মাচিকো হাসেগাওয়া (長谷川町子, হাসেগাওয়া মাচিকো, জানুয়ারী ৩০, ১৯২০ - ২৭ মে, ১৯৯২) ছিলেন জাপানের প্রথম মহিলা মাঙ্গা শিল্পীদের একজন[১] তিনি ১৯৪৬ সালে তার নিজস্ব কমিক স্ট্রিপ, সাজাই-সান শুরু করেছিলেন।এটি ১৯৪৯ সালে আসাহি শিম্বুনের মাধ্যমে প্রচার পায়[২] এবং ১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে হাসেগাওয়া যখন অবসর নেন তার আগে অবধি এই কমিক জনপ্রিয় ছিল। তার সব কমিক্স জাপানে ডাইজেস্ট কমিক্সে ছাপা হয়েছিল; ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে, হাসগাওয়ার এস্টেট শুধুমাত্র জাপানেই ৬০ মিলিয়ন কপি বিক্রি করেছিল।
মাচিকো হাসগাওয়া ৩০ জানুয়ারী, ১৯২০ সালে সাগা প্রিফেকচারের টাকুতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বয়স যখন মাত্র ১৫ তখন তার বাবা মারা যান এবং তারা সপরিবারে টোকিওতে চলে আসেন। সেখানে তিনি কার্টুন আঁকা শুরু করেন। [৩] তিনি সফলভাবে ততকালীন ম্যাগাজিন এবং সংবাদপত্রে তার বেশ কিছু কাজ প্রকাশ করেছিলেন, যেমন সাজায়ে-সান (サザエさん, ১৯৪৬-১৯৪৭) ,[৪] ইজিওয়ারু বা-সান (いじわるばあさん, "গ্র্যানি মিসচিফ", ১৯৬৬–১৯৭১) ,[৪] এপুরন ওবা-সান (エプロンおばさん, "আন্ট অ্যাপ্রন", ১৯৫৭-১৯৬৫),[৪] ইত্যাদি। তার কমিকগুলি প্রথম জাপানি কমিক্স যেগুলি আঁকার জন্য একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ চার-প্যানেল বিন্যাস অনুসরণ করেছিল, যা পরবর্তীতে মাঙ্গা রচনার আদর্শ হয়ে ওঠে।
হাসেগাওয়া কখনো বিয়ে করেননি। তিনি তার বড় বোন মারিকোর সাথে থাকতেন। উভয়ই শিল্প সংগ্রাহক ছিলেন এবং তাদের সংগ্রহ হাসগাওয়া মাচিকো আর্ট মিউজিয়ামে রাখা হয়েছে। [৫] দুজনে শিমাইশা পাবলিশিং কোম্পানি শুরু করেন, যার মাধ্যমে তার কমিকসের ২০ মিলিয়ন মুদ্রিত কপি প্রকাশিত হয়েছে। ১৭ মে, ১৯৯২-এ 72 বছর বয়সে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে হাসগাওয়া মারা যান। তার জীবনের শেষ দিকে তিনি জনসমক্ষে এবং টেলিভিশনে উপস্থিত হওয়া বন্ধ করে দেন। তার নিজস্ব ইচ্ছা অনুযায়ী তার ব্যক্তিগত অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পরে তার মৃত্যুর খবর ৩৫ দিনের জন্য গোপন রাখা হয়। [৩]
সাজায়ে-সান ছিল যুদ্ধোত্তর কালীন জাপানের একটি জনপ্রিয় কমিক স্ট্রিপ যা সাজায়ে-সান নামক একজন কাল্পনিক জাপানি গৃহবধূর জীবন চিত্রিত করে। [৬]
কমিক স্ট্রিপটি ১৯৫৫ সালে একটি নাটকীয় রেডিও সিরিজ হিসাবে প্রচারিত হত। ১৯৬৯ সালে একটি সাপ্তাহিক অ্যানিমেটেড সিরিজে পরিণত হয়েছিল, যা ২০২২ সাল পর্যন্ত সম্প্রচারিত হয়েছে।
হাসেগাওয়া একটি বাস কোম্পানির সাথে আদালতের আইনি মামলায় জড়িত ছিলেন। সেই কোম্পানি সাজায়ে-সানের অননুমোদিত ব্যবহার এবং প্রচারমূলক ছবি তার ব্যবসায় ব্যবহার করছিল। পাশাপাশি তারা ব্যবসার নাম সাখে "সাজায়ে-সান ট্যুরস"। এই মামলার ফলস্বরূপ, নতুন কপিরাইট আইন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যা কাল্পনিক চরিত্রগুলির জন্য স্রষ্টাকে তার ব্যক্তিগত অধিকার দেয়। [৭]
হাসগাওয়া ১৯৬২ সালে সাজায়ে-সানের জন্য 8তম বুঙ্গেশুঞ্জু মাঙ্গা পুরস্কার জিতেছিলেন [৮] তিনিই প্রথম মহিলা মাঙ্গা শিল্পী যিনি ১৯৮২ সালে পার্পল রিবন সহ জাপানের মেডেল অফ অনার পেয়েছিলেন [৮][৯] তিনি ১৯৮৮ সালে ৪র্থ টোকিও সাংস্কৃতিক পুরস্কারও পেয়েছিলেন;[৮] ১৯৯০ সালে তিনি অর্ডার অফ দ্যা প্রেসিয়াস ক্রাউন পেয়েছিলেন;[৮] ১৯৯১ সালে ২০তম জাপান কার্টুনিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অ্যাওয়ার্ডে সাজায়ে-সানের জন্য তিনি পুরস্কার পান;[৪][১০] ১৯৯২ সালে ১০তম পিপলস অনার অ্যাওয়ার্ড [১১][১২] এবং ২০২০ সালের ২৪তম তেজুকা ওসামু সাংস্কৃতিক পুরস্কারে বিশেষ পুরস্কারে তিনি সম্মানিত হন। [১৩]
Machiko Hasegawa was the first female manga creator to receive the medal.