ভেসেলিন তোপালভ | |
---|---|
পূর্ণ নাম | ভেসেলিন আলেকজান্দ্রভ তোপালভ (Веселин Александров Топалов) |
দেশ | বুলগেরিয়া |
জন্ম | রুজ, বুলগেরিয়া | ১৫ মার্চ ১৯৭৫
খেতাব | গ্র্যান্ডমাস্টার (১৯৯২) |
বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন | ২০০৫-০৬ (ফিদে) |
ফিদে রেটিং | ২৭২৭ (জুলাই ২০২৪) (১৬নং, এপ্রিল ২০১৬ ফিদে বিশ্ব র্যাঙ্কিং) |
সর্বোচ্চ রেটিং | ২৮১৬ (জুলাই, ২০১৫) |
ভেসেলিন আলেকজান্দ্রভ তোপালভ (উচ্চারণ [vɛsɛˈlin toˈpɑlof]; বুলগেরীয়: Веселин Александров Топалов; জন্ম: ১৫ মার্চ, ১৯৭৫) রুজ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত বুলগেরীয় দাবার গ্র্যান্ডমাস্টার। ২০০৫ সালে ফিদে বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়নশীপ শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে ফিদে বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়ন হন তোপালভ। পরের বছর ২০০৬ সালের বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়নশীপের খেলায় ভ্লাদিমির ক্রামনিকের কাছে শিরোপা হারান তিনি। এছাড়াও ২০০৫ সালে দাবা অস্কার লাভ করেন ভেসেলিন তোপালভ।[১]
বুলগেরিয়ার রুজ এলাকায় তার জন্ম। আট বছর বয়সে তার পিতার কাছে দাবায় হাতেখড়ি ঘটে। শৈশবে তোপালভ বেশ কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হন। কিন্তু খুব দ্রুততার সাথে নিজেকে অসাধারণ প্রতিভাসম্পন্ন দাবাড়ুতে পরিণত করে তোলেন। ১২ বছর বয়স থেকে সিলভিও দানাইলভের কাছে প্রশিক্ষণ/পরামর্শকের সম্পর্ক গড়ে তোলেন যা অদ্যাবধি টিকে রয়েছে। দানাইলভ তার শিক্ষক হিসেবে আদর্শ খেলোয়াড়রূপে গড়ে তুলতে সচেষ্ট হন। ফলশ্রুতিতে নিজস্ব কর্মজীবন উৎসর্গ করেন।[২] কানাডীয় গ্র্যান্ডমাস্টার কেভিন স্প্রাগেট এ প্রসঙ্গে লিখেছেন যে, "ডানাইলভ তোপালভকে নিজের অ্যাপার্টমেন্টে নিয়ে যান ও তাকে বলেছিলেন এখন থেকে তুমি এখানে থাকবে এবং এটি তোমার নতুন গৃহ। আমি শুধুমাত্র তোমার প্রশিক্ষক নই, পাশাপাশি তোমার মা ও বাবা। আমি তোমার রাধুঁনী। আমি এমনই একজন যে তোমার কাপড় ধৌত করবে। আমি তোমার যাবতীয় খরচাদি বহন করবো ও প্রতিযোগিতার যাবতীয় খরচ পরিশোধ করব। তার বিনিময়ে তুমি কেবলমাত্র দাবার দিকেই মনোনিবেশ ঘটাবে!'"[৩]
১৯৮৯ সালে পুয়ের্তোরিকোর আগুয়াডিলায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা জয় করেন। এরপর সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত ১৯৯০ সালের বিশ্ব অনূর্ধ্ব-১৬ প্রতিযোগিতায় রৌপ্যপদক পান। ১৯৯২ সালে গ্র্যান্ডমাস্টার হন। ১৯৯৪ সালথেকে বুলগেরিয়া জাতীয় দলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। ১৯৯৪ সালে মস্কোয় অনুষ্ঠিত নিজস্ব প্রথম দাবা অলিম্পয়াডে বুলগেরিয়া দলকে নেতৃত্ব দিয়ে চতুর্থ স্থানে নিয়ে যান। তন্মধ্যে প্রথম বোর্ডে গ্যারি কাসপারভের বিপক্ষে জয় পান তিনি।[৪] পরবর্তী দশ বছরে অনেকগুলো প্রতিযোগিতার শিরোপা পান।
