এই নিবন্ধটির রচনা সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে। কারণ ব্যাকরণ, রচনাশৈলী, বানান বা বর্ণনাভঙ্গিগত সমস্যা রয়েছে। |
মহাকাশ অনুসন্ধান হলো জ্যোতির্বিদ্যা ও এ সম্পর্কিত প্রযুক্তি ব্যবহার করে মহাকাশের গবেষণা। মহাকাশ অনুসন্ধান প্রধানত জ্যোতির্বিদরা টেলিস্কোপের মাধ্যমে করে থাকে, তবে শারীরিকভাবে অনুসন্ধানটি মানব বিহীন রোবটিক মহাকাশযান ও মানব মহাকাশ যাত্রার মাধ্যমে করা হয়। মহাকাশ অনুসন্ধান ও এর শাস্ত্রীয় রূপ জ্যোতির্বিদ্যা উভয়ই মহাকাশ বিজ্ঞানের প্রধান উৎস।
যদিও নির্ভরযোগ্য লিপিবদ্ধ ইতিহাসের আগে থেকেই মহাকাশে বস্তুর পর্যবেক্ষণ বা জ্যোতির্বিজ্ঞান বিদ্যমান, ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝে বড় ও আপেক্ষিকভাবে কার্যকরী রকেটের উন্নয়নের মাধ্যমে মহাকাশের বাস্তবিকভাবে অনুসন্ধান সম্ভব হয়েছে। পৃথিবীর সবচেয়ে প্রথম বৃহৎ-মাপের গবেষণামূলক রকেট প্রোগ্রাম ছিল ওপেল-আরএকে(Opel-RAK)। ১৯২০ দশকের শেষের দিকে এটি ফ্রিচ ভোন ওপেল এবং ম্যাক্স ভ্যালারের তত্ত্বাবধানে ছিল। এর থেকেই পরবর্তীতে সর্বপ্রথম মানববাহী রকেট গাড়ি ও রকেট প্লেন তৈরি হয়েছিল। এটিই পরে নাৎসি কালীন ভি২ প্রোগ্রাম এবং ১৯৫০ সালের পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েতের কার্যক্রমের পথ তৈরি করে দিয়েছিল। ওপেল-আরএকে প্রোগ্রামটির ভূমি ও বাতাস বাহী বাহন জনগণকে অসাধারণভাবে প্রদর্শনের কারণে বৃহৎ জনসমাগম আকর্ষিত হয়েছিল এবং এর পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী মানুষজন উৎসাহী হয়েছিল। এটিকে "রকেট রম্বেল"(rocket rumble)ও বলা হতো এবং এটি পরবর্তীতে ওয়ার্নার ভন ব্রাউনের মতো মহাকাশ উড্ডয়নে পথপ্রদর্শকদের উপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলেছিল। মহাকাশ অনুসন্ধানের যৌক্তিকতার মধ্যে সাধারণ কয়েকটি হলো বৈজ্ঞানিক গবেষণার উন্নয়ন, জাতীয় সম্মান, বিভিন্ন দেশের একতা, মানবজাতির ভবিষ্যত অস্তিত্ব নিশ্চিত করা এবং অন্য দেশের বিরুদ্ধে মিলিটারি ও কৌশলগত প্রক্রিয়ায় তৈরি করা।
রকেটের পূর্বে সর্বোচ্চ পরিচিতির অভিমুখে ছিল ১৯৪০ দশকের পারিস বন্দুকের গুলি, যেটা এক প্রকার জার্মান দূরগামী সিয়েজ ইঞ্জিন এবং এটি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় অন্তত ৪০ কিমি. উচ্চতায়ে পৌঁছেছিল।[১] জার্মান বিজ্ঞানিরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভি-২ রকেট পরীক্ষার মাধমে কৃত্রিম বস্তুকে মহকাশে পাঠানোর জন্য প্দক্ষেপ প্রথমবারের মতো গ্রহণ করে এবং পরবর্তীতে ১৯৪২ সালের ৩ অক্টোবর এ-৪ কে মহাকাশে পাঠাইয়। এর মাধ্যমে এ-৪ মহাকাশে মানুষের তৈরি প্রথম বস্তুতে পরিণত হয়। যুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্র জার্মান বিজ্ঞানীদের এবং তাদের আধৃত রকেট সামরিক এবং বেসামরিক প্রোগ্রামে গবেষণায় ব্যবহার করেন। যুক্তরাষ্ট্র ১৯৪৬ সালে ভি-২ রকেট দ্বারা মহাজাগতিক বিকিরণ পরীক্ষার মাধ্যমে মহাকাশে প্রথম বৈজ্ঞানিক গবেষণা করে।[২] একই বছর পরবর্তীতে আমেরিকানরা ভি-২ রকেট ব্যবহার করে মহাকাশ থেকে প্রথমবার পৃথিবীর ছবি তোলা হয়। ১৯৪৭ সালে মহাকাশে কিছু মাছির মাধ্যমে প্রথম প্রাণী পরীক্ষা করা হয়।[৩][৪] ১৯৪৭ সাল থেকে শুরু করে সোভিয়েত ও জার্মান দলের সাহায্যে উপ-কাক্ষিক ভি-২ রকেট ও তার নিজেস বৈকল্পিক আর-১ রকেট পাঠায় যেটার কিছু ফ্লাইটে বিকিরণ ও প্রাণী গবেষণা অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ সকল উপ-কাক্ষিক পরীক্ষা-নিরিক্ষা মহাকাশে খুব অল্প সময় অনুমদন করায় এদের কার্যকারিতা সীমাবদ্ধ হয়ে যায়।
প্রথম সফল কাক্ষিক উৎক্ষেপণ ১৯৫৭ সালের ৪ অক্টোবরে সোভিয়েত ইউনিয়নের স্পুৎনিক ১(“উপগ্রহ-১”) কৃত্রিম উপগ্রহ ছিল। উপগ্রহটির ওজন প্রায় ৪৩ কেজি(১৮৩ পাউন্ড)এবং প্রায় ২৫০ কিমি.(১৬০ মাইল) উপর থেকে পৃথিবীকে আবর্তন করেছে বলে বিশ্বাস করা হয়। এটির দুইটি রেডিও প্রেরক (২০-৪০Mhz) ছিল যা ‘বীপ’ শব্দ নির্গত করত এবং পৃথিবীর চারপাশের রেডিও দ্বারা সেটা শুনা যেত। রেডিও সংকেত বিশ্লেষণ করে আযোনোস্ফিয়ার ইলেক্ট্রনের ঘনত্বের তথ্য সংগ্রহে ব্যবহার করা হতো। তাপমাত্রা ও চাপের তথ্য রেডিও বীপগুলর মধ্যে সংরক্ষিত ছিল। ফলাফল ইঙ্গিত করে, স্পুৎনিক ১ কোনো গ্রহাণু দ্বারা নষ্ট হয়নি। স্পুৎনিক ১ আর-৭ রকেট দ্বারা লঞ্চ করা হয়েছিল। ১৯৫৭ সালের ৩ জানুয়ারীতে পুনঃপ্রবেশের সময় এটি পুড়ে যায় । দ্বিতীয়টি স্পুৎনিক ২ ছিল। ইউএসএসআর ১৯৫৭ সালের ৩ নভেম্বরে পাঠায় এবং এটি লাইকা নামক কুকুর বহন করে যেটি কক্ষপথের সর্বপ্রথম প্রাণী ছিল।
এই সাফল্য আমেরিকান মহাকাশ কর্মসূচিতে উত্তেজনার সৃষ্টি করে। ফলে দুই মাস পরে ভ্যানগার্ড স্যাটেলাইট প্রেরণের ব্যর্থ চেষ্টা করা হয়। ১৯৫৮ সালের ৩১ জানুয়ারি জুনো রকেটের উপর এক্সপ্লোরার ১ কক্ষপথে সফলভাবে পাঠানো হয়।
