০৬] তামিলনাড়ু এবং তেলেঙ্গানা সরকার ৩১ মার্চ অবধি স্কুল, মল এবং থিয়েটার বন্ধ রাখার ঘোষণা করেছে।[১০৭][১০৮] সংস্কৃতি মন্ত্রক, ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপের অধীনে সমস্ত স্মৃতিসৌধ এবং যাদুঘর ৩১ মার্চ অবধি বন্ধ করে দিয়েছে। [১০৯]
১৭ মার্চ, উত্তরপ্রদেশের স্কুল, কলেজ এবং মাল্টিপ্লেক্সগুলি ২ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ ছিল এবং চলমান পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছিল।[১১০] বিএমসি মুম্বাইয়ের বেসরকারী সংস্থাগুলিকে "তাদের সকল কর্মীদের মাত্র ৫০% দিয়ে কাজ চালানোর নির্দেশ দিয়েছে নতুবা আইপিসির ১৮ অনুচ্ছেদের অধীনে ব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ দিয়েছে"।[১১১] রাজস্থান সরকার ৩১ মার্চ অবধি জনসমাগমে ৫০ জনেরও বেশি লোকের জমায়েত নিষিদ্ধ করেছিল।[১১২] তামিলনাড়ুর গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্রগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। নীলগিরি জেলার কর্তৃপক্ষ উটিসহ পর্যটনকেন্দ্রগুলি বন্ধ করার নির্দেশ দেয় এবং হোটেল ও রিসর্টগুলিতে অবস্থানরত পর্যটকদের শহর ছাড়ার জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছিল।[১১৩] মহারাষ্ট্রে, সরকারী অফিসগুলি সাত দিনের জন্য বন্ধ ছিল।[১১৪] চণ্ডীগড় প্রশাসন শপিংমল, সিনেমা হল, জিম, নাইটক্লাব, সুইমিং পুল, কোচিং সেন্টার, স্পা, ক্রেস এবং ভিডিও গেম পার্লারগুলি ৩১ মার্চ অবধি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। ১০০ শতাধিক লোকের জমায়েত নিষিদ্ধ করেছে এবং আদমশুমারির কাজ স্থগিত করা হয়েছে।[১১৫] একই সাথে, ডেরা প্রধানদের ৩১ মার্চ অবধি সমস্ত ধর্মীয় অনুষ্ঠান স্থগিত করতে বলা হয়েছিল।[১১৬] মহারাষ্ট্র সরকার আরও নির্দেশ দিয়েছে যে বিবাহ ছাড়া অন্য কোথাও ৫০ জনের বেশি লোককে জড়ো হওয়ার অনুমতি নেই।[১১৭]পুদুচেরি ৩১ মার্চ অবধি স্কুল, কলেজ, সিনেমা ও জিম বন্ধ করে দিয়েছে।[১১৮]মুম্বই পুলিশ ৩১ মার্চ অবধি পাব, বার এবং ডিসোথেক বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে।[১১৯]
১৮ মার্চ, জম্মু ও কাশ্মীরের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং শ্রীনগর জেলার জেলা প্রশাসক বলেছিলেন যে সব কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে সমস্ত বিদেশী পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।[১২০] অন্যদিকে, রাজ্যটির ফুলশিল্প, উদ্যান ও উদ্যানতত্ত্ব অধিদপ্তরও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাগ-ই-বাহু উদ্যানকে সাধারণের জন্য সময়কাল ১৮ থেকে ৩১ মার্চ বাড়িয়ে দিয়েছে।[১২১][১২২] অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার ৩১ মার্চ অবধি সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে।[১২৩]
২৩ মার্চ, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন যে সমস্ত জেলার সীমানা বন্ধ হয়ে যাবে, এবং রাজ্যব্যাপী একটি কড়া সান্ধ্য আইন কার্যকর করা হবে।[১২৪]
২২ মার্চ, ভারত সরকার ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশের ২২ টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির ৮২ টি জেলা (যে যে স্থানে নিশ্চিত সংক্রমণের ঘটনার খবর পাওয়া গেছে) পুরোপুরি লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।[১২৫] ২৩ মার্চ ভোর ৬ টায় দিল্লি কমপক্ষে ৩১ মার্চ অবধি লকডাউনের আওতায় ছিল। প্রয়োজনীয় এবং পণ্য পরিষেবা চালু ছিল।[১২৬][১২৭]বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, মুম্বই,[১২৮]চন্ডিগড়,[১২৯] এর মতো বড় শহরগুলি সহ ৮০ টি শহর এবং কলকাতাও লকডাউনের আওতায় ছিল।[১৩০] লকডাউন পিরিয়ড চলাকালীন আন্তঃরাষ্ট্রীয় চলাচলের অনুমতি রয়েছে। তবে কিছু রাজ্য তাদের সীমানা বন্ধ করে দিয়েছে।[১৩১]
