মনসুরা, মিশর المنصورة | |
---|---|
ডাকনাম: নীলের বধূ | |
Location in Egypt | |
স্থানাঙ্ক: ৩১°২′২৫″ উত্তর ৩১°২২′৫৮″ পূর্ব / ৩১.০৪০২৮° উত্তর ৩১.৩৮২৭৮° পূর্ব | |
দেশ | মিশর |
শাসনব্যবস্থা | দাকাহলিয়া |
স্থাপিত | ১২১৯ |
সরকার | |
• গভর্নর | আহমেদ এল শারাভী |
আয়তন | |
• মোট | ৩৭১ বর্গকিমি (১৪৩ বর্গমাইল) |
উচ্চতা | ১২ মিটার (৩৯ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১২) | |
• মোট | ৯,৬০,৪২৩ |
• জনঘনত্ব | ২,৬০০/বর্গকিমি (৬,৭০০/বর্গমাইল) |
সময় অঞ্চল | পূর্ব ইউরোপীয় সময় (ইউটিসি+২) |
এলাকা কোড | +(20) 50 |
ওয়েবসাইট | Official website |
মনসুরা[১] (Al Manṣūra, মিশরীয় আরবি: el.mɑnˈsˤuːɾɑ, : মিশরীয় আরবি: el.mænˈsˤuːɾe) হচ্ছে মিশরের একটি শহর। যার জনসংখ্য প্রায় ৯৬০,৪২৩।[২] এটি দাকাহলিয়া গভর্নরেটের রাজধানী।
আরবী ভাষায় মনসুরা মানে "বিজয়ী"। সপ্তম ক্রুসেডের সময় ফ্রান্সের নবম লুইসের বিরুদ্ধে এল মানসুরা যুদ্ধে মিশরীয়দের বিজয়ের নামানুসারে এ শহরের নামকরণ করা হয়।
১২১৯ সালে নীল নদের একটি ফ্যাটমেটিক শাখায় আইয়ুবী রাজবংশের আল-কামিল কর্তৃক অনেক পুরনো গ্রামের উপর (যেমন- আল-বিস্তমির (আরবি: আল-বাদামাস) এবং কাফর আল-বাদামাস (আরবি: কামুতা আল-বাদাম)) মনসুরা প্রতিষ্ঠিত হয়।[৩] সপ্তম ক্রুসেডের সময় মিশরীয়রা ক্রুসেডারদের পরাজিত করার পর এর নাম করণ করা হয় মনসুরা (ওরফে- বিজয়ী)।
সপ্তম ক্রুসেডে, কেপেতিয়ানরা পরাজিত হয় এবং তাদেরকে নিষ্ক্রিয় রাখা হয়; তাদের পনের থেকে ত্রিশ হাজার লোক যুদ্ধক্ষেত্রে মারা পরে। ফ্রান্সের নবম লুই মনসুরার প্রধান যুদ্ধে গ্রেফতার হন এবং সুলতানের সচিব ইব্রাহিম ইবনে লোকমানের বাড়িতে বন্দী হন। রাজার ভাইকে একই বাড়িতে বন্দী করা হয়। সুলতান তাদের জীবিকা রসদ সরবরাহ করেন। ইব্রাহিম ইবনে লোকমানের বাড়ি এখন মনসুরার একমাত্র জাদুঘর। এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। এখানে রয়েছে ফরাসি রাজকীয়দের ব্যবহৃত জিনিসপত্র, যার মধ্যে রয়েছে ত্রয়োদশ শতাব্দীর তার ব্যক্তিগত শৌচাগার।[৪]
১৯৭৩ সালের ১৪ অক্টোবর ইয়োম কিপ্পুর যুদ্ধের সময় মনসুরায় বিমান যুদ্ধ সংঘটিত হয়। মিশরীয় বিমান ঘাঁটিতে হামলাকারী ইজরায়েলি বিমান বাহিনীর যোদ্ধারা মিশরীয় বিমান বাহিনী দ্বারা আটক হয়।[৫][৬] সেদিন ইজরায়েলের ১৬০ জন জেট ফাইটার মনসুরার উপর ৫৩ মিনিট ধরে যুদ্ধ করে। ইজরায়েলি যুদ্ধবিমানের সংখ্যাগত এবং গুণগত শ্রেষ্ঠত্ব সত্ত্বেও ১৭টি ইজরায়েলি বিমান ধ্বংস হয়ে যায়। বাকিরা পিছু হটে যায়।[৭][৮] মিশর ছয়টি বিমান হারানোর ঘোষণা দেয়, যার মধ্যে মাত্র তিনটি ইজরায়েলি আক্রমণে ধ্বংস হয়। মিশরীয় সরকার পরবর্তীতে মনসুরা বিমান যুদ্ধের স্মরণে ২ নভেম্বর থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত দেশটির "বিমান বাহিনী দিবস " প্রবর্তন করে। [6]
