মহিলাদের টেস্ট ক্রিকেট দীর্ঘসময়ের ক্রিকেট খেলা ও লিঙ্গ সমতায়ণে মহিলাদের ক্রিকেটকে পুরুষদের টেস্ট ক্রিকেটের সমতুল্যরূপে গণ্য করা হয়। খেলায় চারটি ইনিংস রয়েছে ও সর্বোচ্চ চারদিনব্যাপী শীর্ষস্থানীয় ক্রিকেটভূক্ত দেশগুলোর মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। পুরুষদের তুলনায় এ খেলার ধরনে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। তন্মধ্যে আম্পায়ার ও পিচের আকার উল্লেখযোগ্য। মহিলাদের একদিনের আন্তর্জাতিকের তুলনায় বছরে মাত্র কয়েকটি টেস্ট খেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে ডিসেম্বর, ১৯৩৪ সালে প্রথম মহিলাদের টেস্ট খেলা আয়োজন করা হয়। তিনদিনের ঐ টেস্টটি ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিত হয় ও ইংল্যান্ড দল ৯ উইকেটের ব্যবধানে জয় পায়।[১]
ক্রিকেটের আইন দ্বারা মহিলাদের টেস্ট ক্রিকেট খেলার উপযোগী করে পরিচালিত হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পুরুষদের টেস্ট ক্রিকেটের সাথে এর সাদৃশ্যপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজমান। দুই দলে এগারোজন খেলোয়াড় সর্বোচ্চ চার ইনিংসে অংশগ্রহণ করেন। টাই, ড্র অথবা জয় - এ তিনধরনে খেলার ফলাফল নির্ধারিত হয়ে থাকে।[২]
প্রধান ও লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে মহিলাদের টেস্ট ক্রিকেট চারদিনের মধ্যে শেষ হয়। প্রতি ঘণ্টায় ১৭ ওভার বোলিংয়ের নির্দেশনা দেয়া রয়েছে। ফলে সম্পূর্ণ দিনে ১০০ ওভার খেলা হয়ে থাকে। ক্রিকেট মাঠ তুলনামূলকভাবে ছোট। ৫৫ থেকে ৭০ গজের মধ্যে সীমাবদ্ধ।[২][৩] পীচও তুলনামূলকভাবে ছোট এবং ক্রিকেট বল ছোট ও হালকা আকৃতির।
আইনে উল্লেখ করা হয়েছে বল ৪+১৫⁄১৬ থেকে ৫+৫⁄১৬ আউন্সের হবে।[৪] আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা পদ্ধতি (ইউডিআরএস) খেলায় প্রচলিত নয়। ফলে, প্রয়োজনে আম্পায়ারগণ টেলিভিশনে পুণঃপ্রচারের জন্য তৃতীয় আম্পায়ারের শরণাপন্ন হয়ে থাকেন।[২][৩]
দশটি জাতীয় দলের মহিলা ক্রিকেটারগণ টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করে থাকেন। ১৯৩৪-৩৫ মৌসুমে ইংল্যান্ড দল অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সফরে যায়। এ তিনটি দলই টেস্ট ক্রিকেটে নিয়মিতভাবে অংশগ্রহণ করে থাকে। দলগুলোর প্রত্যেকেই কমপক্ষে ৪৫টি টেস্ট অংশ নিয়েছে। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্টে অংশগ্রহণ করতে শুরু করে। ১৯৬০ সালে দলটি প্রথমবারের মতো টেস্টে অংশ নেয়।[৫] কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ায় তারা মাত্র ১১ টেস্টে অংশ নিতে পেরেছে।[৬] ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ পরবর্তী অবস্থানে রয়েছে। পাকিস্তান, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস ও শ্রীলঙ্কা - দলগুলোর প্রত্যেকেই পাঁচ টেস্টের কম খেলেছে।[৫] ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ তারিখ পর্যন্ত সর্বমোট ১৩৮টি টেস্ট খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দল | প্রথম | সর্বশেষ | খেলা সংখ্যা |
---|---|---|---|
অস্ট্রেলিয়া | ১৯৩৪ | ২০২৩ | ৭৭ |
ইংল্যান্ড | ১৯৩৪ | ২০২৩ | ১০০ |
ভারত | ১৯৭৬ | ২০২৩ | ৪০ |
আয়ারল্যান্ড | ২০০০ | ২০০০ | ১ |
নেদারল্যান্ডস | ২০০৭ | ২০০৭ | ১ |
নিউজিল্যান্ড | ১৯৩৫ | ২০০৪ | ৪৫ |
পাকিস্তান | ১৯৯৮ | ২০০৪ | ৩ |
দক্ষিণ আফ্রিকা | ১৯৬০ | ২০২২ | ১৩ |
শ্রীলঙ্কা | ১৯৯৮ | ১৯৯৮ | ১ |
ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ১৯৭৬ | ২০০৪ | ১২ |