মহাবলীপুরম மாமல்லபுரம் | |
---|---|
শহর | |
স্থানাঙ্ক: ১২°৩৬′৫৯″ উত্তর ৮০°১১′৫৮″ পূর্ব / ১২.৬১৬৪৫৪° উত্তর ৮০.১৯৯৩৭০° পূর্ব | |
রাষ্ট্র | ভারত |
রাজ্য | তামিলনাড়ু |
জেলা | চেঙ্গলপট্টু |
উচ্চতা | ১২ মিটার (৩৯ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ১৫,১৭২[১] |
ভাষা | |
• দাপ্তরিক | তামিল |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+৫:৩০) |
পিন | ৬০৩১০৪ |
টেলিফোন কোড | ৯১–৪৪ |
যানবাহন নিবন্ধন | TN-19 (টিএন-১৯)[২] |
মহাবলীপুরম, বা স্থানীয় উচ্চারণে মামল্লপুরম, দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যে অবস্থিত চেঙ্গলপট্টু জেলার একটি জনগণনা নগর। খ্রিস্টীয় সপ্তম এবং অষ্টম শতাব্দীতে নির্মিত হিন্দু মন্দির "মহাবলীপুরম স্মারকের" জন্য এটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকাভুক্ত। ভারতের অন্যতম পর্যটন স্থান গুলির মধ্যে এটি একটি।[১]
পল্লব সাম্রাজ্যের সময়কালীন রাজ্যের দুটি বড় বন্দর শহরের মধ্যে একটি ছিল মহাবলীপুরম। তৎকালীন পল্লব রাজা প্রথম নরসিংহবর্মণের আরেক নাম ছিল মহাবলী তার নাম অনুসারেই শহরটির নাম রাখা হয়েছিল। অর্থনৈতিক উন্নতির সাথে সাথে শহরটি বহু রাজপ্রাসাদ ও রাজকীর্তির আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়। এখানে রয়েছে ওই সময়কালে পাথর কেটে তৈরি করা বহু নিদর্শন। খ্রিস্টীয় সপ্তম অষ্টম শতাব্দীতে নির্মিত কিছু কীর্তি হলো: রথাদি (রথের আকৃতিতে নির্মিত মন্দির), মণ্ডপাদি (গুহাকৃতি উপাসনা স্থল), বৃহৎ আকৃতির গুহাচিত্র ও গিরিগাত্রচিত্র, গঙ্গাবতরণ শিলাচিত্র এবং শিবের নামে উৎসর্গীকৃত মহাবলীপুরম তটমন্দির৷[১][৩] তবে আধুনিক নগর পরিকল্পনা ১৮২৭ খ্রিস্টাব্দের আশেপাশে ব্রিটিশদের দ্বারা তৈরি৷[৪]
২০০১ খ্রিস্টাব্দে ভারতের জনগণনা অনুসারে [৫] মহাবলীপুরমের মোট জনসংখ্যা ছিলো ১২,৩৪৫ জন৷[৬]
মহাবলীপুরম অন্যান্য আরো অনেক নামে পরিচিত যেমন মামল্লপুরম ও মামল্লপাটনা৷ "মহাবলীপুরম" শব্দের আক্ষরিক অর্থ 'অধিক বলধারী ব্যক্তির আবাসস্থল'৷ বিদেশি নাবিকদের কাছে মহাবলীপুরমের আরেকটি পরিচিত নাম ছিল, মার্কো পোলোর সময় কালে এটি "সেভেন প্যাগোডা" বা সপ্তমন্দির নামে তরিচিত ছিলো৷ এই সপ্তমন্দির প্রাঙ্গণের মধ্যে অক্ষত করেছে একমাত্র তটমন্দিরটি৷[৭]