প্রথম সফল মানব মহাকাশযাত্রা হয় ১৯৬১ সালের ১২ই এপ্রিলে। ভস্টক ১ (পূর্ব ১) ২৭ বছর বয়স্ক রাশিয়ান মহাকাশচারী ইউরি গ্যাগারিনকে মহাকাশে নিয়ে যায়। এই মহাকাশযানটি প্রায় ১ ঘণ্টা এবং ৪৮ মিনিট ধরে পৃথিবীর চারদিকে একবার আবর্তন করে। ভস্টক ১ এর এক মাসের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রথমবার অ্যালান শেপার্ডকে মারকিউরি-রেডস্টোনের উপকাক্ষিক যাত্রায় মহাকাশে পাঠায়। ১৯৬২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারিতে জন গ্লেন মারকিউরি-অ্যাটলাস ৬ এ পৃথিবীকে আবর্তনের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কাক্ষিক যাত্রা অর্জন করে।
ভ্যালেন্তিনা তেরেসকোভা, প্রথম নারী হিসেবে ১৯৬৩ সালের ১৬ই জুনে ভস্টক ৬-এ করে পৃথিবীকে ৪৮ বার আবর্তন করেন।
ভস্টক ১ পাঠানোর ৪২ বছর পরে ২০০৩ সালের ১৫ই অক্টোবরে ইয়াং লিওয়েই এর শনযউ ৫(মহাকাশের নৌকা ৫) মহাকাশযানের যাত্রার মাধ্যমে চীন প্রথমবার মহাকাশে মানুষ পাঠায়।
১৯৫৭ সালের লুনা ২ হল প্রথম কৃত্রিম বস্তু যা অন্য নভঃস্থিত গঠনে পাঠানো হয়।[৫] অন্য নভঃস্থিত গঠনের উপর প্রথম স্বয়ংক্রিয় অবতরন ঘটে ১৯৬৬ সালে লুনা ৯ এর মাধ্যমে[৬] দ্বারা সঞ্চালিত হয়। লুনা ১০ চাঁদের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ।[৭]
১৯৬৯ সালের ২০ই জুলাই মাসে অ্যাপোলো ১১ দ্বারা অন্য নভঃস্থিত গঠনে প্রথমবার মনুষ্যবাহী অবতরন ঘটে।
প্রথম সফল আন্তঃগ্র্রহীয় মিশন ছিল মারিনার ২ এর শুক্র গ্রহের কাছে যাওয়া (প্রায় ৩৪,০০০ কিমি.)। অন্য গ্রহগুলোর মধ্যে মঙ্গলে ১৯৬৫ সালে মারিনার ৪ দ্বারা প্রথমবার উড়া হয়েছে, ১৯৭৩ সালে বৃহস্পতি গ্রহে মারিনের পায়োনীয়ার ১০ দ্বারা, ১৯৭৪ সালে বুধগ্রহে মারিনার ১০ দ্বারা, ১৯৭৯ সালে শনিগ্রহে পায়োনীয়ার ১১ দ্বারা, ১৯৮৬ সালে ইউরেনাসের জন্য ভয়েজার ২ দ্বারা, ১৯৮৯ সালে নেপচুনে ভয়েজার ২ দ্বারা। ২০১৫ সালে বামন গ্রহ সিরিস এবং প্লুটো যথাক্রমে ডন এবং নিউ হরাইজন্স অতিক্রম করে।
প্রথম আন্তঃগ্র্রহীয় মিশন (খুব কাছাকাছি গিয়ে অন্য গ্রহে তথ্য প্রেরন করে এবং যার মধ্যে ১৯৭০ সালের (ভেনেরা ৭ ছিল) ২৩ মিনিটের জন্য পৃথিবীকে তথ্য ফেরত দেয়। ১৯৭৫ সালে ভেনেরা ৯ প্রথমবার অন্য গ্রহের পৃষ্ঠ থেকে ছবি পাঠায়। ১৯৭১ সালে মারস ৩ মিশন সবপ্রথম ভালভাবে অবতরণ করার মাধ্যমে ২০ সেকেন্ডের জন্য তথ্য দেয়। পরবর্তীতে এই ব্যাপ্তিকাল বৃদ্ধি পাওয়ার দক্ষতা অর্জন করে যার মধ্যে ভাইকিং ১ মঙ্গলের পৃষ্ঠে ১৯৭৫-১৯৮২ সাল পর্যন্ত ৬ বছরের বেশি গবেষণা করে এবং ভেনেরা-১৩ দ্বারা ১৯৮২ সালে বুধের উপরিভাগ থেকে যোগাযোগ স্থাপন করে যা সোভিয়েতের সবচেয়ে বড় পৃষ্ঠের মিশন ছিল।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাইরে যাওয়ার সপ্ন পিটার ফ্রান্সিস গেরেসি [৮][৯][১০] এবং আইচ.জি ওয়েলসের [১১] কাহিনি দ্বারা চালিত হয়েছিল এবং এই কল্পনা বাস্তবে পরিণত করার জন্য রকেটের প্রযুক্তিকে উন্নত করা হয়েছে। জার্মান ভি ২ রকেট ,ধাক্কা, এবং দৈহিক অকৃতকার্যতার সমস্যা অতিক্রম করে প্রথমবার মহাশূন্যে ভ্রমণ করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিনগুলোতে উভয় দেশই ডিজাইনারদের পাশাপাশি এই প্রযুক্তিকে অর্জন করে। প্রাথমিকভাবে প্রযুক্তির উন্নয়নের উদ্দেশ্য ছিল আন্তঃমহাদেশীয় বালিস্টিক মিসাইলের জন্য অস্ত্র প্রতিযোগিতায় দ্রুত পারমাণবিক অস্ত্র পাঠানোর জন্য দূরগামী বাহক হিসেবে ব্যবহার করা, কিন্তু যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৬১ সালে প্রথমবার মানুষকে মহাকাশে পাঠায় তখন যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে মহাকাশ প্রতিযোগিতায় সোভিয়েতদের বিরুদ্ধে থাকার ঘোষণা দেয়।
কনস্টানটি্ন তসিওল্কভস্ক্য, রবার্ট গডার্ড, হারমান অবেরথ, এবং রেইনহোল্ড টাইলিং বিংশ শতাব্দির প্রথম বছরগুলোতে রকেটবিদ্যার মূলসূত্র আবিষ্কার করেন।
ওয়েরনহের ভন ব্রাউন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির ভি-২ রকেট প্রোজেক্টের প্রধান রকেট প্রকৌশলী ছিলেন। যুদ্ধের শেষ দিনগুলোতে তিনি জার্মান রকেট কর্মসূচির একদল কর্মীকে আমেরিকান লাইনসে নিয়ে আসেন, তারা সেখানে আত্মসমর্পণ করে এবং তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের রকেটের উন্নতির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসা হয়('অপারেশন পেপারক্লিপ')। তিনি আমেরিকার নাগরিকত্ব লাভ করেন এবং আমেরিকার প্রথম উপগ্রহ এক্সপ্লোলার ১ কে মহাকাশে পাঠানোর জন্য দলকে উন্নত করেন। ভন ব্রাউন পরবর্তীতে দলকে নাসার মার্শাল সেন্টারে পরিচালিত করেন যেটি সাতুরন ভি রকেট তৈরি করেছিল। মহাকাশের প্রতিযোগিতা প্রায়ই সেগেই করলভ দ্বারা পরিচালিত হতো, যার উত্তরাধিকারী হিসেবে আর৭ ও সয়ুয অন্তর্ভুক্ত- যেটি এখনও কাজে নিয়োজিত আছে। করলভ প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ও প্রথম পুরুষকে(ও প্রথম নারীকে) অক্ষে পাঠানো এবং প্রথম মহাকাশ পদচরণের পিছনে শ্রেষ্ঠ চিন্তাশীল ব্যক্ত ছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তার পরিচয় রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে গোপন ছিল। এমনকি তার মাও জানতেন না যে তিনি সোভিয়েত মহাকাশ কর্মসূচি তৈরির জন্য দায়ী।
