মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি

মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সী
ব্রিটিশ ভারত প্রেসিডেন্সী
১৬৫২–১৯৫০
মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সীর পতাকা
পতাকা

১৯১৩ সালের একটি মানচিত্রে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সী
রাজধানীশীতকালীন: মাদ্রাজ শহর
গ্রীষ্মকালীন: উটি
ঐতিহাসিক যুগনব্য উপনিবেশবাদ
• প্রতিষ্ঠিত
১৬৫২
• বিলুপ্ত
১৯৫০
পূর্বসূরী
উত্তরসূরী
Bantam Presidency
Surat Presidency
Dominion of India
ঔপনিবেশিক ভারত
British Indian Empire
ঔপনিবেশিক ভারত
ওলন্দাজ ভারত১৬০৫–১৮২৫
দিনেমার ভারত১৬২০–১৮৬৯
ফরাসি ভারত১৭৬৯-১৯৫৪
পর্তুগিজ ভারত
(১৫০৫–১৯৬১)
কাসা দা ইন্দিয়া১৪৩৪–১৮৩৩
পর্তুগিজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি১৬২৮–১৬৩৩
ব্রিটিশ ভারত
(১৬১২–১৯৪৭)
ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি১৬১২–১৭৫৭
কোম্পানি রাজ১৭৫৭–১৮৫৮
ব্রিটিশ রাজ১৮৫৮–১৯৪৭
বার্মায় ব্রিটিশ শাসন১৮২৪–১৯৪৮
দেশীয় রাজ্য১৭২১–১৯৪৯
ভারত বিভাজন
১৯৪৭

মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সী অথবা ফোর্ট সেন্ট জর্জের প্রেসিডেন্সী অথবা মাদ্রাজ প্রভিন্স ব্রিটিশ ভারতের একটি প্রশাসনিক উপবিভাগ (প্রেসিডেন্সী) ছিলো। প্রেসিডেন্সীটি ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের একটি বড় অংশ নিয়ে গঠিত ছিলো, আজকের তামিলনাড়ু এবং অন্ধ্র প্রদেশ পুরোপুরি এই প্রেসিডেন্সীর অধীনে ছিলো; এছাড়াও উড়িষ্যা, কেরালা, কর্ণাটকের কিছু অংশ সহ লক্ষদ্বীপ ও ছিলো এই প্রেসিডেন্সীর অধীনে। মাদ্রাজ শহর (এখন চেন্নাই) ছিলো প্রেসিডেন্সীটির শীতকালীন রাজধানী এবং উটি ছিলো গ্রীষ্মকালীন রাজধানী। সিলন দ্বীপ (বর্তমানে শ্রীলঙ্কা) এই প্রেসিডেন্সীর একটি অংশ ছিলো ১৭৯৩ সাল থেকে ১৭৯৮ পর্যন্ত। এই প্রেসিডেন্সীটির উত্তর-পশ্চিমে ছিলো মহীশুর রাজ্য, দক্ষিণপশ্চিমে ছিলো কোচি রাজ্য এবং উত্তরে ছিলো হায়দ্রাবাদ রাজ্য। এই প্রেসিডেন্সীটির কিছু অংশ আবার মাঝেমধ্যে বোম্বে প্রেসিডেন্সী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতো।

