ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | বিক্রম রাজ বীর সিং | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | চণ্ডীগড়, ভারত | ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৮৪|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | বোলার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ২৫৬) | ২ জুন ২০০৬ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ১৮ মে ২০০৭ বনাম বাংলাদেশ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ১৬৪) | ১২ এপ্রিল ২০০৬ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ ওডিআই | ১৫ এপ্রিল ২০০৬ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৩ ডিসেম্বর ২০২০ |
বিক্রম রাজ বীর সিং (মারাঠি: विक्रम राज वीर सिंग; জন্ম: ১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৪) চণ্ডীগড় এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে পাঞ্জাব দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন বিক্রম সিং নামে পরিচিত ভি. আর. ভি. সিং। তাকে গত শতকের স্বল্পসংখ্যক প্রকৃতমানসম্পন্ন ভারতীয় ফাস্ট বোলার হিসেবে বিবেচনা করা হতো।[১]
পাঞ্জাবের চণ্ডীগড় এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ভি. আর. ভি. সিং সর্বদাই ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলতেন ও বলে অতিরিক্ত পেস আনয়ণে সচেষ্ট থাকতেন। ২০০৩-০৪ মৌসুমের রঞ্জী ট্রফিতে পাঞ্জাবের পক্ষে অভিষেক ঘটে তার। এরপর থেকে পাঞ্জাবের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলতে থাকেন। পাঞ্জাবের সাবেক কোচ ভুপিন্দার সিং সিনিয়র মন্তব্য করেন যে, তিনি সর্বদাই দ্রুতগতিতে বল করতে চাইতেন, কোন কিছুই তাকে আটকাতে পারতো না।[২]
২০০৪ সালে ভারতের পক্ষে অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে অংশ নেন। তবে, বল হাতে নিয়ে তাকে বেশ নিরাশ হতে হয়। একমাত্র খেলায় অংশ নিয়ে পাঁচ ওভারে ৪৪ রান খরচ করে ফেলেন। এরপর তাকে বর্ডার-গাভাস্কার বৃত্তি প্রদান করা হয়। এরফলে, অস্ট্রেলিয়ায় ক্রিকেট একাডেমিতে তাকে প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ এনে দেয়।[৩] তার সাথে বৃত্তিধারী আর. পি. সিং পরবর্তীকালে ভারতের পক্ষে খেলার সুযোগ লাভ করেছিলেন।
ঘরোয়া পর্যায়ের ক্রিকেট প্রতিযোগিতা রঞ্জী ট্রফিতে পাঞ্জাব দলের পক্ষে খেলতে শুরু করেন তিনি। সীমিত ওভারের খেলায় একবারই অংশ নেন ও উইকেট শূন্য অবস্থায় মাঠ ছাড়েন। তাসত্ত্বেও, ঐ প্রতিযোগিতার প্রথম-শ্রেণীর খেলায় পাঞ্জাব দলের পক্ষে ছয় খেলায় অংশ নিয়ে ২১.০০ গড়ে ৩০ উইকেট পান।[৪] তবে, তখনো তিনি একদিনের খেলাগুলোয় সুবিধে করতে পারছিলেন না। ৪ খেলায় ১০৯.০০ গড়ে উইকেট পান।[৫]
ঘরোয়া ক্রিকেটে তেমন সফলতা না পেলেও মাত্র পাঁচটি একদিনের খেলায় অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ ভি. আর. ভি. সিংকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভারতের ওডিআই দলের সদস্য করা হয়। কিন্তু, শারীরিক যাচাইবাছাইয়ে অনুপযুক্ত বিবেচিত হওয়ায় তাকে নিরাশ হতে হয়। তার পরিবর্তে যাদবকে দলে নিয়ে আসা হয়।[৬] ২০০৫-০৬ মৌসুমের রঞ্জী ট্রফিতে সীমিত ওভারের খেলায় বেশ ভালো খেলেন। চার খেলায় ২০.৭৫ গড়ে উইকেট পান। তন্মধ্যে, একবার চার উইকেটের সন্ধান পেয়েছিলেন।[৭]
চ্যালেঞ্জার ট্রফিতে পেস বোলিং করে অনেকবারই সকলের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষমতা দেখান। তন্মধ্যে, ঐ প্রতিযোগিতায় দ্রুতগতিতে বোলিং করেছিলেন তিনি। ভারত এ দলের পক্ষে খেলেন তিনি। বেশ কম উইকেট পেলেও ভিভিএস লক্ষ্মণ তাকে ভারতের দ্রুতগতিসম্পন্ন বোলার হিসেবে মন্তব্য করেন। এছাড়াও, জাভাগাল শ্রীনাথ তাকে বর্তমানে দ্রুতগতিসম্পন্ন বোলাররূপে উল্লেখ করেন।[৮]
২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ভি. আর. ভি. সিংয়ের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। অনূর্ধ্ব-১৯ খেলায় তার ক্রীড়াপ্রতিভা লক্ষ্য করা যায়। ২০০৫ সালে পাঞ্জাবের পক্ষে খেলাকালে তিনি সকলের পাদপ্রদীপে চলে আসেন। প্রচণ্ড উদ্যমী ও পরিশ্রমী মিডিয়াম পেস বোলার ছিলেন। দীর্ঘকায় গড়ন, সুপ্রশস্ত বুক নিয়ে তিনি সর্বদাই সমগতিতে বোলিংকর্ম চালিয়ে যেতেন। তবে, তিনি সময়ে সময়ে বোলিংয়ে ছন্দ হারিয়ে ফেলতেন। সন্দেহাতীতভাবেই প্রকৃত মানের ফাস্ট বোলার ছিলেন।