১৪ এপ্রিল, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে অঞ্চলগুলিতে এই বিস্তার সামলানো বা প্রতিরোধ করা হয়েছে সেখানে ২০ এপ্রিলের পরে শর্তসাপেক্ষে শিথিলতা রেখে চলমান লকডাউনটির সময়সীমা ৩ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছেন।[১৩৯]
২০২০ সালের ১৩ মার্চ নয়াদিল্লিতে আইটিবিপি ছাওলা কেন্দ্রে, প্রয়োজনীয় নিস্ক্রিয়করণ সময় শেষ করে, বাইরে আসা লোকদের, করোনাভাইরাস নিস্ক্রিয়করণ কেন্দ্রে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, নিত্যানন্দ রাই পরিদর্শন করছেন।
ইলেক্ট্রনিক্স এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় জাতির মধ্যে কোভিড -১৯ মহামারিটির আক্রান্তের "যোগাযোগের সন্ধান এবং এর বিস্তার দমনে" র সাহায্যে আরোগ্য সেতু নামে একটি স্মার্ট ফোন অ্যাপ্লিকেশন চালু করেছে। বিশ্ব ব্যাঙ্ক মহামারি মোকাবেলায় প্রাথমিকভাবে এ জাতীয় প্রযুক্তি স্থাপনার প্রশংসা করেছে। গ্লোবাল প্রযুক্তির তারকা অ্যাপল এবং গুগল ১১ এপ্রিল ঘোষণা করেছিল যে তারা স্মার্টফোনগুলির জন্য সফটওয়্যার তৈরি করবে যা আরোগ্য সেতু অবিকল আরোগ্য অ্যাপ্লিকেশনটির মত আক্রান্তের যোগাযোগের সন্ধানে সহায়তা করবে।[১৪৩][১৪৪]
২৪ নভেম্বর ২০২০ (2020-11-24)-এর হিসাব অনুযায়ী[হালনাগাদ][১৪৫]
নয়াদিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ওয়ার রুম এবং নীতি নির্ধারণকারী দলটি মন্ত্রকের জরুরি মেডিকেল রেসপন্স ইউনিট, কেন্দ্রীয় নজরদারি ইউনিট (আইডিএসপি), ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (এনসিডিসি) এবং তিনটি সরকারী হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ নিয়ে গঠিত।[১৪৬] তারা কীভাবে দেশে করোনভাইরাসকে মোকাবেলা করা উচিত তা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নীতিগত কৌশলের ভাগীদার। [১৪৬] একটি জোট-নিয়ন্ত্রণ কৌশলটি মূলত গ্রহণ করা হচ্ছে, যেমনটি পূর্ববর্তী মহামারিতে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল, একইভাবে "সংক্রমণের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করা"।[১৪৬][১৪৭][১৪৮] পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি (এনআইভি) এর নেতৃত্বে ভারতজুড়ে ১৫ টি ল্যাব ভাইরাসটির পরীক্ষা করছে, আরও বেশি ল্যাব প্রশিক্ষিত হচ্ছে। [১9৯] ১৪ মার্চ ৬৫ টি ল্যাব ভাইরাসটির পরীক্ষার জন্য সক্ষম হিসাবে নামাঙ্কিত করা হয়েছিল (যদিও ১৭ মার্চ অবধি সমস্ত ল্যাব সম্পূর্ণ কার্যকরী নয়)।[১৪৯]
১৯ মার্চ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল করোনাভাইরাসজনিত ক্রমবর্ধমান মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ মার্চ অবধি দিল্লির সমস্ত রেস্তোঁরা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে রেস্তোঁরাগুলিতে খাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে তবে বাড়িতে নেবার জন্য খাদ্য সরবরাহ অব্যাহত থাকবে। তিনি আরও বলেছিলেন যে ২০ বা ততোধিক লোককে রাজ্যের কোথাও ঐক্যবদ্ধ হতে দেওয়া হবে না। .[১৫০]] ২০ মার্চ, লখনউতে সমস্ত রেস্তোঁরা, হোটেল, মিষ্টির দোকানগুলি ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ করা হয়েছিল।[১৫১]
২০ মার্চ, দিল্লি সরকার ঘোষণা করেছিল যে দিল্লির সমস্ত মলগুলি কেবল সবজি, মুদি এবং ওষুধের দোকান খোলা রেখে বন্ধ থাকবে। [১৫২][১৫৩]মুম্বই, পুনে এবং নাগপুরের দোকানগুলি ৩১ মার্চ অবধি বন্ধ থাকবে।[১৫৪][১৫৫] এই সময়ের মধ্যে, প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলি অব্যাহত থাকবে। চিকিৎসা পরিষেবা উপলব্ধ হবে।[১৫৬]
