মাগধী প্রাকৃত

মাগধী প্রাকৃত
মাগধী
ব্রাহ্মী: 𑀫𑀸𑀕𑀥𑀻
অঞ্চলভারত
বিলুপ্তপূর্ব ইন্দো-আর্য ভাষাসমূহের আকারে বিবর্তিত[]
ভাষা কোডসমূহ
আইএসও ৬৩৯-৩
গ্লোটোলগNone

মাগধী প্রাকৃত (মাগধী) হল পালি ভাষার বিলোপের পর প্রাচীন ভারতের সাহিত্যের ভাষা হয়ে ওঠা তিনটি নাট্য প্রাকৃত ভাষার অন্যতম। এটি বৈদিক সংস্কৃত ভাষাকে প্রতিস্থাপিত করে একটি দেশীয় মধ্য ইন্দো-আর্য ভাষা হয়ে ওঠে।[]

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

ভারতীয় উপমহাদেশের পূর্বভাগে (অধুনা পূর্ব ভারত, বাংলাদেশনেপাল অঞ্চল) মাগধী প্রাকৃত কথিত হত।[][] প্রাচীন মগধ অঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্কিত এই ভাষাটি অধুনা অসম, বাংলা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশাপূর্ব উত্তরপ্রদেশ অঞ্চলে বিভিন্ন অপভ্রংশ উপভাষায় কথিত হত[] এবং কোনো কোনো নাটকে প্রাকৃত সংলাপের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হত। মনে করা হয় যে, গৌতম বুদ্ধমহাবীর প্রমুখ ধর্মগুরু এই ভাষাতেই ধর্মোপদেশ দান করেছিলেন[] এবং সেই সঙ্গে এটিই ছিল মগধ মহাজনপদমৌর্য সাম্রাজ্যের রাজসভার ভাষা; অশোকের কয়েকটি শিলালিপিও এই ভাষায় রচিত।[][]

মাগধী প্রাকৃত পরে বিবর্তিত হয় পূর্ব ইন্দো-আর্য ভাষাসমূহে, যেগুলিকে চার ভাগে বিন্যস্ত করা হয়:[][]

গৌড়ী প্রাকৃত

[সম্পাদনা]

ভারতের অঞ্চলের বিচারে এই পাঁচটি ভাষার আদি রূপ হিসেবে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। এর পশ্চিমাঞ্চলের প্রাকৃতকে বলা হয় 'পশ্চিম-মাগধি'। আর পূর্বাঞ্চলের মাগধিকে বলা হয় পূর্বাঞ্চলীয় মাগধি। []

সুনীতিকুমার চট্টোপধ্যায়ের মতে: " মাগধী প্রাকৃত থেকেই বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়েছে" এবং "মাগধী প্রাকৃতে"র পূর্বতর রূপ হচ্ছে "গৌড় প্রাকৃত"। ড. শহীদুল্লাহর মতে: "গৌড়ীয় প্রাকৃত হতেই গৌড়ীয় অপভ্রংশের মাধ্যমে বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়েছে "। [১০]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. ক্লজ, পিটার জে.; ডায়মন্ড, সারা; মিলস, মার্গারেট অ্যান (২০০৩)। সাউথ এশিয়ান ফোকলোর: অ্যান এনসাইক্লোপিডিয়া: আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া। রটলেজ। পৃষ্ঠা ২০৩। 
  2. কারডোনা, জর্জ; জৈন, ধনেশ, সম্পাদকগণ (২০০৩), "দ্য হিস্টোরিকাল কনটেক্সট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফ ইন্দো-এরিয়ান", দি ইন্ডো-এরিয়ান ল্যাংগুয়েজেস, রটলেজ ল্যাংগুয়েজ ফ্যামিলি সিরিজ, লন্ডন: রটলেজ, পৃষ্ঠা ৪৬–৬৬, আইএসবিএন 0-7007-1130-9 
  3. প্রসাদ, বলরাম; মুখোপাধ্যায়, শিবাশিস। "মাগধী / মাগহী" (পিডিএফ)lsi.gov.in। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  4. চট্টোপাধ্যায়, সুনীতিকুমার (১৯২৬)। দি অরিজিন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফ দ্য বেঙ্গলি ল্যাংগুয়েজ (ইংরেজি ভাষায়)। পৃষ্ঠা ছয়। 
  5. গ্রিয়ারসন, স্যার জর্জ আব্রাহাম (১৯০৩)। দ্য ল্যাংগুয়েজেস অফ ইন্ডিয়া: বিয়িং আ রিপ্রিন্ট অফ দ্য চ্যাপ্টার অন ল্যাংগুয়েজেস (ইংরেজি ভাষায়)। অফিস অফ দ্য সুপারইন্টেনডেন্ট অফ গভর্নমেন্ট প্রিন্টিং, ভারত। পৃষ্ঠা ৫৭–৫৮। 
  6. বিমেস, জন (২০১২) [১৮৭৯]। কমপেয়ারেটিভ গ্রামার অফ দ্য মডার্ন এরিয়ান ল্যাংগুয়েজেস অফ ইন্ডিয়া: টু উইট, হিন্দি, পাঞ্জাবি, সিন্ধি, গুজরাতি, মারাঠি, ওড়িয়া, অ্যান্ড বেঙ্গলি। কেমব্রিজ: কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন 978-1-139-20887-1ডিওআই:10.1017/cbo9781139208871.003 
  7. বাশান, এ. এল. (২০০৪)। দ্য ওয়ান্ডার দ্যাট ওয়াজ ইন্ডিয়া। পিকাডোর। পৃষ্ঠা ৩৯৪। 
  8. কারডোনা, জর্জ; জৈন, ধনেশ কে. (২৬ জুলাই ২০০৭)। দি ইন্ডো-এরিয়ান ল্যাংগুয়েজেস। রটলেজ। পৃষ্ঠা ৪৪৫। আইএসবিএন 978-1-135-79711-9 
  9. Bashan A.L., The Wonder that was India, Picador, 2004, pp.394
  10. South Asian folklore: an encyclopedia : Afghanistan, Bangladesh, India, By Peter J. Claus, Sarah Diamond, Margaret Ann Mills, Routledge, 2003, p. 203

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]