সেগেই করলভের পাশাপাশি কেরিম কেরিমভ সোভিয়েত মহাকাশ কর্মসূচির প্রতিষ্ঠাদের এবং প্রথম মানুষ মহাকাশযাত্রায়ে(ভস্টক ১) প্রধান স্থপতিদের একজন ছিলেন। ১৯৬৬ সালে করল্যভের মৃত্যুর পর তিনি সোভিয়েত মহাকাশ কর্মসূচির প্রধান বিজ্ঞানী হন এবং ১৯৭১ থেকে ১৯৯১ সালের প্রথম স্পেস স্টেশনগুলোর উৎক্ষেপণের জন্য দায়ী ছিলেন, যার মধ্যে সাল্যুত ও মির সিরিজ এবং ১৯৬৭ সালে তাদের অগ্রদূত কসমস ১৮৬ ও কসমস ১৮৮ অন্তর্ভুক্ত ছিল।[১২][১৩]
যদিও সূর্যকে কখনই মোটেই বাস্তবভাবে গবেষণা করা যাবে না, তবুও সূর্যের অধ্যয়ন একটি প্রধান মহাকাশ অনুসন্ধানের একটি প্রধান আকর্ষণ। বিশেষভাবে বায়ুমণ্ডলের উপরে থাকায় পৃথিবীর চৌম্বকীয় ক্ষেত্র সৌর বায়ু এবং ইনফ্রারেড এবং অতিবেগুনী বিকিরণকে প্রবেশ করতে দেয় যা পৃথিবীর পৃষ্ঠে পৌছাতে পারে না। সূর্য অধিকাংশ মহাকাশের আবহাওয়া তৈরি করে যেটা শক্তি উৎপাদন এবং স্থানান্তর ব্যবস্থাকে আক্রান্ত করতে পারে এবং কৃত্রিম উপগ্রহ এবং স্পেস প্রবকে হস্তক্ষেপ, এমনকি ক্ষতিও করতে পারে। অনেক মহাকাশযান সূর্যকে নিরিক্ষনণর জন্য উৎক্ষেপণ করা হয়েছে তবুও অন্য মহাকাশযানগুলোর সূর্য নিরীক্ষণ দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল। [[।
বুধগ্রহ সবচেয়ে কম বিশ্লেষণ করা শিলাময় গ্রহ। ২০১৩ সালের হিসেবমতে, কেবলমাত্র মেরিনের ১০ এবং মেসেঞ্জার মিশনেই বুধগ্রহকে নিকট থেকে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। ১৯৭৫ মারিনের ১০(মুন্সেল, ২০০৬বি) দ্বারা পর্যবেক্ষণকে আরও তদন্ত করার জন্য মেসেঞ্জারকে বুধের কক্ষপথে প্রবেশ করে।
২০২০ সালে পৌছানো নির্ধারিত বেপিকলম্ব নামক বুধগ্রহের তৃতীয় মিশনে দুটি প্রব আছে। বেপিকম্ব জাপান এবং ইএসএ-এর একটি যৌথ মিশন। মেরিনের ১০ মিশন দ্বারা আবিষ্কৃত রহস্য বুঝতে বিজ্ঞানিদের সাহায্য করতে বেপিকম্ব এবং মেসেঞ্জার একত্রে পরিপূরক তথ্য সংগ্রহের জন্য যাবে। সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহের যাওয়ার জন্য উড্ডয়ন সম্পন্ন করতে যে পরিমাণ শক্তি ব্যয়ের প্রয়োজন তাকে মহাকাশযানের মোট বেগ এবং ডেলটা ভি দ্বারা ব্যাখ্যা করা হয়। বুধগ্রহ ও এটির নৈকট্য সূর্যে যেতে তুলনামুলুকভাবে উচ্চ ডেলটা ভি প্রয়োজন, ফলে এটি বিশ্লেষণ করা কঠিন বরং এর চারদিকের আবর্তন অস্থির থাকে।
শুক্রগ্রহ আন্তঃগ্রহীয় মিশন ও অবতরনীয় মিশনের প্রথম লক্ষ্য ছিল এবং সৌরজগতের গ্রহগুলোর মধ্যে পৃষ্ঠে সবচেয়ে প্রতিকূল অবস্থা থাকার সত্তেও সৌরজগতের অন্য গ্রহগুলোর তুলনায় বেশি ল্যান্ডার(প্রায় সবই সোভিয়েত ইউনিয়ন দ্বারা) পাঠানো হয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর মারিনার ২ মহাকাশযান ১৯৬২ সালে প্রথমবার সফলভাবে শুক্রগ্রহের পাশ দিয়ে যায়। অনেক উড্ডয়ন প্রতিষ্ঠান অনেক মিশনে মারিনার ২ মিশনকে অনুকরণ করে প্রায়ই শুক্রের পাশ দিয়ে মহাকর্ষীয় সহযোগিতার জন্য প্রায়ই শুক্রের পাশ দিয়ে অন্যান্য নভস্থিত বস্তুতে যায়। ১৯৬৭ সালের ভেনেরা ৪ প্রথমবার শুক্রগ্রহে প্রবেশ করে এবং সরাসরি বায়ুমণ্ডল পরীক্ষণ করে। ১৯৭০ সালে ভেনেরা ৭ প্রথমবার সফলভাবে শুক্রগ্রহের পৃষ্ঠে অবতরণ করে এবং ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত এটি ৮টি অতিরিক্ত সোভিয়েত ল্যান্ডার দ্বারা অনুসৃত হয়েছে যেটি ছবি ও প্রিস্থের অন্যান্য তথ্য প্রদান করে। ১৯৭৫ সাল থেকে শুরু করে ভেনেরা ৯ শুক্রগ্রহে পাঠানো ১০টির মধ্যে একটি সফল মিশন যেটায় পরবর্তী মিশনে রাডার ব্যবহার করে মাঞ্ছিত্র তৈরি করা অন্তর্ভুক্ত ছিল।
মহাকশ আনসন্ধান পৃথিবীকে নিজস্ব অধিকারে একটি নভস্থিত গঠন হিসেবে বোঝার জন্য একটি বস্তু হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কাক্ষিক মিশন পৃথিবীর এমন তথ্য প্রদান করতে পারে যা স্থল-ভিত্তিক উল্লেখ বিন্দু থেকে বিশুদ্ধরূপে অর্জন করা কঠিন বা অসম্ভব।
উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ(এক্সপ্লোরার ১) ভ্যান এলেন বিকিরণ বেল্টের অস্তিত্ব আবিস্কারের পূর্বে এটি অজানা ছিল। এই বেল্টে পৃথিবীর চুম্বক ক্ষেত্র দ্বারা আধৃত বিকিরণ আছে যেটা বর্তমানে ১০০০ কিমি. উপরে বাসযোগ্য স্পেস স্টেশন তৈরিকে অবাস্তব করে দেয়।
এই অপ্রতাশিত আবিস্কারের পরে বিশেষভাবে মহাকাশের দৃষ্টিভঙ্গিতে পৃথিবীকে জানার জন্য বিশাল সংখ্যক পৃথিবী পর্যবেক্ষণ উপগ্রহ মহাকাশে পাঠানো হয়। এই কৃত্রিম উপগ্রহগুলো বিভিন্ন ভুমিজ ঘটনা বুঝতে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রেখেছে। উদাহরণস্বরূপ, পৃথিবীর আবহাওয়া গবেষণায় নিয়োজিত একটি কৃত্রিম উপগ্রহ বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তরে একটি ছিদ্র খুজে পায় এবং কৃত্রিম উপগ্রহসমূহ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান বা ভূতাত্ত্বিক গঠণ আবিষ্কার সম্ভব করেছে যা অন্যভাবে শনাক্ত করা কঠিন ছিল।