মহাবলীপুরমের অবস্থিত মন্দির, পাথুরে বহিরাবরণ এবং গুহাগুলিতে সুন্দর শিল্পের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মহাভারত ও বিভিন্ন হিন্দু ধারার গল্পগুলিকে। পল্লব রাজা নরসিংহবর্মণ এবং তার উত্তরাধিকারী রাজসিংহবর্মণের সময়কালে এই কারুশিল্প গুলির সিংহভাগ তৈরি করা হয়েছিল। শিলাখণ্ড এবং মাপে মাপে আটকে দেওয়ার পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছিল। প্রথম নরসিংহবর্মণ খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে মহাবলীপুরম নগরীর পত্তন ঘটান।[৭] রথ আকৃতির ও মন্ডপ আকৃতির মন্দির গুলি গ্রানাইট শিলা থেকে তৈরি। আবার তট মন্দিরটি আরো ৫০ বছর পর অতিরিক্ত পাথরের টুকরো দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল। তট মন্দিরটির মধ্যে রয়েছে ১০০ ফুট লম্বা ৪৫ ফুট উঁচু গ্রানাইট পাথরের কারুকার্য।[৮]
এমটিসি এবং টিএনএসটিসি-এর ভিল্লুপুরম বিভাগ মহাবলুপুরমের সাথে অন্যান্য শহরগুলির বাস পরিবহন পর্যালোচনার দায়িত্বে রয়েছে৷ এমটিসি বাস পরিষেবার ক্ষেত্রে চেন্নাইয়ের বিভিন্ন স্থান থেকে বাতানুকুল বাসের ব্যবস্থা রয়েছে৷ [৯] এটি চেন্নাই শহর থেকে ৫৬ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত৷
মহাবলীপুরম থেকে সরাসরি বাস পরিষেবা রয়েছে তাম্বরম, আদিয়ার, কোয়মবেড়ু, ব্রডওয়ে, বেলাচেরি, ত্যাগরায়নগর, কাঞ্চীপুরম অবধি৷
মহাবলীপুরমে ক্রান্তীয় সাভানা প্রকৃৃৃতির জলবায়ু দেখা যায়৷
মহাবলীপুরম-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য | |||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মাস | জানু | ফেব্রু | মার্চ | এপ্রিল | মে | জুন | জুলাই | আগস্ট | সেপ্টে | অক্টো | নভে | ডিসে | বছর |
সর্বোচ্চ গড় °সে (°ফা) | ২৮.৯ (৮৪.০) |
৩০.৪ (৮৬.৭) |
৩২.১ (৮৯.৮) |
৩৪.৪ (৯৩.৯) |
৩৭.৬ (৯৯.৭) |
৩৭.৪ (৯৯.৩) |
৩৫.৫ (৯৫.৯) |
৩৪.৯ (৯৪.৮) |
৩৪.৩ (৯৩.৭) |
৩২.০ (৮৯.৬) |
২৯.৩ (৮৪.৭) |
২৮.৫ (৮৩.৩) |
৩২.৯ (৯১.৩) |
দৈনিক গড় °সে (°ফা) | ২৪.৩ (৭৫.৭) |
২৫.৪ (৭৭.৭) |
২৭.২ (৮১.০) |
৩০.০ (৮৬.০) |
৩২.৬ (৯০.৭) |
৩২.২ (৯০.০) |
৩০.৮ (৮৭.৪) |
৩০.২ (৮৬.৪) |
২৯.৭ (৮৫.৫) |
২৮.০ (৮২.৪) |
২৫.৮ (৭৮.৪) |
২৪.৬ (৭৬.৩) |
২৮.৪ (৮৩.১) |
সর্বনিম্ন গড় °সে (°ফা) | ১৯.৮ (৬৭.৬) |
২০.৪ (৬৮.৭) |
২২.৪ (৭২.৩) |
২৫.৬ (৭৮.১) |
২৭.৬ (৮১.৭) |
২৭.১ (৮০.৮) |
২৬.২ (৭৯.২) |
২৫.৫ (৭৭.৯) |
২৫.১ (৭৭.২) |
২৪.১ (৭৫.৪) |
২২.৪ (৭২.৩) |
২০.৮ (৬৯.৪) |
২৩.৯ (৭৫.১) |
অধঃক্ষেপণের গড় মিমি (ইঞ্চি) | ২০ (০.৮) |
৬ (০.২) |
৪ (০.২) |
১১ (০.৪) |
৫৫ (২.২) |