১৬৩৯ সালে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি মাদ্রাজপাটনাম গ্রামটি কিনে নেয় এবং এক বছর পর ফোর্ট সেন্ট জর্জের এজেন্সী তৈরি করেছিলো, যেটি ছিলো মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির পূর্বসূরী, যদিও ইংরেজদের ১৬০০ শতাব্দীর শুরুর দশকেই মাচিলিপাটনাম এবং আরমাগোনে কারখানা ছিলো। ১৬৫২ সালে এজেন্সী প্রেসিডেন্সিতে রূপ লাভ করে এবং ১৬৫৫ সালে এটি আবার এজেন্সী হয়। ১৬৮৪ সালে পুনরায় প্রেসিডেন্সির মর্যাদা লাভ করে এটি এবং এলিহু ইয়েল প্রেসিডেন্সির প্রেসিডেন্ট হন। ১৭৮৫ সালে পিট'স ইন্ডিয়া এ্যাক্ট অনুযায়ী মাদ্রাজ ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ভারতের তিনটি প্রদেশের একটিতে মর্যাদা পায়। তখন থেকে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির প্রধান প্রশাসককে প্রেসিডেন্টের পরিবর্তে গভর্নর বলা শুরু হয় এবং কোলকাতাতে অবস্থিত গভর্নর-জেনারেলের অধীনে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির গভর্নর কাজ করতেন ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত। দাপ্তরিক, বিচারিক এবং অন্যান্য আইনি কাজ সহ সকল নির্বাহী ক্ষমতা মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির গভর্নর হাতে ছিলো, গভর্নর একটি কাউন্সিল দ্বারা সহায়তা লাভ করতেন, মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির আলাদা সংবিধান ছিলো যেটা ১৮৬১, ১৯০৯, ১৯১৯ এবং ১৯৩৫ সালে পর্যায়ক্রমে পরিবর্তিত হয়েছিলো। ১৯৩৯ সালে একটি বিশ্বযুদ্ধ (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ) শুরু হয়ে গেলে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সিতে ঘন ঘন নির্বাচনের আয়োজন করা হয়। ১৯০৮ সাল অনুযায়ী এই মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির ২২টা জেলা ছিলো, প্রত্যেক জেলা আবার ডিসট্রিক্ট কালেক্টরের প্রশাসনিক অধীনে থাকতো, জেলার আবার উপবিভাগ ছিলো, ছিলো তালুক এবং ফিরকা, গ্রাম ছিলো মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির সবচেয়ে ছোটো প্রশাসনিক এলাকা।

১৯১৯ সালের মন্টেগু-চেমসফোর্ড সংস্কার অনুযায়ী মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি ভারতের প্রথম প্রেসিডেন্সিতে রূপান্তরিত হয় যেটা দ্বৈত শাসন অবলম্বন করে চলছিলো, মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির গভর্নর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পরেই অবস্থান করতেন ক্ষমতার দিক দিয়ে। বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে এই মাদ্রাজ থেকে ভারতের স্বাধীনতার জন্য অনেক আন্দোলন বেরিয়ে আসে। ১৫ই আগস্ট ১৯৪৭ তারিখে এই প্রেসিডেন্সির নাম মাদ্রাজ প্রদেশ (ইংরেজিতে প্রভিন্স) হয়ে যায় যেটা আগে ছিলো অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে, ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারী স্বাধীন ভারতের সংবিধান প্রণীত হলে মাদ্রাজ প্রভিন্সের ইংরেজি নাম মাদ্রাজ স্টেট হয়েছিলো।

উৎপত্তি

[সম্পাদনা]

ইংরেজদের আগমনের আগে

[সম্পাদনা]

প্রস্তর যুগ থেকেই ভারতের এই অংশে মানুষের ভালো অবস্থান ছিলো। তামিল পান্ড্য রাজবংশ খ্রিষ্টপূর্ব ২৩০ সাল থেকে ১০২ সাল পর্যন্ত এই এই অঞ্চলের শাসক ছিলো। তামিল পান্ড্য এবং চোল সাম্রাজ্যের পতন ঘটলে কলাভ্রা নামের একটি জাতি এই অঞ্চলে আধিপত্য গড়ে তোলে। এরপর এই অঞ্চল পল্লব রাজবংশের অধীনে পড়ে এবং এই পল্লবীয়রা এই অঞ্চলের সভ্যতা অনেক উন্নত করতে সাহায্য করেছিলো, তেলুগুভাষী রাজারা তামিলদেরকে তেলুগু ভাষায় দীক্ষিত করতে শুরু করে। ১৩১১ সালে মালিক গফুর নামের এক ব্যক্তি যিনি ছিলেন আলাউদ্দিন খিলজির সেনাপতি এই অঞ্চলের মাদুরাই এলাকা নিজের দখলে আনেন, এই সময় সংস্কৃতি এবং সভ্যতা নষ্ট হতে শুরু হতে করে। ১৩৩৬ সালে বিজয়নগর সাম্রাজ্য তামিল এবং তেলুগু ভূখণ্ড নিজেদের অধীনে নিয়ে নেয়। এই সাম্রাজ্যের পতনের পর অনেক মুসলিম শাসক এবং ইউরোপীয় ব্যবসায়ীদের কবলে পড়ে এই অঞ্চল।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
Attribution
  • Public Domain এই নিবন্ধটি একটি প্রকাশন থেকে অন্তর্ভুক্ত পাঠ্য যা বর্তমানে পাবলিক ডোমেইনেচিসাম, হিউ, সম্পাদক (১৯১১)। "Bombay Presidency"ব্রিটিশ বিশ্বকোষ4 (১১তম সংস্করণ)। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 185–189। 

গ্রন্থপঞ্জি

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]