২২ মার্চ, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং বলেছিলেন যে করোনভাইরাসের জন্য রাজ্যটি ৩১ মার্চ পর্যন্ত লকডাউন করার নির্দেশ দিয়েছেন। সমস্ত প্রয়োজনীয় সরকারি পরিষেবা অব্যাহত থাকবে এবং খাদ্য, ওষুধ ইত্যাদির মতো প্রয়োজনীয় পণ্যগুলির দোকানগুলি উন্মুক্ত থাকবে।[১৫৭][১৫৮]] রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট বলেছিলেন যে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ব্যক্তিগত যান চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে, পাশাপাশি সমস্ত মল এবং দোকান বন্ধ থাকবে।.[১৫৯][১৬০]
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতীয় টেলিভিশনে ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণার সাথে সাথে কয়েক হাজার মানুষ দেশের মহাসড়কগুলিতে এবং তাদের কর্মস্থল থেকে নিজ গ্রামে দীর্ঘ দূরত্বে যাত্রা করেছিল।[১৬১] সমস্ত কারখানা, সংস্থাগুলি বন্ধ হওয়া শুরু করলে এই কারখানাগুলিতে কর্মরত এবং ক্ষুদ্র শ্রমজীবী লোকেরা পুনে, মুম্বই ইত্যাদির মতো বড় শহরগুলি ছেড়ে পালাতে শুরু করেছিল এবং বাসে, ট্রেনে তাদের গ্রামে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল, যেখান থেকে তারা এই বড় শহরে এসেছিল। সরকার করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করার জন্য সমস্ত ট্রেন, বাস চলাচল এমনকি ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল।[১৬২] তারপরে এই কর্মজীবি মানুষেরা পায়ে হেটে তাদের গ্রামে লম্বা পদযাত্রা শুরু করেছিল, অনেক লোক ক্ষুধার্ত হয়ে উঠেছিল, এদের মধ্যে অনেকেরই সাথে ছোট বাচ্চা সহ পরিবার ছিল। অনেকের অর্থ ছিল না, কেউ সান স্ট্রোকে, ক্লান্তিতে, ডিহাইড্রেশনে কষ্ট পান।[১৬৩] কিছু লোক শহর ছেড়ে চলে গেছে কারণ তারা ভেবেছিল যে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব যুক্ত শহরগুলির থেকে সুদুরে তাদের গ্রামগুলি নিরাপদ। এই মানুষগুলির মধ্যে বেশিরভাগই যারা দৈনিক মজুরির কর্মী ছিল তারা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী করোনাভাইরাস ছড়ান রোধ করতে ২৪ মার্চ ভারতে তিন সপ্তাহের পুরো লকডাউন ঘোষণার পরে কর্মহীন হয়ে পড়ে।[১৬৪] অর্থ ও চাকরির অভাবে তারা তাদের গ্রামে পৌঁছতে মরিয়া হয়ে ওঠে। কিছু মানুষ সরকারি বাস পেয়ে যান অন্যরা বাড়ি পৌঁছানোর জন্য পদব্রজে চলতে থাকেন।[১৬৫]
বিদেশ মন্ত্রক নিশ্চিত করেছে যে ১৮ মার্চ পর্যন্ত, ২৭৬ জন ভারতীয় বিদেশে করোনা ভাইরাস সংক্রামিত হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগ ছিল ইরানে (২৫৫), তাছাড়া বাকীরা সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইতালি, কুয়েত, শ্রীলঙ্কা, রুয়ান্ডা এবং হংকংয়ে।[১৭১]
↑"Coronavirus Helpline Numbers"(পিডিএফ)। Ministry of Health and Family Welfare। ৪ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল(পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মার্চ ২০২০।
↑Sharma, Mihir (৩০ মার্চ ২০২০)। "Coronavirus exposes India's official callouses."। Bloomberg। Archived from the original on ৬ এপ্রিল ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ৭ এপ্রিল ২০২০।উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: বট: আসল-ইউআরএলের অবস্থা অজানা (link)
কমপক্ষে ৫০ জন মারা গেছে এমন ঘটনার ফলাফল দেখানো হয়েছে ইটালিক অক্ষরে
ভয়াবহ ঘটনাগাঢ় বর্ণে দেখানো হয়েছে
উদ্ধৃতি ত্রুটি: "lower-roman" নামক গ্রুপের জন্য <ref> ট্যাগ রয়েছে, কিন্তু এর জন্য কোন সঙ্গতিপূর্ণ <references group="lower-roman"/> ট্যাগ পাওয়া যায়নি