ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | মাকসুদ আহমেদ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | অমৃতসর, ব্রিটিশ ভারত | ২৬ মার্চ ১৯২৫|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ৪ জানুয়ারি ১৯৯৯ রাওয়ালপিন্ডি, পাকিস্তান | (বয়স ৭৩)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | মেরি ম্যাক্স | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | অল-রাউন্ডার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৯) | ১৬ অক্টোবর ১৯৫২ বনাম ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২৬ অক্টোবর ১৯৫৫ বনাম নিউজিল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৮ মে ২০২০ |
মাকসুদ আহমেদ (উর্দু: مقصود احمد; জন্ম: ২৬ মার্চ, ১৯২৫ - মৃত্যু: ৪ জানুয়ারি, ১৯৯৯) তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের অমৃতসর এলাকায় জন্মগ্রহণকারী পাকিস্তানি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। পাকিস্তানের ক্রিকেটের সূচনালগ্নে অন্যতম ব্যাটসম্যান ছিলেন তিনি। পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। ১৯৫২ থেকে ১৯৫৫ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানি ক্রিকেটে বাহাওয়ালপুর, করাচি, রাওয়ালপিন্ডি, সিন্ধু ও দক্ষিণ পাঞ্জাব দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন ‘মেরি ম্যাক্স’ ডাকনামে পরিচিত মাকসুদ আহমেদ।
লাহোরের ইসলামিয়া কলেজে অধ্যয়ন করেছিলেন তিনি। ১৯৪৪-৪৫ মৌসুম থেকে ১৯৬৩-৬৪ মৌসুম পর্যন্ত মাকসুদ আহমেদের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৯৪৪-৪৫ মৌসুমে সাউদার্ন পাঞ্জাবের সদস্যরূপে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রথম অংশ নেন। লাহোরে অনুষ্ঠিত প্রতিপক্ষ নর্দার্ন ইন্ডিয়ার বিপক্ষে তিনি ১৪৪ রান তুলেন।
পাকিস্তান দলে প্রথমবারের মতো কার্যকরী অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন মাকসুদ আহমেদ। ভারত বিভাজনের পূর্বে দক্ষিণ পাঞ্জাবের পক্ষে খেলেন। অভিষেক খেলাতেই তিনি ১৪৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন।[১]
১৯৫১-৫২ মৌসুমে সফররত মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) বিপক্ষে অপরাজিত ১৩৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ফলশ্রুতিতে, পাকিস্তানের টেস্টভূক্ত দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেতে প্রভূতঃ ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি।[২] ১৯৫৪ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে ওরচেস্টারে অনুষ্ঠিত অনুশীলনীমূলক খেলায় পাকিস্তানি একাদশের সদস্যরূপে উদ্বোধনী দিনে সোয়া দুই ঘণ্টায় ১১১ রান করেন।
১৯৬২-৬৩ মৌসুমে কায়েদ-ই-আজম ট্রফি প্রতিযোগিতায় ৯.২৯ গড়ে ৩৪ উইকেট নিয়ে শীর্ষস্থানীয় উইকেট শিকারীতে পরিণত হন।[৩] ঐ প্রতিযোগিতায় করাচি ব্লুজ ও রাওয়ালপিন্ডির অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ষোলটি টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন মাকসুদ আহমেদ। ১৬ অক্টোবর, ১৯৫২ তারিখে দিল্লিতে স্বাগতিক ভারত দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২৬ অক্টোবর, ১৯৫৫ তারিখে লাহোরে সফরকারী নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।
আবদুল হাফিজ কারদারের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানের উদ্বোধনী টেস্টে ভারত সফরে দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন।
পাকিস্তানের টেস্ট ক্রিকেটের সূচনালগ্নে আগ্রাসী ব্যাটসম্যান ছিলেন। সর্বমোট ও একাধারে প্রথম ১৬ টেস্ট খেলে ৫০৭ রান তুলতে সমর্থ হন। এছাড়াও, ডানহাতি মিডিয়াম ফাস্ট বোলার হিসেবে তিনটি উইকেট পেয়েছেন। টেস্টে কেবল মাঝে-মধ্যেই কার্যকরী ইনিংস খেলতেন। ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টে পাকিস্তানের শোচনীয় পরাজয়কালে তিনি ৬৯ রান তুলেন। বব অ্যাপলইয়ার্ডের বলে উপর্যুপরী ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে আউট হন।
টেস্টে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ করেন ৯৯ রান। ১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে সফরকারী ভারতের বিপক্ষে লাহোরে অনুষ্ঠিত তৃতীয় টেস্টে এ রান পেয়েছেন।[৪]
আক্রমণধর্মী ব্যাটসম্যান ছিলেন। ডানহাতি মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান ছিলেন মাকসুদ আহমেদ। বলকে সজোরে পেটাতেন। প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। তবে, বেপরোয়া দৃষ্টিভঙ্গীর কারণে টেস্ট খেলোগুলোয় তাকে অনিয়মিতভাবে খেলতে দেখা যেতো। প্রথম পাকিস্তানি হিসেবে ইংল্যান্ডে ১৯৫২ সালে পেশাদারী পর্যায়ে খেলেন। ইংরেজ গণমাধ্যমে তাকে বিদ্রুপাত্মকভাবে ‘মেরি ম্যাক্স’ নামে আখ্যায়িত করা হয়।[৫]
তুলনামূলকভাবে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে বেশ ভালো খেলা উপহার দিয়েছেন। ১৯৪৫ থেকে ১৯৬৪ সময়কালে ৮৫টি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় অংশ নিয়ে ৩,৮১৫ রান তুলেন। তন্মধ্যে, ছয়টি শতরানের ইনিংস খেলেছেন। এছাড়াও, ১২৪ উইকেট পেয়েছেন তিনি। ১৯৬২-৬৩ মৌসুমে সারগোদার বিপক্ষে ৭/৩৯ ও ৬/৪৪ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। এটিই তার ব্যক্তিগত সেরা।[৬]
ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর ধারাভাষ্যকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। এছাড়াও, পিটিভি, বিবিসি ও রেডিও পাকিস্তানের ক্রীড়া সাংবাদিকের দায়িত্ব পালন করেন। এক পর্যায়ে জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ হিসেবে মনোনীত হন।
১৯৮১-৮২ মৌসুমে পাকিস্তানের দল নির্বাচকমণ্ডলীর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। রাওয়ালপিন্ডিভিত্তিক দ্য নিউজের প্রথম ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯১-৯২ মৌসুমে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের জাতীয় দল নির্বাচক পরিষদের সভাপতিত্ব করেন। ঐ দলটি ইমরান খানের অধিনায়কত্বে ১৯৯২ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের শিরোপা জয় করে।
৪ জানুয়ারি, ১৯৯৯ তারিখে ৭৩ বছর বয়সে রাওয়ালপিন্ডি এলাকায় মাকসুদ আহমেদের দেহাবসান ঘটে। ভারত বিভাজনের পর থেকে আমৃত্যু পাকিস্তানের ক্রিকেটের সাথে জড়িত ছিলেন। ক্রিকেট খেলায় তার অবদানের কথা স্বীকারপূর্বক রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একটি ফটক মাকসুদ আহমেদ এনক্লোজার রাখা হয়। এছাড়াও, ঐতিহাসিক লাহোর জিমখানায় বাগ-ই-জিন্নাহ ক্রিকেট মাঠের এক প্রান্তের আসনগুলোর নামকরণ হয়।