ভারতের রাজনীতি |
---|
ধারাবাহিকের অংশ |
![]() |
![]() |
ভারতের সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিল স্বায়ত্তশাসিত প্রশাসনিক বিভাগ গঠনের অনুমতি দেয় যা তাদের নিজ রাজ্যে মধ্যে বিশেষভাবে স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হয়েছে।[১] এই স্বায়ত্তশাসিত জেলা পরিষদগুলোর বেশিরভাগই উত্তর পূর্ব ভারতে অবস্থিত তবে। দুটি রয়েছে ভারতের সর্বোত্তরের লাদাখ অঞ্চলে। বর্তমানে ভারত প্রজাতন্ত্রের আসাম, মেঘালয়, মিজোরাম ও ত্রিপুরা রাজ্যের মোট দশটি স্বায়ত্তশাসিত কাউন্সিল ষষ্ঠ তফসিলের ভিত্তিতে[২] এবং বাকি অঞ্চলগুলো অন্যান্য আইনের মাধ্যমে গঠন করা হয়েছে।
ভারতের সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের বিধানের অধীনে, স্বায়ত্তশাসিত জেলা পরিষদগুলি নিম্নলিখিত ক্ষেত্রগুলিতে আইন ও বিধিবিধান তৈরি করতে পারে:[৩]
স্বায়ত্তশাসিত জেলাগুলোতে কোন মামলার যদি উভয় পক্ষই যদি তফসিলি উপজাতি সদস্য হয় তাহলে জেলা পরিষদ মামলার শুনানি করার জন্য আদালত গঠন এবং সর্বোচ্চ সাজা অনধিক পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।[৩]
স্বায়ত্তশাসিত জেলা পরিষদগুলো ভবন ও ভূমি, প্রাণি, যানবাহন, নৌকা, এলাকায় পণ্য প্রবেশ, রাস্তা, ফেরি, সেতু, কর্মসংস্থান, আয় এবং বিদ্যালয় ও রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সাধারণ কর সগ অন্যান্য কর, ফি এবং টোল-লেভি আদায় করার ক্ষমতা রয়েছে। [৪]
ভারতের সংবিধানের ৬ষ্ঠ তফসিলের অধীনে পরিচালিত স্বায়ত্তশাসিত জেলা পরিষদগুলোকে গাঢ় হরফ-এ দেখানো হয়েছে।
ডি ফ্যাক্টো বা দে ফ্যাক্টো স্ব-শাসিত অঞ্চল হচ্ছে সেসব অঞ্চল, যেগুলো নির্দিষ্ট কোন আইন অনুসারে স্বায়ত্তশাসিত না হলেও কার্যত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল।
উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপ হচ্ছে ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত একটি দ্বীপ। এই দ্বীপটি সমগ্র পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন সেন্টিনেলী জনগোষ্ঠীর আবাস্থল। তারা বাইরের পৃথিবীর সাথে একেবারেই যোগাযোগহীন এবং কোন বহিরাগত তাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তারা তা প্রত্যাখ্যান করে। আধুনিক সভ্যতা কার্যত যাদের ছুঁতে পারেনি। আধুনিক সভ্যতার সাথে একেবারেই সম্পর্কহীন জনগোষ্ঠীর মধ্যে তারাই সর্বশেষ।[৫][৬] ১৯৫৬ সালের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের আদিবাসী উপজাতি সুরক্ষা আইনের বলে[৭] এই দ্বীপে ভ্রমণ এবং পাঁচ নটিক্যাল মাইলের (৯.২৬ কিমি) থেকে কাছাকাছি যে-কোন যোগাযোগের চেষ্টা নিষিদ্ধ, ভারতীয় নৌবাহিনীর সেনা, সমুদ্র পথে, এই জায়গায় টহল দেয়।[৮] ভারতীয় সুরক্ষার অধীনে দ্বীপটি কার্যত একটি "সার্বভৌম" অঞ্চল। অর্থাৎ, কাগজে-কলমে ভারত সরকারের অধীনস্থ অঞ্চল হলেও, বাস্তবে তারা সম্পূর্ণ স্বাধীন।
আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের স্থানীয় সরকার জানিয়েছে যে সেন্টিনেলী জনগোষ্ঠীর জীবনধারা বা আবাসে হস্তক্ষেপ করার কোনও উদ্দেশ্য তাদের নেই।[৯]
২০০৪ সালের ডিসেম্বরের সুনামির প্রভাবের ফলে দ্বীপটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সেন্টিনেলী জনগোষ্ঠী সহজাত দক্ষতার বলে বেঁচে যায়। কিছুদিন পর ভারত সরকারের একটি হেলিকপ্টার এলাকাটি পরিদর্শন করে বিষয়টি নিশ্চিত করে।
যদিও এই বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক চুক্তি করা হয়নি, তবুও ভারত সরকারের 'ন্যূনতম হস্তক্ষেপের সরকারি নীতি' নিশ্চিত করেছে যে সেন্টিনেলী জনগোষ্ঠী ভারতের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় সরকারের কাঠামোর আওতায় তাদের উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপের উপর ডি ফ্যাক্টো (বা দে ফ্যাক্টো) অর্থাৎ কার্যত স্বায়ত্তশাসন এবং সার্বভৌমত্ব লাভ করবে। .[১০]