ভিয়েত কং | |
---|---|
নেতা | অস্থায়ী বিপ্লবী সরকার
|
অপারেশনের তারিখ | ১৯৫৪-৭৬ |
গোষ্ঠী | দক্ষিণ ভিয়েতনামের জাতীয় মুক্তি ফ্রন্ট দক্ষিণ ভিয়েতনামের অস্থায়ী বিপ্লবী সরকার দক্ষিণ ভিয়েতনামের সশস্ত্র গণমুক্তি বাহিনী জাতীয় গণতান্ত্রিক ও শান্তি বাহিনীর জোট দক্ষিণ ভিয়েতনামের কেন্দ্রীয় অফিস |
সদরদপ্তর | মেমত, কম্বোডিয়া (১৯৬৬-৭২) লক নিহ, দক্ষিণ ভিয়েতনাম (১৯৭২-৭৫) |
সক্রিয়তার অঞ্চল | ইন্দোচীন দক্ষিণ ভিয়েতনাম |
মতাদর্শ | সমাজতন্ত্র মার্কসবাদ-লেনিনবাদ বামপন্থী জাতীয়তাবাদ ভিয়েতনামী জাতীয়তাবাদ হো চি মিন ভাবধারা এন্টি-রিভিসনিজম |
মিত্র | উত্তর ভিয়েতনাম সোভিয়েত ইউনিয়ন চীন |
বিপক্ষ | দক্ষিণ ভিয়েতনাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিপীড়িত গোষ্ঠীর যুক্ত মুক্তি ফ্রন্ট |
খণ্ডযুদ্ধ ও যুদ্ধ | ভিয়েতনাম যুদ্ধ |
ভিয়েত কং (ভিয়েতনামী: Việt Cộng) রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে দক্ষিণ ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায় পিপলস লিবারেশন আর্মড ফোর্সেস অব সাউথ ভিয়েতনাম (পিএলএএফ) নামের নিজস্ব সেনাবাহিনী প্রেরণ করেছিল। ১৯৫৯ থেকে ১৯৭৫ সময়কালে সংঘটিত ভিয়েতনাম যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ ভিয়েতনাম সরকারের বিরুদ্ধে পিএলএএফ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয় ও জয়লাভ করে। পশ্চিমা দেশসমূহ কর্তৃক এ সংগঠনটি ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট নামে পরিচিত ছিল।
;১৯৫৬ সালে সাইগনের সংবাদপত্রগুলোয় ভিয়েত কং ব্যবহৃত হতে থাকে।[৪] এটি ভিয়েত নাম কং-সান (ভিয়েতনামী সমাজতান্ত্রিক)[৪] বা বিকল্পভাবে ভিয়েত গিয়ান কং সানের (ভিয়েতনামে সমাজতান্ত্রিক বিশ্বাসঘাতক) সংক্ষিপ্ত রূপ।[৫] ১৯৫৭ সাল থেকে ইংরেজিতে প্রচলিত হতে থাকে।[৬] আমেরিকান যোদ্ধারা ভিয়েত কংকে ভিক্টর চার্লি বা ভি-সি হিসেবে আখ্যায়িত করে। ভিয়েত কং ও উত্তর ভিয়েতনামী - উভয়ক্ষেত্রেই সমাজতন্ত্রপন্থী বাহিনীকে সাধারণভাবে চার্লিরূপে পরিচিতি ঘটানো হয়।
দলটি গেরিলা কায়দায় ও নিয়মিত সেনাবাহিনী - উভয়ভাবেই যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। বিভিন্ন অঞ্চলে ক্যাডাররা কৃষকদেরকে সংগঠিত করে ও বিস্তৃত নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে। অনেক সৈনিকদেরকেই দক্ষিণ ভিয়েতনামে প্রেরণ করা হয়। অন্যান্যদেরকে উত্তর ভিয়েতনামের নিয়মিত সেনাবাহিনী পিপলস আর্মি অব ভিয়েতনামে (পিএভিএন) সৈনিক হিসেবে সম্পৃক্ত করা হয়। যুদ্ধকালীন সময়ে সমাজতান্ত্রিক ও যুদ্ধবিরোধী রাজনৈতিক নেতারা দক্ষিণে স্বদেশ বিরোধী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ ভিয়েতনামী সরকার তাদেরকে হ্যানয়ের অস্ত্র হিসেবে চিত্রিত করে। তা স্বত্ত্বেও ১৯৫৮ সালে সমাজতন্ত্রপন্থী বাহিনীটি একক নির্দেশে গঠিত হয়েছিল।[৭] ১৯৫৪ সালে জেনেভা চুক্তির আওতায় দক্ষিণাঞ্চলীয় ভিয়েত মিন থেকে আসা অভিবাসিত জনগোষ্ঠীর অনেকেই স্বেচ্ছায় ভিয়েত কংয়ে যোগ দেয়। গো ডিন দিয়েমের নেতৃত্বে দক্ষিণ ভিয়েতনাম জেনেভা চুক্তি স্বাক্ষর করা থেকে বিরত থাকে।