মহাকাশ অনুসন্ধানের জন্য চাঁদ প্রথম নভস্থিত বস্তু ছিল। এটা প্রথম দূরবর্তী নভস্থিত বস্তু যার পাশ দিয়ে উড়া, আবর্তন ও মহাকাশযানের মাধ্যমে অবতরণ করা এবং মানুষ দ্বারা পরিদর্শন করা একমাত্র দূরবর্তী নভস্থিত বস্তু।
১৯৫৯ সালে সোভিয়েত চাদের অপর অংশের প্রথম ছবি অর্জন করে যা আগে কখনো মানুষের জন্য দৃশ্যমান ছিল না। ১৯৬২ সালে রেঞ্জের ৪ ইমপ্যাক্টরের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র চাঁদের মহাকাশ অনুসন্ধান শুরু করে। ১৯৬৬ সাল থেকে শুরু করে সোভিয়েত কিছু সংখ্যক ল্যান্ডার পাঠায়। যেগুলো সরাসরি চাদের পৃষ্ট থেকে তথ্য গ্রহণে সক্ষম ছিল; মাত্র ৪ মাস পরেই সুরভেয়র ১ যুক্তরাষ্ট্রের ল্যান্ডারের একটি সফল সিরিজের আবির্ভাব অভিষেক চিহ্নিত করেছে। সোভিয়েতের জনহীন মিশনগুলো ১৯৭০ দশকের লুনখদ প্রোগ্রামে সর্বোচ্চ যেখানে প্রথম জনহীন রোভার এবং সফলভাবে চাঁদের মাটি গবেষণার জন্য পৃথিবীতে মাটি আনাও অন্তর্ভুক্ত ছিল। এটি প্রথমবার(এবং আজ পর্যন্ত একমাত্র) স্বয়ংক্রিয়ভাবে অতিরিক্ত স্থলজ মাটির নমুনা নিয়ে আসে। নির্দিষ্ট সময় পর পর বিভিন্ন দেশ জন্য অরবিটার পাঠিয়ে জনহীনভাবে চাঁদের গবেষণাকে অব্যাহত রাখে এবং ২০০৮ সালে ভারত মুন ইমপ্যাক্টর প্রব পাঠায়। ১৯৬৮ সালে অ্যাপোলো ৮ দ্বারা মনুষ্যবাহী চন্দ্র গবেষণা শুরু হয় যেটা সফলভাবে চাদকে আবর্তন করে, যার মাধ্যমে মানুষ প্রথমবার কোনো অতিরিক্ত মহাজাগতিক বস্তুকে আবর্তন করে। ১৯৬৯ সালে অ্যাপোলো ১১ মিশনের মাধ্যমে মানুষ প্রথমবার অন্য কোন জগতে পদচরণ করে। কিন্তু মনুষ্যবাহী চন্দ্র গবেষণা বেশি দিন অব্যাহত থাকেনি। ১৯৭২ সালের অ্যাপোলো ১৭ মিশন মানুষের সবচেয়ে সাম্প্রতিক পরিদর্শন ছিল এবং পরবর্তী এক্সপ্লোরেশন মিশন ২ ২০২১ সালে চাঁদকে আবর্তন করবে। রবোটিক মিশনগুলো এখনও সবলে অনুসৃত হয়।
মঙ্গলগ্রহের গবেষণা সোভিয়েত ইউনিয়ন(পরবর্তীতে রাশিয়া), যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, জাপান এবং ভারতের মহাকাশ কর্মসূচির একটি প্রয়োজনীয় অংশ। অনেক সংখ্যক রবোটিক মহাকাশযান ১৯৬০ দশক থেকে মঙ্গলের দিকে পাঠানো হচ্ছে যার মধ্যে অরবিটার, ল্যান্ডার ও রভার অন্তর্ভুক্ত। এই মিশনগুলোর লক্ষ্য ছিল মঙ্গলের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তথ্য গ্রহণ এবং মঙ্গলের ইতিহাসের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়া। লাল গ্রহের একটি উন্নততর রসাস্বাদন দেওয়ার পাশাপাশি পৃথিবীর অতীত ও সম্ভাব্য ভবিষ্যতের অন্তর্দৃষ্টি উত্পাদ করার জন্য বিজ্ঞান সম্প্রদয় দ্বারা এই প্রশ্নগুলো উত্থাপিত হয়েছিল।
মঙ্গলগ্রহের গবেষণায় একটি উল্লেখযোগ্য আর্থিক মূল্য লেগেছে যেটায় মঙ্গলের জন্য নির্ধারিত প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মহাকাশযানই মিশন শেষ করার পূর্বে বার্থ হয়েছে যার মধ্যে কিছু শুরু করার আগেই বার্থ হয়েছে। এমন বার্থতা আন্তগ্র্রহীয় যাত্রার বিশাল সংখ্যক বাধায় যোগ হতে পারে এবং গবেষকদের পরিহাসছলে "দ্যা গ্রেট গ্যালাক্টিক ঘউল"[১৫] বলা হয় যা মঙ্গলের প্রোবসমূহের যাত্রাকে পণ্ড করে দেয় । এই ব্যাপারটি অনানুষ্ঠানিকভাবে "মার্স কার্স" নামেও পরিচিত[১৬]। অন্যদিকে, মঙ্গলগ্রহ গবেষণার সামগ্রিক বার্থতায় ভিন্নতা প্রদর্শন করে ভারত প্রথম দেশ যেটি প্রথম চেষ্টাই সফল হয়। ভারতের মার্স অরবিটার মিশন(মম)[১৭][১৮][১৯] আজ পর্যন্ত সবচেয়ে কম আন্তঃগ্রহীয় ব্যয়বহুল মিশনের একটি যেটায় মোট ₹৪৫০ কোটি(ইউএস $৭৩ মিলিয়ন) অর্থ খরচ হয়েছিল[২০][২১]। মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে প্রথম মঙ্গলগ্রহের উদ্দ্যেশ্যে মিশন তৈরি করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। আমিরাত মঙ্গল অভিযানটি ২০২০ সালের ১৯শে জুলাই উৎক্ষেপিত হয় এবং এটি মঙ্গল গ্রহের চারিদিকের কক্ষপথে পৌছায় ২০২১ সালের ৯ই ফেব্রুয়ারী। এই মনুষ্যহীন অনুসন্ধানী প্রোবের নাম রাখা হয় "হোপ প্রোব" এবং এটি মঙ্গল গ্রহের আবহাওয়া বিস্তারিতভাবে গবেষণার জন্যে পাঠানো হয়েছিল।
রাশিয়ান মহাকাশ মিশন ফবস-গ্রান্ট ২০১১ সালের ৯ই নভেম্বর লঞ্চ করা হয়েছিল এবং এটি বার্থতার সম্মুখীন হয়ে পৃথিবীর নিম্ন অক্ষে আটকে যায়[২২]। এটা ফোবস মঙ্গলের বৃত্তাকার মহাজাগতিক অক্ষের বা কেবল ফোবসের গবেষণার আরম্ভ ছিল যেটা মঙ্গলে ভ্রমণে মহাকাশযানের জন্য একটি "ট্রান্সশিপমেন্ট পয়েন্ট" হতে পারে।[২৩]