মনসুরা নীল নদের দামিয়েতা শাখার বদ্বীপ অঞ্চলে পূর্ব তীরে অবস্থিত। মানসুরা কায়রো থেকে প্রায় ১২৯ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। শহরের চারদিকে, নীল নদের বিপরীত তীরে তালখা শহর অবস্থিত।
কোপেন-গেইগার জলবায়ু শ্রেণীকরণ পদ্ধতি এই শহরের জলবায়ুকে উষ্ণ মরু হিসেবে শ্রেণীকরণ করেছে (BWh)।
Mansoura-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য | |||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মাস | জানু | ফেব্রু | মার্চ | এপ্রিল | মে | জুন | জুলাই | আগস্ট | সেপ্টে | অক্টো | নভে | ডিসে | বছর |
সর্বোচ্চ গড় °সে (°ফা) | ১৯.০ (৬৬.২) |
১৯.৮ (৬৭.৬) |
২২.৪ (৭২.৩) |
২৬.৩ (৭৯.৩) |
৩২.১ (৮৯.৮) |
৩৩.০ (৯১.৪) |
৩২.৬ (৯০.৭) |
৩৩.৩ (৯১.৯) |
৩২.০ (৮৯.৬) |
২৮.৬ (৮৩.৫) |
২৫.০ (৭৭.০) |
২০.৭ (৬৯.৩) |
২৭.১ (৮০.৭) |
দৈনিক গড় °সে (°ফা) | ১২.৯ (৫৫.২) |
১৩.৫ (৫৬.৩) |
১৫.৮ (৬০.৪) |
১৯.০ (৬৬.২) |
২৩.৬ (৭৪.৫) |
২৫.৭ (৭৮.৩) |
২৬.৬ (৭৯.৯) |
২৬.৮ (৮০.২) |
২৫.৩ (৭৭.৫) |
২২.৮ (৭৩.০) |
১৯.৪ (৬৬.৯) |
১৪.৯ (৫৮.৮) |
২০.৫ (৬৮.৯) |
সর্বনিম্ন গড় °সে (°ফা) | ৬.৮ (৪৪.২) |
৭.৩ (৪৫.১) |
৯.২ (৪৮.৬) |
১১.৮ (৫৩.২) |
১৫.২ (৫৯.৪) |
১৮.৪ (৬৫.১) |
২০.৬ (৬৯.১) |
২০.৪ (৬৮.৭) |
১৮.৭ (৬৫.৭) |
১৭.০ (৬২.৬) |
১৩.৯ (৫৭.০) |
৯.১ (৪৮.৪) |
১৪.০ (৫৭.৩) |
অধঃক্ষেপণের গড় মিমি (ইঞ্চি) | ১৩ (০.৫) |
৯ (০.৪) |
৬ (০.২) |
৩ (০.১) |
৩ (০.১) |
০ (০) |
০ (০) |
০ (০) |
০ (০) |
৪ (০.২) |
৭ (০.৩) |
১১ (০.৪) |
৫৬ (২.২) |
উৎস: Climate-Data.org[৯] |
প্রাথমিকভাবে কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি শাখা হিসেবে মনসুরা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।[১০] অধ্যাপক মোহাম্মদ ঘোনেমেম প্রতিষ্ঠিত মনসুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজি ও নেফ্রোলজি সেন্টারকে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার সেরা কিডনি কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
মনসুরায় একটি ক্রীড়া স্টেডিয়াম (মনসুরা স্টেডিয়াম) আছে যেটি মনসুরা ফুটবল দলের ঘরোয়া মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।[১১]
মানসুরার জনগোষ্ঠী দ্বারা কথিত মিশরীয় আরবি উপভাষাটি হচ্ছে একটি উত্তর মিশরীয় আরবি উপভাষা। শহরের পার্শ্ববর্তী গ্রামে এই উপভাষার উল্লেখযোগ্য প্রভাব রয়েছে। যারা বছরের পর বছর ধরে শহরের জনগোষ্ঠীর উপভাষায় অবদান রেখেছে। উচ্চারণের কিছু দিক থেকে এর সাথে আলেকজান্দ্রিয়ান মিশরীয় আরবির কিছু সাদৃশ্য আছে।
মনসুরা জাতীয় জাদুঘর হচ্ছে দার ইবনে লোকমান, যে বাড়িতে সপ্তম ক্রুসেডের সময় ১২৫০ সালে নবম লুইকে কারারুদ্ধ করা হয়। জাদুঘরে প্রদর্শিত হয়েছে ক্রুসেডারদের মেইল এবং তলোয়ারের স্যুট, সেই সাথে মানচিত্রের সংগ্রহ। বিশাল পেইন্টিং -এ মনসুরার যুদ্ধকে চিত্রিত করা হয়েছে।