মার্চ, ১৯৫৬ সালে দক্ষিণাঞ্চলীয় সমাজতান্ত্রিক নেতা লি দুয়ান হ্যানয়ের পলিটব্যুরোতে অন্যান্য সদস্যদেরকে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির লক্ষ্যে দক্ষিণের দিকে চলো শিরোনামে পরিকল্পনা রচনার কথা জানান।[৮] তাঁর মতে পুণঃএকত্রিকরণের অর্জনের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যুদ্ধ করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।[৯] কিন্তু চীন ও সোভিয়েত ইউনিয়ন - উভয় পক্ষ থেকেই এর বিরোধিতা করা হয়। দক্ষিণে অবস্থানকারী সমাজতন্ত্রপন্থীদেরকে অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলায় মিতব্যয়ীতার কথা বলা হয়।[৮] ট্রুং চিনের নেতৃত্বে বেইজিংপন্থীদেরকে উত্তরে প্রথম ও লি দুয়ানের নেতৃত্বে দক্ষিণে প্রথম হিসেবে নেতৃত্ব বিভক্ত হয়ে পড়ে।
দক্ষিণ ভিয়েতনামে অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০ ডিসেম্বর, ১৯৬০ তারিখে ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট উত্তর ভিয়েতনামে প্রতিষ্ঠিত হয়। মার্কিন রাষ্ট্রপতি জন এফ. কেনেডি নভেম্বর, ১৯৬১ সালে দক্ষিণ ভিয়েতনামে মার্কিন সেনা বৃদ্ধির কথা জানান।[১০] ডিসেম্বর, ১৯৬১ সালে ৩৫ হেলিকপ্টারে সাইগনে ইউএসএস কোর অবতরণ করেন। ১৯৬২-এর মাঝামাঝি সময়ে বারো হাজার মার্কিন সেনা পরামর্শক অবস্থান করছিলেন।[১১] ১৯৬২ সালে বিশেষ যুদ্ধ ও কৌশলগত আত্মরক্ষা নীতির মাধ্যমে সাইগন অগ্রসর হয়। কিন্তু ১৯৬৩ সালে ভিয়েত কং তাদের সামরিক শক্তিকে ফিরে পায়।[১২] জানুয়ারি, ১৯৬৩ সালে আপ বাকে দক্ষিণ ভিয়েতনামী বাহিনীর বিপক্ষে ভিয়েত কং তাদের প্রথম সামরিক বিজয় লাভ করে।
১৯৬৮ সালে তেতে আক্রমণ চালিয়ে পিএলএএফ শতাধিক দক্ষিণ ভিয়েতনামীকে হত্যা করে।[১৩] তন্মধ্যে সাইগনে মার্কিন দূতাবাসেও তারা আঘাত হানে। এরফলে বিশ্বের গণমাধ্যমে কয়েক সপ্তাহ প্রধান আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। পরবর্তীতে উত্তর ভিয়েতনামীদের আধিপত্যবাদী আক্রমণ পরিচালিত হয়।
ভিয়েত কংয়ের শীর্ষস্থানীয় কমান্ডার ও পিআরজি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ট্রান ভন ট্রা দক্ষিণে অভিযান পরিচালনার জন্য ডেপুটি চীফ অব স্টাফ নিযুক্ত হয়েছিলেন।[১৪] যুদ্ধসম্পর্কীয় ভিয়েতনামের ইতিহাসের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয় যে, লিবারেশন আর্মি অব সাউথ ভিয়েতনাম [ভিয়েত কং] পিপলস আর্মি অব ভিয়েতনামের অংশ ছিল। উত্তর ও দক্ষিণ ভিয়েতনাম একীভূত হয়ে সমাজতান্ত্রিক ভাবধারার সরকার গঠিত হলে ১৯৭৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে সংগঠনটির বিলুপ্তি ঘটে।
|আর্কাইভের-ইউআরএল=
এর |ইউআরএল=
প্রয়োজন (সাহায্য) থেকে আর্কাইভ করা। |শিরোনাম=
অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য);