বৃহস্পতির গবেষণায় ১৯৭৩ সাল থেকে কেবলমাত্র কিছু সংখ্যক স্বয়ংক্রিয় নাসা মহাকাশযান গ্রহটিকে পরিদর্শন করে। এর মধ্যে বেশিরভাগই ছিল পাশ দিয়ে যাওয়া, ফলে প্রবের অবতরণ বা অক্ষে প্রবেশ ছাড়াই বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল; যেমন পাওনীওর এবং ভয়েজেরের প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে। গ্যালিলিও মহাকাশযান শুধু একাই যে বৃহস্পতিকে আবর্তন করেছে। বৃহস্পতির কোনো শক্ত পৃষ্ঠ ছাড়া শুধুমাত্র অপেক্ষাকৃত ছোট পাথুরে কেন্দ্রস্থল আছে বলে বিশ্বাস করা হয়, তাই অবতরনের জন্য একটি মিশন করা অসম্ভব।
পৃথিবী থেকে বৃহস্পতিতে পৌছাতে ৯.২ কিমি/সেকেন্ডের ডেলটা ভি[২৪] যা পৃথিবীর নিম্ন অক্ষে পৌঁছাতে ৯.৭ ডেলটা-ভি এর সাথে তুলনীয়।[২৫] প্রয়োজন, যা পৃথিবীর নিম্ন অক্ষে পৌছাতে ৯.৭ কিমি/সেকেন্ড ডেলটা ভি-এর সাথে । ভাগক্রমে, গ্রহের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মাধ্যাকর্ষণের সহায়তায় শক্তির খরচ কমান যায়, যদিও তুলনামুলকভাবে দীর্ঘ ফ্লাইট সময়কালের মূল্য দিতে হয়।
বৃহস্পতির ৬৭টি জানা উপগ্রহ আছে, যার মধ্যে তুলনামুলকভাবে বেশিরভাগেরই কম তথ্য জানা আছে।
শনি গ্রহকে কেবলমাত্র নাসার জনহীন মহাকাশযান দ্বারা গবেষণা করা হয়েছে যার মধ্যে একটি মিশন(ক্যাসিনি-হুজেন্স) অন্তর্ভুক্ত যা অন্যান্য মহাকাশ সংস্থানের সহযোগিতা দ্বারা পরিকল্পিত ও বাস্তবায়িত হয়েছিল। এই মিশনগুলো ১৯৭৯ সালের পাওনীর ১১, ১৯৮০ সালের ভয়াজের ১, ১৯৮২ সালের ভয়াজের ২ মিশন দ্বারা গঠিত এবং কাসিনি মহাকাশযান একটি কাক্ষিক মিশন, যেটা ২০০৮ সালে কক্ষে প্রবেশ করে এবিং ২০১৭ সালে ভালভাবে মিশন অব্যাহত রাখার জন্য আসা করা হয়।
শনির ৬২ টি পরিচিত উপগ্রহ আছে, যদিও আসল সংখ্যাটি তর্কযোগ্য কেননা শনির বলয়গুলো বিশাল সংখ্যক বিভিন্ন আকারে স্বাধীনভাবে আবর্তনকৃত বস্তু দ্বারা গঠিত। উপগ্রহগুলর মধ্যে সবচেয়ে বড় হল টাইটান। টাইটান সৌর জগতের একমাত্র উপগ্রহ জেতাই পৃথিবীর তুলনায় ঘন বায়ুমন্ডল আছে। হুজেন্স প্রবের কাসিনি মহাকাশযানের বিস্তার এবং টাইটানে সফল অবতরণের ফলস্বরূপ টাইটান একমাত্র উপগ্রহ যেটায় ল্যান্ডার দ্বারা গবেষণা কয়া হয়েছে।
ইউরানাস ভয়াজের ২ মহাকাশযানের মাধ্যমে সম্পূর্ণরূপে গবেষণা করা হয়েছে এবং বর্তমানে কোন মিশন পরিকল্পিত নেই। ৯৭.৭৭° হেলান অক্ষের পাশাপাশি এর মেরুঅঞ্চলগুলো দীর্ঘ সময় সূর্যালোক বা অন্ধকারে উন্মুক্ত থাকায় বিজ্ঞানিরা নিশ্চিত ছিলেন না যে ইউরেনাস থেকে কি আসা করা যায়। ১৯৮৬ সালের ২৪ জানুয়ারীতে ইউরেনাসের সবচেয়ে কাছে পৌছানো হয়। ভয়াজের ২ গ্রহটির অনন্য বায়ুমণ্ডল ও ম্যাগনেটোস্ফিয়ার অধ্যয়ন করে। ভয়াজের ২ গ্রহের বলয় ও উপগ্রহ গবেষণা করে যার মধ্যে ৫টি পূর্বে পরিচিত এবং অতিরিক্ত ১০টি অপরিচিত উপগ্রহ আবিষ্কার অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ইউরানাসের ছবিগুলোতে খুবই অবিচল রূপ প্রমাণিত হয়েছিল যেটায় বৃহস্পতি ও শনির মতো কোন ঝড় বা আবহাওয়ার অস্পষ্টতার প্রমাণ ছিল না। গ্রহটির ছবিগুলোতে অনেক কষ্ট করে কয়েকটি মেঘ শনাক্ত করা হয়েছে। ইউরেনাসের ম্যাগনেটোস্ফিয়ার সবচেয়ে আলাদা এবং গভীরভাবে হেলান অক্ষ দ্বারা প্রভাবিত হিসেবে প্রমাণিত হয়েছিল। ইউরেনাসের মসৃণ রূপের বিপরীতে ইউরেনাসের উপগ্রহের আকর্ষণীয় ছবি পাওয়া গেছে যার মধ্যে মিরান্ডার অস্বাভাবিকভাবে ভূতাত্ত্বিকভাবে সক্রিয় থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়।
নেপচুনের গবেষণা ১৯৮৯ সালের ২৫ আগস্টে ভয়াজের ২ মিশন দ্বারা শুরু হয় যা ২০১৪ সাল হিসেবে বাবস্থাটিতে একমাত্র পরিদর্শন ছিল। একটি নেপচুন অরবিটারের সম্ভাব্য আলছনা করা হলেও আর কোন মিশনকে গুরুত্বের সাথে চিন্তা করা হয়নি।
তারপরেও ভয়াজের ২ মিশনের পরিদর্শনের মাধ্যমে ইউরেনাসের অত্যন্ত অবিচল রূপ এমন প্রত্যাশা দিয়েছিল যে নেপচুনের আরও কয়েকটি দৃশ্যমান বায়ুমণ্ডলীয় ঘটনা থাকতে পারে। মহাকাশযানটি নেপচুনের সুস্পষ্ট দৃশ্যমান মেঘ, মেরুপ্রভা এবং এমনকি একটি সুস্পষ্ট উচ্চচাপের বায়পূর্ণ অঁচল থেকে প্রবাহিত ঘূর্ণায়মান বাতাসের প্রবাহের ঝড় বাবস্থা পেয়েছিল যা কেবল বৃহস্পতিতে আছে। নেপচুনে সৌর জগতের সবচেয়ে দ্রুতগতির বাতাস আছে বলেও প্রমাণিত, পরিমাপ হিসেবে প্রায় ২১০০ কিমি/ঘণ্টা [২৬] প্রবাহিত হয়। ভয়াজের ২ নেপচুনের বলয় এবং উপগ্রহ বাবস্থাকেও গবেষণা করে। এটি নেপচুনের চারদিকে ৯০০টি সম্পূর্ণ বলয় এবং অতিরিক্ত আংশিক বলয় "আরক্স" আবিষ্কার করে। এছাড়াও ভয়াজের ২ ৩টি পরিচিত উপগ্রহ পরীক্ষা করার সময় আরও ৫টি অপরিচিত উপগ্রহ আবিষ্কার করে, যার মধ্যে একটি ছিল প্রটিউস যা সিস্টেমের সর্বশেষ বৃহত্তম উপগ্রহ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছিল। ভয়েজার ২ দ্বারা দেওয়া তথ্য এই অভিমতকে সমর্থন করত যে ট্রিটন নেপচুনের সবচেয়ে বড় উপগ্রহ যা কাইপার বেল্টের আধৃত বস্তু।[২৭]
