ভার্জিন আটলান্টিক হচ্ছে ভার্জিন আটলান্টিক এয়ারওয়েজ লিমিটেড এবং ভার্জিন আটলান্টিক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড এর বাণিজ্যিক নাম৷ এটি একটি ব্রিটিশ এয়ারলাইন্স এবং এর প্রধান কার্যালয় যুক্তরাজ্যের ক্রাউলিতে অবস্থিত৷ এয়ারলাইনটি ১৯৮৪ সালে ব্রিটিশ আটলান্টিক এয়ারওয়েজ নামে প্রতিষ্ঠিত হয়৷ এয়ারলাইনটি প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করেন রেনডল্ফ ফিল্ডস এবং অ্যালান হিলারী৷
আমেরিকায় জন্মগ্রহণকারী একজন আইনজীবী রেনডল্ফ ফিল্ডস এবং লেকার এয়ারওয়েজের প্রাক্তন চীফ পাইলট অ্যালান হিলারী দুজন মিলে ব্রিটিশ আটলান্টিক এয়ারওয়েজ প্রতিষ্ঠা করেন৷ ১৯৮২ সালের জুন মাসের দিকে যখন ফকল্যাণ্ড যুদ্ধ শেষ হয়, তখন ফিল্ডস লন্ডন এবং ফকল্যাণ্ড আইল্যান্ড এর মধ্যে বিমান পরিচালনার জন্য একটি বিমানসংস্থা প্রতিষ্ঠার কথা ভাবেন৷ ফিল্ডের এ বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ লোকের প্রয়োজন ছিল এবং তিনি অ্যালান হিলারীর সাথে যোগাযোগ করেন, যিনি নিজেও ফকল্যাণ্ড আইল্যান্ডে বিমান পরিচালনার উদ্দেশ্যে একটি বিমান সংস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য উৎসাহী ছিলেন৷
ভার্জিন আটলান্টিক এর প্রধান কার্যালয় যার নামকরণ করা হয়েছে দ্যা অফিস, তা ইংল্যান্ডের গ্যাটউইক এয়ারপোর্টের নিকটে অবস্থিত ক্রাউলিতে অবস্থিত৷ [১] এখানে অবশ্য ভার্জিন হলিডেস এর কর্পোরেট অফিসও অবস্থিত৷[২] সারা বিশ্বব্যাপী বিমানসংস্থাটির বিভিন্ন শাখা অফিস ও কল সেন্টার রয়েছে৷ এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য শাখা অফিসসমূহ নরওয়াক, জোহানেসবার্গ, বার্বাডোস, সাংহাই, হংকং, দিল্লি, লাগোস, দুবাই ইত্যাদি শহরে অবস্থিত৷[৩]
২০১৭ সালের মার্চ মাস অনুযায়ী ভার্জিন আটলান্টিক এয়ারওয়েজের বিমানসমূহ নিন্মের দেশ ও শহরগুলোতে চলাচল করে থাকে৷
ভার্জিন আটলান্টিক এয়ারওয়েজ লিমিটেড পরিচালিত বার্বাডোস এর ব্রিজটাউন, যুক্তরাজ্যের লন্ডন, ম্যানচেস্টার, বেলফাস্ট, আমেরিকার বোস্টন, নিউইয়র্ক, অরল্যান্ডো, সিয়াটল, ভারতের দিল্লি, সংযুক্ত আরব আমিরাত এর দুবাইসহ পৃথিবীর স্থানে চলাচল করে থাকে ভার্জিন আটলান্টিক এর বিমানসমুহ৷
নিচের বিমানসংস্থাগুলোর সাথে ভার্জিন আটলান্টিক এয়ারওয়েজের কোড শেয়ার চুক্তি বিদ্যমান রয়েছে:[৪]
ভার্জিন আটলান্টিক যাত্রী ও মালামাল পরিবহনের জন্য এয়ারবাস এবং বোয়িং বিমান ব্যবহার করে থাকে৷ গ্যাটউইক, গ্লাসগো এবং ম্যানচেস্টার এর কিছু কিছু নির্ধারিত রুটে বোয়িং ৭৪৭-৪০০ এবং এয়ারবাস এ৩৩০-৩০০ ব্যবহৃত হয়ে থাকে৷ অন্যান্য কিছু কিছু ফ্লাইটেও এয়ারবাস এ৩৩০ ব্যবহৃত হয়৷ হিথরো থেকে চলাচলের সকল রুটে বোয়িং ৭৪৭, এয়ারবাস এ৩৪০ এবং এয়ারবাস এ৩৩০ ব্যবহৃত হয়ে থাকে৷ এয়ারবাস এ৩৪০-৬০০ বিমানটি প্রথম ভার্জিন আটলান্টিক এয়ারওয়েজের মাধ্যমেই ব্যবহৃত হয়৷[৫]
ভার্জিন আটলান্টিক তার প্রথম বোয়িং ৭৮৭-৯ বিমানটির ডেলিভারী নেয় ২০১৪ সালের অক্টোবর মাসে৷ ২০১৮ সালের মধ্যে ডেলিভারী নেওয়ার জন্য ভার্জিন আটলান্টিক এর এয়ারবাস এ৩৮০-৮০০ এর একটি অর্ডারও রয়েছে৷ যদিও এ ধরনের বিমানগুলো সার্ভিসে ঢোকানোর পরিকল্পনা ভার্জিন আটলান্টিক এয়ারওয়েজের ২০০৬ সালেই ছিলো, তবে বিমানগুলো প্রস্তুতের ক্ষেত্রে বিলম্ব এবং ভার্জিন আটলান্টিকের বিমানের অর্ডারের ক্ষেত্রে পরিবর্তন সময়টাকে পিছিয়ে নিয়ে গেছে৷[৬]
পূর্বের ব্যবহৃত এয়ারবাস এ৩৪০-৩০০ বিমানগুলোকে ২০১৫ সালের এপ্রিলের দিকে যাত্রী পরিবহনের সার্ভিস হতে বাতিল করা হয়৷ এর পরিবর্তে ভার্জিন আটলান্টিক দুই ইঞ্জিনযুক্ত এ৩৩০-৩০০ এবং ৭৮৭-৯ বিমানগুলো ব্যবহার করা শুরু করে৷ ২০১৭ সালের এপ্রিল মাস অনুসারে বিমানসংস্থাটি এয়ারবাস এ৩৩০-৩০০, এয়ারবাস এ৩৪০-৬০০, এয়ারবাস এ৩৫০-১০০০, এয়ারবাস এ৩৮০-৮০০, বোয়িং ৭৪৭-৪০০ এবং বোয়িং ৭৮৭-৯ বিমানগুলো তার যাত্রী ও মালামাল পরিবহনের জন্য ব্যবহার করছে৷[৭][৮][৯]
১৯৯৭ সালে ভার্জিন আটলান্টিক এয়ারওয়েজের একটি এয়ারবাস এ৩৪০-৩০০ বিমানের প্রধান ল্যান্ডিং গিয়ার জ্যাম হয়ে যায় এবং বিমানটি হিথরো এয়ারপোর্টে একটি জরুরী ল্যান্ডিং করার সময় এর ১, ২ এবং ৪ নং ইঞ্জিনের নিচের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷[১০][১১]
২০০৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি হংকং হতে হিথ্রো আসার পথে একটি এয়ারবাস বিমানের ফুয়েল কন্ট্রোল সিস্টেমে গোলযোগ দেখা দেয়৷[১২]