৬২ (২.৪) |
৯২ (৩.৬) |
১২৪ (৪.৯) |
১১৪ (৪.৫) |
২৪০ (৯.৪) |
৩১৩ (১২.৩) |
১৭৮ (৭.০) |
১,২১৯ (৪৭.৯) |
অধঃক্ষেপণ দিনগুলির গড় | ২ | ১ | ১ | ২ | ৩ | ৪ | ৬ | ৮ | ৮ | ১৩ | ১৫ | ১০ | ৭১ |
উৎস: ক্লাইমেট-ডেটা.ওআরজি[১০] |
শহরে অবস্থিত সপ্তম ও অষ্টম শতাব্দীতে নির্মিত স্মারক গুলি বর্তমানে ইউনেস্কো অনুমোদিত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তকমা পেয়েছে।[১][৩][১১] এটি করমন্ডল উপকূল বরাবর চেন্নাই থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।[১]
এখানে রয়েছে চল্লিশটি প্রাচীন স্মারক এবং হিন্দু মন্দির।[১২] এরমধ্যে অর্জুনের প্রায়শ্চিত্তে গঙ্গাবতরণ বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তর অনাবৃত শিলা কারুকার্যগুলির একটি। [১][১৩] এই স্থানে রয়েছে বিভিন্ন শ্রেণীর স্মারক যথা: ৬৩০ থেকে ৬৬৮ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে নির্মিত রথ মন্দির, ৬৯৫ থেকে ৭২২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে নির্মিত মহাভারতের গল্প, শাক্তধর্ম, বৈষ্ণবধর্ম, শৈবধর্ম প্রভৃতির ওপর বর্ণিত বিভিন্ন কারুকার্য সংবলিত মন্ডপ মন্দির। এছাড়াও রয়েছে ষষ্ঠ শতাব্দীর ও তারও প্রাচীন গুহালেখের নিদর্শন।[১১][১৪] গুহা মন্দির এবং একশিলা মন্দিরগুলি পল্লব রাজাদের সময়কালে নির্মিত।[৩][১১][১৫] ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগ এই ঐতিহাসিক বস্তুসমষ্টির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে।[১৬]
কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন হল:
২০১১ খ্রিটাব্দে ভারতের জনগণনা অনুযায়ী[১৮] মহাবলীপুরমের মোট জনসংখ্যা ১৫,১৭২ জন, যেখানে ৮,০৩৬ জন পুরুষ ও ৭,১৩৬ জন নারী৷ অর্থাৎ প্রতিহাজার পুরুষে ৮৮৮ জন নারীর বাস৷[১৯] মোট পরিবার সংখ্যা ৩,৫৯০ টি৷ ছয় বছর অনূর্ধ্ব শিশু সংখ্যা ১,৫৭২, যা মোট জনসংখ্যার ১০.৩৬ শতাংশ৷ মহাবলীপুরমের মোট সাক্ষরতার হার ৮৫.৫২ শতাংশ, যেখানে পুরুষ সাক্ষরতার হার ৯১.২৭ শতাংশ ও নারী সাক্ষরতার হার ৭৮.৯৭ শতাংশ৷[২০]
২০১৯ শের ১২ই অক্টোবর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রধানমন্ত্রী শি চিনফিং মহাবলীপুরমে একটি আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎকার করেন৷ তারা একসঙ্গে গঙ্গাবতরণ, পঞ্চরথ, তটমন্দির প্রভৃতি দেখেন ও সেই সকল ব্যাখ্যা করেন৷ পরে তারা কৃষ্ণের মাখন নাড়ুর নীচে একটি ছবি তোলেন৷[২১]