বামন গ্রহ প্লুটো মহাকাশযানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ উপস্থাপন করে কারণ পৃথিবী থেকে এটির বিশাল দূরত্ব(প্রয়োজনীয় যাত্রার সময় উচ্চ বেগ প্রয়োজন) এবং অল্প ভর(বর্তমানে কক্ষপথে ধারণ করাতে অনেক কঠিন)। ভয়াজের ১ প্লুটোকে পরিদর্শন করতে পারত কিন্তু চালকরা এটির পরিবর্তে শনির উপগ্রহ টাইটানের কাছে নিয়ে যেতে চেয়েছিল, ফলে প্লুটোর কাছে যাওয়ার জন্য আবক্র পথ বেমানান হয়ে গেল। ভয়াজের ২ মহাকাশযানের কখনোই সম্ভাব্য আবক্র পথ ছিল না।
প্লুটো সবার কাছে অনেক আকর্ষণ হিসেবে অব্যাহত থাকে, যদিও এটির পুনরায় শ্রেণিবিন্যাস এটিকে মাধ্যমিক আয়তনের দূরবর্তী বৃদ্ধিমূলক এবং ববফপূর্ণ দেহের প্রধান ও নিকতবরতি সদস্য হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে(এবং একটি গুরুত্ব উপশ্রেণীর প্রথম সদস্য হিসেবেও যেটা অক্ষ দ্বারা সংজ্ঞায়িত ও "প্লুঢিনস" নামেও পরিচিত)। একটি তীব্র রাজনৈতিক যুদ্ধের পরে ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র সরকার নিউ হরিযন্স নামে প্লুটোর একটি মিশনকে অর্থ প্রদানে রাজি হয়।[২৮] নিউ হরিযন্স ২০০৬ সালে জানুয়ারীর ১৯ তারিখে সফলভাবে লঞ্চ করা হয়। ২০০৭ সালের প্রথম দিকে এই যানটি বৃহস্পতির মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে কাজে লাগায়। এটি ২০১৫ সালের ১৪ই জুলাই মাসে প্লুটোর নিকটস্থ পৌছায়; নিকটস্থ পৌছানোর পাঁচ মাস আগে থেকে প্লুটোর গবেষণা শুরু হয়েছিল এবং সাক্ষাতের ১৬ দিন পর পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।[২৯]
মহাকাশযাত্রার আবির্ভাবের আগ পর্যন্ত বৃহত্তম দূরবীক্ষণ যন্ত্রেও গ্রহানুপুঞ্জের বস্তু নিছক আলোর সামান্য অংশ ছিল, এদের আকার ও ভূখণ্ড রহস্য হিসেবে থেকে যায়। কয়েকটি গ্রহাণু এখন প্রব দ্বারা পরিদর্শন করা হয়েছে, প্রথমবার গ্যালেলিও দুটি গ্রহাণুর পাশ দিয়ে উড়ে গিয়েছিলোঃ ১৯৯১ সালে ৯৫১-গাস্প্রা এবং পরবর্তীতে ১৯৯৩ সালে ২৪৩-ইদা। এই দুটিই বৃহস্পতিতে গ্যালেলিও-এর আবক্র পথের যথেষ্ট কাছে ছিল যে তাদেরকে গ্রহণযোগ্য মূল্যে পরিদর্শন করা যেত। গ্রহাণুর কাক্ষিক জরিপ অনুসারে ২০০০ সালে এনইএআর শুম্যাকার দ্বারা গ্রহাণুটিতে প্রথমবার অবতরণ করে। ২০০৭ সালে লঞ্চ করা নাসার ডন মহাকাশযান দিয়ে বামন গ্রহ সিরিস এবং গ্রহাণু ৪ ভেস্তা (৩টি বড় গ্রহানর মধ্যে ২টি) পরিদর্শন করা হয়েছিল।
যদিও মাঝে মাঝে কয়েক শতাব্দীর পর্যবেক্ষণ দ্বারা অনেক ধুমকেতুকেই পৃথিবী থেকে অধ্যায়ন করা হয়েছে, তবুও কেবলমাত্র কয়েকটি ধুমকেতুকেই ঘনিষ্ঠভাবে পরিদর্শন করা হয়েছে। বিখ্যাত ধুমকেতু হ্যালি আরমাডা অধায়নের পূর্বে ১৯৮৫ সালে ইন্টারন্যাশনাল কমেটারি এক্সপ্লোরার প্রথম ধুমকেতু মিশন(২১পি/গ্লাকবিনি-যিম্মার) পরিছালিত করে। ডিপ ইমপ্যাক্ট প্রব ৯/পি টেম্পেলের গঠন সম্পর্কে আর জানতে এটির উপরে চূর্ণীভবন হয়ে যায় এবং স্টার ডাস্ট মিশন অন্য গ্রহাণুর লেজ থেকে নমুনা ফেরত আনত। ২০১৪ সালে রসেট্টা মিশনের বৃহত্তর অংশ হিসেবে ফিলে ল্যান্ডার সফলভাবে চুর্যুমভ-জেরাছিমেঙ্ক গ্রহাণুতে অবতরণ করে।
হায়াবুসা একটি জনহীন মহাকাশযান ছিল যেটা পৃথিবীর নিকটবর্তী ছোট গ্রহাণু ২৫১৪৩ ইটোকাওয়া থেকে পৃথিবীতে উপাদানের নমুনা আরও বিশ্লেষণের জন্য ফেরত এনেছিল। হায়াবুসা ২০০৩ সালের মে মাসে লঞ্চ করা হয় এবং ইটোকাওয়ার সাথে ২০০৫ সালের মাঝামাঝি একত্রিত হয়। ইটোকাওয়াতে পৌছানোর পর হায়াবুসা গ্রহান্নুতির আকার-আকৃতি, ঘূর্ণন, ভূসংস্থান, রঙ, গঠন, ঘনত্ব, এবং ইতিহাস অধ্যায়ন করে। ২০০৫ সালের নভেম্বেরে এটি গ্রহাণুর নমুনা সংগ্রহের জন্য অবতরণ করে। এই মহাকাশযানটি ২০১০ সালের ১৩ই জুনে পৃথিবীতে ফেরত আসে।
গভীর মহাকাশ অনুসন্ধান জ্যোতির্বিদ্যা, আস্ট্রোনটিক্স এবং মহাকাশ প্রযুক্তির একটি শাখা যেটায় মহাশূন্যের দূরবর্তী অঞ্ছলের গবেষণা অন্তরভক্ত আছে।[৩০] মহাকাশের বাস্তব গবেষণা মানবীয় মহাকাশযাত্রা(গভীর মহাকাশ আস্ট্রোনটিক্স) ও রবোটিক মহাকাশযান উভয় দ্বারা পরিচালিত।
গভীর মহাকাশ ইঞ্জিন প্রযুক্তির জন্য কিছু সেরা প্রার্থী হল প্রতিপদার্থ, পারমাণবিক শক্তি এবং রশ্মি চালিত পরিচালনা। যেহেতু, রশ্মি চালিত পরিচালনা পদ্ধতিটি আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে উন্নত করা হচ্ছে, তাই অদুর ভবিষ্যতে এটাকে গভীর মহাকাশ অনুসন্ধানের জন্য বর্তমানে ব্যবহৃত পদ্ধতিগুলের পরিবর্তে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হবে।[৩১][৩২]
এই section উদাহরণ এবং দৃষ্টিভঙ্গিসমূহ সম্ভবত বিষয়বস্তুটিকে বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে উপস্থাপন করছে না। (September 2013) |
২০০০ দশকে মহাকাশ অনুসন্ধানের জন্য কয়েকটি পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়; সরকারি সংস্থা এবং বেসরকারি খাত উভয়েরই মহাকাশ অনুসন্ধানের উদ্দেশ্য ছিল। চীন ২০২০ সাল পরজন্য একটি ৬০ টনের বহু-মডিউল স্পেস স্টেশন অক্ষে পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে।