ঘরোয়া ক্রিকেটের প্রথম বছরে সবমিলিয়ে মাত্র সাতটি রঞ্জী ট্রফির খেলায় অংশ নেন। তাসত্ত্বেও, ২০.৬৭ গড়ে ৩৪ উইকেট লাভ করেছিলেন। সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন ৭/৭৫। মোহালিতে ২০০৫ সালের চ্যালেঞ্জার ট্রফিতে ইন্ডিয়া বি-দলের বিপক্ষে তিনটি ও ভারতের জ্যেষ্ঠ দলের বিপক্ষে এস. শ্রীশান্তের সাথে দুই উইকেট নেন।
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে পাঁচটিমাত্র টেস্ট ও দুইটিমাত্র একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন ভি. আর. ভি. সিং। ২ জুন, ২০০৬ তারিখে সেন্ট জোন্সে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১৮ মে, ২০০৭ তারিখে চট্টগ্রামে স্বাগতিক বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।
২০০৫ সালের শেষদিকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওডিআই সিরিজ খেলার জন্যে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু, শারীরিক যোগ্যতার পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হন ও বাদ পড়েন। পায়ের আঘাতের কারণে তাকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হয়। তাসত্ত্বেও, দল নির্বাচকমণ্ডলী তার উপর আস্থা রাখেন। অবশেষে, জামশেদপুরে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার সুযোগ হয় তার।
২০০৫-০৬ মৌসুমে ইংল্যান্ড দল ভারত গমন করে। সফরকারী দলের বিপক্ষে খেলার জন্যে ভারতীয় বোর্ড সভাপতি একাদশের সদস্যরূপে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। মার্চ-এপ্রিল, ২০০৬ সালে সাত-ওডিআই নিয়ে গড়া সিরিজ খেলার উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাকে দলে রাখা হয়। ঐ সিরিজের শেষদিকে ভারতের পক্ষে ওডিআইয়ে অভিষেক ঘটে তার। জামশেদপুরে অনুষ্ঠিত ঐ খেলায় তার অভিষেক পর্বটি মোটেই সুখকর হয়নি। পাঁচ ওভার বোলিং করে ০/৩৩ পান। এরপর, একই সিরিজে ইন্দোরে খেলেন। তবে, মুনাফ প্যাটেল ও ইরফান পাঠানের অন্তর্ভুক্তির কারণে তাকে ওডিআই দলের বাইরে রাখা হয়। ঐ দুইটি ওডিআইয়ে তিনি কোন উইকেট লাভ করতে পারেননি।[১] পরবর্তীতে, আবুধাবিতে ইউরএশিয়া কাপে খেলেন। বেশ ভালো খেলা উপহার দেন তিনি। চার খেলায় ১১ উইকেট লাভ করেন।
জুন, ২০০৬ সালে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয় তার। অ্যান্টিগুয়ায় অনুষ্ঠিত ড্র হওয়া ঐ খেলার প্রথম ইনিংসে দুই উইকেট পেয়েছিলেন। বিখ্যাত ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান তারকা বোলার ইয়ান বিশপ তাকে নজরে রেখেছিলেন ও তিনি বিস্ময়ের কারণ হয়ে দাঁড়ান। তিনি মন্তব্য করেন যে, ভি. আর. ভি. এখনো অপরিপক্ক; তবে, প্রত্যেক খেলার শুরুতেই দূর্দান্ত বোলিং করেন। প্রত্যেক খেলাতেই তার মান বৃদ্ধি পাচ্ছে ও ভবিষ্যতে ভারতের সেরা ফাস্ট বোলার হিসেবে আবির্ভূত হবেন।[৯]
এছাড়াও, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই টেস্টে অংশ নিয়ে আরও দুই উইকেট নেন।[১]
আঘাত তার নিত্যসঙ্গী ছিল। ২০০৮ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে পাঞ্জাবের পক্ষে কোন খেলায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি তিনি। তাসত্ত্বেও, কিংস ইলাভেন পাঞ্জাবের পক্ষে আইপিএলে কয়েকটি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। এরপর, আবারও তাকে রাজ্য দলের পক্ষে খেলতে দেখা যায়। মার্চ, ২০১২ সালে আসামের বিপক্ষে টি২০ খেলায় অংশ নেন।[১০] পাঁচটি টি২০ খেলায় অংশ নিলেও ব্যর্থতার স্বাক্ষর রাখেন। প্রায় দেড় বছর মাঠের বাইরে ছিলেন। পাঁচ বছর পর নভেম্বর, ২০১৩ সালে হরিয়ানার বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন। প্রথম ইনিংসে তিনি পাঁচ-উইকেট লাভ করেন।[১১]
মার্চ, ২০১৯ সালে সকল স্তরের ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন তিনি।[১২] আগস্ট, ২০১৯ সালে বিসিসিআই চণ্ডীগড়ে পৃথক ক্রিকেট সংস্থা গঠন করে ও ইউনিয়ন টেরিটরি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন নামকরণ করে। তাকে দলের কোচ হিসেবে মনোনীত করা হয়।[১৩]