ভৌত বিশ্বতত্ত্ব |
---|
ধারাবাহিকের অংশ |
ভৌত বিশ্বতত্ত্ব জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানের একটি শাখা যা মহাবিশ্বের বৃহৎ পরিসর গঠন নিয়ে আলোচনা করে এবং এর সৃষ্টি বিবর্তন সংক্রান্ত মৌলিক প্রশ্নসমূহের সদুত্তর দেয়ার চেষ্টা করে থাকে। বিশ্বতত্ত্ব মূলত খ-বস্তুসমূহের গতি এবং প্রথম কারণ নিয়ে গবেষণা করে। মানব ইতিহাসের অধিকাংশ সময়েই এটি অধিবিদ্যার শাখা হিসেবে অধিত হয়ে এসেছে। কোপার্নিকীয় নীতির মাধ্যমে বিশ্বতত্ত্ব একটি বিজ্ঞান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। উক্ত নীতিতে বলা হয়েছিলো যে খ-বস্তুসমূহ পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান এবং আমাদের দৃষ্টিসীমানার বাইরে অবস্থিত সকল খ-বস্তুই সুনির্দিষ্ট ভৌত আইন মেনে চলে। নিউটনীয় বলবিদ্যাই প্রথম এই আইনের সুষ্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে সক্ষম হয়। বলবিদ্যার এই অংশটিকেই বর্তমানে খ-বলবিদ্যা বলা হয়, কারণ আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্ব আবিষ্কারের পর এখন বিষয়টি পরিষ্কার যে এই আইন কেবল বৃহৎ বস্তু তথা খ-বস্তুদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। আণবিক জগতের রয়েছে অন্য এক আইন।
বিংশ শতাব্দীতে বিশ্বতত্ত্বের জগতে প্রচুর গবেষণা হয়েছে আর এর ফলেই গড়ে উঠেছে বৃহৎ বিস্ফোরণ তত্ত্ব যা এখনকার প্রায় সকল বিজ্ঞানীই মহাবিশ্বের সৃষ্টির কারণ হিসেবে মনে করছেন। অবশ্য এখনও কিছু বিজ্ঞানী এবং গবেষক ভিন্ন মত পোষণ করেন যাদের মাধ্যমে আরো কিছু নীতি জন্মলাভ করেছে যা অস্থায়ি বিশ্বতত্ত্বের অন্তর্গত। সাধারণভাবে বলতে গেলে ভৌত বিশ্বতত্ত্ব মহাবিশ্বের অতিবৃহৎ বস্তুসমূহ নিয়ে আলোচনা করে, যেমন: ছায়াপথ, ছায়াপথ শ্রেণী ও স্তবক, ছায়াপথ মহাস্তবক ইত্যাদি। বিশ্বতত্ত্বের নীতিসমূহ কণা পদার্থবিজ্ঞানের জগতে প্রায় অচল।
১৯১৫ সালে বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন তার সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব উপস্থাপনের পর থেকেই মূলত ভৌত বিশ্বতত্ত্ব একটি পর্যবেক্ষণযোগ্য এবং সুনির্দিষ্ট নীতিমালাবিশিষ্ট বিজ্ঞান হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। সেই সময় পদার্থবিদরা সম্পূর্ণ স্থির একটি মহাবিশ্বের ধারণা পোষণ করতেন যার কোন শুরু বা শেষ নেই। আইনস্টাইন তার তত্ত্ব একটি বিশ্বতাত্ত্বিক ধ্রুবক যোগ করে দিয়েছিলেন যেন তা স্থির মহাবিশ্ব তত্ত্বের সাথে মিলে যায়। কিন্তু সেই তথাকথিত "আইনস্টাইন মহাবিশ্ব" স্বভাবিক কারণেই ছিল অস্থিতিশীল। সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্ব মানলে মহাবিশ্বকে হয় প্রসারিত হতে হবো নয়তো সংকুচিত হতে হবে। সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বের এই সমাধানটি প্রথম দেন বিজ্ঞানী আলেকজান্ডার ফ্রিডম্যান যার সমীকরণ ফ্রিডম্যান-Lemaître-রবার্টসন-ওয়াকার মহাবিশ্বের ব্যাখ্যা প্রদান করে এবং এই মহাবিশ্ব প্রসারিত বা সংকুচিত হতে পারে।
১৯১০-এর দশকে ভেস্তো মেলভিন সিলফার (Vesto Melvin Slipher) এবং পরবর্তীতে কার্ল ভিলহেল্ম ভির্ট্জ (Carl Wilhelm Wirtz) বলেন যে কুণ্ডলাকার নীহারিকার লোহিত অপসারণ প্রকৃতপক্ষে ডপলার অপসারণের একটি রুপ। এই ব্যাখ্যার ফলে এটি পরিষ্কার হয়ে যায় যে সেই নীহারিকাগুলো পৃথিবী থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। পৃথিবী থেকে কোন জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক বস্তুর দূরত্ব বের করা সত্যিই খুব দুঃসাধ্য কাজ এবং কোনভাবে তাদের কৌণিক আকার বের করা সম্ভব হলেও তাদের প্রকৃত আকার এবং উজ্জ্বলতা বের করা অসম্ভব।
|coauthors=
উপেক্ষা করা হয়েছে (|author=
ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য) This is the classic reference for cosmologists.|coauthors=
উপেক্ষা করা হয়েছে (|author=
ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য) An introduction to cosmology with a thorough discussion of inflation.