২০১০ সালের নাসার অথোোরাইজেশন অ্যাক্ট আমেরিকান মহাকাশ কর্মসূচির উদ্দেশ্য পুনরায় অগ্রাধিকারের তালিকা এবং সেইসাথে প্রথম অগ্রাধিকারগুলোর জন্য অর্থের বাবস্থা করে। নাসা স্পেস লঞ্চ সিস্টেমের(এসএলএস) উন্নতির অগ্রসরের জন্য প্রস্তাব দেয়।, যেটা অরিয়ন মাল্টি পারপাস ক্রেও ভেহিকেল এবং সেটি পৃথিবীর অক্ষে এবং বাইরের গন্তব্যস্থলে প্রয়োজনীয় পণ্যসম্ভার, সরঞ্জাম, এবং বিজ্ঞান পরীক্ষা-নিরীক্ষা বহনের জন্য পরিকল্পিত হবে। এছাড়াও ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে বাণিজ্যিক ও আন্তর্জাতিক পরিবহন হিসেবে এসএলএস সাহায্য করবে। প্রমাণিত হার্ডওয়্যারের সদ্ব্যবহার ও উন্নয়ন এবং অপারেশন খরচ কমাতে এসএলএস রকেট স্পেস শাটল কর্মসূচি ও চন্সটেলেসন কর্মসূচির জন্য প্রজুক্তিগত বিনিয়োগের সাথে সঙ্ঘবদ্ধ করা হবে। ২০১৭ সালের শেষের দিকে প্রথম উন্নয়নমূলক যাত্রা পরিকল্পিত করা আছে।[৩৩]
মহাকাশ মিশনের জন্য উচ্চ পর্যায়ে স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম ব্যবহার করার ধারণাটি সারা বিশ্বব্যাপী মহাকাশ সংস্থার জন্য একটি কাম্য লক্ষ্যে হয়েছে। এ ধরনের সিস্টেম নানা সুবিধা যেমন কম খরচ, মানুষের ভুল কম হওয়া, এবং মহাকাশ গভীরভাবে অন্বেষণ করার ক্ষমতা ইত্যাদি প্রদান করে, যা সাধারণত মানুষ কন্ট্রোলারের সঙ্গে দীর্ঘ যোগাযোগ দ্বারা সীমিত থাকে।[৩৪]
পদ্ধতি ৩টি বৈশিষ্ট্য দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়:[৩৪]
স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি পরিকল্পিত কাজের বাইরে কাজ সম্পাদন করতে পারবে। এটি তাদের আশেপাশের সকল সম্ভাব্য অবস্থা ও ঘটনা বিশ্লেষণ এবং নিরাপদ প্রতিক্রিয়া করতে পারবে। এছাড়া এ রকম প্রযুক্তি উড্ডয়ন ও স্থল সম্পৃত্ত খরচ কমাতে পারবে এবং পাশাপাশি কার্যক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে। স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি অপ্রত্যাশিত ঘটনার সম্মুখীন হলে দ্রুত প্রতিক্রিয়া করতে পারে, বিশেষভাবে গভীর মহাকাশ যেখানে পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ করতে অনেক সময় লাগে।[৩৪]
নাসা আর্থ অবসেরভিং(ইও-১)-এর সাহায্যে স্বয়ংক্রিয় বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা(এএসই) শুরু করে যেটা ২০০০ সালের ২১ নভেম্বরে নতুন সহস্রাব্দের পৃথিবী পর্যবেক্ষণের কর্মসূচির অনুক্রম শুরু করে। এএসই-এর স্বয়ংক্রিয়তা সেই স্থানেই বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ, পুনরায় পরিকল্পনা করা, দৃঢ় কার্যক্ষমতা এবং পরবর্তীতে নকশাভিত্তিক ডায়গনিস্টিক যোগ করা হয় ইও-১ দ্বারা ধারণকৃত ছবিগুলো সেখানেই বিশ্লেষণ করা হয়েছিল এবং পরিবর্তন বা কৌতুহলপূর্ণ ঘটনা হলে ডাউনলিংক করে দেওয়া হতো। এএসই সফটওয়্যার ১০০০ বৈজ্ঞানিক ছবি প্রদান করেছে।[৩৪]
যেসব গবেষণা জাতীয় মহাকাশ অনুসন্ধান সংস্থা যেমন নাসা বা রস্কস্মস দ্বারা সম্পাদিত হয়, তার একটি কারণ হল সরকার খরচের ন্যায্যতার জন্য সমর্থকদের উদ্ধৃত করা। নাসা কর্মসূচির অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ নিরন্তর অর্থনৈতিক সুবিধা দেখিয়েছে(যেমন নাসা স্পিনঅফস), ফলে কর্মসূচির অনেক গুন রাজস্ব উৎপাদিত হয়।[৩৫] এটাও বিতর্কিত যে মহাকাশ অনুসন্ধান অন্য গ্রহ বা বিশেষকরে গ্রহাণু থেকে সম্পদ সংগ্রহে নেতৃত্ব দেবে যেটায় কোটি কোটি টাকার মূল্যবান খনিজ পদার্থ এবং ধাতু আছে। এই ধরনের অভিজান অনেক রাজস্ব উৎপাদন করতে পারে। পাশাপাশি এটাও বিতর্কিত যে মহাকাশ অনুসন্ধান তরুন সম্প্রাদয়কে বিজ্ঞান ও প্রকৌশল পড়তে অনুপ্রাণিত করে।[৩৬]
আরেকটি দাবি হল মহাকাশ অনুসন্ধান মানবজাতির জন্য প্রয়োজন এবং পৃথিবীতে থাকলে বিলুপ্তি হতে পারে। এর মধ্যে কয়েকটি কারণ হল প্রাকৃতিক সম্পদের ঘাটতি, ধুমকেতু পারমাণবিক যুদ্ধ এবং বিশ্বব্যাপী মহামারী। বিখ্যাত ব্রিটিশ তাত্ত্বিক পদার্থবিদ স্টিফেন হকিং বলেছেন,"আমার মনে হয় না মানবজাতি পৃথিবীতে আরও ১০০০ বছর বাচতে পারবে, যদি না আমরা মহাকাশে ছড়িয়ে যাই। এখানে অনেক দুর্ঘটনা আছে যা একটি গ্রহের জীবনকে নষ্ট করে দিতে পারে। কিন্তু আমি আশাবাদী। আমরা নক্ষত্র জয় করবো। "[৩৭]
নাসা মহাকাশ অনুসন্ধানের ধারণা সমরথন করে ভিডিওর মাধ্যমে পাবলিক সার্ভিস ঘোষণার একটি ধারাবাহিক উৎপাদন করেছে।[৩৮]
সামগ্রিকভাবে, জনগণ মুলত মনুষ্যবাহী ও জনহীন উভয় মহাকাশ অনুসন্ধানকেই সমর্থন করে, ২০০৩ সালে জুলাই মাসে সম্পাদিত একটি অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস পোলে দেখা গিয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের ৭১% এই বক্তব্যের সাথে একমত যে মহাকাশ কর্মসূচি "একটি ভালো বিনিয়োগ", অন্যদিকে ২১% একমত ছিল না।[৩৯]
আরথুর সি.ক্লার্ক(১৯৫০) মানুষের জন্য মহাকাশ অনুসন্ধানের প্রেরণার সারসংক্ষেপ তার প্রকৃত তথ্যভিত্তিক সাহিত্য এবং আধা প্রযুক্তিনির্ভর "ইন্টারপ্লানেটারি ফ্লাইট" নামক প্রকরণগ্রন্থ প্রকাশ করেন। তিনি মানুষের পৃথিবী থেকে মহাকাশ প্রসারনের ইচ্ছা এবং সাংস্কৃতিক(এবং শেষ পর্যন্ত জৈবিক) স্তম্ভ ও মৃত্যু সম্পর্কে বিতর্ক করেন।[৪০]