১৯৯৯ সালের কোরাস দাবা প্রতিযোগিতায় ধ্রুপদী বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন গ্যারি কাসপারভের কাছে পরাজিত হন। এ খেলাটি দাবার ইতিহাসে অন্যতম সেরা খেলা হিসেবে পরিগণিত হয়। কাসপারভ পরবর্তীতে বলেছিলেন যে, খেলা চলাকালীন তিনি নজর রাখছিলেন। তোপালভ আজ স্মরণীয় খেলা প্রদর্শন করেছেন। এ খেলায় দুইটি দিক রয়েছে। আপনি জানুন ও কি ঘটছে দেখুন। [৫]
১৯৭১ সালে ফিদে কর্তৃক দাবাড়ুদের জন্য প্রবর্তিত র্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় সর্বমোট ২৭ সপ্তাহ বিশ্বের ১নং স্থানে ছিলেন তিনি। অন্যান্য দাবাড়ুদের সাথে তুলনান্তে বিশেষতঃ গ্যারি কাসপারভ, আনাতোলি কারপভ, ববি ফিশার ও ম্যাগনাস কার্লসেনের পর তার অবস্থান পঞ্চম। এপ্রিল, ২০০৬ সাল থেকে জানুয়ারি, ২০০৭ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ১নং দাবাড়ু ছিলেন তিনি। ইলো রেটিংয়ের সর্বোচ্চ ২৮১৩ তোলেন যা কেবলমাত্র গ্যারি কাসপারভ অতিক্রম করেন। পরবর্তীতে ম্যাগনাস কার্লসেন, বিশ্বনাথন আনন্দ, লেভন আরোনিয়ান, ফাবিয়ানো কারুয়ানা ও হিকারু নাকামুরা এ রেটিং অতিক্রম করেন। জুলাই, ২০১৬ সাল পর্যন্ত তার সর্বোচ্চ রেটিং ছিল ২৮১৬ যা জুলাই, ২০১৫ সালে লাভ করেছিলেন। এরফলে ফিদে রেটিংয়ে সর্বকালের সেরাদের তালিকায় তার অবস্থান ষষ্ঠ স্থানে পৌঁছে।
অক্টোবর, ২০০৮ সালে পুনরায় বিশ্বের ১নং স্থানে পৌঁছেন যা আনুষ্ঠানিকভাবে জানুয়ারি, ২০১০ পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। কিন্তু কার্লসেনের কাছে স্থানচ্যুত হয়ে ২ নম্বরে চলে যান।[৬] জুলাই, ২০১৫ সাল পর্যন্ত ২/৩ নম্বরে যৌথভাবে বিশ্বনাথন আনন্দের সাথে রয়েছেন।[৬]
২০১০ সালের বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়নশীপে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বিশ্বনাথন আনন্দের প্রতিপক্ষ হন ও ৬১/২-৫১/২ ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন।
পুরস্কার | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী রুস্তম কাসিমঝানভ |
ফিদে বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়ন ২০০৫-২০০৬ |
উত্তরসূরী ভ্লাদিমির ক্রামনিক বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়ন |
স্বীকৃতি | ||
পূর্বসূরী গ্যারি কাসপারভ বিশ্বনাথন আনন্দ |
বিশ্বের ১নং ১ এপ্রিল, ২০০৬-৩১ মার্চ, ২০০৭ ১ অক্টোবর, ২০০৮-৩১ ডিসেম্বর, ২০০৯ |
উত্তরসূরী বিশ্বনাথন আনন্দ ম্যাগনাস কার্লসেন |