বিস্কুটসহ মশলা চা | |
ধরন | স্বাদযুক্ত চা |
---|---|
প্রধান উপকরণ | কালো চা, দুধ, মশলা, চিনি |
মশলা চা[ক] দক্ষিণ এশিয়ার এক জনপ্রিয় পানীয়, যা প্রাক-আধুনিক ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে উদ্ভূত। মশলা চা প্রস্তুত করার জন্য দুধ ও পানিতে (বা জলে) কালো চা (সাধারণত সিটিসি চা) প্রস্তুত করে তাতে চিনি, সুগন্ধী ভেষজ ও মশলা যোগ করা হয়।[২][৩]
ভারত থেকে উদ্ভূত[১][৪] এই পানীয় বিশ্বজুড়ে খ্যাতি অর্জন করেছে এবং এটি অনেক কফিহাউস ও চাঘরের বৈশিষ্ট্য।
ব্রিটিশরা জনপ্রিয় পানীয় হিসাবে ভারতে চায়ের প্রচলন শুরু করেছিল। প্রাচীনকাল থেকে আসাম অঞ্চলে বন্য চাগাছ ফলত, কিন্তু ভারতীয়রা ঐতিহাসিক কারণে চাকে একধরনের ভেষজ ওষুধ হিসাবে দেখত, বিনোদনমূলক পানীয় হিসাবে নয়।[৫]
১৮৩০-এর দশকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি চায়ে চীনের একচ্ছত্র আধিপত্য নিয়ে চিন্তিত ছিল, যা তাদের বাণিজ্যের এক বড় অংশ ছিল এবং তৎকালীন ব্রিটেনে চা গ্রহণের হার প্রতি বছর মাথাপিছু ১ পাউন্ড (০.৪৫ কিলোগ্রাম)। তখন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকেরা অসমীয়া চাগাছের অস্তিত্বের কথা জানতে পেরেছিল এবং সেখানে স্থানীয়ভাবে চায়ের চাষ শুরু করেছিল। ১৮৭০ সালে ব্রিটেনে গ্রহণ করা চায়ের ৯০ শতাংশ চীন থেকে আসত, কিন্তু ১৯০০ সালে এটি ১০ শতাংশে নেমে এসেছিল এবং এর জায়গায় ভারত (৫০%) ও সিংহল (৩৩%) থেকে ব্রিটেনের বেশিরভাগ চা আসত।[৬]
কিন্তু ভারতের মধ্যে কালো চা কমই গ্রহণ করা হতো। তবে বিংশ শতাব্দীর শুরুতে ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে এক প্রচারমূলক অভিযান চালানো হয়েছিল, যা কারখানা, খনি ও বস্ত্র মিলের শ্রমিকদের জন্য চা বিরতির ব্যবস্থা করতে উৎসাহিত করেছিল। ক্রমবর্ধমান রেল ব্যবস্থাজুড়ে বিভিন্ন চাওয়ালার জন্য ভারতে চা আরও জনপ্রিয় হয়েছিল।[৭]
ভারতীয় উপমহাদেশের বেশিরভাগ মশলা চা রেসিপির ভিত্তি হিসাবে কালো চা ব্যবহার করা হয়, যার মধ্যে আসামের কালো চা সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত। তবে বিভিন্নরকমের চায়ের মিশ্রণকেও ভিত্তি হিসাবে ব্যবহার করা যায়।[৮] ভারতীয় মশলা চা রেসিপির ক্ষেত্রে সাধারণত আসাম, দার্জিলিং ও নীলগিরি চা ব্যবহার করা হয়।[৯]