মহাকাশযাত্রা হল মহাকাশ প্রযুক্তির বাবহের করে মহাশূন্যের মধ্যে মহাকাশযানের ফ্লাইট অর্জন করা।
মহাকাশযাত্রা মহাকাশ অনুসন্ধানে এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রম যেমন মহাকাশ পর্যটন এবং কৃত্রিম উপগ্রহের মধ্যে টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয়। মহাকাশযাত্রার আরও অবাণিজ্যিক ব্যবহারের মধ্যে স্পেস টেলিস্কোপ, গোয়েন্দা উপগ্রহ এবং অন্যান্য পৃথিবী পর্যবেক্ষণ উপগ্রহ অন্তর্ভুক্ত।
মহাকাশযাত্রা সাধারণত রকেট লঞ্চের মাধ্যমে শুরু হয়, যেটা মাধ্যাকর্ষণ শক্তি অতিক্রম করার জন্য ++++প্রাথমিক ধাক্কা+++ প্রদান করে এবং মহাকাশযানকে পৃষ্ঠ থেকে দূরে চালিত করে। মহাকাশে যাওয়ার পর মহাকাশযানের গতি যখন উভয় পরিচালনার বাইরে ও অধীনে থাকে-যা মহাকাশ গতিবিদ্যা নামক গবেষণার একটি শাখায় আলোচনা করা হয়েছে। কিছু মহাকাশযান অনির্দিষ্টকালের জন্য মহাকাশে থাকে, কিছু বায়ুমণ্ডলে পুনঃপ্রবেশের সময় ধ্বংস হয় এবং কিছু অন্য একটি গ্রহের বা উপগ্রহের পৃষ্ঠে অবতরণ বা প্রভাবিত হয়।
কৃত্রিম উপগ্রহ বিশাল সংখ্যক কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়। সাধারণ বাবহারের মধ্যে সামরিক(গুপ্তচর) এবং বেসামরিক পৃথিবী পর্যবেক্ষণ উপগ্রহ, যোগাযোগ উপগ্রহ, নেভিগেশন উপগ্রহ, আবহাওয়া উপগ্রহ, এবং গবেষণা উপগ্রহ অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও কক্ষপথে স্পেস স্টেশন এবং মানুষের মহাকাশযানগুলোও কৃত্রিম উপগ্রহ।
মহাকাশের বাণিজ্যিক ব্যবহারে বর্তমানের উদাহরণের মধ্যে স্যাটেলাইট ন্যাভিগেশন সিস্টেম, স্যাটেলাইট টেলিভিশন এবং স্যাটেলাইট রেডিও রয়েছে। মহাকাশ পর্যটন ব্যক্তিগত পরিতোষ উদ্দেশ্যে একক দ্বারা তৈরি সাম্প্রতিক ব্যাপার।
জ্যোতির্জীববিজ্ঞান মহাবিশ্বের জীবনের আন্তঃবিষয়ক বিদ্যা যেটি জ্যোতির্বিদ্যা, জীববিদ্যা এবং ভূতত্ত্বের দৃষ্টিকোণ মিলিয়ে তৈরি। এটায় প্রাথমিকভাবে জীবনের উৎপত্তি, বিতরণ এবং জীবনের বিবর্তনের উপর গবেষণা করা হয়।[৪১] এটি exobiology হিসাবেও পরিচিত (গ্রিক থেকে: έξω, "EXO", "বাহিরে")।[৪২][৪৩][৪৪] এটির জন্য "Xenobiology" শব্দটিও ব্যবহার করা হয়, কিন্তু এটি গঠনগতভাবে ভুল কারণ এটির পরিভাষার অর্থ হল "বিদেশীদের জীববিদ্যা"[৪৫] । জ্যোতির্জীববিজ্ঞানীদের জীবনের এমন সম্ভাব্য সম্পর্কে বিবেচনা করতে হবে যেটা পৃথিবীর যেকোনো জীবন থেকে আলাদা হবে। অতীত বা বর্তমানের জ্যোতির্জীববিজ্ঞানের জন্য সৌরজগতের প্রধান স্থান হল এঞ্চেলাডাস ,ইউরোপা, মঙ্গল, ও টাইটান।
মহাকাশে বসবাস যা মহাকাশ উপনিবেশ, মহাকাশ বন্দোবস্ত এবং মহাকাশ মানবীকরণ নামেও পরিচিত, বলতে পৃথিবীর বাইরে বিশেষকরে চাঁদ এবং মঙ্গলে প্রয়োজনীয় পরিমাণ স্থানীয় সম্পদ ব্যবহার করে স্বাবলম্বী হওয়া।
আজ পর্যন্ত মহাকাশে দীর্ঘতম মানুষের পেশা হল ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন যা ২৪ বছর, ৩১ দিন জন্য একটানা ব্যবহার হয়েছে হয়। ভালেরি পলিয়াকভ এক মহাকাশযাত্রায় মির স্পেস স্টেশনে প্রায় ৪৩৪ দিন থাকার রেকর্ড করেন যা অতিক্রান্ত হয় নি। মহাকাশে দীর্ঘমেয়াদী থাকায় কম মাধ্যাকর্ষণের ফলে হাড় এবং পেশী ক্ষয়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দমন, এবং বিকিরণ প্রকাশের সমস্যা বিকশিত হয়।
অব্যাহত মহাকাশ অনুসন্ধান ও উপনিবেশে অতীতের ও বর্তমানের অনেক ধারণা অনুসারে চাঁদ থেকে ফেরত আসাতে অন্যান্য গ্রহে, বিশেষকরে মঙ্গলে যাওয়ার জন্য মাইল ফলক মনে করা হয়। ২০০৬ সালে নাসা ঘোষণা করে যে, তারা চাদে স্থায়ী বেস তৈরি করার পরিকল্পনা করছে যা ২০১৪ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে[৪৬]।
মহাকাশে জীবন আরও প্রসারিত করায় প্রযুক্তিগত সমস্যার বাইরে প্রস্তাবিত কারণের মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পত্তির ঘাটতি, মহাকাশে সম্পত্তির অধিকার প্রতিষ্ঠায় অসুবিধা বা অক্ষমতা যা মহাকাশে মানব বসটির জন্য প্রধান অন্তরায় হয়েছে। যেহেতু বিংশ শতাব্দীর পরবর্তী অর্ধেকাংশে মহাকাশ প্রযুক্তির আবির্ভাব হয় তাই মহাকাশে সম্পত্তির মালিকানার পক্ষে ও বিপক্ষে দৃঢ় যুক্তির মাধ্যমে বিষয়টি অস্পষ্ট হয়েছে। বিশেষভাবে ২০১২ সালে আউটার স্পেস ট্রিটি ও মহাকাশ সম্পৃত্ত দেশের অনুমোদন দ্বারা মহাকাশ ও নভস্থিত বস্তুর উপর জাতীয় স্থানিক দাবি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।[৪৭]
India became the first Asian nation to reach the Red Planet when its indigenously made unmanned spacecraft entered the orbit of Mars on Wednesday
India's Mars Orbiter Mission successfully entered Mars' orbit Wednesday morning, becoming the first nation to arrive on its first attempt and the first Asian country to reach the Red Planet.